Centre Internship Scheme Registration Process: কেন্দ্রীয় সরকার তাদের প্রতিশ্রুত প্রধানমন্ত্রী ইন্টার্নশিপ স্কিম চালু করেছে যা দেশের যুবকদের জন্য একটি বড় সুযোগ নিয়ে এসেছে। এই স্কিমের মাধ্যমে ১ কোটি যুবক-যুবতী দেশের শীর্ষ ৫০০টি কোম্পানিতে ইন্টার্নশিপের সুযোগ পাবে। গত ৩ অক্টোবর থেকে এই স্কিমের পাইলট প্রজেক্ট শুরু হয়েছে এবং আগামী ১২ অক্টোবর থেকে প্রার্থীরা এর জন্য আবেদন করতে পারবেন।কর্পোরেট বিষয়ক মন্ত্রক (MCA) এই স্কিমের জন্য একটি কেন্দ্রীয় অনলাইন পোর্টাল তৈরি করেছে যেখানে কোম্পানিগুলো ইন্টার্নশিপের পদ পোস্ট করতে পারবে এবং প্রার্থীরা আবেদন করতে পারবেন। এই স্কিমের মাধ্যমে সরকার যুব বেকারত্ব কমানোর লক্ষ্য নিয়েছে।
স্কিমের মূল বৈশিষ্ট্য:
• ২১-২৪ বছর বয়সী যুবক-যুবতীরা আবেদন করতে পারবেন
• ১২ মাসের ইন্টার্নশিপ
• প্রতি মাসে ৫,০০০ টাকা স্টাইপেন্ড (৪,৫০০ টাকা সরকার থেকে এবং ৫০০ টাকা কোম্পানির CSR ফান্ড থেকে)
• একবার ৬,০০০ টাকা অতিরিক্ত সহায়তা
• শীর্ষ ৫০০ কোম্পানিতে ইন্টার্নশিপের সুযোগ
১০,০০০ টাকা ন্যূনতম পেনশন! সরকারি কর্মীদের জন্য নয়া স্কিম, জেনে নিন সব সুবিধা
আবেদনের প্রক্রিয়া:
• ১২ অক্টোবর থেকে প্রার্থীরা পোর্টালে রেজিস্টার করতে পারবেন
• আধার-ভিত্তিক e-KYC প্রক্রিয়ায় প্রোফাইল তৈরি করতে হবে
• নিজের যোগ্যতা নিশ্চিত করে স্ব-ঘোষণা জমা দিতে হবে
• পছন্দের সেক্টর, ভূমিকা ও অবস্থান অনুযায়ী সর্বোচ্চ ৫টি পদে আবেদন করা যাবে
যোগ্যতা:
• ২১-২৪ বছর বয়সী
• কমপক্ষে দশম শ্রেণি পাস
• পূর্ণকালীন চাকরি বা শিক্ষায় যুক্ত নয় এমন
• পরিবারের বার্ষিক আয় ৮ লক্ষ টাকার কম
• পরিবারে কোনো সরকারি চাকরিজীবী নেই
অযোগ্য:
• IIT, IIM, IISER-এর স্নাতক
• CA, CMA ইত্যাদি পেশাদার ডিগ্রিধারী
নির্বাচন প্রক্রিয়া:
• পোর্টাল স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রতিটি পদের জন্য দুইগুণ প্রার্থী শর্টলিস্ট করবে
• অংশগ্রহণকারী কোম্পানিগুলো তালিকা পর্যালোচনা করে চূড়ান্ত নির্বাচন করবে
• নির্বাচিত প্রার্থীদের অফার লেটার পাঠানো হবে
ইন্টার্নশিপের বৈশিষ্ট্য:
• ১২ মাসের মেয়াদ
• কমপক্ষে ৫০% সময় বাস্তব কর্মপরিবেশে কাটাতে হবে
• বাকি সময় ক্লাসরুম প্রশিক্ষণ
• সম্পূর্ণ করার পর সার্টিফিকেট দেওয়া হবে
এই স্কিমের মাধ্যমে সরকার আগামী ৫ বছরে ১ কোটি যুবককে দক্ষ করে তোলার লক্ষ্য নিয়েছে। এটি যুব বেকারত্ব কমানোর পাশাপাশি শিল্পের চাহিদা অনুযায়ী দক্ষ কর্মী তৈরিতেও সহায়ক হবে বলে আশা করা হচ্ছে।কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ ২০২৪ সালের কেন্দ্রীয় বাজেটে এই স্কিমের ঘোষণা করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, “এই ইন্টার্নশিপ উদ্যোগ আমাদের যুব কর্মীদের ব্যবহারিক দক্ষতায় সজ্জিত করবে, তাদের শিল্পের চাহিদার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ করবে এবং শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের মধ্যে ব্যবধান কমাতে সাহায্য করবে।”
স্কিমের প্রভাব:
পজিটিভ দিক:
• যুব বেকারত্ব কমবে
• শিল্পের চাহিদা অনুযায়ী দক্ষ কর্মী তৈরি হবে
• যুবকদের বাস্তব কর্ম অভিজ্ঞতা বাড়বে
• কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি পাবে
নেগেটিভ দিক:
• ১২ মাস পর চাকরির নিশ্চয়তা নেই
• মাসিক স্টাইপেন্ড অপর্যাপ্ত হতে পারে
• সীমিত সংখ্যক যুবক উপকৃত হবে
এই স্কিম নিয়ে বিভিন্ন মহল থেকে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া এসেছে। Confederation of Indian Industry (CII) এর সভাপতি সঞ্জীব পুরি বলেছেন, “প্রধানমন্ত্রীর ইন্টার্নশিপ স্কিম একটি দূরদর্শী উদ্যোগ যা ভারতের দক্ষ কর্মীবাহিনী গড়ার লক্ষ্যে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখবে। উৎপাদন ও সেবা খাতসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ১ কোটি যুবকের ইন্টার্নশিপের মাধ্যমে এই স্কিম ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় প্রস্তুত একটি দক্ষ কর্মীবাহিনী গড়ে তুলবে।”
পোস্ট অফিস টাইম ডিপোজিট: ২ লাখ টাকা সুদ কামানোর সুবর্ণ সুযোগ!
তবে কিছু বিশেষজ্ঞ মনে করছেন, ১২ মাসের ইন্টার্নশিপের পর চাকরির নিশ্চয়তা না থাকায় এটি যুব বেকারত্ব সমস্যার স্থায়ী সমাধান হতে পারে না। তাদের মতে, সরকারের উচিত দীর্ঘমেয়াদী কর্মসংস্থান সৃষ্টির উপর জোর দেওয়া।যাইহোক, এই স্কিম যুবকদের জন্য একটি বড় সুযোগ নিয়ে এসেছে। আগ্রহী প্রার্থীদের উচিত ১২ অক্টোবর থেকে অফিসিয়াল পোর্টালে রেজিস্টার করে আবেদন করা। এই স্কিমের মাধ্যমে তারা দেশের শীর্ষ কোম্পানিগুলোতে কাজ করার অভিজ্ঞতা লাভ করতে পারবেন যা তাদের ভবিষ্যৎ কর্মজীবনে সহায়ক হবে।
স্কিম সম্পর্কে আরও তথ্যের জন্য প্রার্থীরা কর্পোরেট বিষয়ক মন্ত্রকের ওয়েবসাইট বা হেল্পলাইন নম্বরে যোগাযোগ করতে পারেন। এছাড়া বিভিন্ন ভাষায় কল সেন্টার ও চ্যাট সাপোর্ট চালু করা হয়েছে যেখানে প্রার্থীরা তাদের প্রশ্নের উত্তর পেতে পারবেন।সামগ্রিকভাবে, এই ইন্টার্নশিপ স্কিম ভারতের যুব সমাজের জন্য একটি বড় সুযোগ। এর মাধ্যমে তারা বাস্তব কর্ম অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারবে যা তাদের ভবিষ্যৎ কর্মজীবনে সহায়ক হবে। তবে এর সফলতা নির্ভর করবে কীভাবে এটি বাস্তবায়ন করা হয় তার উপর। সরকার ও শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর সমন্বিত প্রচেষ্টায় এই স্কিম যুব বেকারত্ব কমানোর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।