Actor Suman Kundu Told about Incident of RG Kar: আর জি কর ও তিলোত্তমা প্রসঙ্গে রাজ্য রাজনীতি পুরো উত্তাল হয়ে আছে। রাজ্যের সীমানা পেরিয়ে প্রত্যেকটা মুহূর্তে একটু একটু করে আন্দোলন বিস্তৃত হয়ে যাচ্ছে, ঘরের মেয়ের তিলোত্তমার ন্যায় বিচার চাই। প্রত্যেকের একটাই দাবি উই ওয়ান্ট জাস্টিস। এই প্রসঙ্গে টলি পাড়ার জনপ্রিয় অভিনেতা সুমন কুন্ডুর সাথে বেশ দীর্ঘক্ষণ কথা হয়, ঘরোয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন ,“তিলোত্তমা নিয়ে সেই অর্থে আমার আলাদা করে কিছু বলার নেই কারণ যেটা হয়েছে সেটা সত্যিই খুব ঘৃণ্য, জঘন্য,ভাষা নেই সেটা ব্যক্ত করবার। এটা একটা সমাজের ব্যাধি। শরীরে,মনে যেরকম করে ব্যাধি হয়, সে রকম। এই ব্যাধি বহুদিন ধরে চলে আসছে কিন্তু যেটা হয়েছে এর আগেও অন্ধপ্রদেশে একটা ঘটনা ঘটেছিল যেখানে পুলিশ বলিউডি সিনেমার ধাঁচে এনকাউন্টার করে অপরাধীদের মেরে ফেলেছে, সেটা যেমন একদিকে ঠিক নয়, তেমনি আরেকদিকে এই যে সরকার নিজের স্বচ্ছ ইমেজ বজায় রাখার জন্য একের পর এক যেভাবে ধামাচাপা দিচ্ছে তথ্য-প্রমাণ সেটাও জঘন্য। এটা কোনও সভ্য সমাজের রীতি হতে পারে না।একদমই হতে পারে না।”
একই সাথে রামকৃষ্ণ খ্যাত অভিনেতা সুমন কুন্ডু বলেন,
,“আমাদের মাননীয়া যে অপরাজিতা বিল এনেছেন সেটা একটা ধাপ্পাবাজি ছাড়া আর কিছু নয় আসলে কোথাও একটা গন্ডগোল আছে যেটা উনিও জানেন যেটাকে চাপা দেওয়ার চেষ্টা চলছে। এর আগে শিক্ষা,খাদ্য ক্ষেত্রেও এমনটা হয়েছে
যেটা কিনা উনি জানেনই না। এখন স্বাস্থ্যতেও হল যেটা উনি কিছুদিন পর হেসে হেসে বলবেন, আমি জানতামই না।কী করে হল!তা হলে তো উনি আমাদের নেত্রী হতে পারেন না!নেত্রী তিনি যিনি সমস্ত দায়ভার নেবেন, হ্যাঁ ভুল হতে পারে কিন্তু এত বড় বড় ভুল হতে পারে না। এটা তো ইচ্ছাকৃত ভুল, সেই ভুল হতে পারে না।নিজেদের ইমেজ ঠিক রাখবার জন্য এটা উনি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছেন।”
আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে দুই মিছিল: নাগরিকদের ক্ষোভ উত্তাল টাকি!
বর্তমান সময়ে এত জনরোষ বেড়েছে,এর পেছনে কী কারণ এই প্রসঙ্গে অভিনেতা বলেন,“এই যে মানুষ বেরোচ্ছেন, মানুষ এখন এত ব্যস্ত এত আত্মকেন্দ্রিক তার পরেও এই যে জন রোষ, এই যে জনজাগরণ রাস্তায় রাস্তায় দেখা যাচ্ছে, এটা কীসের জন্য? শুধুমাত্র একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে? নাহ একদমই নয়। শুধুমাত্র একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে এতটা জনরোষ হতে পারে না। মানুষ সহ্য করতে করতে আর কত মানুষ সহ্য করবে?! আজ কে বলতে পারে আজকে যে ঘটনা ওই পরিবারের সাথে ঘটেছে তা আমার সাথে বা আমার পরিবারের সাথে ঘটবে না? তারপরেও তো অনেক ক্যাজুয়ালি একই কথা বলবেন!একটা জীবনের মূল্য ১০ লাখ টাকা? এটা কতদিন মানুষ সহ্য করবেন?উনি মহিলাদের একাউন্টে হাজার টাকা করে পাঠিয়ে সবার মুখ বন্ধ করতে পারবেন না।
এটা সম্ভব নয় – তো এই জনরোষ খুবই স্বাভাবিক।এই প্রতিবাদটা চলবেই আর আমার জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতি সম্পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। আর অভিনেতা বিধায়ক কাঞ্চন মল্লিক যে কথাটি বলেছেন তার আমি তীব্র প্রতিবাদ করছি। উনি একটা নাটকীয় ভঙ্গিতে এভাবে বলেছেন আর তার সরি ও চেয়েছেন একটা অন্যরকম নাটকীয় ভঙ্গিতে। আমি ব্যক্তিগত কাঞ্চনদাকেও চিনি কাঞ্চন দা এরকম মানুষ নন,উনি লড়াকু মানুষ,উনি কী করে বললেন,আমি জানিনা, ওই যে বললাম সৎ থাকা অনেস্ট থাকা একটা প্র্যাকটিস! বারবার মিথ্যে বলতে বলতে যেমন মিথ্যেটা সত্যি হয়ে যায় তেমনি মানুষ মেকি সাজতে সাজতে একটা সময় মেকি হয়ে যায়। জানে আমি তো এই করে ভালো আছি, তো ওইটারই একটা প্রকাশ হয়তো ঘটেছে। মতিভ্রম হয়েছে, আমি এটাকে মতিভ্রমই বলবো আর উনি জানেন না একটা বিধায়ক হয়ে যে ডাক্তাররা কোন মাইনে পান না, ডাক্তাররা স্ট্রাইফেন পান। এর একটা বিহিত হওয়া দরকার”
RG Kar Doctor Rape-Murder Case: বলিউড তারকাদের প্রতিবাদ: “নারীরা কোথাও নিরাপদ নয়”
অভিনেতাকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল এই যে ব্যাধি সামাজিক ব্যাধি এটাকে আটকানোর কোন উপায় আছে কি? এর উত্তরে পর্দার রামকৃষ্ণ হেসে বলেন, “
এর বিহিত যেটা আমি বললাম এটা একটা সামাজিক ব্যাধি কোন রুলস বা নিয়ম করে এটা আটকানো যাবে না, এটা মানুষের ভেতরেই মানুষকে পরিবর্তন আনতে হবে। সমাজে ভালো মানুষ যেমন আছে খারাপ মানুষও তেমনি আছে থাকবেও, তবে সংখ্যাটা যাতে কম হয় সেটা দেখতে হবে। ছোটো ছোটো বাচ্চা ছেলে মেয়ে যারা এগুলো দেখছে তারা ভবিষ্যতে যাতে এই ঘটনার সম্মুখীন না হয় জনজাগরণে তার একটা প্রভাব ফেলবে। এরকম পোলিও হয়েছিল আমাদের, পোলিওর ক্ষেত্রেও ভেবেছিল ১ বছর ২ বছর করে কি হবে কিন্তু ওটা যদি কন্টিনিউয়াসলি কুড়ি বছর ধরে করা যায় তাহলে নেক্সট জেনারেশনের মধ্যে আর পোলিও দেখা যাবে না ঠিক তেমনি এই যে জাগরণ হয়েছে এটা যদি কন্টিনিউয়াসলি চলতে থাকে তাহলে আজকের যে ছোট ছোট মেয়েরা রয়েছে বা ছেলেরা রয়েছে তারা শিখবে যে এইটা ঠিক নয় বা করা উচিত নয়, একজন ছেলেও জানবে যে এই রকম কাজ করা যাবে না , তো একজন ছেলের শিক্ষাটা বেশি হওয়া দরকার।”
এরপর মুখ্যমন্ত্রীর ১০ ঘন্টার নারীদের সিফটিং ডিউটি সম্পর্কে সুমন কুন্ডু বলেন,“ উনি যে বলেছেন ১০ ঘন্টার বেশি কাজ করা যাবে না, আমাদের ফিল্ম সিরিয়াল ইন্ডাস্ট্রিতেই তো ১৪ ঘন্টা কাজ করতে হয়। তো বাকি চার ঘণ্টা কে কাজ করবে? তাছাড়া আয়া মাসি থেকে অনেকেই রাতের দিকে কাজ করেন তাই এটা তো হতে পারে না। গন্ডগোল সর্বস্তরে আছে কিন্তু যদি এটার সত্যিকারের প্রতিকার চাই তাহলে আমাদের নিজেদের পরিবর্তন হতে হবে। তাহলে আমরা দল মত নির্বিশেষে আমরা একটা জাস্টিস পেতে পারি।”
মন্তব্য করুন