চ্যাম্পিয়ন ট্রফি: অস্ট্রেলিয়া ও ভারতের আধিপত্য, পাকিস্তানের অপ্রত্যাশিত জয়

Who won the majority cups? India or Aussies?: আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ক্রিকেট বিশ্বের অন্যতম প্রধান আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট। ১৯৯৮ সালে এই প্রতিযোগিতা শুরু হয় এবং ২০১৭ সাল পর্যন্ত মোট ৮টি আসর…

Ani Roy

 

Who won the majority cups? India or Aussies?: আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ক্রিকেট বিশ্বের অন্যতম প্রধান আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট। ১৯৯৮ সালে এই প্রতিযোগিতা শুরু হয় এবং ২০১৭ সাল পর্যন্ত মোট ৮টি আসর অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে অস্ট্রেলিয়া ও ভারত সর্বাধিক ২ বার করে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে।চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ইতিহাসে মোট ৭টি দেশ শিরোপা জিতেছে। অস্ট্রেলিয়া ও ভারত ছাড়াও দক্ষিণ আফ্রিকা, নিউজিল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং পাকিস্তান একবার করে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। ২০০২ সালে ভারত ও শ্রীলঙ্কা যৌথভাবে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার নজির স্থাপন করে।প্রথম আসরে দক্ষিণ আফ্রিকা চ্যাম্পিয়ন হয়।
২০০০ সালে নিউজিল্যান্ড শিরোপা জেতে। ২০০২ সালে বৃষ্টি বাধাগ্রস্ত ফাইনালে ভারত ও শ্রীলঙ্কা যৌথভাবে চ্যাম্পিয়ন ঘোষিত হয়। ২০০৪ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রথমবারের মতো শিরোপা জেতে।২০০৬ ও ২০০৯ সালে অস্ট্রেলিয়া টানা দুইবার চ্যাম্পিয়ন হয়ে ইতিহাস গড়ে। ২০১৩ সালে ভারত দ্বিতীয়বারের মতো শিরোপা জেতে। সর্বশেষ ২০১৭ সালের আসরে পাকিস্তান অপ্রত্যাশিতভাবে চ্যাম্পিয়ন হয়ে সবাইকে অবাক করে দেয়।চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ইতিহাসে অস্ট্রেলিয়া ও ভারতের আধিপত্য লক্ষণীয়। অস্ট্রেলিয়া ২০০৬ ও ২০০৯ সালে টানা দুইবার চ্যাম্পিয়ন হয়ে দাপট দেখিয়েছে। অন্যদিকে ভারত ২০০২ ও ২০১৩ সালে শিরোপা জিতে নিজেদের শক্তিশালী অবস্থান প্রমাণ করেছে।প্রথম আসরে দক্ষিণ আফ্রিকা চমক দেখিয়েছিল। ১৯৯৮ সালে বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত টুর্নামেন্টে তারা ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে শিরোপা জেতে। হানসি ক্রনি, শন পোলক, এলান ডোনাল্ডের মতো তারকারা দক্ষিণ আফ্রিকার জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
২০০০ সালে কেনিয়ায় অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় আসরে নিউজিল্যান্ড প্রথমবারের মতো শিরোপা জেতে। ক্রিস কেয়ার্নস ও নাথান অ্যাসলের অসাধারণ পারফরম্যান্সে তারা ফাইনালে ভারতকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়।২০০২ সালের আসরটি ছিল অনন্য। শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠিত ফাইনালে বৃষ্টির কারণে খেলা সম্ভব হয়নি। ফলে ভারত ও শ্রীলঙ্কা যৌথভাবে চ্যাম্পিয়ন ঘোষিত হয়। সচিন তেন্ডুলকার ও মুত্তিয়া মুরলীধরনের মতো কিংবদন্তিরা এই টুর্নামেন্টে চমৎকার পারফরম্যান্স দেখিয়েছিলেন।২০০৪ সালে ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত আসরে ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন হয়। ব্রায়ান লারা ও ক্রিস গেইলের নেতৃত্বে তারা ফাইনালে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে শিরোপা জেতে। এই জয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটের জন্য ছিল একটি বড় মাইলফলক।২০০৬ সালে ভারতে অনুষ্ঠিত আসরে অস্ট্রেলিয়া প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন হয়। রিকি পন্টিংয়ের নেতৃত্বে তারা পুরো টুর্নামেন্টে অপরাজেয় থাকে। ফাইনালে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে অস্ট্রেলিয়া শিরোপা জেতে।

শেন ওয়াটসনের অলরাউন্ড পারফরম্যান্স ছিল চোখ ধাঁধানো।২০০৯ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত আসরে অস্ট্রেলিয়া টানা দ্বিতীয়বারের মতো চ্যাম্পিয়ন হয়। ফাইনালে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে তারা শিরোপা ধরে রাখে। শেন ওয়াটসনের অপরাজিত সেঞ্চুরি ছিল ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট।২০১৩ সালে ইংল্যান্ড ও ওয়েলসে অনুষ্ঠিত আসরে ভারত দ্বিতীয়বারের মতো চ্যাম্পিয়ন হয়। মহেন্দ্র সিং ধোনির নেতৃত্বে ভারত পুরো টুর্নামেন্টে অপরাজেয় থাকে। ফাইনালে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে তারা শিরোপা জেতে। রবীন্দ্র জাদেজার অলরাউন্ড পারফরম্যান্স ছিল অসাধারণ।সর্বশেষ ২০১৭ সালের আসরে পাকিস্তান অপ্রত্যাশিতভাবে চ্যাম্পিয়ন হয়ে সবাইকে অবাক করে দেয়। ফাইনালে তারা ভারতকে ১৮০ রানে হারিয়ে প্রথমবারের মতো শিরোপা জেতে। ফখর জামানের সেঞ্চুরি ও মোহাম্মদ আমিরের বোলিং ছিল ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট।চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ইতিহাসে কিছু রেকর্ড উল্লেখযোগ্য।

ICC Trophy History: বিরাট কোহলির অসাধারণ রেকর্ড: ক্রিকেট বিশ্বে নতুন কীর্তি গড়

ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিস গেইল সর্বোচ্চ ৭৯১ রান করে টপ রান স্কোরার হয়েছেন। নিউজিল্যান্ডের কাইল মিলস সর্বোচ্চ ২৮টি উইকেট নিয়ে শীর্ষ উইকেট শিকারি হয়েছেন। ৩০০+ রানের টার্গেট তাড়া করে কোনো দল জিততে পারেনি।চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ভবিষ্যৎ নিয়ে কিছুটা অনিশ্চয়তা রয়েছে। ২০১৭ সালের পর আইসিসি এই টুর্নামেন্ট বাতিল করেছিল। তবে ২০২১ সালে আবার এটি চালু করার সিদ্ধান্ত নেয়। ২০২৫ সালে পাকিস্তানে নবম আসর অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। তবে ভারতের অংশগ্রহণ নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।
সামগ্রিকভাবে, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ক্রিকেট বিশ্বের একটি গুরুত্বপূর্ণ টুর্নামেন্ট হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। অস্ট্রেলিয়া ও ভারতের আধিপত্য, পাকিস্তানের অপ্রত্যাশিত জয়, দক্ষিণ আফ্রিকা ও নিউজিল্যান্ডের প্রথম জয় – সবমিলিয়ে এই টুর্নামেন্ট ক্রিকেট ভক্তদের জন্য অনেক রোমাঞ্চ ও আবেগ উপহার দিয়েছে। আগামী দিনেও এই ঐতিহ্য অব্যাহত থাকবে বলে আশা করা যায়।
About Author
Ani Roy

অনি বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এডুকেশনে স্নাতক ডিগ্রি সম্পন্ন করেছেন। শিক্ষার প্রতি গভীর অনুরাগ এবং আজীবন শেখার প্রতি প্রতিশ্রুতি নিয়ে অনি নতুন শিক্ষামূলক পদ্ধতি ও প্র্যাকটিসগুলি অন্বেষণ করতে নিজেকে উৎসর্গ করেছেন। তার একাডেমিক যাত্রা তাকে শিক্ষার তত্ত্ব এবং ব্যবহারিক শিক্ষণ কৌশলগুলিতে দৃঢ় ভিত্তি প্রদান করেছে। অনি অন্তর্দৃষ্টি এবং দক্ষতা তার চিন্তাশীল লেখাগুলিতে প্রতিফলিত হয়, যা শিক্ষাবিদ এবং শিক্ষার্থীদের অনুপ্রাণিত ও তথ্যপূর্ণ করার উদ্দেশ্যে লেখা। তিনি তার আকর্ষণীয় এবং প্রভাবশালী কাজের মাধ্যমে শিক্ষা ক্ষেত্রে অবদান রাখতে থাকেন।