২০০০ সালে কেনিয়ায় অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় আসরে নিউজিল্যান্ড প্রথমবারের মতো শিরোপা জেতে। ক্রিস কেয়ার্নস ও নাথান অ্যাসলের অসাধারণ পারফরম্যান্সে তারা ফাইনালে ভারতকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়।২০০২ সালের আসরটি ছিল অনন্য। শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠিত ফাইনালে বৃষ্টির কারণে খেলা সম্ভব হয়নি। ফলে ভারত ও শ্রীলঙ্কা যৌথভাবে চ্যাম্পিয়ন ঘোষিত হয়। সচিন তেন্ডুলকার ও মুত্তিয়া মুরলীধরনের মতো কিংবদন্তিরা এই টুর্নামেন্টে চমৎকার পারফরম্যান্স দেখিয়েছিলেন।২০০৪ সালে ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত আসরে ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন হয়। ব্রায়ান লারা ও ক্রিস গেইলের নেতৃত্বে তারা ফাইনালে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে শিরোপা জেতে। এই জয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটের জন্য ছিল একটি বড় মাইলফলক।২০০৬ সালে ভারতে অনুষ্ঠিত আসরে অস্ট্রেলিয়া প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন হয়। রিকি পন্টিংয়ের নেতৃত্বে তারা পুরো টুর্নামেন্টে অপরাজেয় থাকে। ফাইনালে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে অস্ট্রেলিয়া শিরোপা জেতে।
শেন ওয়াটসনের অলরাউন্ড পারফরম্যান্স ছিল চোখ ধাঁধানো।২০০৯ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত আসরে অস্ট্রেলিয়া টানা দ্বিতীয়বারের মতো চ্যাম্পিয়ন হয়। ফাইনালে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে তারা শিরোপা ধরে রাখে। শেন ওয়াটসনের অপরাজিত সেঞ্চুরি ছিল ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট।২০১৩ সালে ইংল্যান্ড ও ওয়েলসে অনুষ্ঠিত আসরে ভারত দ্বিতীয়বারের মতো চ্যাম্পিয়ন হয়। মহেন্দ্র সিং ধোনির নেতৃত্বে ভারত পুরো টুর্নামেন্টে অপরাজেয় থাকে। ফাইনালে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে তারা শিরোপা জেতে। রবীন্দ্র জাদেজার অলরাউন্ড পারফরম্যান্স ছিল অসাধারণ।সর্বশেষ ২০১৭ সালের আসরে পাকিস্তান অপ্রত্যাশিতভাবে চ্যাম্পিয়ন হয়ে সবাইকে অবাক করে দেয়। ফাইনালে তারা ভারতকে ১৮০ রানে হারিয়ে প্রথমবারের মতো শিরোপা জেতে। ফখর জামানের সেঞ্চুরি ও মোহাম্মদ আমিরের বোলিং ছিল ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট।চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ইতিহাসে কিছু রেকর্ড উল্লেখযোগ্য।
ICC Trophy History: বিরাট কোহলির অসাধারণ রেকর্ড: ক্রিকেট বিশ্বে নতুন কীর্তি গড়
ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিস গেইল সর্বোচ্চ ৭৯১ রান করে টপ রান স্কোরার হয়েছেন। নিউজিল্যান্ডের কাইল মিলস সর্বোচ্চ ২৮টি উইকেট নিয়ে শীর্ষ উইকেট শিকারি হয়েছেন। ৩০০+ রানের টার্গেট তাড়া করে কোনো দল জিততে পারেনি।চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ভবিষ্যৎ নিয়ে কিছুটা অনিশ্চয়তা রয়েছে। ২০১৭ সালের পর আইসিসি এই টুর্নামেন্ট বাতিল করেছিল। তবে ২০২১ সালে আবার এটি চালু করার সিদ্ধান্ত নেয়। ২০২৫ সালে পাকিস্তানে নবম আসর অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। তবে ভারতের অংশগ্রহণ নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।
সামগ্রিকভাবে, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ক্রিকেট বিশ্বের একটি গুরুত্বপূর্ণ টুর্নামেন্ট হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। অস্ট্রেলিয়া ও ভারতের আধিপত্য, পাকিস্তানের অপ্রত্যাশিত জয়, দক্ষিণ আফ্রিকা ও নিউজিল্যান্ডের প্রথম জয় – সবমিলিয়ে এই টুর্নামেন্ট ক্রিকেট ভক্তদের জন্য অনেক রোমাঞ্চ ও আবেগ উপহার দিয়েছে। আগামী দিনেও এই ঐতিহ্য অব্যাহত থাকবে বলে আশা করা যায়।