Chamran-1 satellite details: ইরান সফলভাবে তার স্বদেশী প্রযুক্তিতে নির্মিত Chamran-1 গবেষণা স্যাটেলাইট মহাকাশে উৎক্ষেপণ করেছে। এই স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের মাধ্যমে দেশটি তার মহাকাশ কর্মসূচিতে আরেকটি উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে।
উৎক্ষেপণের বিস্তারিত
Chamran-1 স্যাটেলাইটটি শনিবার সকালে ইরানের ইসলামিক রেভলিউশনারি গার্ড কর্পস (IRGC) এর এরোস্পেস বিশেষজ্ঞদের দ্বারা নির্মিত Qaem-100 স্যাটেলাইট ক্যারিয়ারের মাধ্যমে উৎক্ষেপণ করা হয়। এটি পৃথিবীর ৫৫০ কিলোমিটার উপরে কক্ষপথে স্থাপন করা হয়েছে।স্যাটেলাইটটির ওজন প্রায় ৬০ কেজি এবং এর প্রধান উদ্দেশ্য হল কক্ষপথে মহাকাশযানের গতিপথ পরিবর্তনের প্রযুক্তি যাচাই করার জন্য হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার সিস্টেম পরীক্ষা করা।
পৃথিবীর কক্ষপথে ১০,০০০ সক্রিয় স্যাটেলাইট: এলন মাস্কের নেতৃত্বে মহাকাশ বিপ্লব
Chamran-1 এর বৈশিষ্ট্য
Chamran-1 স্যাটেলাইটটি ইরানের ইলেকট্রনিক্স ইন্ডাস্ট্রিজ (SAIran) এর মহাকাশ বিভাগের প্রযুক্তিবিদদের দ্বারা ডিজাইন ও নির্মাণ করা হয়েছে। এটি এরোস্পেস রিসার্চ ইনস্টিটিউট (ARI) এবং বেসরকারি জ্ঞানভিত্তিক প্রতিষ্ঠানের বিশেষজ্ঞদের সহযোগিতায় তৈরি করা হয়েছে। স্যাটেলাইটটির প্রধান কাজগুলি হল:
- কক্ষপথে গতিপথ পরিবর্তনের প্রযুক্তি যাচাই করা
- মহাকাশযানে ব্যবহৃত কোল্ড গ্যাস প্রপালশন সাবসিস্টেমের কার্যকারিতা পরীক্ষা করা
- নেভিগেশন ও অ্যাটিটিউড কন্ট্রোল সাবসিস্টেমের কার্যকারিতা মূল্যায়ন করা
ইরানের মহাকাশ কর্মসূচি
পশ্চিমা দেশগুলির নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও ইরান তার বেসামরিক মহাকাশ কর্মসূচিতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে। দেশটি বর্তমানে স্যাটেলাইট উন্নয়ন ও উৎক্ষেপণে সক্ষম বিশ্বের শীর্ষ ১০টি দেশের মধ্যে রয়েছে।চলতি বছরের শুরুতে ইরান সফলভাবে Mahda গবেষণা স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করেছিল। এছাড়াও IRGC সফলভাবে Soraya স্যাটেলাইটকে পৃথিবীর ৭৫০ কিলোমিটার উপরে কক্ষপথে স্থাপন করেছিল।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
ইরানের স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ নিয়ে পশ্চিমা দেশগুলি, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তারা মনে করে, এই প্রযুক্তি ব্যালিস্টিক মিসাইল উন্নয়নের জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে।যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা বলেছেন, ইরানের স্পেস লঞ্চ ভেহিকল প্রোগ্রাম তাদের মিসাইল সিস্টেম উন্নত করার পথ তৈরি করতে পারে, যা পরবর্তীতে পারমাণবিক অস্ত্র বহন করতে সক্ষম হতে পারে।তবে ইরান এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, তাদের মহাকাশ কার্যক্রম সম্পূর্ণ বেসামরিক ও প্রতিরক্ষামূলক উদ্দেশ্যে পরিচালিত হচ্ছে। দেশটি পারমাণবিক অস্ত্র উন্নয়নের কোনো ইচ্ছা নেই বলে জানিয়েছে।
সম্ভাব্য প্রভাব
Chamran-1 স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের ফলে ইরানের মহাকাশ প্রযুক্তিতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। এটি দেশটির বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত সক্ষমতা বৃদ্ধি করবে বলে আশা করা হচ্ছে।তবে এই উৎক্ষেপণ মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি করতে পারে। ইসরায়েল-হামাস সংঘর্ষের পটভূমিতে এটি আঞ্চলিক উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে।এছাড়া পশ্চিমা দেশগুলির সাথে ইরানের সম্পর্কে নতুন করে টানাপোড়েন সৃষ্টি হতে পারে। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে পারমাণবিক চুক্তি নিয়ে আলোচনায় এর প্রভাব পড়তে পারে।
বিশ্বের সবচেয়ে মানব শূন্য দেশে ভ্রমণের অভিজ্ঞতা নিতে আজই চলুন
Chamran-1 স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের মাধ্যমে ইরান তার মহাকাশ প্রযুক্তিতে নতুন মাইলফলক অর্জন করেছে। তবে এটি আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে নানা প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিয়েছে। আগামী দিনগুলিতে এর প্রভাব কীভাবে পড়ে তা লক্ষ্যণীয় হবে।