Aadhaar card shutdown news: ভারতের নাগরিকদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ খবর সামনে এসেছে আধার কার্ড নিয়ে। ইউনিক আইডেন্টিফিকেশন অথরিটি অফ ইন্ডিয়া (UIDAI) সম্প্রতি জানিয়েছে যে, যাদের আধার কার্ড ১০ বছরেরও বেশি পুরোনো, তাদের অবিলম্বে তথ্য আপডেট করতে হবে। এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন না করলে আধার কার্ড বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।UIDAI-এর এই সিদ্ধান্তের পিছনে মূল উদ্দেশ্য হল আধার ডাটাবেসে থাকা তথ্যের সঠিকতা নিশ্চিত করা।
বর্তমানে ভারতে প্রায় ১৩৯ কোটি আধার কার্ড রয়েছে, যার মধ্যে অনেকগুলিই ১০ বছরেরও বেশি পুরোনো। এই দীর্ঘ সময়ের মধ্যে অনেক ব্যক্তির ঠিকানা, ফোন নম্বর বা অন্যান্য ব্যক্তিগত তথ্য পরিবর্তিত হয়ে থাকতে পারে। ফলে, এই তথ্য আপডেট না করলে সরকারি পরিষেবা পেতে সমস্যা হতে পারে।আধার কার্ড আপডেট করার জন্য UIDAI একটি সহজ প্রক্রিয়া চালু করেছে। নাগরিকরা অনলাইনে myAadhaar পোর্টালে গিয়ে তাদের তথ্য আপডেট করতে পারবেন। এই প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণ বিনামূল্যে করা যাবে ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪ পর্যন্ত। এর পরে আপডেট করতে গেলে ফি দিতে হবে।আপডেট করার সময় নাগরিকদের তাদের বর্তমান ঠিকানা, ফোন নম্বর, ইমেল আইডি ইত্যাদি তথ্য দিতে হবে। এছাড়াও প্রয়োজনীয় নথি যেমন ভোটার কার্ড, পাসপোর্ট, ড্রাইভিং লাইসেন্স ইত্যাদির স্ক্যান কপি আপলোড করতে হবে। UIDAI জানিয়েছে, এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে মাত্র কয়েক মিনিট সময় লাগবে।
Aadhar Verification: ভুল হওয়ার আগে দ্রুত কাজটি করে ফেলুন, না হলে বিপদে পড়বেন
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই পদক্ষেপ আধার ব্যবস্থাকে আরও নিরাপদ ও কার্যকর করবে। আপডেটেড তথ্য থাকলে সরকারি পরিষেবা প্রদান আরও সহজ হবে এবং জালিয়াতির সম্ভাবনা কমবে। তবে এর জন্য নাগরিকদের সহযোগিতা অত্যন্ত জরুরি।গত কয়েক বছরে আধার কার্ডের ব্যবহার ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২৩ সালের হিসাব অনুযায়ী, ভারতের মোট জনসংখ্যার ৯৩% এর বেশি মানুষের আধার কার্ড রয়েছে। এটি শুধুমাত্র পরিচয়পত্র হিসেবে নয়, বরং বিভিন্ন আর্থিক লেনদেন, সরকারি ভর্তুকি প্রাপ্তি, ট্যাক্স ফাইলিং ইত্যাদি ক্ষেত্রেও ব্যবহৃত হচ্ছে। ২০২৩ সালে আধার অথেন্টিকেশন ট্রানজ্যাকশনের সংখ্যা ছিল ৯৪ বিলিয়নেরও বেশি, যা এর ব্যাপক ব্যবহারের প্রমাণ দেয়।UIDAI-এর এই সিদ্ধান্তের পিছনে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হল বায়োমেট্রিক তথ্যের আপডেট। ১০ বছর আগে যে শিশু বা কিশোরের আঙুলের ছাপ নেওয়া হয়েছিল, এখন তার শারীরিক পরিবর্তন হয়েছে।
ফলে, সেই পুরনো বায়োমেট্রিক তথ্য দিয়ে এখন অথেন্টিকেশন করা কঠিন হয়ে পড়তে পারে। তাই নতুন করে বায়োমেট্রিক তথ্য সংগ্রহ করা জরুরি।আধার কার্ড আপডেট না করলে কী ধরনের সমস্যা হতে পারে, সে বিষয়েও UIDAI স্পষ্ট করেছে। প্রথমত, পুরনো তথ্য থাকলে বিভিন্ন সরকারি পরিষেবা পেতে অসুবিধা হতে পারে। যেমন, ভর্তুকি প্রাপ্তি, পেনশন, রেশন কার্ডের সুবিধা ইত্যাদি ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দিতে পারে। দ্বিতীয়ত, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলা, সিম কার্ড নেওয়া বা অন্যান্য আর্থিক লেনদেনে অসুবিধা হতে পারে। তৃতীয়ত, পুরনো বায়োমেট্রিক তথ্য থাকলে অথেন্টিকেশনে সমস্যা হতে পারে, যার ফলে আধার কার্ড অকার্যকর হয়ে পড়তে পারে।তবে UIDAI জানিয়েছে, আধার কার্ড আপডেট না করলেও এটি সম্পূর্ণভাবে বাতিল হয়ে যাবে না।
কিন্তু এর ব্যবহার সীমিত হয়ে যাবে এবং বিভিন্ন পরিষেবা পেতে সমস্যা হতে পারে। তাই সবাইকে যত দ্রুত সম্ভব আধার কার্ড আপডেট করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।আধার কার্ড আপডেট করার প্রক্রিয়াটি খুবই সহজ। প্রথমে myAadhaar পোর্টালে গিয়ে লগইন করতে হবে। এরপর ‘Update Aadhaar’ অপশনে ক্লিক করে প্রয়োজনীয় তথ্য দিতে হবে। যদি শুধু ঠিকানা পরিবর্তন করতে হয়, তাহলে সেটি অনলাইনেই করা যাবে। কিন্তু যদি নাম, জন্ম তারিখ বা বায়োমেট্রিক তথ্য পরিবর্তন করতে হয়, তাহলে নিকটস্থ আধার কেন্দ্রে যেতে হবে।UIDAI আরও জানিয়েছে, আধার কার্ড আপডেট করার পর নতুন করে কার্ড ডাউনলোড করতে হবে। এই নতুন কার্ডে একটি QR কোড থাকবে, যা আরও নিরাপদ ও সহজে যাচাই করা যাবে।
Adhar Card at Home: ঘরে বসে আধার কার্ড কিভাবে বানাবেন: সম্পূর্ণ গাইড
এছাড়াও, নতুন আধার কার্ডে একটি সিকিউরিটি ফিচার যুক্ত করা হয়েছে, যা জালিয়াতি রোধে সাহায্য করবে।বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, UIDAI-এর এই পদক্ষেপ আধার ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করবে। আপডেটেড তথ্য থাকলে সরকারি পরিষেবা প্রদান আরও সুষ্ঠু ও কার্যকর হবে। এছাড়াও, এটি ডিজিটাল ইন্ডিয়া মিশনের লক্ষ্য অর্জনে সহায়ক হবে।তবে এই প্রক্রিয়ায় কিছু চ্যালেঞ্জও রয়েছে। যেমন, গ্রামাঞ্চলে অনেকেরই ইন্টারনেট সুবিধা নেই, যার ফলে তারা অনলাইনে আপডেট করতে পারবেন না। এছাড়াও, বয়স্ক ব্যক্তিদের জন্য এই প্রক্রিয়া কিছুটা জটিল মনে হতে পারে। এসব ক্ষেত্রে UIDAI-কে বিশেষ ব্যবস্থা নিতে হবে।
সামগ্রিকভাবে, আধার কার্ড আপডেট করার এই প্রক্রিয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি শুধু ব্যক্তিগত সুবিধার জন্য নয়, দেশের সামগ্রিক উন্নয়নের জন্যও প্রয়োজনীয়। তাই প্রতিটি নাগরিকের উচিত যত দ্রুত সম্ভব তাদের আধার কার্ড আপডেট করা। এতে করে তারা নিশ্চিত করতে পারবেন যে তাদের আধার কার্ড সক্রিয় থাকবে এবং তারা সব ধরনের সরকারি পরিষেবা নির্বিঘ্নে পেতে পারবেন।