বানেশ্বর প্রণাম মন্ত্র: শিবের এই শক্তিশালী মন্ত্র জপে মিলবে শান্তি ও পূরণ হবে মনস্কামনা

Baneshwar Pranam Mantra: হিন্দু ধর্মে দেবাদিদেব মহাদেব হলেন অনাদি ও অনন্ত। তাঁর বিভিন্ন রূপের মধ্যে অন্যতম এক বিশেষ রূপ হলেন বাবা বানেশ্বর। বানেশ্বর শিবের পূজা ও তাঁর মন্ত্র জপ করলে…

Srijita Ghosh

 

Baneshwar Pranam Mantra: হিন্দু ধর্মে দেবাদিদেব মহাদেব হলেন অনাদি ও অনন্ত। তাঁর বিভিন্ন রূপের মধ্যে অন্যতম এক বিশেষ রূপ হলেন বাবা বানেশ্বর। বানেশ্বর শিবের পূজা ও তাঁর মন্ত্র জপ করলে ভক্তদের মনস্কামনা পূরণ হয় এবং জীবনে শান্তি ও সমৃদ্ধি লাভ হয় বলে বিশ্বাস করা হয়। এই প্রবন্ধে আমরা বানেশ্বর শিবের প্রণাম মন্ত্র, ধ্যান মন্ত্র, তাঁর পৌরাণিক ইতিহাস, তাৎপর্য এবং পূজা পদ্ধতির সমস্ত খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করব। বিভিন্ন শাস্ত্রীয় গ্রন্থ এবং নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্রের উপর ভিত্তি করে এই আলোচনা পরিবেশন করা হয়েছে, যা পাঠকদের বানেশ্বর শিবের মাহাত্ম্য সম্পর্কে একটি স্বচ্ছ ধারণা দেবে।

ভগবান শিবের উপাসনা বৈদিক যুগ থেকেই প্রচলিত। শৈব ধর্ম, যা হিন্দুধর্মের অন্যতম প্রধান শাখা, মহাদেবকে পরম সত্তা হিসেবে পূজা করে। তাঁর বিভিন্ন রূপের পূজার মধ্যে বানেশ্বর শিবের আরাধনা এক বিশেষ স্থান অধিকার করে আছে। মূলত ‘বাণ’ নামক এক অসুররাজের ভক্তির সঙ্গে জড়িত হওয়ায় তাঁর নাম হয়েছে ‘বানেশ্বর’। এই লিঙ্গকে স্বয়ম্ভু বা ঈশ্বরের সাক্ষাৎ চিহ্ন হিসেবে গণ্য করা হয়, যা ভক্তদের কাছে অত্যন্ত পবিত্র।

বানেশ্বর শিবের পৌরাণিক তাৎপর্য ও ইতিহাস

বানেশ্বর শিবের উৎপত্তির কাহিনী অত্যন্ত এবং ভক্তিপূর্ণ। এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে অসুররাজ বাণাসুরের নাম, যিনি ছিলেন ভগবান শিবের একনিষ্ঠ ভক্ত।

অসুররাজ বাণ ও নর্মদা নদীর পবিত্র পাথর

পুরাণ অনুসারে, প্রাচীনকালে বাণ নামে এক শক্তিশালী অসুর ছিলেন, যিনি প্রহ্লাদের বংশধর এবং রাজা বলির পুত্র ছিলেন। তিনি ছিলেন ভগবান শিবের পরম ভক্ত। প্রতিদিন তিনি নিজ হাতে শিবলিঙ্গ তৈরি করে পূজা করতেন। তাঁর এই কঠোর ভক্তি ও তপস্যায় সন্তুষ্ট হয়ে মহাদেব তাঁকে দর্শন দেন এবং বর চাইতে বলেন।

বাণাসুর মহাদেবের কাছে বর চাইলেন যে, তাঁকে যেন প্রতিদিন শিবলিঙ্গ নির্মাণ করার কষ্ট করতে না হয়, বরং তিনি যেন উত্তম লক্ষণযুক্ত এবং সহজে পূজা করা যায় এমন শিবলিঙ্গ লাভ করেন। ভগবান শিব তাঁর ভক্তের এই প্রার্থনা শুনে পর্বতের শিখর থেকে কোটি কোটি শিবলিঙ্গ নর্মদা নদীতে নিক্ষেপ করেন। সেই থেকেই নর্মদা নদীর গর্ভে প্রাপ্ত মসৃণ ও উপবৃত্তাকার পাথর ‘বাণলিঙ্গ’ বা ‘বানেশ্বর শিবলিঙ্গ’ নামে পরিচিত। উইকিপিডিয়া অনুসারে, এই বাণলিঙ্গকে স্বয়ম্ভু লিঙ্গ হিসেবে মানা হয়, অর্থাৎ এগুলি মানুষের দ্বারা নির্মিত নয়, বরং প্রকৃতিতে ঈশ্বরের চিহ্ন হিসেবে স্বতঃস্ফূর্তভাবে প্রকাশিত।

বানেশ্বর নামের উৎপত্তি

‘বানেশ্বর’ শব্দটি দুটি শব্দের সন্ধিতে গঠিত: ‘বাণ’ এবং ‘ঈশ্বর’। এর আক্ষরিক অর্থ হলো ‘বাণের ঈশ্বর’ বা বাণাসুরের প্রভু। যেহেতু বাণাসুরের ভক্তির ফলেই এই বিশেষ শিবলিঙ্গের প্রকাশ ঘটেছিল, তাই তাঁকে এই নামে অভিহিত করা হয়। অন্য একটি মতানুসারে, ‘বাণ’ শব্দের অর্থ শিবও হয়। সেই অর্থে, বাণলিঙ্গ হলো স্বয়ং শিবের দ্বারা নির্মিত লিঙ্গ।

পশ্চিমবঙ্গের বিখ্যাত বানেশ্বর মন্দির

পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন স্থানে বাবা বানেশ্বরের মন্দির রয়েছে, যা অত্যন্ত জাগ্রত বলে পরিচিত। এর মধ্যে দুটি প্রধান মন্দির হলো:

  1. কোচবিহারের বানেশ্বর মন্দির: কোচবিহার শহর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই মন্দিরটি অত্যন্ত প্রাচীন এবং এর ঐতিহাসিক গুরুত্ব অপরিসীম। মন্দিরের পাশে রয়েছে এক বিশাল পুকুর, যেখানে ‘মোহন’ নামের কচ্ছপ বাস করে, যা পর্যটকদের কাছে এক অন্যতম আকর্ষণ। কথিত আছে, অসুররাজ বাণ তাঁর ইষ্টদেবতা শিবকে পাতালে নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন, কিন্তু ব্যর্থ হওয়ায় শিবলিঙ্গটি এখানেই स्थापित হয়।
  2. পুরুলিয়ার বানেশ্বর ধাম: পুরুলিয়া জেলার আনাড়া অঞ্চলের এই মন্দিরটিও বেশ প্রাচীন। News18 Bangla-র একটি প্রতিবেদন অনুসারে, এখানকার শিবলিঙ্গ পাতাল ফুঁড়ে আবির্ভূত হয়েছিলেন, অর্থাৎ তিনিও স্বয়ম্ভু। পাতকুমের মহারাজ স্বপ্নাদেশ পেয়ে এই মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন এবং পরবর্তীকালে কাশিপুরের মহারাজ এর সংস্কার করেন।

এই মন্দিরগুলি প্রমাণ করে যে, বানেশ্বর শিবের মাহাত্ম্য শুধুমাত্র পুরাণের পাতায় সীমাবদ্ধ নয়, বরং বাংলার সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের সঙ্গেও গভীরভাবে জড়িয়ে আছে।

বানেশ্বর প্রণাম, ধ্যান ও পূজা মন্ত্র

বানেশ্বর শিবের পূজার ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কিছু মন্ত্র রয়েছে যা তাঁর প্রতি ভক্তি নিবেদনের জন্য ব্যবহৃত হয়। যদিও ভগবান শিবের সাধারণ প্রণাম মন্ত্র দিয়েও তাঁর পূজা করা যায়, তবে বানেশ্বরের জন্য নির্দিষ্ট ধ্যান মন্ত্র পাঠ করলে তা অধিক ফলদায়ক বলে মনে করা হয়।

শিবের সাধারণ প্রণাম মন্ত্র

যেকোনো শিব পূজার শুরুতে এই প্রণাম মন্ত্রটি পাঠ করা হয়। এটি অত্যন্ত সরল এবং ভক্তিপূর্ণ একটি মন্ত্র।

সরলার্থ: সৃষ্টি, স্থিতি ও বিনাশ—এই তিন কারণের হেতু, শান্তরূপী ভগবান শিবকে আমি প্রণাম জানাই। হে পরমেশ্বর, তুমিই আমার একমাত্র গতি, আমি নিজেকে তোমার চরণে সমর্পণ করছি।

বানেশ্বর শিবের বিশেষ ধ্যান মন্ত্র

বানেশ্বর রূপের ধ্যান করার জন্য একটি বিশেষ মন্ত্র রয়েছে। পূজার সময় ফুল হাতে নিয়ে এই মন্ত্র পাঠ করে মহাদেবের রূপকে হৃদয়ে কল্পনা করতে হয়।

সরলার্থ: আমি সেই বানেশ্বর নামক পরমেশ্বরের ধ্যান করছি, যিনি শক্তি দ্বারা युक्त, যিনি প্রমত্ত বা আনন্দময় এবং যাঁর মহাজ্যোতি রয়েছে। তিনি কামবাণ দ্বারা শোভিত এবং সংসারের সমস্ত পাপ ও তাপ দহন করতে সক্ষম। শৃঙ্গার आदि রসের দ্বারা তিনি উল্লাসিত। এই পরম শিবকে বাণলিঙ্গে ধ্যান করে তাঁর পূজা করা উচিত।

পূজার অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্র

পূজার সময় আরও কিছু মন্ত্র পাঠ করা হয়, যা পূজাকে সম্পূর্ণ করে। এর মধ্যে স্নান মন্ত্রটি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

স্নান মন্ত্র (মহামৃত্যুঞ্জয় মন্ত্র):

শিবকে স্নান করানোর সময় এই শক্তিশালী মন্ত্রটি পাঠ করা হয়। এটি রোগ, ভয় থেকে মুক্তি দেয় বলে বিশ্বাস করা হয়।

সরলার্থ: আমরা ত্রি-নয়নযুক্ত ভগবান শিবের পূজা করি, যিনি সুগন্ধময় এবং সমস্ত জীবের পুষ্টিবর্ধন করেন। যেমন শসা তার বৃন্ত থেকে সহজেই মুক্ত হয়, তেমনি তিনি আমাদের মৃত্যু ও বন্ধন থেকে মুক্তি দিন, কিন্তু অমৃতত্ব থেকে বঞ্চিত করবেন না। ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন (WHO) মানসিক স্বাস্থ্যের উপর ধ্যানের ইতিবাচক প্রভাব স্বীকার করেছে, এবং মন্ত্র জপ এক প্রকারের ধ্যান যা মানসিক শান্তি আনতে সহায়ক।

মন্ত্র জপের সঠিক নিয়মাবলী ও উপকারিতা

যেকোনো মন্ত্রের সম্পূর্ণ ফল লাভের জন্য সঠিক নিয়ম মেনে তা জপ করা উচিত। নিয়মনিষ্ঠা ও ভক্তি সহকারে মন্ত্র পাঠ করলে তার প্রভাব বহুগুণ বৃদ্ধি পায়।

কখন ও কীভাবে জপ করবেন?

  • সময়: ব্রহ্মমুহূর্ত বা সূর্যোদয়ের সময় মন্ত্র জপের জন্য শ্রেষ্ঠ। এছাড়া সন্ধ্যাবেলাতেও জপ করা যেতে পারে। প্রতি সোমবার বা শ্রাবণ মাসে এই মন্ত্র জপ করলে বিশেষ ফল পাওয়া যায়।
  • স্থান: একটি শান্ত ও পরিচ্ছন্ন স্থানে বসে মন্ত্র জপ করা উচিত। বাড়ির ঠাকুরঘর বা যেকোনো পবিত্র স্থান বেছে নিতে পারেন।
  • আসন: একটি কুশের বা উলের আসনে বসে উত্তর বা পূর্ব দিকে মুখ করে জপ করুন।
  • জপমালা: রুদ্রাক্ষের মালায় মন্ত্র জপ করা শিবের পূজার জন্য অত্যন্ত শুভ বলে মনে করা হয়। ১০৮ বার জপ করা আদর্শ।
  • শুদ্ধতা: স্নান করে শুদ্ধ বস্ত্রে জপ করতে বসুন। মনকে সমস্ত দুশ্চিন্তা থেকে মুক্ত রেখে ঈশ্বরের উপর সম্পূর্ণ মনোযোগ দিন।

মন্ত্র জপের আধ্যাত্মিক ও মানসিক উপকারিতা

বানেশ্বর প্রণাম মন্ত্র এবং ধ্যান মন্ত্র জপ করলে একাধিক উপকার পাওয়া যায়।

উপকারিতার ধরণ বিস্তারিত বিবরণ
মানসিক শান্তি এই মন্ত্রের ধ্বনি মস্তিষ্কে ইতিবাচক তরঙ্গ সৃষ্টি করে, যা মানসিক চাপ, উদ্বেগ ও দুশ্চিন্তা কমাতে সাহায্য করে।
আধ্যাত্মিক উন্নতি নিয়মিত জপের মাধ্যমে কুণ্ডলিনী শক্তি জাগ্রত হয় এবং ভক্তের আধ্যাত্মিক चेतना বৃদ্ধি পায়।
মনোবাসনা পূরণ čist চিত্তে ও ভক্তি সহকারে এই মন্ত্র জপ করলে ভগবান শিব প্রসন্ন হন এবং ভক্তের সকল সৎ মনস্কামনা পূরণ করেন।
নেতিবাচক শক্তি দূর এই মন্ত্রের জপ চারপাশে একটি সুরক্ষা কবচ তৈরি করে এবং সমস্ত ধরনের নেতিবাচক শক্তি, ভয় ও কুদৃষ্টি থেকে রক্ষা করে।
স্বাস্থ্য ও আরোগ্য মহামৃত্যুঞ্জয় মন্ত্রের মতো শক্তিশালী মন্ত্র জপ করলে রোগব্যাধি থেকে মুক্তি পাওয়া যায় এবং শরীর সুস্থ থাকে। বিভিন্ন গবেষণা অনুসারে, ধ্যানের মাধ্যমে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে।

ফোর্বস (Forbes) পত্রিকায় প্রকাশিত বিভিন্ন প্রবন্ধে ধ্যানের উপকারিতা সম্পর্কে বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে, যা মন্ত্র জপের ইতিবাচক প্রভাবকে সমর্থন করে।

হিন্দুধর্মে মন্ত্র ও পূজার গুরুত্ব

হিন্দুধর্মে পূজা ও মন্ত্রকে ঈশ্বরের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের মাধ্যম হিসেবে দেখা হয়। মন্ত্র হলো কিছুศัก পবিত্র ধ্বনির সমষ্টি, যা সঠিকভাবে উচ্চারণ করলে মহাজাগতিক শক্তির সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করা সম্ভব হয়।

‘মন্ত্র’ শব্দটি ‘মন’ (চিন্তা) এবং ‘ত্র’ (রক্ষা করা)—এই দুটি শব্দের সমন্বয়ে গঠিত, যার অর্থ হলো যা মনকে রক্ষা করে। হিন্দুধর্মের প্রার্থনা সম্পর্কিত তথ্য থেকে জানা যায় যে, বৈদিক যুগ থেকেই মন্ত্র দেবতাদের আশীর্বাদ লাভের জন্য ব্যবহৃত হতো। প্রতিটি মন্ত্রের নিজস্ব ছন্দ ও তরঙ্গ রয়েছে, যা আমাদের শরীর ও মনের উপর গভীর প্রভাব ফেলে।

পূজা হলো ঈশ্বরের প্রতি ভক্তি, শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশের একটি আনুষ্ঠানিক পদ্ধতি। ফুল, ফল, জল, ধূপ, দীপ ইত্যাদি উপচারের মাধ্যমে আমরা আমাদের ভক্তি নিবেদন করি। বানেশ্বর শিবের মতো স্বয়ম্ভু লিঙ্গের পূজা করলে তার ফল দ্রুত পাওয়া যায়, কারণ এতে কোনো প্রাণ প্রতিষ্ঠার প্রয়োজন হয় না; তিনি নিজেই সেখানে সর্বদা বিরাজমান।

বানেশ্বর পূজা: একটি বিস্তারিত বিশ্লেষণ

বানেশ্বর শিবের পূজা সাধারণ শিব পূজার মতোই, তবে ভক্তি ও শুদ্ধাচারে বিশেষ মনোযোগ দেওয়া হয়। নীচে একটি সংক্ষিপ্ত পূজা পদ্ধতি দেওয়া হলো:

  1. শুদ্ধিকরণ: পূজার স্থান এবং পূজার সামগ্রী গঙ্গাজল ছিটিয়ে শুদ্ধ করে নিন।
  2. ধ্যান: উপরে উল্লিখিত বানেশ্বর ধ্যান মন্ত্র পাঠ করে মহাদেবের রূপকে স্মরণ করুন।
  3. আবাহন: ভগবান শিবকে পূজায় আবাহন করুন।
  4. পঞ্চোপচার পূজা: গন্ধ (চন্দন), পুষ্প (ফুল), ধূপ, দীপ এবং নৈবেদ্য—এই পাঁচটি উপচার দিয়ে পূজা করুন।
    • পাদ্য, অর্ঘ্য, আচমনীয়: তামার পাত্রে জল, ফুল, চন্দন দিয়ে এগুলি নিবেদন করুন।
    • স্নান: প্রথমে জল, তারপর দুধ, দই, ঘি, মধু এবং চিনি (পঞ্চামৃত) দিয়ে শিবলিঙ্গকে স্নান করান। শেষে শুদ্ধ জল দিয়ে স্নান করিয়ে পরিষ্কার বস্ত্রে মুছুন।
    • বস্ত্র ও উপবীত: নতুন বস্ত্র (যদি সম্ভব হয়) এবং যজ্ঞোপবীত (পৈতে) অর্পণ করুন।
    • গন্ধ ও পুষ্প: শিবলিঙ্গে চন্দনের প্রলেপ দিন এবং আকন্দ, ধুতুরা, নীলকণ্ঠ ফুল ও বেলপাতা অর্পণ করুন। বেলপাতা শিবের অত্যন্ত প্রিয়।
    • ধূপ ও দীপ: ধূপকাঠি ও ঘিয়ের প্রদীপ জ্বালিয়ে আরতি করুন।
    • নৈবেদ্য: ফল, মিষ্টি এবং সাধ্যমতো ভোগ নিবেদন করুন।
  5. মন্ত্র জপ ও প্রার্থনা: পূজার শেষে “ওঁ নমঃ শিবায়” বা বানেশ্বর প্রণাম মন্ত্র জপ করুন এবং নিজের মনস্কামনা জানিয়ে প্রার্থনা করুন।

এইভাবে নিষ্ঠাভরে পূজা করলে বাবা বানেশ্বরের আশীর্বাদ লাভ করা যায়।

বানেশ্বর শিবের প্রণাম মন্ত্র ও তাঁর পূজা শুধুমাত্র একটি ধর্মীয় আচার নয়, এটি আধ্যাত্মিক শান্তি এবং মানসিক শক্তি লাভের এক অন্যতম উপায়। তাঁর পৌরাণিক কাহিনী আমাদের শিক্ষা দেয় যে, অসুর হয়েও শুধুমাত্র ভক্তির জোরে ঈশ্বরের লাভ করা সম্ভব। বানেশ্বর শিবের উপাসনা আমাদের দৈনন্দিন জীবনের সমস্ত বাধা-বিপত্তি দূর করে এক শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধ জীবনযাপনে সহায়তা করে। শুদ্ধ মনে তাঁর মন্ত্র জপ এবং পূজা করলে ভক্তের জীবন মঙ্গলময় হয়ে ওঠে।

About Author