Footballers who returned from retirement: ফুটবলের জগতে অবসর একটি সাধারণ ঘটনা, কিন্তু কিছু খেলোয়াড় আছেন যারা অবসরের ঘোষণার পরও মাঠে ফিরে এসেছেন। আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে বিদায় নেওয়ার পর ভক্তদের চাপ, দেশের প্রতি ভালোবাসা বা ব্যক্তিগত কারণে তারা আবার জাতীয় দলের জার্সি গায়ে চাপিয়েছেন। এই প্রতিবেদনে আমরা এমন ১১ জন শীর্ষ খেলোয়াড়ের কথা তুলে ধরবো, যারা অবসর ভেঙে ফিরে এসে ফুটবলের মঞ্চে নতুন করে আলোড়ন তুলেছেন। এই গল্পগুলো শুধু তাদের দক্ষতার প্রমাণ নয়, বরং ফুটবলের প্রতি তাদের অটল ভালোবাসারও সাক্ষ্য বহন করে।
লিওনেল মেসি, ফুটবলের ইতিহাসে অন্যতম সেরা নাম, ২০১৬ সালে কোপা আমেরিকার ফাইনালে চিলির কাছে হেরে আর্জেন্টিনার হয়ে খেলা ছেড়ে দেওয়ার ঘোষণা দেন। তখন তার বয়স ছিল মাত্র ২৯। ভক্তদের হতাশা আর অনুরোধের মুখে তিনি সিদ্ধান্ত বদলান। ফিরে আসার পর ২০২২ সালে কাতার বিশ্বকাপে তিনি আর্জেন্টিনাকে চ্যাম্পিয়ন করেন, ২০১৪ সালের ফাইনালে জার্মানির কাছে হারের প্রতিশোধ নিয়ে। এই ফিরে আসা ফুটবলপ্রেমীদের জন্য এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত। জিনেদিন জিদানও ২০০৪ সালে ফ্রান্সের হয়ে অবসর নিয়েছিলেন, কিন্তু ২০০৬ বিশ্বকাপের আগে ফিরে আসেন। তিনি ফ্রান্সকে ফাইনালে তুললেও ইতালির কাছে হারেন। ফাইনালে তার হেডবাটের ঘটনা আলোচিত হলেও, তার ফিরে আসা দলের জন্য বড় প্রেরণা ছিল।
এদিকে, পল স্কোলস ২০০৪ সালে ইংল্যান্ডের হয়ে অবসর নেন, কিন্তু ২০১০ সালে ফিরে আসার কথা ভেবেছিলেন। যদিও তিনি শেষ পর্যন্ত আন্তর্জাতিক ফুটবলে ফিরেননি, তার ক্লাব ক্যারিয়ারে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে অবসর ভেঙে ফেরা উল্লেখযোগ্য। একইভাবে, কার্লোস তেভেজ ২০১০ সালে আর্জেন্টিনা ছেড়ে দেন, কিন্তু ২০১৪ সালে ফিরে আসেন। তবে তার ফিরে আসা তেমন সফলতা আনেনি। জাভি হার্নান্দেজ ২০১৪ সালে স্পেনের হয়ে অবসর নেন, কিন্তু তার ক্লাব ক্যারিয়ারে বার্সেলোনার জন্য অবিস্মরণীয় অবদান রেখেছেন। আন্তর্জাতিক মঞ্চে তার ফিরে আসার গল্প না থাকলেও, তার প্রভাব অনস্বীকার্য।
অন্যদিকে, ফ্রেডি লুংবার্গ ২০০৮ সালে সুইডেন ছেড়ে দেন, কিন্তু ২০১১ সালে একটি প্রীতি ম্যাচের জন্য ফিরে আসেন। তার ফিরে আসা সীমিত হলেও ভক্তদের জন্য আনন্দের। ল্যান্ডন ডোনোভান ২০১৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের হয়ে অবসর নেন, কিন্তু ২০১৬ সালে ফিরে আসেন। তিনি দলকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে সাহায্য করেন। মার্কো ভান বাস্তেনের ক্ষেত্রে ইনজুরি তাকে ১৯৯৫ সালে অবসরে বাধ্য করে, কিন্তু তার প্রভাব ফুটবলে চিরস্থায়ী। অবসর ভাঙার গল্প না থাকলেও তার উল্লেখ প্রাসঙ্গিক।
পিয়ের-এমেরিক অবামেয়াং ২০২২ সালে গ্যাবনের হয়ে অবসর নেন, কিন্তু ভক্তদের চাপে ফিরে আসার সম্ভাবনা ছিল। তবে তিনি ফিরেননি। বিপরীতে, রায়ান গিগস ২০০৭ সালে ওয়েলস ছেড়ে দেন, কিন্তু ২০১০ সালে ফিরে আসার কথা ভেবেছিলেন। শেষ পর্যন্ত তিনি ক্লাব ফুটবলে মনোযোগ দেন। এছাড়া, জার্মানির মিশেল বালাক ২০১০ সালে অবসর নেন, কিন্তু ২০১২ সালে একটি প্রীতি ম্যাচে ফিরে আসেন। তার ফিরে আসা স্মরণীয় হয়ে থাকে।
এই খেলোয়াড়দের গল্পে দেখা যায়, ফুটবল শুধু একটি খেলা নয়, এটি আবেগের একটি মাধ্যম। অবসরের পর ফিরে আসা সবসময় সহজ নয়। শারীরিক সক্ষমতা, মানসিক প্রস্তুতি এবং দলের প্রয়োজন—সবকিছু মিলিয়ে এই সিদ্ধান্ত নিতে হয়। মেসির মতো কেউ বিশ্বকাপ জিতেছেন, আবার জিদানের মতো কেউ ফাইনালে পৌঁছে হেরেছেন। তবে প্রত্যেকের গল্পই ফুটবলের ইতিহাসে একটি অধ্যায় যোগ করেছে।
শনির দশা টিম ইন্ডিয়ায়! পরপর ৬ তারকার অবসর ঘোষণা, ভেঙে পড়ছে গোটা দল
ফুটবলের ক্যারিয়ার সংক্ষিপ্ত হলেও এই তারকারা প্রমাণ করেছেন, অবসর শেষ কথা নয়। ভক্তদের ভালোবাসা আর দেশের ডাক তাদের ফিরিয়ে এনেছে। এই ১১ জন খেলোয়াড়ের মধ্যে কেউ সাফল্য পেয়েছেন, কেউ বা স্মৃতি রেখে গেছেন। তাদের প্রত্যেকের গল্প আমাদের মনে করিয়ে দেয়—ফুটবল একটি জীবন্ত আবেগ, যা কখনো পুরোনো হয় না।