AI technology agriculture innovations 2024: কৃষিক্ষেত্রে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (AI) ব্যবহারের মাধ্যমে যুগান্তকারী পরিবর্তন আসছে। বেসরকারি সংস্থাগুলি এই প্রযুক্তির সাহায্যে কৃষি উৎপাদন বাড়ানো, সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার এবং পরিবেশ রক্ষার দিকে নজর দিচ্ছে। AI-চালিত রোবট, ড্রোন এবং সেন্সর ব্যবহার করে কৃষকরা এখন আরও দক্ষতার সাথে ফসল উৎপাদন করতে পারছেন।
২০২৪ সালে কৃষিক্ষেত্রে AI-এর বাজার মূল্য দাঁড়িয়েছে ১.৬ বিলিয়ন ডলার। এই বাজার প্রতি বছর ২৫.১% হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০৩২ সালের মধ্যে এই বাজারের আকার ১০.২ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাবে বলে আশা করা হচ্ছে। বর্তমানে বড় আকারের কৃষি ব্যবসার ৪০% AI-তে বিনিয়োগ বাড়াচ্ছে। যারা AI ব্যবহার করছেন তাদের ৭০% জানিয়েছেন যে তাদের উৎপাদনশীলতা ২০% বেড়েছে।AI-এর সাহায্যে কৃষকরা এখন মাটির স্বাস্থ্য, জলের ব্যবহার, সার প্রয়োগ ইত্যাদি বিষয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন।
Meta AI: আপনার সোশ্যাল মিডিয়া অভিজ্ঞতাকে রূপান্তর করুন, ব্যবহারকারীদের জন্য টপ 5 ট্রিক!
উদাহরণস্বরূপ, Blue River Technology নামক একটি কোম্পানি “See & Spray” নামে একটি প্রযুক্তি তৈরি করেছে যা AI ব্যবহার করে প্রতিটি গাছ আলাদাভাবে চিহ্নিত করে এবং সেই অনুযায়ী কীটনাশক প্রয়োগ করে। এতে কীটনাশকের ব্যবহার কমে যায় এবং পরিবেশের ক্ষতি কম হয়।SkySquirrel Technologies নামক আরেকটি কোম্পানি ড্রোন ও AI ব্যবহার করে ফসলের স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণ করছে। তাদের এরিয়াল ইমেজিং প্রযুক্তি ব্যবহার করে কৃষকরা দ্রুত রোগ বা পোকামাকড়ের আক্রমণ চিহ্নিত করতে পারছেন। এতে ফসলের ক্ষতি কম হচ্ছে এবং রাসায়নিক ব্যবহারও কমছে।
ভারতের তেলেঙ্গানা রাজ্যে AI4AI (AI for Agriculture Innovation) নামে একটি উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে ৭,০০০ কৃষক উপকৃত হয়েছেন। AI-ভিত্তিক পরামর্শ, মাটি পরীক্ষা, ফসলের মান যাচাই ইত্যাদি সেবা পেয়ে কৃষকদের আয় দ্বিগুণ হয়েছে। লঙ্কা চাষের ক্ষেত্রে উৎপাদন ২১% বেড়েছে, কীটনাশকের ব্যবহার ৯% কমেছে এবং সারের ব্যবহার ৫% কমেছে।কৃষিতে AI-এর ব্যবহার শুধু উৎপাদন বাড়াচ্ছে না, পরিবেশ রক্ষাতেও সাহায্য করছে। নির্দিষ্ট পরিমাণে সার ও কীটনাশক প্রয়োগের ফলে মাটি ও জলের দূষণ কমছে। জলের সুষ্ঠু ব্যবহারের ফলে জলসংকট মোকাবেলায় সাহায্য হচ্ছে। এছাড়া AI-চালিত যন্ত্রপাতি ব্যবহারের ফলে জ্বালানি খরচও কমছে।তবে AI-এর ব্যবহার বাড়ানোর ক্ষেত্রে কিছু চ্যালেঞ্জও রয়েছে। ছোট ও প্রান্তিক কৃষকদের জন্য এই প্রযুক্তি ব্যয়বহুল হতে পারে। তাই সরকারি সহায়তা ও সুলভ ঋণের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন।
এছাড়া গ্রামাঞ্চলে ইন্টারনেট সংযোগ ও বিদ্যুৎ সরবরাহের উন্নতি করতে হবে। কৃষকদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে নতুন প্রযুক্তি ব্যবহারে দক্ষ করে তুলতে হবে।বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ২০২৮ সালের মধ্যে বিশ্বের ২৫% কৃষি কাজে AI ব্যবহৃত হবে। এর ফলে খাদ্য উৎপাদন বাড়বে, পরিবেশের ক্ষতি কমবে এবং কৃষকদের আয় বৃদ্ধি পাবে। তবে এর সুফল সবার কাছে পৌঁছে দিতে সরকার, বেসরকারি সংস্থা ও কৃষকদের সমন্বিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন।
কৃষিতে AI-এর ব্যবহার বাড়ানোর জন্য কয়েকটি পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে:
১. সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের মাধ্যমে গবেষণা ও উন্নয়ন কার্যক্রম জোরদার করা।
২. কৃষকদের জন্য সহজলভ্য ঋণ ও ভর্তুকির ব্যবস্থা করা।
৩. গ্রামাঞ্চলে ডিজিটাল অবকাঠামো উন্নয়ন করা।
৪. কৃষকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা।
৫. AI-ভিত্তিক কৃষি পরামর্শ সেবা চালু করা।
Ford New Technology: ফোর্ডের নতুন প্রযুক্তি, গাড়ি নিজেই শনাক্ত করবে গতিসীমা লঙ্ঘন
সামগ্রিকভাবে, কৃষিতে AI-এর ব্যবহার একটি যুগান্তকারী পরিবর্তন নিয়ে আসছে। এর ফলে কৃষি উৎপাদন বাড়বে, পরিবেশ রক্ষিত হবে এবং কৃষকদের জীবনমান উন্নত হবে। তবে এর সুফল সবার কাছে পৌঁছে দিতে সুষম নীতি ও কার্যকর বাস্তবায়ন প্রয়োজন। AI-এর সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমে আমরা একটি টেকসই ও সমৃদ্ধ কৃষি ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারি।
