Bangladesh opts out of Tarang Shakti exercise : ভারতের বৃহত্তম বহুজাতিক বিমান মহড়া ‘তরঙ্গ শক্তি ২০২৪’-এর দ্বিতীয় পর্বে একটি অপ্রত্যাশিত পরিবর্তন ঘটেছে। শেষ মুহূর্তে বাংলাদেশ তার সি-১৩০ বিমান মোতায়েন না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যদিও তারা পর্যবেক্ষক হিসেবে অংশগ্রহণ করবে। বাংলাদেশের স্থান পূরণ করে শ্রীলঙ্কা তার সি-১৩০ বিমান নিয়ে যোগ দিয়েছে এই মহড়ায়।
‘তরঙ্গ শক্তি ২০২৪’-এর দ্বিতীয় পর্ব ৩০ আগস্ট থেকে ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রাজস্থানের যোধপুরে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এই মহড়ায় মোট ১৮টি দেশ অংশগ্রহণ করছে, যার মধ্যে ১০টি দেশ সক্রিয়ভাবে তাদের বিমান ও সরঞ্জাম নিয়ে অংশ নিচ্ছে।
অংশগ্রহণকারী দেশগুলি:
– ভারত (আয়োজক)
– অস্ট্রেলিয়া
– যুক্তরাষ্ট্র
– গ্রীস
– সিঙ্গাপুর
– সংযুক্ত আরব আমিরাত
– জাপান
– শ্রীলঙ্কা
ভারতের নতুন বায়ু প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সমর-২ এর পরীক্ষা শুরু হচ্ছে ডিসেম্বরে
মহড়ায় ব্যবহৃত উল্লেখযোগ্য বিমান ও সরঞ্জাম:
দেশ | বিমান/সরঞ্জাম |
---|---|
ভারত | রাফাল, সুখোই-৩০ এমকেআই, মিরাজ ২০০০, জাগুয়ার, তেজস, মিগ-২৯, প্রচণ্ড ও রুদ্র হেলিকপ্টার, সি-১৩০, আইএল-৭৮, এডব্লিউএসিএস |
অস্ট্রেলিয়া | এফ-১৮ |
যুক্তরাষ্ট্র | এ-১০, এফ-১৬ |
গ্রীস | এফ-১৬ |
শ্রীলঙ্কা | সি-১৩০ |
মহড়ার গুরুত্ব ও প্রভাব
‘তরঙ্গ শক্তি ২০২৪’ ভারতের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক ও সামরিক মঞ্চ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এই মহড়া নিম্নলিখিত কারণে তাৎপর্যপূর্ণ:
1. আন্তঃসামরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি: বিভিন্ন দেশের বিমানবাহিনীর মধ্যে সমন্বয় ও সহযোগিতা বাড়াবে।
2. স্বদেশী প্রযুক্তি প্রদর্শন: ভারত তার স্বদেশী সামরিক সরঞ্জাম যেমন এলসিএ তেজস, প্রচণ্ড হেলিকপ্টার ইত্যাদি প্রদর্শন করতে পারবে।
3. কূটনৈতিক সম্পর্ক জোরদার: অংশগ্রহণকারী দেশগুলির সঙ্গে ভারতের সামরিক ও কূটনৈতিক সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে।
4. আঞ্চলিক নিরাপত্তা: ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সহায়ক হবে[6]।
বাংলাদেশের অংশগ্রহণ না করার কারণ
বাংলাদেশের সি-১৩০ বিমান মোতায়েন না করার পিছনে সম্ভাব্য কারণগুলি:
1. সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অস্থিরতা: বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক সংকট এই সিদ্ধান্তের পিছনে কাজ করতে পারে।
2. কারিগরি সমস্যা: বিমানের কোনো কারিগরি সমস্যা থাকতে পারে।
3. নীতিগত সিদ্ধান্ত: বাংলাদেশ সরকার কোনো নীতিগত কারণে এই সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
তবে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর কর্মকর্তারা পর্যবেক্ষক হিসেবে মহড়ায় অংশ নেবেন, যা দেখাচ্ছে যে তারা সম্পূর্ণভাবে নিজেদের বিচ্ছিন্ন করেনি।
বাংলাদেশি ইউটিউবারের অবৈধ ভারত প্রবেশের ভিডিও ভাইরাল, উদ্বেগ বাড়ল
শ্রীলঙ্কার অংশগ্রহণের তাৎপর্য
শ্রীলঙ্কার হঠাৎ করে অংশগ্রহণ করার সিদ্ধান্ত বেশ কয়েকটি দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ:
1. আঞ্চলিক সহযোগিতা: এটি দক্ষিণ এশিয়ায় সামরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির ইঙ্গিত দেয়।
2. কূটনৈতিক সম্পর্ক: ভারত-শ্রীলঙ্কা সম্পর্কের ইতিবাচক দিকটি তুলে ধরে।
3. সামরিক দক্ষতা: শ্রীলঙ্কা তার সামরিক দক্ষতা বাড়ানোর সুযোগ পাবে।
‘তরঙ্গ শক্তি ২০২৪’ শুধু একটি সামরিক মহড়াই নয়, এটি আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, কূটনীতি এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তার ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। বাংলাদেশের সরে দাঁড়ানো এবং শ্রীলঙ্কার যোগদান এই অঞ্চলের রাজনৈতিক ও সামরিক গতিশীলতার একটি প্রতিফলন। এই ধরনের বহুজাতিক মহড়া আগামীতে আরও বেশি গুরুত্ব পাবে বলে আশা করা যায়, যা বিশ্ব শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখতে সহায়ক হবে।