ছট পূজা ২০২৫: আত্মশুদ্ধি, সূর্য উপাসনা ও প্রকৃতির প্রতি কৃতজ্ঞতার উৎসব

Chhath Puja 2025 Date Rituals Significance: ছট পূজা, মূলত সূর্য দেবতা এবং তাঁর বোন ঊষা (ছঠি মাইয়া নামেও পরিচিত) এর প্রতি উৎসর্গীকৃত একটি প্রাচীন হিন্দু উৎসব, যা প্রতি বছর অত্যন্ত…

Riddhi Datta

 

Chhath Puja 2025 Date Rituals Significance: ছট পূজা, মূলত সূর্য দেবতা এবং তাঁর বোন ঊষা (ছঠি মাইয়া নামেও পরিচিত) এর প্রতি উৎসর্গীকৃত একটি প্রাচীন হিন্দু উৎসব, যা প্রতি বছর অত্যন্ত নিষ্ঠা ও ভক্তির সঙ্গে পালিত হয়। এই উৎসবটি মূলত পূর্ব ভারতের বিহার, ঝাড়খণ্ড, উত্তর প্রদেশ এবং নেপালের তেরাই অঞ্চলে সীমাবদ্ধ থাকলেও, বর্তমানে এটি বিশ্বজুড়ে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে। ২০২৫ সালে, কার্তিক মাসের শুক্লপক্ষের চতুর্থী তিথি থেকে শুরু হয়ে সপ্তমী পর্যন্ত, অর্থাৎ ২৫শে অক্টোবর থেকে ২৮শে অক্টোবর পর্যন্ত এই মহাপর্ব অনুষ্ঠিত হবে। এই চার দিনের উৎসবে ব্রতীরা কঠোর উপবাস, পবিত্র স্নান, এবং উদীয়মান ও অস্তগামী সূর্যকে অর্ঘ্য প্রদানের মাধ্যমে জীবনের ধারক সূর্যের প্রতি তাদের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে এবং পরিবারের মঙ্গল, আরোগ্য ও সমৃদ্ধি কামনা করে। ভারতের অবিশ্বাস্য সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের মতে, ছট পূজা কেবল একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানই নয়, এটি প্রকৃতি ও মানব জীবনের মধ্যে নিবিড় সম্পর্কের এক জীবন্ত প্রতীক।

ছট পূজার তাৎপর্য: আধ্যাত্মিকতা ও প্রকৃতির মেলবন্ধন

ছট পূজার তাৎপর্য অত্যন্ত গভীর এবং বহুমাত্রিক। এটি শুধুমাত্র একটি ধর্মীয় আচারের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং এর সাথে জড়িয়ে আছে আধ্যাত্মিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং বৈজ্ঞানিক গুরুত্ব। এই উৎসবটি মূলত প্রকৃতির শ্রেষ্ঠ উপাদান, সূর্যকে কেন্দ্র করে পালিত হয়, যা পৃথিবীতে প্রাণের উৎস এবং শক্তির আধার।

আধ্যাত্মিক তাৎপর্য

ছট পূজার মূল ভিত্তি হলো সূর্য উপাসনা। হিন্দু ধর্মে সূর্যকে প্রত্যক্ষ দেবতা হিসেবে গণ্য করা হয়, যিনি সকল শক্তির উৎস এবং আরোগ্য, সমৃদ্ধি ও দীর্ঘায়ু প্রদানকারী। ব্রতীরা বিশ্বাস করেন যে, ছট ব্রত পালনের মাধ্যমে সূর্যদেব ও ছঠি মাইয়া সন্তুষ্ট হন এবং তাঁদের আশীর্বাদে পরিবারের সকল সদস্য রোগমুক্ত ও সুখী জীবনযাপন করতে পারে। ছঠি মাইয়া, যাকে পুরাণে ব্রহ্মার মানস কন্যা এবং সূর্যের বোন হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে, তিনি সন্তানদের রক্ষা করেন এবং নিঃসন্তান দম্পতিদের সন্তান লাভের আশীর্বাদ দেন। এই পূজার মাধ্যমে মানুষ তার ইন্দ্রিয় ও মনের ওপর নিয়ন্ত্রণ স্থাপন করতে শেখে, যা আধ্যাত্মিক উন্নতির সহায়ক।

সামাজিক ও সাংস্কৃতিক গুরুত্ব

ছট পূজা সামাজিক ঐক্য ও সম্প্রীতির এক অনন্য উদাহরণ। এই উৎসবে জাত-পাত, ধনী-দরিদ্র নির্বিশেষে সকলে মিলেমিশে অংশগ্রহণ করে। নদীর ঘাটে একসাথে অর্ঘ্য প্রদান, প্রসাদ বিতরণ এবং একে অপরের বাড়িতে যাওয়া-আসা সামাজিক বন্ধনকে আরও দৃঢ় করে তোলে। টাইমস অফ ইন্ডিয়ার একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, ছট পূজা একটি egalitarian (সমতাবাদী) উৎসব, যেখানে কোনো পুরোহিতের প্রয়োজন হয় না এবং ভক্তরা সরাসরি দেবতার উপাসনা করতে পারে। এটি লোকসংগীত, লোকনৃত্য এবং ঐতিহ্যবাহী রীতিনীতির এক অপূর্ব সমন্বয়, যা প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে বাহিত হয়ে আসছে। এই উৎসবের সময় গাওয়া লোকগানগুলি প্রকৃতির প্রতি ভালোবাসা, পারিবারিক মূল্যবোধ এবং ভক্তির গাথা শোনায়।

বৈজ্ঞানিক তাৎপর্য

আধুনিক বিজ্ঞানও ছট পূজার কিছু রীতির স্বাস্থ্যকর দিক খুঁজে পেয়েছে। চার দিনের এই ব্রতের সময় শারীরিক ও মানসিক শুদ্ধি ঘটে। ৩৬ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে নির্জলা উপবাস শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ (toxins) বের করে দিতে সাহায্য করে, যা এক ধরনের ডিটক্সিফিকেশন প্রক্রিয়া। ভোরের সূর্যরশ্মি এবং অস্তগামী সূর্যের আলোয় দাঁড়িয়ে অর্ঘ্য দেওয়ার সময় শরীর ভিটামিন ডি গ্রহণ করে, যা হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য অপরিহার্য। টাইমস অফ ইন্ডিয়ার একটি নিবন্ধে বিশেষজ্ঞরা উল্লেখ করেছেন যে, এই সময় সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মির প্রভাব কম থাকে, যা ত্বকের জন্য উপকারী এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। নদীতে দাঁড়িয়ে পূজা করার ফলে শরীর প্রাকৃতিক উপায়ে হাইড্রোথেরাপির সুফল লাভ করে।

ছট পূজার চার দিনের বিস্তারিত বিবরণ

ছট পূজা চার দিন ধরে অত্যন্ত নিয়ম-নিষ্ঠার সাথে পালিত হয়। প্রতিটি দিনের নিজস্ব নাম এবং নির্দিষ্ট আচার-অনুষ্ঠান রয়েছে।

প্রথম দিন: নহায়-খায় (২৫শে অক্টোবর, ২০২৫, শনিবার)

‘নহায়-খায়’ শব্দটির অর্থ হলো ‘স্নান করে খাওয়া’। এই দিন থেকেই ছট ব্রতের সূচনা হয়। ব্রতীরা (যারা ব্রত পালন করেন) সকালে নিকটবর্তী নদী বা পুকুরে পুণ্যস্নান করেন। স্নানের পর তাঁরা ঘরবাড়ি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে সাত্ত্বিক আহার গ্রহণ করেন। এই দিনের প্রধান খাবার হলো ‘কদ্দু-ভাত’ অর্থাৎ লাউয়ের তরকারি এবং চালের ভাত। এর সাথে ছোলার ডালও খাওয়া হয়। এই খাবারটি সম্পূর্ণ নিরামিষ এবং লবণ ছাড়া বা সৈন্ধব লবণ দিয়ে রান্না করা হয়। এই দিন থেকেই ব্রতীরা বিছানায় না শুয়ে মাটিতে একটি চাদর পেতে ঘুমান, যা আত্মসংযম ও শুদ্ধির প্রতীক।

দিন তারিখ আচার-অনুষ্ঠান বিশেষ খাবার
প্রথম দিন ২৫শে অক্টোবর, ২০২৫ নহায়-খায় কদ্দু-ভাত, ছোলার ডাল
দ্বিতীয় দিন ২৬শে অক্টোবর, ২০২৫ খরনা বা লোহান্ডা গুড়ের ক্ষীর (রসিয়া) ও রুটি
তৃতীয় দিন ২৭শে অক্টোবর, ২০২৫ সন্ধ্যা অর্ঘ্য নির্জলা উপবাস
চতুর্থ দিন ২৮শে অক্টোবর, ২০২৫ ঊষা অর্ঘ্য ও পারণ আদা ও জল দিয়ে ব্রত ভঙ্গ

দ্বিতীয় দিন: খরনা বা লোহান্ডা (২৬শে অক্টোবর, ২০২৫, রবিবার)

উৎসবের দ্বিতীয় দিনটি ‘খরনা’ বা ‘লোহান্ডা’ নামে পরিচিত। এই দিন ব্রতীরা সারাদিন উপবাস পালন করেন এবং এক ফোঁটা জলও গ্রহণ করেন না। সন্ধ্যায় সূর্য ডোবার পর, তাঁরা মাটির উনুনে আম কাঠের আঁচে বিশেষ প্রসাদ তৈরি করেন। এই প্রসাদের মধ্যে প্রধান হলো গুড় দিয়ে তৈরি চালের ক্ষীর (যাকে ‘রসিয়া’ বলা হয়) এবং রুটি। এই প্রসাদ প্রথমে ছঠি মাইয়াকে অর্পণ করা হয় এবং তারপর ব্রতীরা নিজেরা গ্রহণ করেন। এই প্রসাদ গ্রহণের পরেই শুরু হয় ৩৬ ঘণ্টার কঠিন নির্জলা উপবাস, যা চতুর্থ দিনের সকালে সূর্যোদয়ের পর শেষ হয়।

তৃতীয় দিন: সন্ধ্যা অর্ঘ্য (২৭শে অক্টোবর, ২০২৫, সোমবার)

এটি ছট পূজার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিন। এই দিন ব্রতীরা সারাদিন নির্জলা উপবাস পালন করেন। বিকেলে, পরিবারের সকলে মিলে বাঁশের ডালা বা ‘সুপ’ (soop)-এ ফল, মিষ্টি (যেমন ঠেকুয়া), আখ, নারকেল, হলুদ গাছ এবং অন্যান্য পূজার সামগ্রী সাজিয়ে নদীর ঘাটে যান। সেখানে অস্তগামী সূর্যকে দুধ ও জলের অর্ঘ্য প্রদান করা হয়। ঘাটের পরিবেশ তখন ধূপ, ধুনো এবং ছটের লোকগীতিতে মুখরিত হয়ে ওঠে। সূর্যাস্তের পর সকলে বাড়ি ফিরে আসেন, কিন্তু ব্রতীর উপবাস চলতে থাকে। রাতে উঠোনে ‘কোসি ভরা’ নামক একটি প্রথাও পালন করা হয়, যেখানে মাটির হাতি বা প্রদীপের উপর আখের ছাউনি দিয়ে ছঠি মাইয়াকে আহ্বান জানানো হয়।

চতুর্থ দিন: ঊষা অর্ঘ্য ও পারণ (২৮শে অক্টোবর, ২০২৫, মঙ্গলবার)

উৎসবের শেষ দিনে, ব্রতীরা সূর্যোদয়ের আগেই আবার নদীর ঘাটে সমবেত হন। তাঁরা উদীয়মান সূর্যকে অর্ঘ্য প্রদান করেন এবং ছঠি মাইয়া ও সূর্যদেবের কাছে পরিবারের সকলের মঙ্গল কামনা করে প্রার্থনা করেন। এই অর্ঘ্য প্রদানের মাধ্যমেই ছট পূজার সমাপ্তি ঘটে। এরপর ব্রতীরা একে অপরকে প্রসাদ বিতরণ করেন এবং নিজেরা আদা ও জল মুখে দিয়ে ৩৬ ঘণ্টার কঠোর উপবাস ভঙ্গ করেন, যাকে ‘পারণ’ বলা হয়।

ছট পূজার ঐতিহাসিক এবং পৌরাণিক প্রেক্ষাপট

ছট পূজার উৎপত্তি নিয়ে একাধিক পৌরাণিক কাহিনী প্রচলিত আছে, যা এই উৎসবের প্রাচীনত্বকে প্রমাণ করে।

রামায়ণ ও মহাভারতের সংযোগ

উইকিপিডিয়া অনুসারে, রামায়ণে উল্লেখ আছে যে, লঙ্কা বিজয় করে অযোধ্যায় ফেরার পর, রাম ও সীতা তাঁদের কুলদেবতা সূর্যের উপাসনা করেছিলেন। তাঁরা কার্তিক মাসের শুক্লপক্ষের ষষ্ঠী তিথিতে উপবাস রেখেছিলেন এবং পরদিন সূর্যোদয়ের সময় পূজা সম্পন্ন করেছিলেন। সেই থেকেই ছট পূজার প্রচলন হয় বলে মনে করা হয়।

মহাভারতেও ছট পূজার উল্লেখ পাওয়া যায়। কথিত আছে, সূর্যপুত্র কর্ণ ছিলেন সূর্যের একনিষ্ঠ উপাসক। তিনি প্রতিদিন কোমর পর্যন্ত জলে দাঁড়িয়ে সূর্যের আরাধনা করতেন। মনে করা হয়, তাঁর থেকেই এই পূজার প্রচলন। আরেকটি কাহিনী অনুসারে, দ্যূতক্রীড়ায় সর্বস্বান্ত হওয়ার পর পাণ্ডবদের হৃত রাজ্য পুনরুদ্ধারের জন্য দ্রৌপদী ছট ব্রত পালন করেছিলেন। তাঁর প্রার্থনায় সন্তুষ্ট হয়ে সূর্যদেব পাণ্ডবদের হৃত গৌরব ফিরিয়ে দিয়েছিলেন।

বৈদিক যুগের ঐতিহ্য

অনেক বিশেষজ্ঞের মতে, ছট পূজা বৈদিক যুগ থেকেই প্রচলিত। ঋগ্বেদে সূর্য উপাসনার একাধিক উল্লেখ রয়েছে। ছট পূজার আচার-অনুষ্ঠান, যেমন পবিত্র স্নান, উপবাস এবং প্রকৃতির উপাসনা, বৈদিক ঐতিহ্যের সাথেই সামঞ্জস্যপূর্ণ। এটি পৃথিবীর একমাত্র উৎসব যেখানে অস্তগামী এবং উদীয়মান উভয় সূর্যকেই পূজা করা হয়, যা জীবনচক্রের প্রতীক – জন্ম ও মৃত্যুর আবশ্যিকতাকে সম্মান জানায়।

ভারত ও বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছট পূজা উদযাপন

যদিও ছট পূজা মূলত বিহার, ঝাড়খণ্ড এবং পূর্ব উত্তর প্রদেশের উৎসব, কিন্তু অভিবাসনের কারণে আজ এটি ভারতের প্রায় সব বড় শহরে এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়েছে।

ভারতের প্রধান কেন্দ্র

  • পাটনা, বিহার: গঙ্গা নদীর তীরে অবস্থিত পাটনার ঘাটগুলিতে ছট পূজার সময় লক্ষ লক্ষ মানুষের সমাগম হয়। আউটলুক ট্রাভেলারের মতে, পাটনার গান্ধী ঘাট এবং পাটলিপুত্র ঘাট এই উৎসবের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়।
  • বারাণসী ও প্রয়াগরাজ, উত্তর প্রদেশ: বারাণসীর দশাশ্বমেধ ঘাট এবং প্রয়াগরাজের ত্রিবেণী সঙ্গমে ছট পূজা এক আধ্যাত্মিক মাত্রা লাভ করে। হাজার হাজার ভক্ত এখানে পুণ্যস্নান করে সূর্যকে অর্ঘ্য দেন।
  • দিল্লি ও মুম্বাই: দিল্লিতে যমুনা নদীর তীরে এবং মুম্বাইয়ের জুহু ও দাদর চৌপাটিতে প্রবাসী বিহারি সম্প্রদায়ের মানুষ অত্যন্ত ধুমধামের সাথে ছট পূজা পালন করেন। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের খবর অনুযায়ী, স্থানীয় প্রশাসন এই উপলক্ষে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করে।
  • কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ: কলকাতার বাবুঘাট সহ হুগলি নদীর বিভিন্ন ঘাটে বিহারি এবং পূর্বাঞ্চলীয় সম্প্রদায়ের মানুষ নিষ্ঠার সাথে এই উৎসব পালন করেন।

উৎসবের সময় যাত্রীদের ভিড় সামলাতে ভারতীয় রেলওয়ে প্রতি বছর শত শত বিশেষ ট্রেন চালায়, যা এই উৎসবের ব্যাপকতাকে তুলে ধরে।

বিশ্বজুড়ে উদযাপন

ভারত ছাড়াও নেপাল, মরিশাস, ফিজি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশগুলিতেও প্রবাসী ভারতীয়রা ছট পূজা উদযাপন করেন, যা এই উৎসবকে এক আন্তর্জাতিক মাত্রা দিয়েছে।

পরিবেশগত সচেতনতা এবং ছট পূজা

ছট পূজা প্রকৃতি-কেন্দ্রিক উৎসব হলেও, সাম্প্রতিক বছরগুলিতে এর পরিবেশগত প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে। পূজার পর নদী ও জলাশয়গুলিতে প্লাস্টিক, পলিথিন এবং অন্যান্য অপচনশীল সামগ্রী জমে জল দূষণের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তবে আশার কথা হলো, এই বিষয়ে সচেতনতা বাড়ছে।

ইন্ডিয়া টুডে-র একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, অনেক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা এবং স্থানীয় প্রশাসন এখন পরিবেশ-বান্ধব ছট পালনের জন্য প্রচার চালাচ্ছে। ভক্তদের মাটির প্রদীপ, কলা গাছের ভেলা এবং প্রাকৃতিক সামগ্রী ব্যবহার করতে উৎসাহিত করা হচ্ছে। পূজা শেষে ঘাট পরিষ্কার করার জন্য বিশেষ অভিযানও চালানো হচ্ছে। এই উদ্যোগগুলি প্রমাণ করে যে, ঐতিহ্য ও পরিবেশ সচেতনতা একসাথেই চলতে পারে।

ছট পূজা কেবল একটি উপবাস বা ধর্মীয় আচার নয়, এটি আত্মশুদ্ধি, প্রকৃতিকে সম্মান জানানো এবং সামাজিক সম্প্রীতির এক মহামিলন ক্ষেত্র। ২০২৫ সালের এই महापর্ব আমাদের জীবনে নতুন আশা, আরোগ্য এবং সমৃদ্ধি নিয়ে আসুক, এই কামনা রইল।

About Author
Riddhi Datta

ঋদ্ধি দত্ত কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রসায়নবিদ্যায় স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেছেন। তিনি একজন উদীয়মান বিজ্ঞান লেখক ও গবেষক, যিনি জটিল বৈজ্ঞানিক ধারণাগুলিকে সাধারণ পাঠকদের জন্য সহজবোধ্য করে তোলেন। তাঁর লেখায় রসায়ন, পরিবেশ বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তির সমসাময়িক বিষয়গুলি প্রাধান্য পায়। ঋদ্ধি নিয়মিতভাবে এই ওয়েবসাইটে বিজ্ঞান-ভিত্তিক প্রবন্ধ, গবেষণা সারসংক্ষেপ এবং বিশেষজ্ঞদের সাক্ষাৎকার প্রকাশ করেন।