Benefits of mutual funds: মিউচুয়াল ফান্ড হল একটি জনপ্রিয় বিনিয়োগ মাধ্যম যা বিনিয়োগকারীদের অর্থ একত্রিত করে বিভিন্ন ধরনের সিকিউরিটিজে বিনিয়োগ করে। এটি সাধারণত পেশাদার পোর্টফোলিও ম্যানেজারদের দ্বারা পরিচালিত হয় এবং বিনিয়োগকারীদের জন্য বিভিন্ন সুবিধা প্রদান করে। বর্তমানে ভারতে প্রায় ৪৫% পরিবার মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করে থাকে। আসুন জেনে নেই মিউচুয়াল ফান্ডের প্রধান সুবিধাগুলি কী কী।
মিউচুয়াল ফান্ডের একটি বড় সুবিধা হল এর পেশাদার পোর্টফোলিও ব্যবস্থাপনা। অভিজ্ঞ ফান্ড ম্যানেজাররা সারাদিন বাজার পর্যবেক্ষণ করে থাকেন এবং বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে সর্বোত্তম সিদ্ধান্ত নেন। তাঁরা নিয়মিত পোর্টফোলিও পুনর্বিন্যাস করেন যাতে স্কিমের উদ্দেশ্য পূরণ হয়। এর ফলে বিনিয়োগকারীরা নিজেদের সময় ও দক্ষতা ব্যয় না করেই পেশাদার বিনিয়োগ পরিচালনার সুবিধা পান।
মিউচুয়াল ফান্ড বিভিন্ন ধরনের সিকিউরিটিতে বিনিয়োগ করে ঝুঁকি কমানোর সুযোগ দেয়। একটি ইক্যুইটি মিউচুয়াল ফান্ড সাধারণত ৫০-২০০টি বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগ করে থাকে। এর ফলে কোনো একটি কোম্পানির খারাপ পারফরম্যান্সের প্রভাব সামগ্রিক পোর্টফোলিওতে কম পড়ে। এভাবে বিনিয়োগকারীরা একসাথে অনেক সিকিউরিটিতে বিনিয়োগের সুযোগ পান।
ফ্রিল্যান্সার হয়ে মাসে ১ লাখ টাকা আয় করুন, এই ৭টি টিপস অবশ্যই জানতে
মিউচুয়াল ফান্ডে অল্প টাকা দিয়েও বিনিয়োগ করা যায়। অধিকাংশ ফান্ডে মাত্র ৫০০-১০০০ টাকা দিয়েও বিনিয়োগ শুরু করা যায়। এছাড়া সিস্টেম্যাটিক ইনভেস্টমেন্ট প্ল্যান (SIP) এর মাধ্যমে প্রতি মাসে ছোট ছোট অঙ্কে বিনিয়োগ করে ধীরে ধীরে বড় অঙ্কের সম্পদ গড়ে তোলা যায়।
মিউচুয়াল ফান্ডের আরেকটি বড় সুবিধা হল এর উচ্চ তারল্য। ওপেন-এন্ডেড মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট যে কোনো কার্যদিবসে বিক্রি করে টাকা তোলা যায়। রিডেম্পশনের ১-৩ দিনের মধ্যেই টাকা ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা হয়ে যায়। তবে ELSS ফান্ডের ক্ষেত্রে ৩ বছরের লক-ইন পিরিয়ড থাকে।
মিউচুয়াল ফান্ডগুলি অত্যন্ত স্বচ্ছ। প্রতিটি স্কিমের বিস্তারিত তথ্য ফান্ড হাউসের ওয়েবসাইটে পাওয়া যায়। এছাড়া প্রতিদিন নেট অ্যাসেট ভ্যালু (NAV) প্রকাশ করা হয় যাতে বিনিয়োগকারীরা তাদের বিনিয়োগের মূল্য জানতে পারেন।
ELSS মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করলে আয়কর আইনের ৮০C ধারায় ১.৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত কর ছাড় পাওয়া যায়। এছাড়া দীর্ঘমেয়াদী মিউচুয়াল ফান্ড বিনিয়োগে কর সুবিধা পাওয়া যায়।
মিউচুয়াল ফান্ডের পরিচালন ব্যয় তুলনামূলকভাবে কম। বর্তমানে ইক্যুইটি ওরিয়েন্টেড ফান্ডের গড় ব্যয় অনুপাত মাত্র ০.৪৪%। এর ফলে বিনিয়োগকারীরা কম খরচে পেশাদার পোর্টফোলিও ব্যবস্থাপনার সুবিধা পান।
শেয়ার বাজারে বিনিয়োগের সর্বনিম্ন পরিমাণ: ৫,০০০ টাকা থেকে শুরু কর
মিউচুয়াল ফান্ডের বিভিন্ন প্রকারভেদ রয়েছে যা বিভিন্ন ধরনের বিনিয়োগকারীদের চাহিদা পূরণ করে। নিচের টেবিলে বিভিন্ন ধরনের মিউচুয়াল ফান্ডের গড় বার্ষিক রিটার্ন দেখানো হলো:
ফান্ডের ধরন | ১ বছরের রিটার্ন | ৩ বছরের রিটার্ন | ৫ বছরের রিটার্ন |
---|---|---|---|
লার্জ ক্যাপ ইক্যুইটি | ১২.৫% | ১৫.২% | ১৩.৮% |
মিড ক্যাপ ইক্যুইটি | ১৬.৮% | ১৮.৭% | ১৫.৯% |
স্মল ক্যাপ ইক্যুইটি | ২০.৩% | ২২.১% | ১৭.৫% |
ব্যালান্সড অ্যাডভান্টেজ | ১০.২% | ১২.৮% | ১১.৬% |
ডেট ফান্ড | ৬.৫% | ৭.৮% | ৭.২% |
সূত্র: AMFI ডেটা, সেপ্টেম্বর ২০২৩
মিউচুয়াল ফান্ডের অনেক সুবিধা থাকলেও কিছু অসুবিধাও রয়েছে যা বিনিয়োগকারীদের বিবেচনা করা উচিত:
মিউচুয়াল ফান্ড বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি আকর্ষণীয় বিনিয়োগ মাধ্যম। এর পেশাদার ব্যবস্থাপনা, ঝুঁকি বিভাজন, সাশ্রয়ী মূল্য, তারল্য ও স্বচ্ছতার মতো সুবিধাগুলি বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করে। তবে বিনিয়োগের আগে ফান্ডের ব্যয় অনুপাত, পারফরম্যান্স ও ঝুঁকি ভালভাবে বুঝে নেওয়া উচিত। সামগ্রিকভাবে, মিউচুয়াল ফান্ড দীর্ঘমেয়াদী সম্পদ সৃষ্টির একটি কার্যকর মাধ্যম হিসেবে বিবেচিত হয়।
মন্তব্য করুন