Global remittance rankings 2024: ২০২৪ সালে বিশ্বব্যাপী রেমিট্যান্স আয়ের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সপ্তম স্থান অর্জন করেছে, যেখানে ভারত শীর্ষ অবস্থান ধরে রেখেছে। বিশ্বব্যাংকের সাম্প্রতিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৪ সালে বাংলাদেশ প্রায় ২৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স পেয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় ২২ শতাংশ বেশি। অন্যদিকে, ভারত একই সময়ে ১২৯.১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স আয় করে বিশ্বে শীর্ষ স্থান অর্জন করেছে।
বাংলাদেশের রেমিট্যান্স আয়ের বিশ্লেষণ
রেকর্ড বৃদ্ধির কারণ
বাংলাদেশের রেমিট্যান্স আয়ের এই উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধির পিছনে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ রয়েছে:
- ডলারের মূল্য বৃদ্ধি: আনুষ্ঠানিকভাবে ডলারের দাম ৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
- অর্থ পাচার হ্রাস: বিভিন্ন সরকারি উদ্যোগের ফলে অবৈধ পথে অর্থ পাচার কমেছে।
- প্রবাসী কর্মীর সংখ্যা বৃদ্ধি: ২০২৩ সালের ১১ ডিসেম্বর পর্যন্ত রেকর্ড ১২.৪৬ লাখ কর্মী বিদেশে গেছে।
মাসিক রেমিট্যান্স প্রবাহ
২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসে বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ মাসিক রেমিট্যান্স প্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছ। এই ধারাবাহিকতা বজায় থাকলে, আগামী বছরগুলোতে বাংলাদেশের অবস্থান আরও উন্নত হতে পারে।
বিশ্ব পরিস্থিতি ও তুলনামূলক চিত্র
শীর্ষ দেশগুলোর রেমিট্যান্স আয়
অবস্থান | দেশ | রেমিট্যান্স আয় (বিলিয়ন USD) |
---|---|---|
১ | ভারত | ১২৯.১ |
২-৬ | অন্যান্য | – |
৭ | বাংলাদেশ | ২৭.০ |
দক্ষিণ এশিয়ার চিত্র
বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৩ সালে দক্ষিণ এশিয়ায় রেমিট্যান্স প্রবাহ ৭.২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ১৮৯ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। এই প্রবৃদ্ধির সিংহভাগ এসেছে ভারত থেকে।
বাংলাদেশের রেমিট্যান্স বৃদ্ধির চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা
চ্যালেঞ্জসমূহ
- বিনিময় হার সমস্যা: বর্তমান বিনিময় হার ব্যবস্থা বাজারভিত্তিক নয়, যা আনুষ্ঠানিক চ্যানেলে রেমিট্যান্স প্রবাহে বাধা সৃষ্টি করছে।
- হুন্ডি মার্কেট: অবৈধ অর্থ পাচারের জন্য হুন্ডি মার্কেট এখনও আকর্ষণীয় রয়েছে।
- দক্ষ কর্মীর অভাব: মন্ত্রিপরিষদ সচিবের মতে, দক্ষ কর্মী পাঠানোর ক্ষেত্রে আরও গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন।
সম্ভাবনা ও সুযোগ
- গালফ দেশগুলোতে নতুন কর্মসংস্থান: ২০২৪ সালে জিসিসি দেশগুলোতে দক্ষিণ এশীয় অভিবাসীদের জন্য নতুন কর্মসংস্থান তৈরি হতে পারে।
- সরকারি প্রণোদনা: রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়াতে সরকার ২.৫ শতাংশ নগদ প্রণোদনা দিচ্ছে।
- ব্যাংকিং সেক্টরের প্রতিযোগিতা: ব্যাংকগুলো রেমিট্যান্সে আরও প্রতিযোগিতামূলক দাম দিতে পারে, যা বৈধ চ্যানেলে অর্থ প্রেরণে উৎসাহিত করবে।
সরকারি উদ্যোগ ও পরামর্শ
বর্তমান উদ্যোগসমূহ
- নগদ প্রণোদনা: সরকার বর্তমানে ২.৫ শতাংশ নগদ প্রণোদনা দিচ্ছে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়াতে।
- বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠানোর প্রচার: সরকার বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠানোর সুবিধা সম্পর্কে প্রচার বাড়াচ্ছে।
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ
- বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করা: অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করলে আনুষ্ঠানিক চ্যানেলে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়বে।
- অবৈধ অর্থপাচার বন্ধ করা: দেশ থেকে অবৈধ অর্থপাচার বন্ধ করার জন্য কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।
- দক্ষ কর্মী প্রেরণ: বিদেশে আরও দক্ষ কর্মী পাঠানোর উপর জোর দেওয়া উচিত।
ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা
বিশ্বব্যাংকের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০২৪ সালে বিশ্বব্যাপী রেমিট্যান্স প্রবাহের প্রবৃদ্ধি ৫ শতাংশে নেমে আসতে পারে। এর প্রধান কারণ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরো এরিয়া ও জিসিসি দেশগুলোতে দুর্বল অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে দেখানো হয়েছে।তবে, বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এই চিত্র ভিন্ন হতে পারে। ২০২৪ সালে বাংলাদেশের রেমিট্যান্স আয় ২৭ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে, যা আগের বছরের তুলনায় ২২ শতাংশ বেশি। এই ধারা অব্যাহত থাকলে, আগামী বছরগুলোতে বাংলাদেশের অবস্থান আরও উন্নত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
ট্যাক্স স্ল্যাব বদলে দিল মোদি সরকার: মধ্যবিত্তের পকেটে থাকবে আরও টাকা!