Bangladesh Quota Reform Movement: কোটা সংস্কারের দাবিতে উত্তাল বাংলাদেশ, মেধাবীদের স্বপ্নভঙ্গের আশঙ্কা

Bangladesh Quota Reform Movement 2024: বাংলাদেশের রাজপথ আজ উত্তাল। সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে হাজার হাজার শিক্ষার্থী রাস্তায় নেমেছে। তাদের কণ্ঠে একটাই দাবি - মেধার মূল্যায়ন হোক, সুযোগের সমতা নিশ্চিত…

Ishita Ganguly

 

Bangladesh Quota Reform Movement 2024: বাংলাদেশের রাজপথ আজ উত্তাল। সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে হাজার হাজার শিক্ষার্থী রাস্তায় নেমেছে। তাদের কণ্ঠে একটাই দাবি – মেধার মূল্যায়ন হোক, সুযোগের সমতা নিশ্চিত করা হোক। কিন্তু এই দাবি কি সত্যিই যৌক্তিক? নাকি এর পেছনে রয়েছে অন্য কোনো উদ্দেশ্য? আসুন জেনে নেওয়া যাক কোটা আন্দোলনের নেপথ্য কাহিনী।

১৫ জুলাই ২০২৪ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ হলের সামনে উত্তেজনা চরমে। কোটা সংস্কার আন্দোলনকারী ও ছাত্রলীগের মধ্যে সংঘর্ষ চলছে। ককটেল বিস্ফোরণের শব্দে কেঁপে উঠছে ক্যাম্পাস। দুই পক্ষই ইট-পাটকেল ছুড়ছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে হিমশিম খাচ্ছে পুলিশ।

এই দৃশ্য শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নয়, দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসেও দেখা যাচ্ছে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, শের-ই-বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চলছে অবরোধ কর্মসূচি। ফলে সৃষ্টি হয়েছে যানজট। স্বাভাবিক জীবনযাত্রা বিঘ্নিত হচ্ছে।

কিন্তু কেন এই আন্দোলন? কী চাইছে শিক্ষার্থীরা?

২০১৮ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে ৫৬ শতাংশ কোটা প্রচলিত ছিল। এর মধ্যে ৩০ শতাংশই ছিল মুক্তিযোদ্ধা কোটা। বাকি অংশ ছিল নারী, জেলা, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ও প্রতিবন্ধীদের জন্য। কিন্তু শিক্ষার্থীদের দাবি, এই কোটা ব্যবস্থা মেধাবীদের সুযোগ কেড়ে নিচ্ছে।

আন্দোলনকারীদের একাংশ চাইছে কোটা প্রথা সম্পূর্ণ বাতিল করা হোক। অন্যদিকে আরেক অংশের দাবি, মুক্তিযোদ্ধাদের ৩০% কোটা বহাল রেখে অন্যান্য কোটা কমিয়ে আনা হোক।

২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোটা বাতিলের ঘোষণা দিয়েছিলেন। কিন্তু ২০২৪ সালে তিনি জানান, সেই সিদ্ধান্ত তিনি খুব বিরক্ত হয়ে নিয়েছিলেন। তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগের অফিসে আক্রমণ, মানুষের ওপর আঘাত, কিছু জ্ঞানীগুণী আছেন যারা ঘরের মধ্যে বসে মিথ্যা অপপ্রচার রেকর্ড করে ছেড়ে দিচ্ছেন—এসব দেখে আমি খুব বিরক্ত হয়ে যাই। তখন এক পর্যায়ে বলি কোটা বাদ দিলাম।”

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, “কোটা বন্ধ করার আজকে ফলাফলটা কী দাঁড়াল। …আমাদের দেশের সব এলাকা সমানভাবে উন্নত নয়। কোন এলাকার মানুষ পিছিয়ে আছে, তাদের জন্য কিছু সুযোগ না দিলে তারা কখনোই এগিয়ে আসতে পারবে না।”

কিন্তু আন্দোলনকারীরা বলছেন, কোটা ব্যবস্থা বাতিল না করলে মেধাবীরা বঞ্চিত হবেন। তাদের যুক্তি, যোগ্যতার ভিত্তিতে চাকরি পাওয়া উচিত, বংশগত বা অন্য কোনো বিশেষ সুবিধার ভিত্তিতে নয়।

অন্যদিকে, সরকার দলীয় নেতারা বলছেন, এই আন্দোলনের পেছনে বিএনপির মদদ রয়েছে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের অভিযোগ করেছেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে সরকারবিরোধী আন্দোলনের প্রচেষ্টা চলছে।

তবে আন্দোলনকারীরা এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তারা বলছেন, এটি শুধুমাত্র শিক্ষার্থীদের আন্দোলন, এর সাথে কোনো রাজনৈতিক দলের সম্পর্ক নেই।

বর্তমানে বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। হাইকোর্ট সরকারি চাকরির প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল অবৈধ বলে রায় দিয়েছেন। এই রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করেছে।

এই পরিস্থিতিতে আন্দোলন আরও তীব্র হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা বলছেন, তাদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তারা রাস্তায় থাকবেন। অন্যদিকে সরকার বলছে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই সমস্যার সমাধান খুঁজতে হলে সবার মতামত নিয়ে একটি সর্বজনগ্রাহ্য সিদ্ধান্তে আসতে হবে। তারা মনে করেন, কোটা ব্যবস্থা সম্পূর্ণ বাতিল না করে এর সংস্কার করা যেতে পারে। যেমন, মুক্তিযোদ্ধা কোটা কিছুটা কমিয়ে অন্যান্য পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য সুযোগ রাখা যেতে পারে।

তবে এই সমস্যার সমাধান যতই জটিল হোক না কেন, হিংসাত্মক পথ কখনোই সমাধান হতে পারে না। শান্তিপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমেই এর সুরাহা খুঁজে বের করতে হবে। নইলে দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের স্বপ্নভঙ্গ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

শেষ পর্যন্ত বলা যায়, কোটা আন্দোলন শুধু একটি চাকরি পাওয়ার লড়াই নয়, এটি ন্যায়বিচার ও সমতার লড়াই। এই লড়াইয়ে জয়ী হতে হলে সবাইকে একসাথে কাজ করতে হবে। তবেই গড়ে উঠবে একটি সুন্দর, সমতাভিত্তিক বাংলাদেশ, যেখানে প্রতিটি মেধাবী ছাত্রছাত্রীর স্বপ্ন পূরণ হবে।

কোটা আন্দোলনে কোন দলগুচ্ছ সক্রিয় ভূমিকা রেখেছে

কোটা আন্দোলনে বিভিন্ন দল ও গোষ্ঠীর সক্রিয় ভূমিকা লক্ষ্য করা যাচ্ছে:

১. শিক্ষার্থী সংগঠন:

– বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এই আন্দোলনে মূল ভূমিকা পালন করছে।
– “বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন” নামে একটি প্ল্যাটফর্ম থেকে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন পরিচালনা করছে।

২. রাজনৈতিক দল:

– বিএনপি এই আন্দোলনকে সরকার বিরোধী আন্দোলনে রূপান্তর করার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
– জাতীয় পার্টি কোটা সংস্কারের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে।

৩. সরকার দলীয় সংগঠন:

– ছাত্রলীগ কোটা আন্দোলনের বিরোধিতা করছে এবং কিছু ক্ষেত্রে আন্দোলনকারীদের উপর আক্রমণ করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

৪. সুশীল সমাজ:

– কিছু বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও বুদ্ধিজীবী এই আন্দোলন সম্পর্কে মতামত দিয়েছেন।

৫. সরকার:

– সরকার এই আন্দোলনকে অরাজনৈতিক হিসেবে দেখছে এবং রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করতে চায় না বলে জানিয়েছে।

তবে উল্লেখ্য যে, আন্দোলনকারীরা দাবি করছেন এটি শুধুমাত্র শিক্ষার্থীদের আন্দোলন, এর সাথে কোনো রাজনৈতিক দলের সম্পর্ক নেই। কিন্তু সরকার পক্ষ মনে করছে এর পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে।

Tips for Private Tutor: ছাত্র-অভিভাবকের প্রিয় হওয়ার ৭ কৌশল

কোটা আন্দোলনে শিক্ষার্থীরা কোন ধরনের কর্মসূচি পালন করেছে

কোটা সংস্কার আন্দোলনে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি পালন করেছে:

১. অবরোধ কর্মসূচি:

– ‘বাংলা ব্লকেড’ নামে শিক্ষার্থীরা সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করেছে।
– বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করেছে।

২. মানববন্ধন:

– ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে ‘নিপীড়নবিরোধী শিক্ষার্থীবৃন্দের’ ব্যানারে মানববন্ধন করেছে।

৩. অবস্থান কর্মসূচি:

– শাহবাগে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে।

৪. বিক্ষোভ:

– বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে।

৫. সমাবেশ:

– বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সমাবেশ করেছে।

৬. দেশব্যাপী আন্দোলন:

– সারা দেশে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে আন্দোলনে অংশ নিয়েছে।

শিক্ষার্থীরা এই কর্মসূচিগুলো পালনের মাধ্যমে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবি জানিয়েছে এবং সংসদে আইন পাস করে কোটা সংস্কার না করা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।

কোটা আন্দোলনে শিক্ষার্থীরা কোন ধরনের বিবৃতি দিয়েছে

কোটা আন্দোলনে শিক্ষার্থীরা নিম্নলিখিত ধরনের বিবৃতি দিয়েছে:

১. আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা:

শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন যে, কোটা সংস্কার সম্পর্কিত আইন পাস না হওয়া পর্যন্ত তাদের আন্দোলন চলতে থাকবে।

২. সরকারের প্রতি আহ্বান:

আন্দোলনকারীরা সরকারের কাছে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দৃশ্যমান পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।

৩. দাবির যৌক্তিকতা প্রতিপাদন:

শিক্ষার্থীরা বলেছেন, তাদের দাবি ন্যায্য এবং যৌক্তিক। তারা চাইছেন সরকার যেন তাদের দাবির যৌক্তিকতা মেনে নেয়।

৪. রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা অস্বীকার:

আন্দোলনকারীরা জোর দিয়ে বলেছেন, এটি শুধুমাত্র শিক্ষার্থীদের আন্দোলন, এর সাথে কোনো রাজনৈতিক দলের সম্পর্ক নেই।

৫. মামলা প্রত্যাহারের দাবি:

চলমান আন্দোলনে যুক্ত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।

৬. প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিবাদ:

শিক্ষার্থীরা প্রধানমন্ত্রীর সাম্প্রতিক বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছেন এবং তাঁর বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন।

৭. সারা দেশে আন্দোলনের আহ্বান:

আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ সারা দেশের সকল শিক্ষার্থীকে বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

৮. কোটা সংস্কারের দাবি:

শিক্ষার্থীরা সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থার যৌক্তিক সংস্কার চেয়েছেন, পুরোপুরি বাতিল নয়।

এই বিবৃতিগুলি থেকে বোঝা যায়, শিক্ষার্থীরা তাদের দাবির প্রতি দৃঢ় অবস্থান নিয়েছেন এবং শান্তিপূর্ণ উপায়ে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

Bangladesh Quota Movement: রক্তাক্ত ক্যাম্পাস, কোটা সংস্কার আন্দোলনে নারী শিক্ষার্থীদের ওপর নির্মম হামলা

কোটা আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের দাবি কী ছিল

কোটা আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের প্রধান দাবিগুলো ছিল:

১. সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থার সংস্কার করা:

– শিক্ষার্থীরা দাবি করেছে যে বর্তমান ৫৬% কোটা ব্যবস্থা কমিয়ে ১০% করা হোক।
– মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ প্রক্রিয়া চালু করার দাবি জানিয়েছে।

২. মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের জন্য ৩০% কোটা কমিয়ে আনা:

– এই কোটা ১০% করার প্রস্তাব দিয়েছে কিছু শিক্ষার্থী।

৩. সংসদে আইন পাস করে কোটা সংস্কার করা:

– শিক্ষার্থীরা দাবি করেছে সংসদের জরুরি অধিবেশন ডেকে আইন পাস করে কোটা সংস্কার করতে হবে।

৪. প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্য প্রত্যাহার:

– প্রধানমন্ত্রীর সাম্প্রতিক বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে তা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে শিক্ষার্থীরা।

৫. আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার:

– চলমান আন্দোলনে যুক্ত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে।

৬. কোটা সংস্কার বাস্তবায়নের দৃশ্যমান পদক্ষেপ:

– সরকারের কাছে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দৃশ্যমান পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছে আন্দোলনকারীরা।

মূলত শিক্ষার্থীরা চাইছে মেধাভিত্তিক নিয়োগ প্রক্রিয়া এবং কোটা ব্যবস্থার যৌক্তিক সংস্কার।

কোটা আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেওয়ার জন্য কোন সরকারি সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল?

কোটা আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে সরকার বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। এই সিদ্ধান্তগুলো শিক্ষার্থীদের দাবির কিছু অংশ মেনে নেওয়ার লক্ষ্যে গৃহীত হয়েছিল। নিচে সেই সিদ্ধান্তগুলো তুলে ধরা হলো:

সরকারি সিদ্ধান্তসমূহ

১. কোটা বাতিলের সিদ্ধান্ত

২০১৮ সালে, শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে সরকার ৯ম থেকে ১৩তম গ্রেডের সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়ার প্রক্রিয়া চালু করা হয়েছিল।

২. হাইকোর্টের রায়

২০২৪ সালের ৫ জুন, হাইকোর্ট সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের সিদ্ধান্তকে অবৈধ ঘোষণা করে। এই রায়ের ফলে কোটা সংস্কারের পথ খুলে যায় এবং শিক্ষার্থীদের দাবির কিছু অংশ পূরণ হয়।

Economics as a Subject: অর্থনীতির শিক্ষা সুযোগ, ক্যারিয়ার সম্ভাবনা [ এক নজরে ]

৩. আপিল বিভাগের স্থিতাবস্থা

হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করা হয় এবং আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায়ের উপর স্থিতাবস্থা জারি করে। এই সময়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন অব্যাহত থাকে এবং তারা সরকারের কাছ থেকে দৃশ্যমান পদক্ষেপের দাবি জানায়।

৪. কমিটি গঠন

২০১৮ সালে, শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে সরকার একটি কমিটি গঠন করেছিল। এই কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে কোটা সংস্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।

আন্দোলনের ফলাফল

সরকারি সিদ্ধান্তগুলো শিক্ষার্থীদের দাবির কিছু অংশ মেনে নেওয়ার লক্ষ্যে গৃহীত হলেও, আন্দোলনকারীরা পুরোপুরি সন্তুষ্ট হননি। তারা দাবি করেছিলেন যে, কোটা ব্যবস্থা সম্পূর্ণ বাতিল না করে এর যৌক্তিক সংস্কার করা উচিত। শিক্ষার্থীরা মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ প্রক্রিয়া চালু করার দাবি জানিয়েছিল এবং কোটা ব্যবস্থার অপব্যবহার বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছিল।

কোটা আন্দোলনের ফলে সরকার শিক্ষার্থীদের দাবির কিছু অংশ মেনে নিয়ে কোটা ব্যবস্থা সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছিল। তবে শিক্ষার্থীরা তাদের দাবির পূর্ণ বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছিল। এই আন্দোলন বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা ও চাকরির ক্ষেত্রে মেধার মূল্যায়নের গুরুত্বকে নতুন করে তুলে ধরেছে।

 

About Author
Ishita Ganguly

ঈশিতা গাঙ্গুলী ইন্দিরা গান্ধী ন্যাশনাল ওপেন ইউনিভার্সিটি (IGNOU) থেকে স্নাতক। তিনি একজন উদ্যমী লেখক এবং সাংবাদিক, যিনি সমাজের বিভিন্ন দিক নিয়ে গভীর বিশ্লেষণ ও অন্তর্দৃষ্টি প্রদান করে থাকেন। ঈশিতার লেখার ধরন স্পষ্ট, বস্তুনিষ্ঠ এবং তথ্যবহুল, যা পাঠকদের মুগ্ধ করে। তার নিবন্ধ ও প্রতিবেদনের মাধ্যমে তিনি সমাজের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোকে সামনে আনেন এবং পাঠকদের চিন্তা-চেতনার পরিসরকে বিস্তৃত করতে সহায়তা করেন। সাংবাদিকতার জগতে তার অটুট আগ্রহ ও নিষ্ঠা তাকে একটি স্বতন্ত্র পরিচিতি দিয়েছে, যা তাকে ভবিষ্যতে আরও সাফল্যের দিকে নিয়ে যাবে।