Blood Coral negative impacts: রক্ত প্রবাল পাথর (Red Coral) প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এক অনন্য নিদর্শন হলেও এর ব্যবহারে পরিবেশ এবং জীববৈচিত্র্যের উপর গুরুতর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। এটি সংগ্রহের জন্য অসংযত শিকার, পরিবেশ দূষণ, এবং সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্রের ধ্বংসের মতো সমস্যাগুলি সৃষ্টি করছে।
রক্ত প্রবালের সংগ্রহ প্রক্রিয়া প্রায়শই অমানবিক এবং পরিবেশ-বিধ্বংসী। অতিরিক্ত শিকার ও অপ্রয়োজনীয় আহরণের ফলে সমুদ্রের বাস্তুতন্ত্রে ভারসাম্যহীনতা দেখা দেয়। গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতি বছর প্রায় ১.৫ মিলিয়ন স্টোনি প্রবাল এবং ৬৫-১১০ হাজার পাউন্ড রক্ত প্রবাল সংগ্রহ করা হয়, যা সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্যকে হুমকির মুখে ফেলে।
গত দশকে Great Barrier Reef-এর জলের তাপমাত্রা ৪০০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ, গবেষণায় উদ্বেগজনক তথ্য
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সমুদ্রের তাপমাত্রা বৃদ্ধি এবং অম্লতা বৃদ্ধির ফলে রক্ত প্রবাল ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। গবেষণায় দেখা গেছে, গত ২০০ বছরে সমুদ্রের অম্লতা ৩০% বৃদ্ধি পেয়েছে, যা প্রবালের ক্যালসিয়াম কার্বনেট গঠনে বাধা সৃষ্টি করছে।
উচ্চ তাপমাত্রার কারণে প্রবালের মধ্যে থাকা শৈবাল বেরিয়ে যায়, যা “প্রবাল ব্লিচিং” নামে পরিচিত। এটি প্রবালের খাদ্য গ্রহণ ও বেঁচে থাকার ক্ষমতা হ্রাস করে। ১৯৯৮ সালে ভারত মহাসাগরে ৮০% প্রবাল ব্লিচিংয়ের শিকার হয়েছিল এবং এর মধ্যে ২০% মারা যায়।
মানুষের অসচেতন কার্যক্রম যেমন ট্রলিং, ডাইভিং, এবং নেট ব্যবহার রক্ত প্রবালের ক্ষতি বাড়াচ্ছে। ট্রলিং পদ্ধতি সমুদ্র তলদেশকে ধ্বংস করে এবং ডাইভিংয়ের ফলে প্রবালের আংশিক মৃত্যু ঘটে।
রক্ত প্রবাল পাথর গয়না ও অলংকার তৈরিতে ব্যবহৃত হয়, যা অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক হলেও এর জন্য সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্যকে বড় মূল্য দিতে হয়।
রক্ত প্রবালের অপব্যবহার বন্ধ করতে টেকসই ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত জরুরি।
রক্ত প্রবাল পাথরের সৌন্দর্য আমাদের মুগ্ধ করলেও এর অপব্যবহার পরিবেশ এবং জীববৈচিত্র্যের জন্য মারাত্মক হুমকি সৃষ্টি করছে। আমাদের উচিত এই মূল্যবান সম্পদ সংরক্ষণে সক্রিয় ভূমিকা পালন করা এবং টেকসই ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান খুঁজে বের করা।
মন্তব্য করুন