India’s Startup Ecosystem: ৫টি সরকারি প্রকল্প যা স্টার্টআপকে অন্যমাত্রায় রূপান্তরিত করছে

5 government projects for startups: ভারতের অর্থনৈতিক পরিদৃশ্যে স্টার্টআপগুলি এক নতুন যুগের সূচনা করেছে। সরকার এই ক্ষেত্রের প্রসারের জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। আসুন জেনে নেই এমন পাঁচটি প্রকল্প সম্পর্কে…

Srijita Chattopadhay

 

5 government projects for startups: ভারতের অর্থনৈতিক পরিদৃশ্যে স্টার্টআপগুলি এক নতুন যুগের সূচনা করেছে। সরকার এই ক্ষেত্রের প্রসারের জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। আসুন জেনে নেই এমন পাঁচটি প্রকল্প সম্পর্কে যা ভারতের স্টার্টআপ ইকোসিস্টেমকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাচ্ছে।

১. স্টার্টআপ ইন্ডিয়া সিড ফান্ড স্কিম:

ভারত সরকার ২০১৬ সালে এই প্রকল্প চালু করে, যার মূল উদ্দেশ্য হল প্রাথমিক পর্যায়ের স্টার্টআপগুলিকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা। এই প্রকল্পের অধীনে, যোগ্য স্টার্টআপগুলি ২০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত অনুদান পেতে পারে।

প্রকল্পের মূল বৈশিষ্ট্য:

  • অনুদানের পরিমাণ: সর্বোচ্চ ২০ লক্ষ টাকা
  • যোগ্যতা: নতুন ও উদ্ভাবনী ধারণা সহ স্টার্টআপ
  • প্রয়োজনীয় নথি: বিস্তারিত প্রকল্প প্রস্তাব, টিম সদস্যদের বায়োডাটা, প্রযুক্তিগত বিবরণ

এই প্রকল্প শুধু আর্থিক সহায়তাই নয়, বরং মেন্টরশিপ, নেটওয়ার্কিং সুযোগ এবং বাজার সংযোগও প্রদান করে। ২০২৩ সালের তথ্য অনুযায়ী, এই প্রকল্পের মাধ্যমে ৭৫০০-এর বেশি স্টার্টআপ উপকৃত হয়েছে।

২. স্ট্যান্ড আপ ইন্ডিয়া স্কিম:

২০১৬ সালে চালু হওয়া এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য হল মহিলা এবং তপশিলি জাতি/উপজাতি উদ্যোক্তাদের সহায়তা করা। এটি শুধু স্টার্টআপের জন্য নয়, বরং যেকোনো ধরনের উদ্যোগের জন্য প্রযোজ্য।

প্রকল্পের প্রধান বৈশিষ্ট্য:

  • ঋণের পরিমাণ: ১০ লক্ষ থেকে ১ কোটি টাকা
  • সুবিধা: সহজ ঋণ প্রক্রিয়া ও তুলনামূলকভাবে কম সুদের হার
  • ঋণের মেয়াদ: সর্বোচ্চ ৭ বছর

২০২৩ সালের মার্চ পর্যন্ত, এই প্রকল্পের মাধ্যমে প্রায় ১.৪ লক্ষ ঋণ মঞ্জুর করা হয়েছে, যার মোট মূল্য ৩২,০০০ কোটি টাকারও বেশি।

৩. আত্মনির্ভর ভারত রোজগার যোজনা:

কোভিড-১৯ মহামারির প্রভাব মোকাবেলায় ২০২০ সালের অক্টোবরে এই প্রকল্প চালু করা হয়। এর মূল উদ্দেশ্য ছিল কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং নতুন নিয়োগকে উৎসাহিত করা।

প্রকল্পের মূল বৈশিষ্ট্য:

  • সহায়তা: কর্মচারীদের ইপিএফ অংশদানে সরকারি অনুদান
  • যোগ্যতা: ১০০০ বা তার কম কর্মচারী সহ প্রতিষ্ঠান
  • সময়কাল: ২ বছর (সেপ্টেম্বর ২০২০ থেকে মার্চ ২০২২)

২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত, এই প্রকল্পের মাধ্যমে প্রায় ৬০ লক্ষ কর্মচারী উপকৃত হয়েছেন। যদিও এটি সরাসরি স্টার্টআপ-কেন্দ্রিক নয়, তবে অনেক নতুন ও ছোট উদ্যোগ এর মাধ্যমে উপকৃত হয়েছে।

৪. প্রধানমন্ত্রী মুদ্রা যোজনা:

২০১৫ সালে চালু হওয়া এই প্রকল্প ক্ষুদ্র ব্যবসায় ও স্টার্টআপগুলিকে সহজ শর্তে ঋণ প্রদান করে। এটি বিশেষভাবে অপ্রাতিষ্ঠানিক ক্ষেত্রের উদ্যোক্তাদের জন্য সহায়ক।

প্রকল্পের প্রধান বৈশিষ্ট্য:

  • ঋণের ধরন: শিশু (৫০,০০০ টাকা পর্যন্ত), কিশোর (৫০,০০০ থেকে ৫ লক্ষ টাকা), তরুণ (৫ লক্ষ থেকে ১০ লক্ষ টাকা)
  • জামানত: ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণের জন্য কোনো জামানত প্রয়োজন নেই
  • ব্যবহার: কার্যকরী মূলধন ও সম্পদ সৃষ্টির জন্য

২০২৩ সালের মার্চ পর্যন্ত, এই প্রকল্পের মাধ্যমে প্রায় ৩৭ কোটি ঋণ মঞ্জুর করা হয়েছে, যার মোট মূল্য ২০ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি।

৫. ফান্ড অফ ফান্ডস ফর স্টার্টআপস:

২০১৬ সালে চালু হওয়া এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য হল স্টার্টআপগুলিতে বিনিয়োগকারী ফান্ডগুলিকে সহায়তা করা। এটি ভারতীয় স্টার্টআপ ইকোসিস্টেমকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে পরিচালিত হচ্ছে।

প্রকল্পের মূল বৈশিষ্ট্য:

  • তহবিলের আকার: ১০,০০০ কোটি টাকা
  • কার্যক্রম: অল্টারনেটিভ ইনভেস্টমেন্ট ফান্ডগুলিতে বিনিয়োগ
  • লক্ষ্য: ২০২৫ সালের মধ্যে ৫০,০০০ কোটি টাকার ইকুইটি সাপোর্ট প্রদান

২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত, এই প্রকল্পের মাধ্যমে ৯৬টি স্টার্টআপ ফান্ডে ৭,৩৮৫ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে, যা ১,০২৪টি স্টার্টআপকে সহায়তা করেছে।

 এই পাঁচটি প্রকল্প ভারতের স্টার্টআপ ইকোসিস্টেমকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাচ্ছে। এগুলি শুধু আর্থিক সহায়তাই নয়, বরং একটি সমৃদ্ধ পরিবেশ তৈরি করছে যেখানে নতুন ধারণাগুলি বাস্তবে রূপ নিতে পারে। তবে, চ্যালেঞ্জ এখনও রয়েছে। আগামী দিনগুলিতে এই প্রকল্পগুলির প্রভাব আরও বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা যায়।

About Author
Srijita Chattopadhay

সৃজিতা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় স্নাতক। তিনি একজন প্রতিশ্রুতিশীল লেখক এবং সাংবাদিক, যিনি তার লেখা দ্বারা বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির সমৃদ্ধি তুলে ধরতে সদা উদ্যমী। সৃজিতার লেখার ধারা মূলত সাহিত্য, সমাজ এবং সংস্কৃতির বিভিন্ন দিককে ঘিরে আবর্তিত হয়, যেখানে তিনি তার গভীর পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা ও বিশ্লেষণী দক্ষতার পরিচয় দেন। তাঁর নিবন্ধ ও প্রতিবেদনগুলি পাঠকদের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে, যা তার বস্তুনিষ্ঠতা ও সংবেদনশীলতার পরিচয় বহন করে। সৃজিতা তার কর্মজীবনে ক্রমাগত নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে বদ্ধপরিকর, যা তাকে বাংলা সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যতের দিকে নিয়ে যাচ্ছে।