Sourav Saha as a Ramkrishna Deb: তাকে দেখলেই মনে হয় স্বয়ং যুগাবতার রামকৃষ্ণ, এমনকি তিনি শ্যুটিং করতে সেটে গেলেও তাকে রামকৃষ্ণ বলেই চেনেন সকলে। রামকৃষ্ণ চরিত্রে তাকে এতটাই পারফেক্ট ভাবে মানায় যে জি বাংলার (Zee Bangla) করুণাময়ী রানী রাসমণি ধারাবাহিকের পর আবারও স্টার জলসার (Star Jalsha) ভক্তির সাগর ধারাবাহিকে তাকেই রামকৃষ্ণ চরিত্রে বেছে নেওয়া হয়। বাংলা টেলিভিশন জগতের প্রথম সারির দুটো প্রতিপক্ষ চ্যানেলেই একই চরিত্রের অফার যায় তার কাছে, তিনি হলেন জনপ্রিয় অভিনেতা সৌরভ সাহা।
বঁধুয়া ধারাবাহিকের রঙ্গন, নিম ফুলের মধুর চন্দনের মত চরিত্র করলেও যার পরিচিতি রামকৃষ্ণ চরিত্রের জন্যেই অথচ সেই সৌরভ সাহা একান্ত ব্যক্তিগত সাক্ষাৎকারে বলেন, তাকে কিন্তু মোটেও রামকৃষ্ণের মত দেখতে নয় বা রামকৃষ্ণও তার মত দেখতে ছিলেন না, এই সবটাই মেকআপ, অভিনয় ক্ষমতা ও প্রচলিত মুদ্রার প্রয়োগে সম্ভব হয়েছে।
কলকাতার সেরা ১০ বনেদি বাড়ির পুজো: ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির মিলনমেলা
ঠাকুর চরিত্রের সাথে সৌরভের চেহারার একটা অদ্ভুত সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়- এই প্রশ্নের উত্তরে অভিনেতা সৌরভ সাহার স্পষ্ট জবাব,“ চেহারার সাদৃশ্য কতটা আছে জানি না, কিছুটা হয়তো আছে তবে ভালো করে ঠাকুরের ছবি এবং আমার ছবি পাশাপাশি দেখলে বোঝা যায় ঠিক চেহারার সাদৃশ্য নয়,দুটো চেহারা আলাদা। কিছুটা মেকাপের কামাল আর কিছুটা এক্সপ্রেশন । আসলে রাণী রাসমণিতে রামকৃষ্ণ চরিত্র করার আগেও আমি দুই বার রামকৃষ্ণ চরিত্র করেছি সেখানে দেবী হালদার নামের একজন স্বনামধন্য মেকআপ আর্টিস্ট ছিলেন তিনি এই রামকৃষ্ণ চরিত্রের ছোট ছোট ডিটেলিং আমাকে শিখিয়েছিলেন। তারপর যখন আমি এই ধারাবাহিক করতে আসি তখন সেই ডিটেলিংগুলো আমি আমার মেকআপ আর্টিস্ট রবিন দা কে বলে দিয়েছিলাম আর আমি ঠাকুরের ছবিগুলো খুব দেখতাম, দেখে বুঝবার চেষ্টা করতাম, ঠিক কোন কোন মুদ্রা কাজে লাগালে মনে হবে, ঠাকুরের এক্সপ্রেশনের কাছাকাছি হয়েছে। তার সাথে যখন আমি দাড়ি রাখলাম এবং দাড়িটা যখন একটা শেপ নিল তখন দেখলাম মোটামুটি একটা লুক ক্রিয়েট হয়েছে,তার সাথে মেকআপ টা তো বললাম,তার সাথে এক্সপ্রেশন সমস্ত কিছু মিলিয়ে মিশিয়ে অদ্ভুত ভাবে কিছুটা ঠাকুরের মতোই আমাকে দেখতে লাগতো।”
এমন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক যাতে অপরাধ করার আগেই ভয়ের সঞ্চার হয়’- অভিনেতা
তাকে ঠাকুর রামকৃষ্ণের মত দেখতে লাগলেও দুটো ছবি থেকে আরোপিত বিষয়গুলো আসতে আসতে সরাতে থাকলে বোঝা যায় দুটো মুখ পুরো আলাদা। এই প্রসঙ্গে অভিনেতা বলেন,“ যদি দুটো ছবি পাশাপাশি দেখেন, তাহলে মনে হবে অনেকটা এক, এরপর আপনি আমার চেহারার থেকে দাড়িটা, চুলটা, মেকআপটা সরাতে থাকলে বুঝবেন দুটো মুখের মধ্যে কোনো মিল নেই। কয়েকটা জিনিসের মধ্যে আমি খালি মিল রেখেছিলাম, ঠাকুরের ওই যে হাসিটা ছিলো অর্ধেক হাসি , সেই হাসিটা দেখে ভাবতাম এই মানুষটা যদি পুরোপুরি হাসতো তাহলে কীভাবে হাসতো, এই ব্যাপারগুলো একজন অভিনেতা হিসেবে চেষ্টা করেছিলাম, এই বিষয়গুলো দেখে দর্শকের কোথাও মনে হয়েছে দুটো চেহারা এক।”
কিন্তু এত পার্থক্য থাকলেও রামকৃষ্ণ পরমহংস দেবকে মনে করলে সৌরভ সাহার মুখটাই মনে পড়ে এই প্রশ্নের উত্তরে অভিনেতা বলেন,“ আসলে চরিত্র করতে গিয়ে কি হয় একটা ছাপ পড়ে যায়, মানুষ হয়ত রামকৃষ্ণকে ভাবতে গেলে এখন আমার মুখটা ভেবে বসবেন, কিন্তু তার মানে এমনটা নয় যে, আমাকে ঠাকুরের মতো দেখতে। যেমন ধরুন যীশু দাকে দেখলেই আমরা মনে করি চৈতন্য। আসল চৈতন্য কে দেখতে কেমন ছিল সেটা ভুলেই গেছি। অভিনয়টা যে আমিই এমন করেছি তাও বলবো না, আসলে ঠাকুর আমাকে দিয়ে অভিনয়টা করিয়ে নিয়েছেন, আমি করার কে!”
‘নিজেদের ইমেজ বজায় রাখতে সবটা ধামাচাপা দিতে চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী’- অভিনেতা সুমন কুন্ডু
জনপ্রিয় এই অভিনেতাকে প্রশ্ন করা হয় তাকে কখনও চরিত্র বাছার ক্ষেত্রে বা কাজ করার ক্ষেত্রে
কম্প্রোমাইজ করতে হয়েছিল কিনা? এর উত্তরে অভিনেতা বলেন হ্যাঁ তাকেও কম্প্রোমাইজ করতে হয়েছে। অভিনেতার কথায়,“নিশ্চয়ই একশোবার। চরিত্র বাছার ক্ষেত্রে অবশ্যই কম্প্রোমাইজ করেছি কারণ সবসময় আমার ইমাজিনশনের সাথে চরিত্রটা শেষমেষ মেলে নি। হয়তো আমি ভেবেছি চরিত্রটাকে এমনভাবে শেড দেবো কিন্তু বাস্তবে দেখা গেলো শেষমেষ চরিত্রটা ওই জায়গায় গেল না। আসলে টিভি সিরিয়াল এমন একটা মাধ্যম না যেখানে অভিনেতার হাতে সবটুকু থাকে না, যে পরিচালক কাজ করছেন, যারা নির্মাতা তাদের ওপরও অনেক কিছু নির্ভর করে। সে ক্ষেত্রে অনেকবার অনেক সময় চরিত্র বাছা ভুল হয়ে যায়,তবে সব সময় যে জেনে বুঝে আমরা ভুল করি তা কিন্তু নয় অনেক সময় দেখা যায় হয়তো চরিত্রটিকে বাড়ানো যেত আরো বেশি কিন্তু সেই সময়টাই পাওয়া গেল না।”