At-home kidney test kits: ভাবছেন, “কিডনি সুস্থ আছে কিনা, সেটা জানতে এত ঝামেলার টেস্ট করাতে হবে?” একদমই না! মাত্র দুটো পরীক্ষাতেই আপনি জানতে পারবেন আপনার কিডনি কেমন আছে। কিডনি আমাদের শরীরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। শরীর থেকে দূষিত পদার্থ বের করে দেওয়া থেকে শুরু করে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ—সবকিছুতেই এর ভূমিকা আছে। তাই কিডনি সুস্থ রাখাটা খুব জরুরি।
আজকে আমরা আলোচনা করব সেই ২টি সহজ টেস্ট নিয়ে, যা দিয়ে আপনি ঘরে বসেই কিডনির স্বাস্থ্য সম্পর্কে একটা ধারণা পেতে পারেন। তাহলে চলুন, শুরু করা যাক!
কিডনি আমাদের শরীরের ফিল্টার বা ছাঁকনির মতো কাজ করে। এটি রক্ত থেকে দূষিত পদার্থ ছেঁকে বের করে দেয় এবং প্রস্রাবের মাধ্যমে শরীর থেকে তা সরিয়ে দেয়। শুধু তাই নয়, কিডনি আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে:
বুঝতেই পারছেন, কিডনি আমাদের শরীরে কত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই একে সুস্থ রাখা আমাদের দায়িত্ব।
Kidney: গরমকালে কিভাবে সুস্থ রাখবেন কিডনি? [বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ ]
অনেক সময় কিডনি রোগ নীরবে শরীরে বাসা বাঁধে। তাই আগে থেকে কিছু লক্ষণ জানা থাকলে রোগ দ্রুত শনাক্ত করা যায়। কিডনি রোগের কিছু সাধারণ লক্ষণ হলো:
এসব লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
কিডনি সুস্থ আছে কিনা, তা জানার জন্য প্রধানত দুটি পরীক্ষা করা হয়। এগুলো হলো:
চলুন, এই পরীক্ষাগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিই।
ইউরিন টেস্ট বা প্রস্রাব পরীক্ষা হলো কিডনির স্বাস্থ্য জানার প্রথম ধাপ। এই পরীক্ষায় প্রস্রাবের রং, ঘনত্ব এবং অন্যান্য উপাদান পরীক্ষা করা হয়।
ইউরিন টেস্টের মাধ্যমে নিম্নলিখিত বিষয়গুলো জানা যায়:
ইউরিন টেস্ট করার জন্য সাধারণত একটি পরিষ্কার পাত্রে প্রস্রাব সংগ্রহ করতে হয়। এরপর সেই নমুনা পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়। পরীক্ষার আগে কিছু বিষয় মনে রাখতে হয়:
ইউরিন টেস্টের ফলাফলে যদি প্রোটিন, রক্ত বা অন্য কোনো অস্বাভাবিক উপাদান পাওয়া যায়, তাহলে এটি কিডনি রোগের ইঙ্গিত দিতে পারে। তবে শুধু ইউরিন টেস্টের ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে রোগ নির্ণয় করা যায় না। আরও নিশ্চিত হওয়ার জন্য রক্ত পরীক্ষার প্রয়োজন হতে পারে।
রক্ত পরীক্ষা কিডনির কার্যকারিতা মূল্যায়নের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই পরীক্ষার মাধ্যমে রক্তের ক্রিয়েটিনিন (Creatinine) এবং ইউরিয়া (Urea) নামক দুটি উপাদানের মাত্রা মাপা হয়।
রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে নিম্নলিখিত বিষয়গুলো জানা যায়:
রক্ত পরীক্ষা করার জন্য সাধারণত হাতের শিরা থেকে রক্ত নেওয়া হয়। পরীক্ষার আগে কিছু বিষয় মনে রাখতে হয়:
রক্ত পরীক্ষায় ক্রিয়েটিনিন এবং ইউরিয়ার মাত্রা বেশি থাকলে এবং ইজিএফআর-এর মান কম থাকলে কিডনি রোগের আশঙ্কা থাকে। এই ক্ষেত্রে, ডাক্তার আরও কিছু পরীক্ষা এবং চিকিৎসার পরামর্শ দিতে পারেন।
কিডনিকে সুস্থ রাখতে কিছু সাধারণ নিয়মকানুন মেনে চলা উচিত। নিচে কিছু টিপস দেওয়া হলো:
কিডনি রোগ নিয়ে আমাদের মনে অনেক প্রশ্ন থাকে। এখানে কিছু সাধারণ প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হলো:
কিডনি রোগের লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া, প্রস্রাবের সময় ব্যথা করা, পায়ের গোড়ালি ও চোখের নিচে ফোলা ভাব, ক্লান্তি, ক্ষুধা কমে যাওয়া, ত্বকে চুলকানি, শ্বাসকষ্ট এবং উচ্চ রক্তচাপ।
ফল, সবজি, শস্য জাতীয় খাবার এবং কম লবণযুক্ত খাবার কিডনির জন্য ভালো।
ঢাকার সেরা কিডনি ডাক্তার: যারা আপনার কিডনি রক্ষায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করছেন
পর্যাপ্ত পানি পান করা, স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করা, লবণ কম খাওয়া, নিয়মিত ব্যায়াম করা, ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা, ধূমপান ও মদ্যপান পরিহার করা এবং ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করা উচিত।
ক্রিয়েটিনিন হলো একটি বর্জ্য পদার্থ, যা মাংসপেশি থেকে তৈরি হয়। সুস্থ কিডনি এই ক্রিয়েটিনিনকে রক্ত থেকে ছেঁকে প্রস্রাবের মাধ্যমে বের করে দেয়।
ইজিএফআর হলো একটি হিসাব, যা ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা, বয়স, লিঙ্গ এবং জাতিভেদের ওপর ভিত্তি করে কিডনির কার্যকারিতা নির্ণয় করে।
ইউরিন টেস্টের জন্য একটি পরিষ্কার পাত্রে প্রস্রাব সংগ্রহ করতে হয়। পরীক্ষার আগে বেশি পানি পান করুন এবং মহিলাদের ক্ষেত্রে মাসিক চলাকালীন এই পরীক্ষা না করাই ভালো।
কিডনি রোগের কোনো প্রমাণিত ঘরোয়া চিকিৎসা নেই। তবে স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন এবং ডাক্তারের পরামর্শ মেনে চললে কিডনি রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।
কিডনি রোগের জন্য নেফ্রোলজিস্ট (Nephrologist) বা কিডনি বিশেষজ্ঞের কাছে যেতে হবে।
আশা করি, এই ব্লগ পোস্টটি আপনাকে কিডনির স্বাস্থ্য সম্পর্কে ধারণা দিতে সাহায্য করেছে। মনে রাখবেন, আপনার কিডনি আপনার শরীরের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই এর যত্ন নিন এবং সুস্থ থাকুন।যদি আপনার মনে কোনো প্রশ্ন থাকে, তাহলে নির্দ্বিধায় কমেন্ট বক্সে জিজ্ঞাসা করতে পারেন। আপনার মূল্যবান মতামত আমাদের জানাতে ভুলবেন না।
মন্তব্য করুন