Jamalaye Jibonto Bhanu: বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি অভিনেতা ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়ের জীবনী নিয়ে নির্মিত ‘যমালয়ে জীবন্ত ভানু’ ছবিটি আগামী ১৫ নভেম্বর ২০২৪ তারিখে মুক্তি পাচ্ছে।
এই বহু প্রতীক্ষিত বায়োপিক ছবিটি পরিচালনা করেছেন কৃষ্ণেন্দু চট্টোপাধ্যায়, যেখানে মূল চরিত্রে অভিনয় করেছেন বিখ্যাত অভিনেতা শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়।’যমালয়ে জীবন্ত ভানু’ একটি হাস্যরসাত্মক নাট্য চলচ্চিত্র, যা ২০২৪ সালে নির্মিত হয়েছে। ছবিটির প্রযোজনা করেছেন সুমন কুমার দাস এবং বুড়িমা চিত্রম নামক প্রযোজনা সংস্থা এর পৃষ্ঠপোষকতা করেছে। এই ছবিটি বাংলা চলচ্চিত্র জগতের এক অনন্য সৃষ্টি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে, যা ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়ের জীবন ও কর্মের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে নির্মিত হয়েছে।ছবিটিতে শাশ্বত চট্টোপাধ্যায় ছাড়াও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছেন বেশ কিছু বিশিষ্ট অভিনেতা-অভিনেত্রী। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন দেবলীনা দত্ত, যিনি ছবিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় অভিনয় করেছেন।
আরজি কর কাণ্ডে মমতার পদত্যাগ দাবি: বিজেপির ‘এক দফা, এক দাবি’ আন্দোলন
এছাড়াও, বিখ্যাত অভিনেত্রী রুমা গুহঠাকুরতার চরিত্রে অভিনয় করেছেন বাসবদত্তা চট্টোপাধ্যায়।ছবিটির মুক্তির তারিখ নিয়ে বেশ কিছু জল্পনা-কল্পনা ছিল। প্রথমে খবর এসেছিল যে ছবিটি ৩০ আগস্ট মুক্তি পাবে। কিন্তু পরে জানা যায় যে ছবিটি ১৫ নভেম্বর থিয়েটারে মুক্তি পাবে। এই তারিখটি বিশেষভাবে নির্বাচন করা হয়েছে, কারণ এটি ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়ের ১০৪তম জন্মবার্ষিকীর কাছাকাছি সময়।
‘যমালয়ে জীবন্ত ভানু’ ছবিটি শুধুমাত্র একটি বায়োপিক নয়, এটি বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন। ভানু বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন বাংলা চলচ্চিত্রের এক অবিস্মরণীয় ব্যক্তিত্ব, যিনি তাঁর অসাধারণ অভিনয় দক্ষতা এবং কৌতুক রসবোধ দিয়ে দর্শকদের মন জয় করেছিলেন। তাঁর জীবন ও কর্মের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এই ছবিটি নির্মাণ করা হয়েছে।ছবিটির নির্মাণ প্রক্রিয়া বেশ চ্যালেঞ্জিং ছিল। পরিচালক কৃষ্ণেন্দু চট্টোপাধ্যায় এবং তাঁর দল অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়ের জীবনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরতে। তাঁরা গভীর গবেষণা করেছেন, পুরনো আর্কাইভ ফুটেজ দেখেছেন, এবং ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিবার ও সহকর্মীদের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন যাতে ছবিটি যথাযথভাবে তাঁর জীবনকে তুলে ধরতে পারে।
শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়ের জন্য এই ভূমিকাটি ছিল একটি বড় চ্যালেঞ্জ। তিনি ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়ের চরিত্রটি জীবন্ত করতে অনেক প্রস্তুতি নিয়েছেন। তিনি ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুরনো ছবিগুলি দেখেছেন, তাঁর কথা বলার ধরন ও অঙ্গভঙ্গি অনুশীলন করেছেন, এবং তাঁর জীবনের বিভিন্ন ঘটনা সম্পর্কে গভীরভাবে পড়াশোনা করেছেন।ছবিটির শুটিং হয়েছে কলকাতা ও তার আশপাশের বিভিন্ন স্থানে। পরিচালক ও প্রযোজকরা চেষ্টা করেছেন যাতে ১৯৫০ ও ৬০-এর দশকের কলকাতার মনোরম পরিবেশ ফুটিয়ে তোলা যায়। এজন্য তাঁরা পুরনো বাড়ি, রাস্তা, এবং অন্যান্য স্থান ব্যবহার করেছেন যা সেই সময়ের স্মৃতি বহন করে।’
যমালয়ে জীবন্ত ভানু’ শুধু ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়ের ব্যক্তিগত জীবন নয়, তাঁর পেশাগত জীবনেরও একটি সম্পূর্ণ চিত্র তুলে ধরার চেষ্টা করেছে। ছবিটিতে দেখানো হয়েছে কীভাবে তিনি একজন সাধারণ মানুষ থেকে বাংলা চলচ্চিত্রের এক অবিসংবাদিত তারকায় পরিণত হন। তাঁর সংগ্রাম, সাফল্য, এবং ব্যর্থতাগুলিও ছবিতে তুলে ধরা হয়েছে।ছবিটির সংলাপ লেখার ক্ষেত্রেও বিশেষ যত্ন নেওয়া হয়েছে। ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিখ্যাত ডায়ালগ ও কৌতুক রসবোধকে যথাযথভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে। এছাড়াও, ছবিটিতে সেই সময়ের বাংলা চলচ্চিত্র জগতের অন্যান্য বিখ্যাত ব্যক্তিত্বদের চরিত্রও দেখা যাবে।’যমালয়ে জীবন্ত ভানু’ ছবিটি শুধু ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়ের জীবনী নয়, এটি সেই সময়ের বাংলা চলচ্চিত্রের একটি জীবন্ত দলিলও বটে। ছবিটিতে দেখানো হয়েছে কীভাবে সেই সময়ে বাংলা চলচ্চিত্র তৈরি হত, কী ছিল সেই সময়ের দর্শকদের রুচি, এবং কীভাবে অভিনেতারা তাদের ক্যারিয়ার গড়ে তুলতেন।ছবিটির সঙ্গীত ও পটভূমির সঙ্গীতও বিশেষভাবে তৈরি করা হয়েছে। সেই সময়ের বিখ্যাত গান ও সুরগুলি ব্যবহার করা হয়েছে যাতে দর্শকরা সেই যুগের মধ্যে ফিরে যেতে পারেন।
‘মানিকবাবুর মেঘ’: ১০০ দিন পর এখনও প্রেক্ষাগৃহে! কী এমন জাদু আছে এই ছবিতে?
এছাড়াও, কিছু নতুন গানও রচনা করা হয়েছে যা ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়ের জীবন ও কর্মের প্রতি শ্রদ্ধা জানায়।’যমালয়ে জীবন্ত ভানু’ ছবিটি নির্মাণের পিছনে একটি বড় উদ্দেশ্য রয়েছে। পরিচালক ও প্রযোজকরা চান যে নতুন প্রজন্ম ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানুক ও তাঁর অবদানকে স্মরণ করুক। তাঁরা মনে করেন, ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো শিল্পীরা বাংলা চলচ্চিত্রকে যে উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছিলেন, তা নতুন প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করবে।ছবিটির প্রচার ও প্রসারের জন্য একটি বিস্তৃত পরিকল্পনা করা হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়া, টেলিভিশন, এবং প্রিন্ট মিডিয়ায় ব্যাপক প্রচারণা চালানো হচ্ছে। এছাড়াও, ছবির টিম বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে ছাত্রছাত্রীদের সাথে মতবিনিময় করছেন।সব মিলিয়ে, ‘যমালয়ে জীবন্ত ভানু’ শুধু একটি বায়োপিক নয়, এটি বাংলা চলচ্চিত্রের সুবর্ণ যুগের প্রতি একটি শ্রদ্ধাঞ্জলি।