Argentiona Copa America Champion 2024: লিওনেল মেসির নেতৃত্বে আর্জেন্টিনা রেকর্ড ১৬তম কোপা আমেরিকা শিরোপা জিতে ইতিহাস গড়লো। রোববার রাতে মায়ামির হার্ড রক ষ্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ফাইনালে অতিরিক্ত সময়ে কলম্বিয়াকে ১-০ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হলো আর্জেন্টিনা। এই জয়ের মধ্য দিয়ে আর্জেন্টিনা উরুগুয়েকে পিছনে ফেলে সর্বাধিক কোপা আমেরিকা জয়ের রেকর্ড গড়লো।
ম্যাচের ১১২ মিনিটে লাউতারো মার্টিনেজের একমাত্র গোলে জয় পেলো আর্জেন্টিনা। এই জয়ের মাধ্যমে কলম্বিয়ার ২৮ ম্যাচের অপরাজিত রেকর্ডও ভেঙে গেলো। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে কলম্বিয়া কোনো ম্যাচে হারেনি।
টুর্নামেন্টের শুরু থেকেই দুর্দান্ত ফর্মে ছিলো আর্জেন্টিনা। গ্রুপ পর্বে তিন ম্যাচে তিন জয় নিয়ে শীর্ষে থেকে নকআউট পর্বে ওঠে তারা। কোয়ার্টার ফাইনালে ইকুয়েডরকে টাইব্রেকারে হারানোর পর সেমিফাইনালে কানাডাকে ২-০ গোলে হারিয়ে ফাইনালে ওঠে আর্জেন্টিনা।
অন্যদিকে কলম্বিয়াও দারুণ ফর্মে ছিলো। গ্রুপ পর্বে অপরাজিত থেকে শীর্ষে ওঠার পর কোয়ার্টার ফাইনালে মেক্সিকোকে হারায় তারা। সেমিফাইনালে উরুগুয়েকে হারিয়ে ফাইনালে ওঠে কলম্বিয়া।
Copa America: ল্যাটিন আমেরিকার ফুটবল মহাযজ্ঞের মজাদার তথ্যাবলী
ফাইনালে দুই দলই সমান সুযোগ পেলেও গোল করতে পারেনি। নিয়মিত সময়ে গোলশূন্য সমতায় শেষ হওয়ার পর অতিরিক্ত সময়ে যায় ম্যাচ। ১১২ মিনিটে লাউতারো মার্টিনেজের গোলে এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা। এরপর আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি কলম্বিয়া।
এই জয়ের মধ্য দিয়ে আর্জেন্টিনা টানা তিনটি বড় আন্তর্জাতিক ট্রফি জিতলো। ২০২১ সালে কোপা আমেরিকা জয়ের পর ২০২২ সালে ফিফা বিশ্বকাপ জেতে তারা। এবার আবারও কোপা আমেরিকা জিতে হ্যাটট্রিক সম্পূর্ণ করলো আর্জেন্টিনা।
লিওনেল মেসির জন্য এটি ছিলো বিশেষ একটি টুর্নামেন্ট। ৩৭ বছর বয়সী এই তারকা ফুটবলার সম্ভবত শেষবারের মতো বড় আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে খেললেন। যদিও তিনি বলেছেন আরও খেলবেন, তবে ২০২৬ সালের বিশ্বকাপে তাকে দেখা যাবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।
এবারের টুর্নামেন্টে মেসি তেমন ভালো পারফরম্যান্স দেখাতে পারেননি। সেমিফাইনাল পর্যন্ত কোনো গোল করতে পারেননি তিনি। তবে সেমিফাইনালে কানাডার বিপক্ষে গোল করে ফর্মে ফেরেন মেসি। ফাইনালেও দলকে এগিয়ে নিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন তিনি।
আর্জেন্টিনার এই জয়ে দেশের ফুটবল ইতিহাসে নতুন অধ্যায় যুক্ত হলো। ১৯১৬ সালে প্রথম আসরের পর থেকে এ পর্যন্ত মোট ৪৮টি কোপা আমেরিকা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর মধ্যে ১৬টি জিতে সবচেয়ে সফল দল হিসেবে আবির্ভূত হলো আর্জেন্টিনা। এর আগে উরুগুয়ের সঙ্গে ১৫টি করে শিরোপা জয়ের রেকর্ড ভাগাভাগি করে নিয়েছিল আর্জেন্টিনা।
আর্জেন্টিনার এই সাফল্যে দেশজুড়ে উল্লাস ছড়িয়ে পড়েছে। রাজধানী বুয়েনস আইরেসে হাজার হাজার সমর্থক রাস্তায় নেমে জয় উদযাপন করেছেন। মেসিসহ খেলোয়াড়দের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়েছেন তারা।
কোপা আমেরিকার ফাইনাল: আর্জেন্টিনা-কলম্বিয়া মহারণের লাইভ দেখার গোপন কৌশল!
কোচ লিওনেল স্কালোনি বলেছেন, “এটা অসাধারণ একটা মুহূর্ত। আমরা ইতিহাস গড়েছি। এই দলটা অবিশ্বাস্য। তারা সবসময় জয়ী হওয়ার জন্য লড়াই করে। আমি গর্বিত যে এই দলের কোচ হতে পেরেছি।”
অধিনায়ক লিওনেল মেসি বলেছেন, “এটা আমাদের জন্য বিশেষ একটা জয়। আমরা রেকর্ড গড়েছি। এই দলটা ইতিহাস সৃষ্টি করেছে। আমি খুবই আনন্দিত যে আমি এই দলের অংশ।”
এদিকে কলম্বিয়ার কোচ নেস্টর লরেঞ্জো বলেছেন, “আমরা কঠিন লড়াই করেছি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত হেরে গেছি। তবে আমাদের খেলোয়াড়রা গর্ব করার মতো প্রদর্শন করেছে।”
এই জয়ের মধ্য দিয়ে আর্জেন্টিনা আগামী দিনের জন্য আরও শক্তিশালী হয়ে উঠলো। আসন্ন ২০২৬ সালের বিশ্বকাপের আগে তারা নিজেদের শক্তি প্রমাণ করলো। অন্যদিকে কলম্বিয়াও প্রমাণ করলো যে তারাও বিশ্বসেরাদের সঙ্গে পাল্লা দিতে পারে।
সামগ্রিকভাবে ২০২৪ সালের কোপা আমেরিকা ছিলো একটি সফল আসর। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত এই টুর্নামেন্টে দর্শক সমাগম ছিলো ব্যাপক। আগামী দিনে এই অঞ্চলে ফুটবলের জনপ্রিয়তা আরও বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।
আর্জেন্টিনা বনাম কলম্বিয়া: কোপা আমেরিকা ২০২৪ ফাইনালে দুই দলের পারফরম্যান্স
আর্জেন্টিনার দল
আর্জেন্টিনা কোপা আমেরিকা ২০২৪-এর জন্য একটি শক্তিশালী দল নিয়ে মাঠে নেমেছিল। লিওনেল স্কালোনির অধীনে আর্জেন্টিনা একটি ৪-৩-৩ ফর্মেশন ব্যবহার করেছে, যেখানে আক্রমণভাগে ছিলেন লিওনেল মেসি, জুলিয়ান আলভারেজ এবং অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া। এই দলটি ২০২২ বিশ্বকাপ জয়ের পর থেকে দুর্দান্ত ফর্মে ছিল এবং ২০২৩ সালে ১০ ম্যাচের মধ্যে ৯টি জিতেছিল।
গোলরক্ষক:
- এমিলিয়ানো মার্টিনেজ: তিনি দলের প্রধান গোলরক্ষক ছিলেন এবং তার অসাধারণ পারফরম্যান্সের জন্য পরিচিত। কোয়ার্টার ফাইনালে ইকুয়েডরের বিপক্ষে টাইব্রেকারে তার বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল।
রক্ষণভাগ:
- নাহুয়েল মোলিনা, ক্রিস্টিয়ান রোমেরো, লিসান্দ্রো মার্টিনেজ এবং নিকোলাস তাগলিয়াফিকো: এই চারজন রক্ষণভাগে ছিলেন এবং তারা প্রতিপক্ষের আক্রমণ প্রতিহত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।
মধ্যমাঠ:
- রদ্রিগো ডি পল, এনজো ফার্নান্দেজ এবং আলেক্সিস ম্যাক অলিস্টার: এই তিনজন মধ্যমাঠে খেলে দলের আক্রমণ ও রক্ষণ উভয়ই সমন্বয় করেছেন।
আক্রমণভাগ:
- লিওনেল মেসি, জুলিয়ান আলভারেজ এবং অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া: এই তিনজন আক্রমণভাগে ছিলেন এবং তাদের দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা দলের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
কলম্বিয়ার দল
কলম্বিয়া কোপা আমেরিকা ২০২৪-এর ফাইনালে একটি শক্তিশালী দল নিয়ে মাঠে নেমেছিল। নেস্টর লরেঞ্জোর অধীনে তারা ২৮ ম্যাচের অপরাজিত রেকর্ড নিয়ে ফাইনালে পৌঁছেছিল।
গোলরক্ষক:
- ক্যামিলো ভার্গাস: তিনি দলের প্রধান গোলরক্ষক ছিলেন এবং তার অসাধারণ প্রতিরোধ ক্ষমতা দলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
রক্ষণভাগ:
- সান্তিয়াগো আরিয়াস, কার্লোস কুয়েস্তা, ডেভিনসন সানচেজ এবং জোহান মোজিকা: এই চারজন রক্ষণভাগে ছিলেন এবং তারা প্রতিপক্ষের আক্রমণ প্রতিহত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।
মধ্যমাঠ:
- জেফারসন লেরমা, রিচার্ড রিওস এবং জন আরিয়াস: এই তিনজন মধ্যমাঠে খেলে দলের আক্রমণ ও রক্ষণ উভয়ই সমন্বয় করেছেন।
আক্রমণভাগ:
- জেমস রদ্রিগেজ, লুইস দিয়াজ এবং জন কর্ডোবা: এই তিনজন আক্রমণভাগে ছিলেন এবং তাদের দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা দলের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
ম্যাচের বিশ্লেষণ
ফাইনালে আর্জেন্টিনা এবং কলম্বিয়া উভয় দলই সমান সুযোগ পেয়েছিল। নিয়মিত সময়ে গোলশূন্য সমতায় শেষ হওয়ার পর অতিরিক্ত সময়ে ম্যাচটি গড়ায়। ১১২ মিনিটে লাউতারো মার্টিনেজের একমাত্র গোলে এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা। এরপর আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি কলম্বিয়া।আর্জেন্টিনার এই জয়ে দেশের ফুটবল ইতিহাসে নতুন অধ্যায় যুক্ত হলো। ১৯১৬ সালে প্রথম আসরের পর থেকে এ পর্যন্ত মোট ৪৮টি কোপা আমেরিকা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর মধ্যে ১৬টি জিতে সবচেয়ে সফল দল হিসেবে আবির্ভূত হলো আর্জেন্টিনা।
আর্জেন্টিনার এই সাফল্যে দেশজুড়ে উল্লাস ছড়িয়ে পড়েছে। রাজধানী বুয়েনস আইরেসে হাজার হাজার সমর্থক রাস্তায় নেমে জয় উদযাপন করেছেন। মেসিসহ খেলোয়াড়দের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়েছেন তারা। এই জয়ের মধ্য দিয়ে আর্জেন্টিনা আগামী দিনের জন্য আরও শক্তিশালী হয়ে উঠলো। আসন্ন ২০২৬ সালের বিশ্বকাপের আগে তারা নিজেদের শক্তি প্রমাণ করলো। অন্যদিকে কলম্বিয়াও প্রমাণ করলো যে তারাও বিশ্বসেরাদের সঙ্গে পাল্লা দিতে পারে।