Adani Group Loan Waiver: গৌতম আদানির নেতৃত্বাধীন আদানি গ্রুপের ১০টি সংস্থার ৪৫,৮৫৫ কোটি টাকার ঋণ মকুব করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। এই খবর প্রকাশিত হওয়ার পর থেকেই বিরোধী দলগুলি কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা শুরু করেছে। বিরোধীদের অভিযোগ, মোদী সরকার কর্পোরেট স্বার্থে কাজ করছে এবং সাধারণ মানুষের স্বার্থ উপেক্ষা করছে।
সূত্র অনুযায়ী, গত কয়েক বছরে আদানি গ্রুপের ১০টি সংস্থা রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক থেকে মোট ৪৫,৮৫৫ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছিল। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকার এই বিপুল পরিমাণ ঋণ মকুব করে দিয়েছে। এর ফলে আদানি গ্রুপকে আর এই ঋণ শোধ করতে হবে না।
বিরোধী দলগুলি অভিযোগ করেছে যে, মোদী সরকার কৃষকদের ঋণ মকুব করতে নারাজ, কিন্তু বড় শিল্পপতিদের হাজার হাজার কোটি টাকার ঋণ মকুব করে দিচ্ছে। তারা বলছে, এটা স্পষ্টতই কর্পোরেট স্বার্থে কাজ করার প্রমাণ।
কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বলেছেন, “মোদী সরকার কৃষকদের ৭৫,০০০ কোটি টাকার ঋণ মকুব করতে অস্বীকার করেছে। কিন্তু আদানি গ্রুপের ৪৫,৮৫৫ কোটি টাকার ঋণ মকুব করে দিল। এটা কি ন্যায়সঙ্গত?”
বিনা সুদেই ২০ লক্ষ টাকা লোন দেবে সরকার কিভাবে আবেদন করবেন? কোথায় পাবেন?
সিপিএম নেতা বৃন্দা কারাত অভিযোগ করেছেন, “গত তিন বছরে কর্পোরেট সেক্টরের ৬.৮ লক্ষ কোটি টাকার ঋণ মকুব করা হয়েছে। এর ৭০% হল কর্পোরেট সেক্টরের ঋণ। এটা স্পষ্টতই সরকারের ধনীপন্থী নীতির প্রমাণ।”
তৃণমূল কংগ্রেস নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেছেন, “মোদী সরকার আদানি গ্রুপকে অযথা সুবিধা দিচ্ছে। এটা জনগণের টাকা নষ্ট করা ছাড়া আর কিছুই নয়।”
অন্যদিকে, সরকারি সূত্রে দাবি করা হয়েছে যে, এই ঋণ মকুব করা হয়নি, বরং underwrite করা হয়েছে। Underwriting এর অর্থ হল ঋণ দেওয়ার আগে ঋণগ্রহীতার ক্রেডিট যোগ্যতা যাচাই করা। সরকারি কর্মকর্তারা বলছেন, এটা একটি স্বাভাবিক ব্যাংকিং প্রক্রিয়া।
তবে বিরোধীরা এই যুক্তি মানতে নারাজ। তাদের অভিযোগ, সরকার আদানি গ্রুপকে অযথা সুবিধা দিচ্ছে। তারা দাবি করছে, এই বিষয়ে একটি সংসদীয় তদন্ত কমিটি গঠন করা হোক।
এদিকে, আদানি গ্রুপের ঋণের পরিমাণ ক্রমাগত বাড়ছে। গত বছরের তুলনায় চলতি অর্থবর্ষে আদানিদের ঋণের পরিমাণ প্রায় ২১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে আদানি গ্রুপের মোট ঋণের পরিমাণ প্রায় ২.৩ লক্ষ কোটি টাকা।
এই পরিস্থিতিতে আদানি গ্রুপ সম্প্রতি ২১,৮৯৮ কোটি টাকার ঋণ শোধ করেছে বলে জানিয়েছে। গ্রুপের দাবি, এটা বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য করা হয়েছে।
তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আদানি গ্রুপের ঋণের পরিমাণ এখনও উদ্বেগজনক। তারা মনে করেন, গ্রুপের আর্থিক অবস্থা নিয়ে সতর্ক থাকা দরকার।
এই ঘটনা নিয়ে দেশজুড়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, সরকার কর্পোরেট স্বার্থে কাজ করছে কি না তা খতিয়ে দেখা দরকার। অন্যদিকে সরকার পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে, এটা একটি স্বাভাবিক ব্যাংকিং প্রক্রিয়া।
যাই হোক, এই ঘটনা থেকে স্পষ্ট যে, আগামী দিনগুলোতে আদানি গ্রুপ নিয়ে বিতর্ক আরও বাড়বে। বিরোধীরা এই ইস্যুকে সামনে রেখে সরকারকে চাপে ফেলার চেষ্টা করবে। অন্যদিকে সরকারকেও এই বিষয়ে জনগণকে ব্যাখ্যা দিতে হবে।
আদানি গ্রুপের ঋণের পরিসংখ্যান
বিবরণ | পরিমাণ |
---|---|
মকুব করা ঋণের পরিমাণ | ৪৫,৮৫৫ কোটি টাকা |
বর্তমান মোট ঋণের পরিমাণ | ২.৩ লক্ষ কোটি টাকা |
গত বছরের তুলনায় ঋণ বৃদ্ধির হার | ২১% |
সম্প্রতি শোধ করা ঋণের পরিমাণ | ২১,৮৯৮ কোটি টাকা |
১. সরকার কি সত্যিই কর্পোরেট স্বার্থে কাজ করছে?
২. এত বড় অংকের ঋণ মকুব করা কি দেশের অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর নয়?
৩. কৃষকদের ঋণ মকুব না করে বড় শিল্পপতিদের ঋণ মকুব করা কি ন্যায়সঙ্গত?
৪. আদানি গ্রুপের ক্রমবর্ধমান ঋণের প্রভাব কী হতে পারে?
৫. এই ধরনের ঘটনা কি ভবিষ্যতে আরও ঘটতে পারে?
বন্ধন ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা চন্দ্রশেখর ঘোষের অবসর: বৃহত্তর লক্ষ্যে নতুন পথচলা
এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজতে গিয়ে আগামী দিনগুলোতে এই বিষয়ে আরও বিতর্ক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। জনগণের কাছে এই বিষয়ে সরকারকে ব্যাখ্যা দিতে হবে। অন্যদিকে বিরোধীরাও এই ইস্যুকে সামনে রেখে সরকারকে চাপে ফেলার চেষ্টা করবে।
যাই হোক, এই ঘটনা থেকে স্পষ্ট যে, দেশের অর্থনীতি ও রাজনীতিতে কর্পোরেট সেক্টরের প্রভাব কতটা বেড়েছে তা নিয়ে গভীর আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে। সরকার, বিরোধী দল এবং নাগরিক সমাজকে এই বিষয়ে গুরুত্ব সহকারে ভাবতে হবে। কারণ এর ফলাফল শুধু বর্তমান নয়, ভবিষ্যতেও প্রভাব ফেলবে।