10 Scariest Halloween Movies: অক্টোবর মাস মানেই বাতাসে হালকা হিমেল আমেজ আর হ্যালোইনের প্রস্তুতি। কুমড়োর লণ্ঠন, অদ্ভুত পোশাক আর ক্যান্ডির পাশাপাশি এই উৎসবের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হলো ভয়ের সিনেমা দেখা। বর্তমানে স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মগুলির দৌলতে আমাদের হাতের মুঠোয় চলে এসেছে হাজার হাজার সিনেমার সম্ভার। এর মধ্যে অন্যতম জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্ম হলো Hulu, যা বিশেষ করে তার হরর এবং থ্রিলার কালেকশনের জন্য পরিচিত। Statista-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২৫ সালের শুরুতেই Hulu-এর সাবস্ক্রাইবার সংখ্যা ৫০ মিলিয়ন ছাড়িয়ে গেছে, যা প্রমাণ করে এর জনপ্রিয়তা। এই প্ল্যাটফর্মটি শুধুমাত্র ক্লাসিক হরর সিনেমাই নয়, বরং এমন অনেক আধুনিক এবং এক্সক্লুসিভ কনটেন্ট দর্শকদের উপহার দেয় যা অন্য কোথাও পাওয়া কঠিন। তাই এই হ্যালোইনে আপনি যদি বন্ধু-বান্ধব বা পরিবারের সাথে বসে গা ছমছমে অভিজ্ঞতা পেতে চান, তাহলে সঠিক জায়গায় এসেছেন। আমরা শুধুমাত্র সিনেমার একটি তালিকা তৈরি করিনি, বরং প্রতিটি সিনেমার গভীরে গিয়ে তার প্রেক্ষাপট, নির্মাণশৈলী এবং এটি কেন আপনার দেখা উচিত, তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি।
কেন আমরা ভয় পেতে ভালোবাসি? একটি মনস্তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ
ভয়ের সিনেমা দেখার অনুভূতিটা বেশ অদ্ভুত। আমরা একদিকে ভয় পাই, কিন্তু অন্যদিকে চোখও সরাতে পারি না। এর পিছনে রয়েছে একটি জটিল মনস্তাত্ত্বিক কারণ। ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকের একটি স্বাস্থ্য বিষয়ক প্রতিবেদন অনুসারে, ভয়ের সিনেমা দেখার সময় আমাদের মস্তিষ্কের অ্যামিগডালা (amygdala) অংশটি সক্রিয় হয়ে ওঠে, যা আমাদের ‘ফাইট-অর-ফ্লাইট’ (fight-or-flight) প্রতিক্রিয়ার জন্য দায়ী। এর ফলে অ্যাড্রেনালিন এবং কর্টিসলের মতো হরমোন নিঃসৃত হয়, যা আমাদের হৃদস্পন্দন বাড়িয়ে দেয় এবং শরীরকে উত্তেজিত করে তোলে। কিন্তু যেহেতু আমরা জানি যে এই ভয় বাস্তব নয়, তাই সিনেমা শেষ হওয়ার পরে ডোপামিন এবং এন্ডোরফিনের মতো ভালো অনুভূতির হরমোন নিঃসৃত হয়। এই পুরো প্রক্রিয়াটি আমাদের এক ধরনের মানসিক স্বস্তি বা ক্যাথারসিস (catharsis) দেয়। এক কথায়, নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে ভয় পাওয়ার এই অভিজ্ঞতা আমাদের দৈনন্দিন জীবনের একঘেয়েমি থেকে মুক্তি দেয়।
হরর সিনেমার এই জনপ্রিয়তার পিছনে অর্থনৈতিক কারণও রয়েছে। Forbes-এর একটি বিশ্লেষণ অনুযায়ী, হরর সিনেমাগুলি সাধারণত কম বাজেটে তৈরি করা হয় কিন্তু বক্স অফিসে বিশাল সাফল্য পায়। উদাহরণস্বরূপ, ‘The Blair Witch Project’ মাত্র ৬০,০০০ ডলারে তৈরি হয়ে প্রায় ২৫০ মিলিয়ন ডলার আয় করেছিল। এই কম ঝুঁকি এবং উচ্চ লাভের কারণেই স্টুডিও এবং স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মগুলি হরর কনটেন্টের উপর প্রচুর পরিমাণে বিনিয়োগ করে।
Hulu-তে এই অক্টোবরে দেখার মতো ১০টি সেরা হ্যালোইন মুভি
আমরা অনেক গবেষণা এবং সমালোচকদের পর্যালোচনার উপর ভিত্তি করে Hulu-এর বিশাল লাইব্রেরি থেকে ১০টি সেরা ভয়ের সিনেমা বেছে নিয়েছি। এই তালিকায় বিভিন্ন ধরনের হরর জনরা (sub-genre) যেমন – সুপারন্যাচারাল, সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার, স্ল্যাশার এবং মনস্টার মুভি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
১. হেলরাইজার (Hellraiser – 2022)
সংক্ষিপ্তসার: ক্লাইভ বার্কারের ক্লাসিক ‘The Hellbound Heart’ উপন্যাস এবং ১৯৮৭ সালের সিনেমার উপর ভিত্তি করে তৈরি এই রিবুটটি এক নতুন প্রজন্মের কাছে সেনোবাইটদের (Cenobites) ভয়ঙ্কর জগতকে তুলে ধরে। গল্পটি এক তরুণীকে কেন্দ্র করে, যে একটি প্রাচীন পাজল বক্স খুঁজে পায়। সে জানে না যে এই বক্সটি খুললেই অন্য এক মাত্রার দরজা খুলে যাবে, যেখান থেকে বেরিয়ে আসবে পিনহেডের (Pinhead) মতো ভয়ংকর সৃষ্টি, যারা আনন্দ এবং যন্ত্রণার মধ্যে কোনো পার্থক্য করে না।
কেন এটি ভয়ের?: পুরনো সিনেমার তুলনায় এই সংস্করণটি অনেক বেশি গ্রাফিক এবং বডি হররের উপর জোর দেয়। সেনোবাইটদের ডিজাইন এবং তাদের অত্যাচার করার পদ্ধতি অত্যন্ত বাস্তবসম্মত এবং অস্বস্তিকর। এটি শুধুমাত্র জাম্প স্কেয়ারের উপর নির্ভর করে না, বরং একটি চাপা আতঙ্ক তৈরি করে যা দর্শকদের মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করে তোলে।
সমালোচকদের রায়: Rotten Tomatoes-এ এই সিনেমাটি ৬৮% ‘ফ্রেশ’ রেটিং পেয়েছে, যা হরর রিবুটের ক্ষেত্রে বেশ সম্মানজনক। সমালোচকরা বিশেষ করে জেমি ক্লেটনের পিনহেড হিসাবে অভিনয় এবং সিনেমার ভিজ্যুয়াল ডিজাইনের প্রশংসা করেছেন। এটি একটি Hulu অরিজিনাল, তাই শুধুমাত্র এই প্ল্যাটফর্মেই পাওয়া যাবে।
২. প্রে (Prey – 2022)
সংক্ষিপ্তসার: ‘প্রিডেটর’ ফ্র্যাঞ্চাইজির এই প্রিক্যুয়েলটি ৩০০ বছর আগে কোমাঞ্চি উপজাতির প্রেক্ষাপটে তৈরি। নারু নামের এক তরুণী যোদ্ধা তার সম্প্রদায়কে এক ভয়ংকর শিকারির হাত থেকে বাঁচানোর চেষ্টা করে। এই শিকারি আর কেউ নয়, আমাদের পরিচিত প্রিডেটর, যে প্রযুক্তিতে অনেক উন্নত এবং তার একমাত্র উদ্দেশ্য হলো শিকার করা।
কেন এটি ভয়ের?: ‘প্রে’ একটি অসাধারণ অ্যাকশন-হরর সিনেমা। এখানে ভয়টা শুধু প্রিডেটরের চেহারায় নয়, বরং তার শিকার করার পদ্ধতিতে। নারু এবং প্রিডেটরের মধ্যে যে বুদ্ধির লড়াই চলে, তা দর্শকদের আসনের প্রান্তে বসিয়ে রাখে। সিনেমার সাউন্ড ডিজাইন এবং রন আর্জেন্টিনা বেলের আবহ সঙ্গীত এক টানটান উত্তেজনা তৈরি করে।
সাংস্কৃতিক প্রভাব: এই সিনেমাটি শুধুমাত্র একটি সফল প্রিক্যুয়েল নয়, এটি ইন্ডিজেনাস বা আদিবাসী চরিত্রদের সিনেমার কেন্দ্রে নিয়ে আসার জন্য বিশ্বজুড়ে প্রশংসিত হয়েছে। IMDb-তে ৭.১ রেটিং পাওয়া এই সিনেমাটি প্রমাণ করেছে যে সঠিক চিত্রনাট্য এবং পরিচালনা থাকলে পুরনো ফ্র্যাঞ্চাইজিকেও নতুনভাবে বাঁচিয়ে তোলা যায়।
৩. বার্বারিয়ান (Barbarian – 2022)
সংক্ষিপ্তসার: টেস নামের এক তরুণী চাকরির ইন্টারভিউ দেওয়ার জন্য ডেট্রয়েটে একটি এয়ারবিএনবি (Airbnb) বুক করে। কিন্তু সেখানে পৌঁছে সে দেখে যে বাড়িটি ভুলবশত অন্য এক ব্যক্তির নামেও বুক করা হয়েছে। অনিচ্ছা সত্ত্বেও সে সেই ব্যক্তির সাথে রাত কাটানোর সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু বাড়ির বেসমেন্টে একটি গোপন দরজা আবিষ্কার করার পর তাদের জীবন দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়।
কেন এটি ভয়ের?: ‘বার্বারিয়ান’ একটি অপ্রত্যাশিত এবং চমকে ভরপুর সিনেমা। এটি শুরু হয় একটি সাধারণ থ্রিলারের মতো, কিন্তু ধীরে ধীরে এমন দিকে মোড় নেয় যা দর্শক কল্পনাও করতে পারে না। এখানে জাম্প স্কেয়ার, মনস্তাত্ত্বিক চাপ এবং বডি হররের এক অদ্ভুত মিশ্রণ রয়েছে। সিনেমার চিত্রনাট্য দর্শকদের প্রত্যাশা নিয়ে খেলা করে এবং প্রতিটি মুহূর্তে নতুন ভয় তৈরি করে।
কারা দেখবেন?: যারা গতানুগতিক হরর সিনেমার বাইরে নতুন কিছু দেখতে চান, তাদের জন্য ‘বার্বারিয়ান’ একটি আদর্শ পছন্দ। এই সিনেমাটি প্রমাণ করে যে একটি ভালো হরর সিনেমার জন্য বিশাল বাজেটের প্রয়োজন নেই, একটি দুর্দান্ত গল্পই যথেষ্ট।
৪. নো ওয়ান উইল সেভ ইউ (No One Will Save You – 2023)
সংক্ষিপ্তসার: ব্রিন নামের এক তরুণী সমাজের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে তার শৈশবের বাড়িতে একা থাকে। এক রাতে তার বাড়িতে একদল ভিনগ্রহের প্রাণী বা এলিয়েন আক্রমণ করে। সিনেমাটি প্রায় সংলাপহীন এবং ব্রিনের বেঁচে থাকার লড়াইকে কেন্দ্র করে এগিয়ে যায়।
কেন এটি ভয়ের?: এই সিনেমাটির সবচেয়ে বড় শক্তি হলো এর নীরবতা। কোনো সংলাপ না থাকায় প্রতিটি ছোট শব্দ, যেমন – মেঝের ক্যাঁচক্যাঁচ আওয়াজ বা দূর থেকে ভেসে আসা অদ্ভুত শব্দ, ভয়কে বহুগুণ বাড়িয়ে তোলে। এটি একটি হোম ইনভেশন (home invasion) থ্রিলার, কিন্তু এখানে আক্রমণকারী মানুষ নয়, এলিয়েন। ব্রিনের অসহায়তা এবং তার একাকী লড়াই দর্শকদের মনে গভীর ছাপ ফেলে।
সমালোচকদের প্রশংসা: The Guardian-এর মতো প্রথম সারির গণমাধ্যমগুলি এই সিনেমার উদ্ভাবনী পদ্ধতির প্রশংসা করেছে। এটি প্রমাণ করে যে হররকে শুধুমাত্র চিৎকারের মাধ্যমে নয়, নীরবতার মাধ্যমেও ফুটিয়ে তোলা যায়।
৫. এ কোয়াইট প্লেস (A Quiet Place – 2018)
সংক্ষিপ্তসার: পৃথিবী একদল রহস্যময় প্রাণী দ্বারা আক্রান্ত, যারা শব্দের উৎস শুনে শিকার করে। অ্যাবট পরিবারকে এই নতুন পৃথিবীতে বেঁচে থাকার জন্য সম্পূর্ণ নিঃশব্দে জীবনযাপন করতে হয়। তাদের প্রতিটি পদক্ষেপ, প্রতিটি নিঃশ্বাস গুনে গুনে ফেলতে হয়, কারণ সামান্য শব্দই তাদের মৃত্যু ডেকে আনতে পারে।
কেন এটি ভয়ের?: জন ক্রাসিনস্কি পরিচালিত এই সিনেমাটি সাউন্ড ডিজাইনের একটি মাস্টারক্লাস। সিনেমা হলে বসে দেখার সময় দর্শকরা নিজেরাও নিঃশ্বাস বন্ধ করে রাখতে বাধ্য হন। এখানে ভয়টা শুধু প্রাণীদের আক্রমণের নয়, বরং শব্দ করে ফেলার ভয়। পরিবারের সদস্যদের মধ্যে ইশারায় কথা বলা এবং তাদের টিকে থাকার লড়াই এক অসাধারণ মানসিক চাপ তৈরি করে।
বক্স অফিস সাফল্য: মাত্র ১৭ মিলিয়ন ডলারের বাজেটে তৈরি এই সিনেমাটি বিশ্বজুড়ে ৩৪০ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি আয় করে, যা এটিকে সাম্প্রতিক সময়ের অন্যতম সফল হরর সিনেমায় পরিণত করেছে।
৬. দ্য ব্লেয়ার উইচ প্রজেক্ট (The Blair Witch Project – 1999)
সংক্ষিপ্তসার: তিন জন ছাত্রছাত্রী মেরিল্যান্ডের ব্ল্যাক হিলস জঙ্গলে ব্লেয়ার উইচ নামের এক কিংবদন্তি ডাইনির উপর তথ্যচিত্র বানাতে যায় এবং নিখোঁজ হয়ে যায়। এক বছর পর তাদের ক্যামেরার ফুটেজ উদ্ধার করা হয়, যা থেকে তাদের শেষ কয়েক দিনের ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার কথা জানা যায়।
কেন এটি ভয়ের?: এই সিনেমাটি ‘ফাউন্ড ফুটেজ’ (found footage) জনরাকে জনপ্রিয় করে তোলে। এখানে কোনো রক্ত বা জাম্প স্কেয়ার নেই, কিন্তু যা আছে তা হলো অফুরন্ত মানসিক চাপ। ক্যামেরা হাতে চরিত্রদের দৌড়াদৌড়ি, জঙ্গলের মধ্যে রাতের অন্ধকারে অদ্ভুত শব্দ এবং তাদের ক্রমবর্ধমান আতঙ্ক দর্শকদের মনে করে দেয় যে, যা দেখা যায় না, তার ভয় সবচেয়ে বেশি।
মার্কেটিং কৌশল: এর মার্কেটিং ছিল যুগান্তকারী। নির্মাতারা এমনভাবে প্রচার করেছিলেন যেন এটি একটি সত্যি ঘটনা। এটি ছিল ইন্টারনেটের মাধ্যমে ভাইরাল মার্কেটিংয়ের প্রথম সফল উদাহরণগুলির মধ্যে একটি, যা নিয়ে হার্ভার্ড বিজনেস স্কুলের মতো প্রতিষ্ঠানেও কেস স্টাডি করা হয়।
৭. ২৮ ডেজ লেটার (28 Days Later – 2002)
সংক্ষিপ্তসার: জিম নামের এক ব্যক্তি কোমা থেকে উঠে দেখে যে পুরো লন্ডন শহর জনশূন্য। একটি ভয়াবহ ভাইরাস, যা মানুষকে চরম হিংস্র করে তোলে, সভ্যতাকে ধ্বংস করে দিয়েছে। কয়েকজন বেঁচে থাকা মানুষকে নিয়ে জিম একটি নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে বের হয়।
কেন এটি ভয়ের?: ড্যানি বয়েল পরিচালিত এই সিনেমাটি ‘জম্বি’ জনরাকে নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করেছে। এখানে জম্বিরা ধীরগতির নয়, বরং দৌড়ায়। এই ‘রেজ’ (Rage) ভাইরাসে আক্রান্তরা অত্যন্ত দ্রুত এবং হিংস্র, যা সিনেমাটিকে একটি দ্রুতগতির থ্রিলারে পরিণত করেছে। খালি লন্ডনের দৃশ্যগুলি একাকীত্ব এবং হতাশার এক অসাধারণ চিত্র তুলে ধরে।
সাংস্কৃতিক প্রভাব: এই সিনেমাটি ‘The Walking Dead’-এর মতো অনেক আধুনিক জম্বি গল্পের অনুপ্রেরণা। এটি শুধুমাত্র একটি হরর সিনেমা নয়, এটি মানব সভ্যতার পতনের একটি শক্তিশালী রূপক।
৮. লেট দ্য রাইট ওয়ান ইন (Let the Right One In – 2008)
সংক্ষিপ্তসার: সুইডেনের প্রেক্ষাপটে নির্মিত এই গল্পটি অস্কার নামের এক ১২ বছরের নিঃসঙ্গ ছেলেকে কেন্দ্র করে, যে স্কুলে বুলিংয়ের শিকার। তার জীবনে এলি নামের এক রহস্যময়ী মেয়ে আসে। ধীরে ধীরে অস্কার বুঝতে পারে যে এলি একটি ভ্যাম্পায়ার।
কেন এটি ভয়ের?: এটি একটি প্রচলিত ভ্যাম্পায়ার সিনেমা নয়। এখানে ভয় এবং ভালোবাসার এক অদ্ভুত মিশ্রণ রয়েছে। ভ্যাম্পায়ারের হিংস্রতা এবং দুটি শিশুর নিষ্পাপ বন্ধুত্বের গল্প একসাথে এগিয়ে চলে। সিনেমার ধীরগতি এবং ঠান্ডা, বরফে ঢাকা পরিবেশ একটি বিষণ্ণ এবং ভয়ের আবহ তৈরি করে।
সমালোচকদের রায়: এই সিনেমাটি বিশ্বজুড়ে সমালোচকদের দ্বারা প্রশংসিত এবং এটিকে আধুনিক হরর সিনেমার একটি ক্লাসিক হিসাবে গণ্য করা হয়। BBC-এর একটি সমীক্ষায় এটিকে একবিংশ শতাব্দীর অন্যতম সেরা চলচ্চিত্রের তালিকায় স্থান দেওয়া হয়েছে।
৯. প্যারাসাইট (Parasite – 2019)
সংক্ষিপ্তসার: যদিও এটি একটি বিশুদ্ধ হরর সিনেমা নয়, বং জুন-হো পরিচালিত অস্কারজয়ী এই সিনেমাটির মধ্যে যে পরিমাণ থ্রিল এবং সামাজিক ভাষ্য রয়েছে, তা যেকোনো হ্যালোইন রাতের জন্য উপযুক্ত। গল্পটি কিম পরিবারকে নিয়ে, যারা অত্যন্ত দরিদ্র। তারা ধীরে ধীরে এক ধনী পার্ক পরিবারে চাকরি নেয় এবং তাদের জীবনে পরজীবীর মতো প্রবেশ করে।
কেন এটি ভয়ের?: ‘প্যারাসাইট’-এর ভয় মনস্তাত্ত্বিক। এখানে কোনো ভূত বা দৈত্য নেই, ভয়টা আসে সামাজিক শ্রেণিবিভেদ এবং মানুষের লোভ থেকে। সিনেমার দ্বিতীয়ার্ধ একটি অপ্রত্যাশিত এবং হিংস্র মোড় নেয়, যা দর্শকদের হতবাক করে দেয়। এটি প্রমাণ করে যে আসল ভয় আমাদের সমাজের মধ্যেই লুকিয়ে থাকতে পারে।
ঐতিহাসিক সাফল্য: এটি প্রথম অ-ইংরেজি ভাষার চলচ্চিত্র যা সেরা চলচ্চিত্রের জন্য অ্যাকাডেমি পুরস্কার জিতেছে। এই সাফল্য বিশ্বজুড়ে সিনেমার ইতিহাসে একটি মাইলফলক।
১০. ফ্রেশ (Fresh – 2022)
সংক্ষিপ্তসার: নোয়া নামের এক তরুণী ডেটিং অ্যাপে ব্যর্থ হয়ে মুদি দোকানে স্টিভ নামের এক আকর্ষণীয় যুবকের সাথে পরিচিত হয়। তাদের সম্পর্ক খুব দ্রুত গভীর হয়, কিন্তু স্টিভের কিছু অদ্ভুত অভ্যাস নোয়াকে সন্দেহের মধ্যে ফেলে দেয়। সে শীঘ্রই আবিষ্কার করে যে স্টিভের এক ভয়ানক এবং অকল্পনীয় গোপন পরিচয় রয়েছে।
কেন এটি ভয়ের?: ‘ফ্রেশ’ একটি ডার্ক কমেডি থ্রিলার যা আধুনিক ডেটিংয়ের ঝুঁকি এবং বিপদকে একটি চরম স্তরে নিয়ে যায়। সিনেমার প্রথম ৩০ মিনিট একটি রোমান্টিক কমেডির মতো মনে হলেও, তারপর এটি একটি ভয়ঙ্কর দিকে মোড় নেয়। এখানে ক্যানিবালিজম বা নরমাংস ভক্ষণের মতো অস্বস্তিকর বিষয় রয়েছে, যা দর্শকদের মানসিকভাবে নাড়িয়ে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট।
কারা দেখবেন?: যারা শক্তিশালী মহিলা চরিত্র এবং একটি অনির্দেশ্য গল্প পছন্দ করেন, তাদের জন্য এই Hulu অরিজিনালটি একটি দারুণ পছন্দ।
আপনার হ্যালোইন মুভি নাইটকে আরও আনন্দদায়ক করার টিপস
- সঠিক পরিবেশ তৈরি করুন: ঘরের আলো কমিয়ে দিন, কিছু মোমবাতি জ্বালাতে পারেন। ভালো সাউন্ড সিস্টেম বা হেডফোন ব্যবহার করুন, কারণ হরর সিনেমায় আবহ সঙ্গীত এবং সাউন্ড এফেক্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
- খাবারের আয়োজন: পপকর্ন, পিৎজা বা আপনার পছন্দের স্ন্যাকস তৈরি রাখুন।
- বিরতি নিন: যদি সিনেমা খুব বেশি ভয়ের মনে হয়, তাহলে মাঝে মাঝে বিরতি নিতে দ্বিধা করবেন না।
সিনেমার নাম (Bengali) | সিনেমার নাম (English) | প্রকাশের বছর | জনরা (Genre) | আমার মতে ভয়ের মাত্রা (১০-এর মধ্যে) |
হেলরাইজার | Hellraiser | ২০২২ | সুপারন্যাচারাল, বডি হরর | ৯/১০ |
প্রে | Prey | ২০২২ | অ্যাকশন, সায়েন্স-ফিকশন হরর | ৮.৫/১০ |
বার্বারিয়ান | Barbarian | ২০২২ | সাইকোলজিক্যাল হরর, মিস্ট্রি | ৯.৫/১০ |
নো ওয়ান উইল সেভ ইউ | No One Will Save You | ২০২৩ | সায়েন্স-ফিকশন হরর, থ্রিলার | ৮/১০ |
এ কোয়াইট প্লেস | A Quiet Place | ২০১৮ | মনস্টার, পোস্ট-অ্যাপোক্যালিপ্টিক | ৯/১০ |
দ্য ব্লেয়ার উইচ প্রজেক্ট | The Blair Witch Project | ১৯৯৯ | ফাউন্ড ফুটেজ, সাইকোলজিক্যাল হরর | ৮.৫/১০ |
২৮ ডেজ লেটার | 28 Days Later | ২০০২ | পোস্ট-অ্যাপোক্যালিপ্টিক, জম্বি | ৯/১০ |
লেট দ্য রাইট ওয়ান ইন | Let the Right One In | ২০০৮ | ড্রামা, রোমান্স, হরর | ৮/১০ |
প্যারাসাইট | Parasite | ২০১৯ | ডার্ক কমেডি, থ্রিলার | ৭.৫/১০ |
ফ্রেশ | Fresh | ২০২২ | থ্রিলার, ডার্ক কমেডি | ৮.৫/১০ |
হ্যালোইন শুধুমাত্র একটি উৎসব নয়, এটি ভয়কে উপভোগ করার এবং আমাদের অ্যাড্রেনালিন রাশকে পরখ করার একটি সুযোগ। Hulu তার বৈচিত্র্যময় এবং মানসম্পন্ন হরর কালেকশনের মাধ্যমে দর্শকদের জন্য সেই সুযোগটিই করে দিয়েছে। আমাদের এই তালিকাটি আপনাকে এই অক্টোবরে দেখার মতো সেরা কিছু সিনেমা বেছে নিতে সাহায্য করবে। এখানে ক্লাসিক থেকে শুরু করে আধুনিক, বিভিন্ন ধরনের সিনেমা রয়েছে যা যেকোনো হরর প্রেমীর মন জয় করতে বাধ্য। তাই আর দেরি না করে আপনার পছন্দের সিনেমাটি বেছে নিন, লাইট বন্ধ করুন এবং হ্যালোইনের এই ভয়ঙ্কর রাত উপভোগ করুন।