National anthems of Asian countries: এশিয়া মহাদেশের বিভিন্ন দেশের জাতীয় সংগীত সেই দেশগুলির ঐতিহ্য, সংস্কৃতি এবং জাতীয় পরিচয়ের প্রতিফলন। আজ আমরা এশিয়ার ১০টি প্রধান দেশের জাতীয় সংগীত সম্পর্কে জানব, যা এই দেশগুলির জাতীয় চেতনা ও গর্বের প্রতীক হিসেবে কাজ করে।
ভারতের জাতীয় সংগীত “জন গণ মন” রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত। এটি ১৯৫০ সালে ভারতের জাতীয় সংগীত হিসেবে গৃহীত হয়। এই সংগীতের প্রথম পংক্তি হল “জন গণ মন অধিনায়ক জয় হে, ভারত ভাগ্য বিধাতা”। এর অর্থ হল “হে সকল মানুষের মনের অধিনায়ক, ভারতের ভাগ্যবিধাতা, তোমার জয় হোক”।
জাতীয় শোক দিবস: ১৫ আগস্টের সরকারি ছুটির ইতিহাস
পাকিস্তানের জাতীয় সংগীতের নাম “কাওমি তারানা”। এটি ১৯৫৪ সালে গৃহীত হয়। এর কথা লিখেছেন আবু আল-আলা মওদুদী এবং সুর করেছেন আহমেদ গুলাম আলী চাগলা। এই সংগীতের প্রথম লাইন হল “পাক সরজমীন শাদ বাদ”।
বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত “আমার সোনার বাংলা”। এটিও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর এটি জাতীয় সংগীত হিসেবে গৃহীত হয়। এর প্রথম লাইন হল “আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি”।
চীনের জাতীয় সংগীত “ই-ইয়ংজুন জিনশিংকু” (মার্চ অফ দ্য ভলান্টিয়ার্স)। এটি ১৯৪৯ সালে গৃহীত হয়। তিয়ান হান লিখেছেন এর কথা এবং নিয়ে আর লিখেছেন সুর। এর প্রথম লাইন হল “চি লাই! বু যুয় দং নু লি দ্য রেন মেন”।
জাপানের জাতীয় সংগীত “কিমিগায়ো”। এটি বিশ্বের সবচেয়ে পুরনো জাতীয় সংগীতের একটি, যার কথা ৯ম শতাব্দীতে লেখা হয়েছিল। ১৮৬৮ সালে এটি আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় সংগীত হিসেবে গৃহীত হয়। এর অর্থ হল “আপনার রাজত্বকাল”।
দক্ষিণ কোরিয়ার জাতীয় সংগীত “এগুকগা”। এর অর্থ হল “দেশপ্রেমের গান”। ১৯৪৮ সালে এটি গৃহীত হয়। এর কথা লিখেছেন ইউন চি-সুন এবং সুর করেছেন আন ইক-তাই।
উত্তর কোরিয়ার জাতীয় সংগীত “এগুকগা”। এটি দক্ষিণ কোরিয়ার জাতীয় সংগীতের নামের সাথে একই, কিন্তু সম্পূর্ণ আলাদা সংগীত। ১৯৪৭ সালে এটি গৃহীত হয়। এর কথা লিখেছেন পাক সে-ইয়ং এবং সুর করেছেন কিম ওন-সুং।
ভিয়েতনামের জাতীয় সংগীত “তিয়েন কুয়ান কা”। এর অর্থ হল “মার্চ টু দ্য ফ্রন্ট”। ১৯৪৪ সালে ভান কাও লিখেছেন এর কথা ও সুর। এটি ভিয়েতনামের স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রতীক হিসেবে পরিচিত।
থাইল্যান্ডের জাতীয় সংগীত “প্লেং চাত”। এর অর্থ হল “জাতীয় সংগীত”। ১৯৩২ সালে এটি গৃহীত হয়। এর কথা লিখেছেন লুয়াং সারানুপ্রাপান এবং সুর করেছেন পিয়া মালাকুল।
ইন্দোনেশিয়ার জাতীয় সংগীত “ইন্দোনেশিয়া রায়া”। এর অর্থ হল “মহান ইন্দোনেশিয়া”। ১৯৪৫ সালে এটি গৃহীত হয়। এর কথা ও সুর উভয়ই রচনা করেছেন ওয়াগে রুদলফ সুপরাতমান।
জাতীয় সংগীতগুলির মধ্যে কিছু সাধারণ বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা যায়:
জাতীয় সংগীত একটি দেশের জাতীয় পরিচয় ও ঐক্যের প্রতীক হিসেবে কাজ করে। এগুলি:
এশিয়ার এই ১০টি দেশের জাতীয় সংগীত প্রতিটি দেশের অনন্য ইতিহাস, সংস্কৃতি ও জাতীয় চেতনার প্রতিফলন। এগুলি শুধু সুর ও কথার সমন্বয় নয়, বরং একটি জাতির আত্মার প্রকাশ। জাতীয় সংগীত শোনার সময় আমরা যেন সেই দেশের ইতিহাস, সংগ্রাম ও আকাঙ্ক্ষার সাথে একাত্ম হয়ে যাই। এভাবে জাতীয় সংগীত একটি দেশের অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যতকে একসূত্রে গেঁথে রাখে।
মন্তব্য করুন