Best local transport systems in Asian county: এশিয়ার বেশ কয়েকটি দেশ তাদের পাবলিক ট্রান্সপোর্ট সিস্টেমকে আধুনিক ও স্মার্ট করে তুলেছে। এর মধ্যে সিঙ্গাপুর, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, হংকং এবং চীন অন্যতম। এই দেশগুলোর পাবলিক ট্রান্সপোর্ট ব্যবস্থা বিশ্বের অন্যতম সেরা হিসেবে বিবেচিত হয়।
সিঙ্গাপুর – বিশ্বের সেরা পাবলিক ট্রান্সপোর্ট সিস্টেম
সিঙ্গাপুরের পাবলিক ট্রান্সপোর্ট সিস্টেম বিশ্বের অন্যতম সেরা হিসেবে পরিচিত। এখানকার মেট্রো রেল সিস্টেম (MRT) এবং বাস সার্ভিস অত্যন্ত দক্ষ ও নির্ভরযোগ্য।
MRT সিস্টেমের বৈশিষ্ট্য:
- ৬টি লাইনে মোট ২০৩ কিলোমিটার নেটওয়ার্ক
- ১২২টি স্টেশন
- প্রতিদিন গড়ে ৩.৪ মিলিয়ন যাত্রী পরিবহন করে
- ৯৯.৯% সময়মত ট্রেন চলাচল করে
বাস সার্ভিসের বৈশিষ্ট্য:
- ৩৫০টির বেশি রুটে ৫,৮০০টি বাস চলাচল করে
- প্রতিদিন গড়ে ৪ মিলিয়ন যাত্রী পরিবহন করে
- ৯৮% বাস সময়মত চলাচল করেIndian Railway: হারানো লাগেজের হদিশ এখন আপনার হাতের মুঠোয়
সিঙ্গাপুরের পাবলিক ট্রান্সপোর্ট সিস্টেম অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে। যাত্রীরা স্মার্টকার্ড ব্যবহার করে সহজেই ভাড়া পরিশোধ করতে পারে। রিয়েল-টাইম তথ্য প্রদানের মাধ্যমে যাত্রীদের যাতায়াত সহজ করা হয়েছে।
জাপান – দক্ষতা ও নির্ভরযোগ্যতার প্রতীক
জাপানের পাবলিক ট্রান্সপোর্ট সিস্টেম বিশ্বের অন্যতম দক্ষ ও নির্ভরযোগ্য হিসেবে পরিচিত। টোকিও মেট্রোপলিটন এরিয়ার রেল নেটওয়ার্ক বিশ্বের সবচেয়ে ব্যস্ত।
জাপানের রেল সিস্টেমের বৈশিষ্ট্য:
- ২৭,৩১১ কিলোমিটার রেল নেটওয়ার্ক
- প্রতিদিন ৭২ মিলিয়ন যাত্রী পরিবহন করে
- ৯৪% ট্রেন সময়মত চলাচল করে
- বুলেট ট্রেন (শিনকানসেন) ৩২০ কিলোমিটার/ঘন্টা বেগে চলে
বাস সার্ভিসের বৈশিষ্ট্য:
- ১,৪০০টির বেশি বাস কোম্পানি রয়েছে
- প্রতিদিন ৪৫ মিলিয়ন যাত্রী পরিবহন করে
জাপানের পাবলিক ট্রান্সপোর্ট সিস্টেম অত্যন্ত নির্ভরযোগ্য ও সময়ানুবর্তী। এখানে ট্রেনের গড় বিলম্ব মাত্র ০.৯ মিনিট। স্মার্ট কার্ড ব্যবহার করে সহজেই ভাড়া পরিশোধ করা যায়।
দক্ষিণ কোরিয়া – স্মার্ট ও আধুনিক পাবলিক ট্রান্সপোর্ট
দক্ষিণ কোরিয়ার পাবলিক ট্রান্সপোর্ট সিস্টেম অত্যন্ত আধুনিক ও স্মার্ট। সিওল মেট্রো বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম ও দক্ষ মেট্রো সিস্টেম।
সিওল মেট্রোর বৈশিষ্ট্য:
- ৯টি লাইনে মোট ৩৩১ কিলোমিটার নেটওয়ার্ক
- ৩০১টি স্টেশন
- প্রতিদিন গড়ে ৭ মিলিয়ন যাত্রী পরিবহন করে
- ৯৯.৯% সময়মত ট্রেন চলাচল করে
বাস সার্ভিসের বৈশিষ্ট্য:
- ৬০০টির বেশি রুটে ৭,০০০টি বাস চলাচল করে
- প্রতিদিন ৫ মিলিয়ন যাত্রী পরিবহন করে
দক্ষিণ কোরিয়ার পাবলিক ট্রান্সপোর্ট সিস্টেমে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়। T-money কার্ড ব্যবহার করে সহজেই ভাড়া পরিশোধ করা যায়। রিয়েল-টাইম তথ্য প্রদানের মাধ্যমে যাত্রীদের যাতায়াত সহজ করা হয়েছে।
হংকং – দক্ষ ও সুবিধাজনক পাবলিক ট্রান্সপোর্ট
হংকং-এর পাবলিক ট্রান্সপোর্ট সিস্টেম অত্যন্ত দক্ষ ও সুবিধাজনক। এখানকার MTR (Mass Transit Railway) বিশ্বের অন্যতম সেরা মেট্রো সিস্টেম হিসেবে পরিচিত।
MTR সিস্টেমের বৈশিষ্ট্য:
- ১১টি লাইনে মোট ২৩১ কিলোমিটার নেটওয়ার্ক
- ৯৩টি স্টেশন
- প্রতিদিন গড়ে ৫.৯ মিলিয়ন যাত্রী পরিবহন করে
- ৯৯.৯% সময়মত ট্রেন চলাচল করে
বাস সার্ভিসের বৈশিষ্ট্য:
- ৭০০টির বেশি রুটে ৫,৮০০টি বাস চলাচল করে
- প্রতিদিন ৪ মিলিয়ন যাত্রী পরিবহন করে
হংকং-এর পাবলিক ট্রান্সপোর্ট সিস্টেমে Octopus কার্ড ব্যবহার করে সহজেই ভাড়া পরিশোধ করা যায়। রিয়েল-টাইম তথ্য প্রদানের মাধ্যমে যাত্রীদের যাতায়াত সহজ করা হয়েছে।
চীন – দ্রুত বর্ধনশীল পাবলিক ট্রান্সপোর্ট সিস্টেম
চীনের পাবলিক ট্রান্সপোর্ট সিস্টেম দ্রুত বর্ধনশীল। বিশেষ করে শাংহাই ও বেইজিং-এর মেট্রো সিস্টেম বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম।
শাংহাই মেট্রোর বৈশিষ্ট্য:
- ১৮টি লাইনে মোট ৭৭৩ কিলোমিটার নেটওয়ার্ক
- ৩৯৫টি স্টেশন
- প্রতিদিন গড়ে ১০ মিলিয়ন যাত্রী পরিবহন করে
বেইজিং মেট্রোর বৈশিষ্ট্য:
- ২৩টি লাইনে মোট ৭২৭ কিলোমিটার নেটওয়ার্ক
- ৪২৮টি স্টেশন
- প্রতিদিন গড়ে ১২.৫ মিলিয়ন যাত্রী পরিবহন করে
চীনের পাবলিক ট্রান্সপোর্ট সিস্টেমে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়। স্মার্টকার্ড ও মোবাইল পেমেন্ট সিস্টেম ব্যবহার করে সহজেই ভাড়া পরিশোধ করা যায়।
দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের মূল্যস্ফীতি রেকর্ড উচ্চতায়: জনগণের জীবনযাত্রা কঠিন হচ্ছে
এশিয়ার এই ৫টি দেশের পাবলিক ট্রান্সপোর্ট সিস্টেম বিশ্বের অন্যতম সেরা হিসেবে পরিচিত। এগুলো অত্যন্ত দক্ষ, নির্ভরযোগ্য ও আধুনিক প্রযুক্তি সমৃদ্ধ। এই দেশগুলোর পাবলিক ট্রান্সপোর্ট সিস্টেম অন্য দেশগুলোর জন্য অনুকরণীয় উদাহরণ হিসেবে কাজ করছে।এই দেশগুলোর পাবলিক ট্রান্সপোর্ট সিস্টেমের সাফল্যের পিছনে রয়েছে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা, পর্যাপ্ত বিনিয়োগ এবং আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার। এগুলো শুধু যাতায়াত সহজ করেনি, বরং শহরগুলোকে আরও বাসযোগ্য ও টেকসই করে তুলেছে।তবে এই দেশগুলোও নিজেদের পাবলিক ট্রান্সপোর্ট সিস্টেমকে আরও উন্নত করার চেষ্টা করছে। বিশেষ করে পরিবেশবান্ধব পরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তোলা, ইলেক্ট্রিক যানবাহন ব্যবহার বৃদ্ধি এবং আরও স্মার্ট সলিউশন প্রয়োগের মাধ্যমে তারা নিজেদের সিস্টেমকে আরও উন্নত করছে।