Questions to ask before taking a loan: আজকাল নিজের পায়ে দাঁড়ানোটা বেশ কঠিন। বিশেষ করে যখন কোনো বড় স্বপ্ন পূরণ করতে চান, যেমন – নিজের ব্যবসা শুরু করা, বাড়ি কেনা অথবা ছেলে-মেয়েদের উচ্চশিক্ষার ব্যবস্থা করা। এই স্বপ্নগুলো পূরণ করতে অনেক সময় আমাদের ঋণের (Loan) প্রয়োজন হয়। ব্যাংক থেকে লোন নেওয়াটা এখন বেশ সহজ হয়ে গেছে, কিন্তু লোন নেওয়ার আগে কিছু বিষয় নিজেকে জিজ্ঞাসা করা খুব জরুরি। এতে আপনি বুঝতে পারবেন যে আপনি ঋণের জন্য প্রস্তুত কি না এবং আপনার জন্য কোন ঋণটি সবচেয়ে ভালো হবে।
এই ব্লগ পোস্টে আমরা সেই ১০টি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন নিয়ে আলোচনা করব যা লোন নেওয়ার আগে আপনার নিজেকে জিজ্ঞাসা করা উচিত। এই প্রশ্নগুলো আপনাকে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করবে এবং ভবিষ্যতে আর্থিক সমস্যা থেকে রক্ষা করবে।
“ভি আই-এর ডেটা লোন: আপৎকালীন ইন্টারনেট সমাধান নাকি গ্রাহকদের ফাঁদ?”
ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বিবেচনা করা উচিত। এখানে ১০টি প্রশ্ন দেওয়া হলো যা আপনাকে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করবে:
লোন নেওয়ার আগে নিজেকে প্রশ্ন করুন, আসলেই কি আপনার লোনের প্রয়োজন আছে? অনেক সময় আমরা আবেগের বশে বা অন্যের দেখাদেখি লোন নিয়ে ফেলি। কিন্তু একটু চিন্তা করলেই হয়তো দেখা যায় যে, অন্য কোনো উপায়েও কাজটি করা সম্ভব।
ধরুন, আপনি একটি নতুন ফোন কিনতে চান। এর জন্য লোন নেওয়ার আগে ভাবুন, আপনার কি সত্যিই এই মুহূর্তে ফোনটি দরকার? নাকি কিছু দিন অপেক্ষা করে টাকা জমিয়ে কিনলে ভালো হয়?
আপনার মাসিক আয় কত, তা জানা লোন নেওয়ার জন্য খুবই জরুরি। কারণ আপনার আয়ের ওপর নির্ভর করবে আপনি কত টাকা লোন নিতে পারবেন এবং সেই লোনের কিস্তি পরিশোধ করতে পারবেন কিনা।
আপনার বেতন, ব্যবসা থেকে আয়, ভাড়া থেকে আয় এবং অন্যান্য উৎস থেকে আসা সব টাকা যোগ করুন। তারপর দেখুন আপনার খরচ কত। খরচ বাদ দিয়ে যা থাকবে, তা দিয়েই আপনাকে লোনের কিস্তি পরিশোধ করতে হবে।
ক্রেডিট স্কোর হলো আপনার ঋণ পরিশোধের ক্ষমতার একটি মাপকাঠি। ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো লোন দেওয়ার আগে আপনার ক্রেডিট স্কোর যাচাই করে। স্কোর ভালো হলে লোন পাওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে এবং সুদের হারও কম থাকে।
বাংলাদেশে বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্ম আছে যেখান থেকে আপনি আপনার ক্রেডিট স্কোর জানতে পারবেন। ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরো (সিআইবি) থেকে আপনার ক্রেডিট রিপোর্ট সংগ্রহ করতে পারেন।
আপনি কত টাকা লোন নিতে চান, তা আগে থেকেই ঠিক করে নেওয়া ভালো। প্রয়োজনের চেয়ে বেশি লোন নিলে তা পরিশোধ করা কঠিন হয়ে পড়ে।
যদি আপনার ব্যবসার জন্য ২ লক্ষ টাকার প্রয়োজন হয়, তাহলে ২ লক্ষ টাকাই লোন নিন। এর বেশি নেওয়ার প্রয়োজন নেই।
লোন নেওয়ার আগে সুদের হার (interest rate) সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নেওয়া উচিত। সুদের হার কম হলে আপনার কিস্তির পরিমাণ কম হবে এবং আপনি কম সময়ে লোন পরিশোধ করতে পারবেন।
লোন পরিশোধের সময়সীমা (repayment period) আপনার কিস্তির পরিমাণ নির্ধারণ করে। সময়সীমা বেশি হলে কিস্তির পরিমাণ কম হয়, কিন্তু আপনাকে বেশি সুদ দিতে হয়। আর সময়সীমা কম হলে কিস্তির পরিমাণ বেশি হয়, কিন্তু সুদ কম দিতে হয়।
লোনের কিস্তি আপনার সাধ্যের মধ্যে আছে কিনা, তা নিশ্চিত করা জরুরি। কিস্তি পরিশোধ করতে গিয়ে যদি আপনার দৈনন্দিন জীবনযাত্রা ব্যাহত হয়, তাহলে সেই লোন না নেওয়াই ভালো।
লোন নেওয়ার আগে লোনের শর্তাবলী (terms and conditions) ভালোভাবে পড়ে নেওয়া উচিত। এখানে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উল্লেখ থাকে, যা পরবর্তীতে আপনার কাজে লাগবে।
লোন পরিশোধের বিকল্প উপায় (alternative repayment methods) সম্পর্কে জেনে রাখা ভালো। যদি কোনো মাসে আপনার আয় কম হয়, তাহলে কিভাবে কিস্তি পরিশোধ করবেন, তার একটি পরিকল্পনা থাকা উচিত।
কিছু লোনের জন্য জামানত (collateral) প্রয়োজন হয়, যেমন – জমি, বাড়ি বা অন্য কোনো সম্পদ। লোন নেওয়ার আগে জেনে নিন আপনার লোনের জন্য জামানত লাগবে কিনা এবং যদি লাগে, তাহলে আপনি তা দিতে পারবেন কিনা।
লোন বিভিন্ন প্রকার হতে পারে, যেমন:
বিভিন্ন লোনের জন্য বিভিন্ন ধরনের কাগজপত্র লাগে। সাধারণত যে কাগজপত্রগুলো লাগে তা হলো:
লোনের জন্য আবেদন করা এখন অনেক সহজ। আপনি সরাসরি ব্যাংক শাখাVisit করতে পারেন অথবা অনলাইনেও আবেদন করতে পারেন।
লোন পেতে কত দিন লাগবে, তা নির্ভর করে ব্যাংক এবং লোনের ধরনের ওপর। সাধারণত কয়েক দিন থেকে কয়েক সপ্তাহ পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।
স্বপ্নের বাড়ি কিনতে চান? জেনে নিন SBI, BoB ও UBI-এর সুলভ হোম লোনের সুদের হার
ব্যাংক থেকে লোন নেওয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত। লোন নেওয়ার আগে নিজেকে এই ১০টি প্রশ্ন করুন এবং সব দিক বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিন। এতে আপনি একটি সঠিক ও লাভজনক সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন এবং আপনার আর্থিক ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত রাখতে পারবেন। মনে রাখবেন, সঠিক পরিকল্পনা ও বিবেচনার মাধ্যমে লোন আপনার জীবনের স্বপ্ন পূরণে সহায়ক হতে পারে।
মন্তব্য করুন