Gum swelling treatment: মাড়ি ফুলে যাওয়া একটি সাধারণ সমস্যা যা অনেকেই অনুভব করেন। এটি শুধু অস্বস্তিকর নয়, বরং গুরুতর মুখের স্বাস্থ্য সমস্যার লক্ষণও হতে পারে। তবে চিন্তার কিছু নেই, কারণ সহজ কিছু ঘরোয়া উপায়ে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। আসুন জেনে নেই মাড়ি ফুলে গেলে কী করা উচিত এবং কীভাবে এই সমস্যা প্রতিরোধ করা যায়।
মাড়ি ফুলে যাওয়ার কারণ
মাড়ি ফুলে যাওয়ার পেছনে বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে। সাধারণত ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ, অপর্যাপ্ত মুখের স্বাস্থ্যবিধি, পুষ্টির ঘাটতি, হরমোনাল পরিবর্তন বা কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া এর জন্য দায়ী। গবেষণায় দেখা গেছে, প্রায় ৪২.২% প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ পেরিওডন্টাল রোগে আক্রান্ত হন, যার একটি প্রধান লক্ষণ হল মাড়ি ফুলে যাওয়া।
মাড়ি ফুলে গেলে করণীয়
১. লবণ পানির কুলকুচি
লবণ পানির কুলকুচি মাড়ি ফুলে যাওয়ার একটি কার্যকর প্রতিকার। এক গ্লাস গরম পানিতে এক চা-চামচ লবণ মিশিয়ে দিনে ২-৩ বার কুলকুচি করুন। লবণের অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল গুণ মুখের জীবাণু দমন করে এবং প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।
গর্ভাবস্থায় তলপেটে ব্যথা হয় কেন? কারন এবং ১০০% উপশমের কৌশল
২. হলুদের ব্যবহার
হলুদের মধ্যে থাকা কারকিউমিন একটি শক্তিশালী অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান। এক চা-চামচ হলুদ গুঁড়ো সামান্য পানিতে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। এই পেস্ট মাড়িতে লাগিয়ে ১০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত ব্যবহারে মাড়ির প্রদাহ কমতে পারে।
৩. অ্যালোভেরা জেল
অ্যালোভেরা জেল তার শীতলকারী ও অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল গুণের জন্য পরিচিত। খাঁটি অ্যালোভেরা জেল মাড়িতে লাগিয়ে কিছুক্ষণ রেখে ধুয়ে ফেলুন। এটি মাড়ির ব্যথা ও প্রদাহ কমাতে সাহায্য করতে পারে।
৪. চা ব্যাগের কম্প্রেস
ব্যবহৃত চা ব্যাগ ঠান্ডা করে মাড়িতে কম্প্রেস হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। চায়ের ট্যানিন মাড়ির প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। গ্রীন টি বা ব্ল্যাক টি ব্যাগ ব্যবহার করুন।
৫. ঠান্ডা ও গরম কম্প্রেস
পর্যায়ক্রমে ঠান্ডা ও গরম কম্প্রেস ব্যবহার করলে মাড়ির প্রদাহ কমতে পারে। ৫ মিনিট গরম কম্প্রেস এবং পরে ৫ মিনিট ঠান্ডা কম্প্রেস ব্যবহার করুন। এই প্রক্রিয়া দিনে ২-৩ বার করতে পারেন।
৬. ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার
ভিটামিন সি মাড়ির স্বাস্থ্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। লেবু, কমলা, কিউই, স্ট্রবেরি ইত্যাদি ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল খান। এছাড়া ভিটামিন সি সাপ্লিমেন্ট নেওয়ার বিষয়ে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে পারেন।
৭. তেল টানা
কোকোনাট অয়েল বা তিল তেল দিয়ে মুখ ধোয়ার আগে ৫-১০ মিনিট তেল টানা অভ্যাস করুন। এটি মুখের ব্যাকটেরিয়া দূর করতে এবং মাড়ির স্বাস্থ্য উন্নত করতে সাহায্য করতে পারে।
প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা
মাড়ি ফুলে যাওয়া প্রতিরোধ করার জন্য নিয়মিত দাঁত ব্রাশ করা, ফ্লস করা এবং মাউথওয়াশ ব্যবহার করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া:
- ধূমপান ত্যাগ করুন
- সুষম খাবার খান
- প্রচুর পানি পান করুন
- নিয়মিত দন্ত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন
অতিরিক্ত ঠান্ডা জল খেলে হতে পারে মারাত্মক – বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন
সতর্কতা
যদি মাড়ি ফুলে যাওয়ার সমস্যা ৭-১০ দিনের বেশি স্থায়ী হয় বা অত্যধিক ব্যথা অনুভব করেন, তাহলে অবশ্যই দন্ত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। কারণ এটি গুরুতর পেরিওডন্টাল রোগের লক্ষণ হতে পারে।/
মাড়ি ফুলে যাওয়া একটি সাধারণ সমস্যা হলেও এটি অবহেলা করা উচিত নয়। উপরোক্ত ঘরোয়া প্রতিকারগুলি অনুসরণ করে এবং নিয়মিত মুখের যত্ন নিয়ে আপনি এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন। তবে মনে রাখবেন, প্রতিরোধই সেরা চিকিৎসা। তাই নিয়মিত দাঁতের যত্ন নিন এবং সুস্থ জীবনযাপন করুন।