Canada first Hindu Prime Minister news: জাস্টিন ট্রুডোর পদত্যাগের পর কানাডার প্রধানমন্ত্রী পদের জন্য প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। এই প্রতিযোগিতায় ভারতীয় বংশোদ্ভূত অনিতা আনন্দের নাম সামনে এসেছে, যিনি বর্তমানে কানাডার পরিবহন মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি যদি নির্বাচিত হন, তাহলে তিনি হবেন কানাডার প্রথম হিন্দু প্রধানমন্ত্রী।
অনিতা আনন্দ ১৯৬৭ সালের ২০ মে কানাডার নোভা স্কটিয়া প্রদেশের কেন্টভিলে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা-মা দুজনেই ভারত থেকে আগত চিকিৎসক ছিলেন, যারা ১৯৬০-এর দশকের গোড়ার দিকে কানাডায় অভিবাসী হিসেবে এসেছিলেন। অনিতা আনন্দের পিতার পরিবার তামিলনাড়ুর চেন্নাই থেকে এসেছিলেন, আর মা জন্মগ্রহণ করেছিলেন পাঞ্জাবের একটি ছোট শহরে।অনিতা আনন্দের শিক্ষাগত যোগ্যতা অত্যন্ত উচ্চমানের:
রাজনীতিতে প্রবেশের আগে অনিতা আনন্দ একজন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ছিলেন। তিনি ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করেছেন। তাঁর বিশেষজ্ঞতার ক্ষেত্র ছিল আর্থিক বাজার নিয়ন্ত্রণ এবং কর্পোরেট গভর্নেন্স।২০১৯ সালে অনিতা আনন্দ রাজনীতিতে প্রবেশ করেন এবং অন্টারিওর ওকভিল আসন থেকে হাউস অফ কমন্সে নির্বাচিত হন। নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর মন্ত্রিসভায় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পান।
অনিতা আনন্দ মন্ত্রিসভায় যে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বগুলি পালন করেছেন:
সময়কাল | পদবি |
---|---|
২০১৯-২০২১ | পাবলিক সার্ভিসেস এবং প্রকিউরমেন্ট মন্ত্রী |
২০২১-২০২৪ | প্রতিরক্ষা মন্ত্রী |
২০২৪ | ট্রেজারি বোর্ডের সভাপতি |
২০২৪-বর্তমান | পরিবহন ও অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য মন্ত্রী |
কোভিড-১৯ মহামারির সময় তিনি পাবলিক সার্ভিসেস এবং প্রকিউরমেন্ট মন্ত্রী হিসেবে কানাডার জন্য টিকা ও ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম সংগ্রহের কাজে নেতৃত্ব দেন। এই দায়িত্ব পালনে তাঁর সাফল্য ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়েছিল।প্রতিরক্ষা মন্ত্রী হিসেবে তিনি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সময় ইউক্রেনকে কানাডার সহায়তা প্রদানের কাজে নেতৃত্ব দেন। এছাড়াও কানাডার সশস্ত্র বাহিনীতে যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের ক্ষেত্রেও তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
অনিতা আনন্দ লিবারেল পার্টির নেতৃত্বের জন্য শক্তিশালী প্রার্থী হিসেবে বিবেচিত হচ্ছেন। তাঁর পক্ষে যে বিষয়গুলি রয়েছে:
তবে তাঁর সামনে চ্যালেঞ্জও রয়েছে। ২০২৪ সালে তাঁকে ট্রেজারি বোর্ডের সভাপতি পদে বদলি করা হয়েছিল, যা অনেকে তাঁর রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষার জন্য একটি শাস্তি হিসেবে দেখেছিলেন।
অনিতা আনন্দ ছাড়াও লিবারেল পার্টির নেতৃত্বের জন্য আরও কয়েকজন শক্তিশালী প্রার্থী রয়েছেন:
জাস্টিন ট্রুডো ৬ জানুয়ারি ২০২৫ তারিখে পদত্যাগের ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, নতুন নেতা নির্বাচিত না হওয়া পর্যন্ত তিনি প্রধানমন্ত্রী ও লিবারেল পার্টির নেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।লিবারেল পার্টি ঘোষণা করেছে যে তারা ৯ মার্চ ২০২৫ তারিখে নতুন নেতা নির্বাচন করবে। এর পর নতুন প্রধানমন্ত্রী দায়িত্ব গ্রহণ করবেন।বর্তমানে কানাডার রাজনীতিতে কনজারভেটিভ পার্টি শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে। সর্বশেষ জনমত জরিপে দেখা গেছে:
এই অবস্থায় নতুন প্রধানমন্ত্রীর সামনে বড় চ্যালেঞ্জ হবে দলের জনপ্রিয়তা বাড়ানো এবং আসন্ন নির্বাচনে জয়লাভ করা।
অনিতা আনন্দ কানাডার প্রথম হিন্দু প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে তাঁর সামনে রয়েছে কঠিন প্রতিযোগিতা ও বড় চ্যালেঞ্জ। লিবারেল পার্টির নেতৃত্ব নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর তাঁকে দলের জনপ্রিয়তা বাড়াতে হবে এবং আসন্ন নির্বাচনে কনজারভেটিভ পার্টিকে পরাজিত করতে হবে।অনিতা আনন্দের জয়লাভ শুধু কানাডার জন্যই নয়, সারা বিশ্বের জন্যও তাৎপর্যপূর্ণ হবে। একজন ভারতীয় বংশোদ্ভূত হিন্দু নারীর কানাডার প্রধানমন্ত্রী হওয়া বিশ্বের রাজনীতিতে বৈচিত্র্য ও সমতার একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হিসেবে বিবেচিত হবে।
মন্তব্য করুন