বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে অনেকেই ছোট পুঁজি নিয়ে ব্যবসা শুরু করতে চান। কিন্তু প্রশ্ন থেকে যায়, মাত্র ১০ হাজার টাকা দিয়ে কি কোনো লাভজনক ব্যবসা শুরু করা সম্ভব? উত্তর হ্যাঁ, সম্ভব। আজ আমরা আপনাদের জন্য এমন ২৫টি ব্যবসার আইডিয়া নিয়ে এসেছি যা আপনি মাত্র ১০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করে শুরু করতে পারেন।
এই ব্যবসাগুলো শুরু করতে বেশি পুঁজির প্রয়োজন নেই, কিন্তু সঠিক পরিকল্পনা ও পরিশ্রমের মাধ্যমে এগুলো থেকে প্রচুর আয় করা সম্ভব। গবেষণা অনুযায়ী, প্রতি বছর প্রায় ২ লক্ষ নতুন ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠছে। এর মধ্যে ৬০% ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ১০ হাজার থেকে ১ লক্ষ টাকার মধ্যে বিনিয়োগ করে শুরু হয়েছে।
বর্তমানে অনলাইন ফুড ডেলিভারি ব্যবসা খুবই জনপ্রিয়। আপনি বাসায় রান্না করে অনলাইনে অর্ডার নিয়ে ডেলিভারি দিতে পারেন। এজন্য শুধু একটি স্মার্টফোন ও ইন্টারনেট কানেকশন লাগবে।
যদি আপনার পড়াশোনায় দক্ষতা থাকে তাহলে বাসায় বসে টিউশন নিতে পারেন। এতে কোনো বিনিয়োগের প্রয়োজন নেই।
ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে কনটেন্ট রাইটিং এর চাহিদা বেশি। একটি কম্পিউটার বা ল্যাপটপ দিয়েই এই কাজ শুরু করা যায়।
কম খরচে সুন্দর হ্যান্ডমেড জুয়েলারি তৈরি করে অনলাইনে বিক্রি করতে পারেন। এর জন্য ৫-৭ হাজার টাকা বিনিয়োগ করলেই চলবে।
Aadhar Verification: ভুল হওয়ার আগে দ্রুত কাজটি করে ফেলুন, না হলে বিপদে পড়বেন
মোবাইল মেরামতের প্রশিক্ষণ নিয়ে এই ব্যবসা শুরু করা যায়। প্রয়োজনীয় টুলস কিনতে ১০ হাজার টাকা যথেষ্ট।
যে কোন বিষয়ে দক্ষ হলে অনলাইনে কোচিং দিতে পারেন। এজন্য শুধু একটি ল্যাপটপ ও ইন্টারনেট কানেকশন লাগবে।
একটি ভালো ক্যামেরা কিনে ফটোগ্রাফির ব্যবসা শুরু করা যায়। বিয়ে বা অনুষ্ঠানের ছবি তুলে ভালো আয় করা সম্ভব।
ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে গ্রাফিক ডিজাইনের চাহিদা বেশি। একটি কম্পিউটার দিয়েই এই কাজ শুরু করা যায়।
নিজের পছন্দের বিষয়ে ভিডিও তৈরি করে ইউটিউব চ্যানেল খুলতে পারেন। এতে কোনো বিনিয়োগের প্রয়োজন নেই।
Zero Investment Business: ১০টি বিনা পুঁজির ব্যবসা যা আপনার স্বপ্নকে বাস্তবে পরিণত করবে(
বাসায় বসে কেক, পিঠা, বিস্কুট ইত্যাদি তৈরি করে বিক্রি করতে পারেন। এজন্য ৫-৭ হাজার টাকা বিনিয়োগ করলেই চলবে।
চীন থেকে সস্তায় পণ্য আমদানি করে অনলাইনে বিক্রি করতে পারেন। এজন্য ১০ হাজার টাকা যথেষ্ট।
একটি সেলাই মেশিন কিনে টেইলরিং ব্যবসা শুরু করা যায়। এতে ৮-১০ হাজার টাকা লাগবে।
ছোট পুকুরে মাছ চাষ করে ভালো লাভ করা যায়। এজন্য ১০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করলেই চলবে।
বাড়ির আঙিনায় হাঁস-মুরগি পালন করে ডিম ও মাংস বিক্রি করা যায়। এতে ৭-৮ হাজার টাকা লাগবে।
বাসায় বসে মশলা প্রক্রিয়াজাত করে প্যাকেটজাত করে বিক্রি করতে পারেন। এজন্য ৫-৭ হাজার টাকা যথেষ্ট।
একটি ছোট প্রিন্টার কিনে ছাপাখানার ব্যবসা শুরু করা যায়। এতে ১০ হাজার টাকা লাগবে।
মৌমাছি পালন করে মধু উৎপাদন ও বিক্রি করা যায়। এজন্য ৮-১০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করলেই চলবে।
নিজের পছন্দের বিষয়ে ব্লগ লিখে অ্যাডসেন্স থেকে আয় করা যায়। এতে কোনো বিনিয়োগের প্রয়োজন নেই।
ছোটখাটো অনুষ্ঠান আয়োজনের দায়িত্ব নিয়ে ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের ব্যবসা শুরু করা যায়।
ব্যস্ত মানুষদের জন্য শপিং করে দেওয়ার সেবা দিতে পারেন। এতে কোনো বিনিয়োগের প্রয়োজন নেই।
বাসায় বসে হাতে তৈরি মোমবাতি বানিয়ে বিক্রি করতে পারেন। এজন্য ৫-৭ হাজার টাকা যথেষ্ট।
ছোট জায়গায় ফুল চাষ করে বা হোলসেল থেকে কিনে রিটেইলে বিক্রি করতে পারেন।
পোষা প্রাণীদের দেখাশোনা ও যত্ন নেওয়ার সেবা দিতে পারেন। এতে কোনো বিনিয়োগের প্রয়োজন নেই।
অনলাইনে পণ্য বিক্রি করে সাপ্লায়ারের কাছ থেকে সরাসরি ক্রেতার কাছে পাঠানোর ব্যবসা।
ছোট ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট পরিচালনার দায়িত্ব নিতে পারেন।
– ব্যবসা শুরু করার আগে ভালোভাবে মার্কেট রিসার্চ করুন
– আপনার দক্ষতা ও আগ্রহের সাথে মিল রেখে ব্যবসা বাছাই করুন
– প্রথম দিকে খরচ কম রাখুন ও ধীরে ধীরে ব্যবসা বাড়ান
– গ্রাহক সেবায় বিশেষ নজর দিন
– সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিয়মিত প্রচারণা চালান
– হিসাব-নিকাশ সঠিকভাবে রাখুন
বাংলাদেশ সরকারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দেশে প্রতি বছর গড়ে ৫ লক্ষেরও বেশি নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প খাতে। এর মধ্যে ৪০% কর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে ১০ হাজার থেকে ১ লক্ষ টাকা বিনিয়োগের মাধ্যমে শুরু হওয়া ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে।
তাই আপনিও যদি কম পুঁজি নিয়ে ব্যবসা শুরু করতে চান, তাহলে উপরের যেকোনো একটি আইডিয়া বেছে নিয়ে আজই শুরু করে দিন। মনে রাখবেন, সফলতার জন্য শুধু টাকা নয়, পরিশ্রম ও ধৈর্যের প্রয়োজন। সঠিক পরিকল্পনা ও অধ্যবসায়ের মাধ্যমে আপনিও হয়ে উঠতে পারেন সফল উদ্যোক্তা।
মন্তব্য করুন