Fruit that whitens skin: ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি ও ফর্সা করার জন্য বিভিন্ন ফল খুবই উপকারী। বিশেষ করে ভিটামিন সি সমৃদ্ধ সিট্রাস ফল যেমন কমলা, লেবু এবং আঙুর ত্বককে উজ্জ্বল ও ফর্সা করতে সাহায্য করে। এছাড়াও পেঁপে, স্ট্রবেরি, আনারস ইত্যাদি ফলও ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। এই ফলগুলি নিয়মিত খেলে ত্বকের মেলানিন উৎপাদন কমে এবং কোলাজেন উৎপাদন বাড়ে, যা ত্বককে ফর্সা ও উজ্জ্বল করে তোলে।
ত্বক ফর্সা করার সেরা ১০টি ফল
১. কমলা (Orange)
কমলা লেবু জাতীয় ফলের মধ্যে অন্যতম যা ত্বক ফর্সা করতে সাহায্য করে। এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে যা কোলাজেন উৎপাদন বাড়ায় এবং ত্বককে উজ্জ্বল করে। কমলার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকের ক্ষতিকর ফ্রি র্যাডিকেলস দূর করে এবং ত্বকের বয়স বৃদ্ধি রোধ করে। এছাড়াও কমলার প্রাকৃতিক তেল ত্বককে ময়েশ্চারাইজ করে এবং স্বাস্থ্যকর দেখায়।
কীভাবে ব্যবহার করবেন: প্রতিদিন সকালে একটি কমলা খান বা কমলার রস পান করুন। এছাড়া কমলার খোসা পিষে মুখে লাগিয়ে ১৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলতে পারেন।
২. স্ট্রবেরি (Strawberry)
স্ট্রবেরি ত্বকের জন্য অত্যন্ত উপকারী একটি ফল। এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং এলাজিক অ্যাসিড থাকে যা কোলাজেন উৎপাদন বাড়ায় এবং ত্বকের ইলাস্টিসিটি বাড়ায়। স্ট্রবেরিতে থাকা আলফা হাইড্রক্সি অ্যাসিড বা স্যালিসাইলিক অ্যাসিড ত্বকের প্রদাহ কমায় এবং অ্যাকনে দূর করতে সাহায্য করে।
কীভাবে ব্যবহার করবেন: প্রতিদিন কয়েকটি স্ট্রবেরি খান। এছাড়া স্ট্রবেরি পিষে মুখে লাগিয়ে ১০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলতে পারেন।
৩. পেঁপে (Papaya)
পেঁপে ত্বক ফর্সা করার জন্য সবচেয়ে কার্যকরী ফলগুলোর মধ্যে একটি। এতে থাকা প্যাপাইন এনজাইম মৃত ত্বক কোষ অপসারণ করে এবং ত্বককে উজ্জ্বল করে। পেঁপের উচ্চ ভিটামিন সি ত্বকের মেলানিন উৎপাদন কমিয়ে দেয় যা ত্বককে ফর্সা করে। এছাড়াও পেঁপেতে থাকা ভিটামিন এ, বি এবং সি ত্বকের স্বাস্থ্য উন্নত করে।
কীভাবে ব্যবহার করবেন: প্রতিদিন একটু পেঁপে খান। এছাড়া পেঁপে পিষে মুখে লাগিয়ে ১৫-২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলতে পারেন।
শুষ্ক ত্বকের জন্য দায়ী ৫টি ভিটামিনের অভাব – আপনার ত্বক কি শুকনো ও নিষ্প্রভ?
৪. বেদানা (Pomegranate)
বেদানা ত্বককে উজ্জ্বল ও ফর্সা করার জন্য সর্বোত্তম ফলগুলোর মধ্যে একটি। এতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা ফ্রি র্যাডিকেলসের বিরুদ্ধে লড়াই করে, কোলাজেন উৎপাদন বাড়ায় এবং বয়সের ছাপ কমায়। বেদানা সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে ত্বককে রক্ষা করে এবং পিগমেন্টেশন কমায়।
কীভাবে ব্যবহার করবেন: প্রতিদিন একটু বেদানা খান বা বেদানার রস পান করুন। এছাড়া বেদানার দানা পিষে মুখে লাগিয়ে ১০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলতে পারেন।
৫. আম (Mango)
আম শুধু স্বাদেই নয়, ত্বকের জন্যও খুব উপকারী। এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, বিটা ক্যারোটিন এবং আলফা হাইড্রক্সি অ্যাসিড থাকে যা ত্বককে হাইড্রেট করে, টেক্সচার উন্নত করে এবং নতুন ত্বক কোষ তৈরি করতে সাহায্য করে। আম অ্যাকনে কমায় এবং ত্বককে ফর্সা করতে সাহায্য করে।
কীভাবে ব্যবহার করবেন: প্রতিদিন একটু আম খান। এছাড়া আমের শাঁস পিষে মুখে লাগিয়ে ১৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলতে পারেন।
৬. কিউই (Kiwi)
কিউই ভিটামিন সি এর একটি সমৃদ্ধ উৎস যা ত্বকের স্বাস্থ্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এতে থাকা ভিটামিন সি ত্বকের টোন উজ্জ্বল করে এবং কালো দাগ ও পিগমেন্টেশন কমায়। কিউইতে থাকা ভিটামিন ই এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ফ্রি র্যাডিকেলসের বিরুদ্ধে লড়াই করে, যা ত্বকের অকাল বার্ধক্য রোধ করে।
কীভাবে ব্যবহার করবেন: প্রতিদিন একটি কিউই খান। এছাড়া কিউই পিষে মুখে লাগিয়ে ১০-১৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলতে পারেন।
৭. তরমুজ (Watermelon)
তরমুজ প্রধানত পানি দিয়ে তৈরি, যা ত্বককে হাইড্রেট রাখতে এবং ময়েশ্চারাইজ করতে সাহায্য করে। এতে লাইকোপিন নামক একটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে ত্বককে রক্ষা করে এবং সানবার্নের ঝুঁকি কমায়। তরমুজে থাকা ভিটামিন এ এবং সি ত্বক কোষের পুনর্জন্ম ও মেরামতে সাহায্য করে।
কীভাবে ব্যবহার করবেন: প্রতিদিন কিছু তরমুজ খান বা তরমুজের রস পান করুন। এছাড়া তরমুজের শাঁস পিষে মুখে লাগিয়ে ১৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলতে পারেন।
৮. আপেল (Apple)
“An apple a day keeps the doctor away” – এই প্রবাদটি ত্বকের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। আপেলে ভিটামিন এ, সি এবং বি সমৃদ্ধ যা ত্বক থেকে অতিরিক্ত তেল এবং জীবাণু দূর করতে সাহায্য করে। এটি ত্বকের টোন সমান করতে সাহায্য করে এবং ত্বককে উজ্জ্বল করে তোলে।
কীভাবে ব্যবহার করবেন: প্রতিদিন একটি আপেল খান। এছাড়া আপেল পিষে মুখে লাগিয়ে ১০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলতে পারেন।
ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে ড্রাগন ফলের অবিশ্বাস্য ক্ষমতা – জেনে নিন
৯. আঙুর (Grapes)
আঙুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ একটি ফল যা ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। এতে থাকা রেসভেরাট্রল নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকের কোষকে ক্ষতি থেকে রক্ষা করে এবং কোলাজেন উৎপাদন বাড়ায়। আঙুর ত্বকের ইলাস্টিসিটি বাড়ায় এবং বয়সের ছাপ কমায়।
কীভাবে ব্যবহার করবেন: প্রতিদিন কিছু আঙুর খান। এছাড়া আঙুর পিষে মুখে লাগিয়ে ১৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলতে পারেন।
১০. আনারস (Pineapple)
আনারস ত্বক ফর্সা করার জন্য একটি দারুণ ফল। এতে ব্রোমেলিন নামক একটি এনজাইম থাকে যা মৃত ত্বক কোষ অপসারণ করে এবং ত্বকের টেক্সচার উন্নত করে। আনারসে থাকা ভিটামিন সি কোলাজেন উৎপাদন বাড়ায় এবং ত্বককে উজ্জ্বল করে তোলে।
কীভাবে ব্যবহার করবেন: প্রতিদিন কিছু আনারস খান। এছাড়া আনারস পিষে মুখে লাগিয়ে ১০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলতে পারেন।