Arakan Army importance in Myanmar conflict: আরাকান আর্মি (Arakan Army) মায়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাখাইন রাজ্যে সক্রিয় একটি শক্তিশালী জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠী। ২০০৯ সালে প্রতিষ্ঠিত এই সংগঠন রাখাইন জাতির জন্য স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে লড়াই করছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আরাকান আর্মি দ্রুত শক্তি বৃদ্ধি করেছে এবং রাখাইন রাজ্যের বেশিরভাগ অঞ্চলে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে।আরাকান আর্মির উত্থান ও বিস্তার মায়ানমারের রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে গভীরভাবে প্রভাবিত করছে। এই সংগঠন বর্তমানে মায়ানমার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে সবচেয়ে শক্তিশালী প্রতিপক্ষ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। তাদের সামরিক সাফল্য ও জনপ্রিয়তা দেশের পশ্চিমাঞ্চলে ক্ষমতার ভারসাম্য পরিবর্তন করছে।
আরাকান আর্মি ২০০৯ সালের ১০ এপ্রিল প্রতিষ্ঠিত হয়। সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা ও বর্তমান নেতা হলেন মেজর জেনারেল টুয়ান মরাট নাইং। প্রথমদিকে মাত্র ২৬ জন সদস্য নিয়ে যাত্রা শুরু করলেও বর্তমানে আরাকান আর্মির সৈন্যসংখ্যা ৪০,০০০ এর বেশি বলে মনে করা হয়।সংগঠনটির মূল লক্ষ্য হলো রাখাইন জাতির জন্য স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠা করা। তারা “রাখিতা পথ” নামক একটি আদর্শের ভিত্তিতে লড়াই করছে, যা রাখাইন জাতির মুক্তি ও সার্বভৌমত্ব পুনরুদ্ধারের জন্য সংগ্রামকে বোঝায়।
আরাকান আর্মি বর্তমানে মায়ানমারের সবচেয়ে শক্তিশালী জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর একটি। নিম্নলিখিত কারণে তারা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ:
২০২৪ সালের ডিসেম্বরে আরাকান আর্মি একটি গুরুত্বপূর্ণ সামরিক সাফল্য অর্জন করেছে। তারা মাউংডাউ শহরে অবস্থিত মায়ানমার সেনাবাহিনীর শেষ ঘাঁটি দখল করে নিয়েছে। এর ফলে বাংলাদেশের সাথে মায়ানমারের ২৭০ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্তের উপর আরাকান আর্মির পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।এই সাফল্যের মাধ্যমে আরাকান আর্মি রাখাইন রাজ্যের উত্তরাঞ্চলে তাদের আধিপত্য সুদৃঢ় করেছে। এটি তাদের স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যের দিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি।
আরাকান আর্মি একটি সুপরিকল্পিত যুদ্ধকৌশল অনুসরণ করে আসছে। তারা ধাপে ধাপে অগ্রসর হয়ে রাখাইন রাজ্যের বিভিন্ন অঞ্চল দখল করছে। তাদের সাম্প্রতিক অভিযানগুলোকে চারটি ধাপে ভাগ করা যায়:
আরাকান আর্মির উত্থান ও বিস্তার রাখাইন রাজ্য ও সামগ্রিক মায়ানমারের উপর গভীর প্রভাব ফেলছে:
ভারতীয় সেনাবাহিনীর পদবী অনুযায়ী বেতন গ্রেড: জেনে নিন কত টাকা পাচ্ছেন আমাদের দেশের সৈনিকরা!
আরাকান আর্মির উত্থান রাখাইন রাজ্যের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর উপর নতুন হুমকি সৃষ্টি করেছে। যদিও আরাকান আর্মি রোহিঙ্গাদের উপর হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছে, কিন্তু মানবাধিকার সংগঠনগুলো তাদের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ এনেছে।হিউম্যান রাইটস ওয়াচের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৪ সালের মে মাসে আরাকান আর্মি বুথিদাউং শহর ও আশপাশের গ্রামগুলোতে রোহিঙ্গা এলাকায় হামলা চালিয়েছে। এই হামলায় হাজার হাজার রোহিঙ্গা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে।অন্যদিকে, ফ্রি রোহিঙ্গা কোয়ালিশনের সহ-প্রতিষ্ঠাতা নে সান লুইন জানিয়েছেন, গত কয়েক মাসে আরাকান আর্মি ২,৫০০ এরও বেশি রোহিঙ্গা মুসলিমকে হত্যা করেছে এবং কমপক্ষে ৩০০,০০০ মানুষকে বাস্তুচ্যুত করেছে।
মন্তব্য করুন