মুরগির লেগ নাকি ব্রেস্ট? জেনে নিন কোনটি আপনার স্বাস্থ্যের জন্য সেরা!”মুরগির মাংস বাঙালি রান্নাঘরের একটি অপরিহার্য উপাদান। তবে প্রশ্ন উঠেছে – মুরগির কোন অংশটি আপনার স্বাস্থ্যের জন্য সবচেয়ে উপকারী? লেগ পিস নাকি পাঁজরের মাংস? আজ আমরা এই দুটি জনপ্রিয় কাটের মধ্যে তুলনা করে দেখব কোনটি আপনার স্বাস্থ্যের জন্য সবচেয়ে ভালো।
মুরগির মাংসের বিভিন্ন অংশের মধ্যে পুষ্টিগুণের পার্থক্য রয়েছে। আসুন দেখে নেওয়া যাক লেগ পিস এবং ব্রেস্টের মধ্যে কী পার্থক্য:
পুষ্টি উপাদান (প্রতি ১০০ গ্রাম) | মুরগির ব্রেস্ট | মুরগির লেগ |
---|---|---|
ক্যালরি | ১৬৫ | ২১৪ |
প্রোটিন (গ্রাম) | ৩১ | ২৪.৫ |
ফ্যাট (গ্রাম) | ৩.৬ | ১৫.১ |
কোলেস্টেরল (মিলিগ্রাম) | ৮৫ | ৯৩ |
এই তথ্য থেকে দেখা যাচ্ছে যে মুরগির ব্রেস্ট লেগের তুলনায় কম ক্যালরি এবং ফ্যাট সমৃদ্ধ, কিন্তু প্রোটিনের পরিমাণ বেশি।
মুরগির ব্রেস্ট বা পাঁজরের মাংস প্রোটিনের একটি চমৎকার উৎস। প্রতি ১০০ গ্রামে ৩১ গ্রাম প্রোটিন থাকে, যা দৈনিক প্রোটিন চাহিদার একটা বড় অংশ পূরণ করতে পারে। এটি কম ক্যালরি এবং কম ফ্যাট সমৃদ্ধ হওয়ায় ওজন কমাতে চাইলে বা শরীর গঠনের জন্য এটি একটি আদর্শ খাবার।ভারতীয় পুষ্টিবিদ ডঃ রুচিকা মোহিতে জানিয়েছেন, “মুরগির ব্রেস্ট লিন প্রোটিনের একটি উত্কৃষ্ট উৎস। এটি কম ক্যালরি সমৃদ্ধ হওয়ায় ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং মাংসপেশী গঠনে সহায়তা করে।”
কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তির পথ কোন খাবারগুলো এড়িয়ে চলবেন?
অন্যদিকে, মুরগির লেগ পিস অনেকের কাছে স্বাদের দিক থেকে বেশি পছন্দের। এটি ব্রেস্টের তুলনায় বেশি ফ্যাট সমৃদ্ধ, যা এর স্বাদ ও জুসিনেস বাড়ায়। প্রতি ১০০ গ্রামে ২৪.৫ গ্রাম প্রোটিন থাকে, যা যথেষ্ট পরিমাণে প্রোটিন সরবরাহ করে।কলকাতার বিখ্যাত পুষ্টিবিদ সুদীপ্তা রায় বলেন, “মুরগির লেগ আয়রন, জিঙ্ক এবং B ভিটামিনের ভালো উৎস। এগুলি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে এবং রক্তের হিমোগ্লোবিন বজায় রাখতে সাহায্য করে।”
আপনার স্বাস্থ্য লক্ষ্য অনুযায়ী আপনি মুরগির যে কোন অংশ বেছে নিতে পারেন:
Diabetes and Snacking: চাঞ্চল্যকর তথ্য! ডায়াবেটিস রোগীরা মুড়ি খেলে কী হবে জানলে আপনিও অবাক হবেন!
মুরগির মাংসের পুষ্টিগুণ বজায় রাখতে রান্নার পদ্ধতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ভাজা বা তেলে ভাজা মুরগির মাংসে অতিরিক্ত ক্যালরি যোগ হয়। সেজন্য স্বাস্থ্যকর উপায়ে রান্না করা উচিত।কলকাতার বিশিষ্ট শেফ জয় বসু পরামর্শ দিয়েছেন, “মুরগির মাংস গ্রিল করা, ওভেনে সেঁকা বা ভাপে সিদ্ধ করা স্বাস্থ্যকর। এতে করে অতিরিক্ত তেল ব্যবহার এড়ানো যায় এবং মাংসের পুষ্টিগুণ বজায় থাকে।”
মুরগির ব্রেস্ট এবং লেগ উভয়ই পুষ্টিকর খাবার। আপনার স্বাস্থ্য লক্ষ্য এবং স্বাদের পছন্দ অনুযায়ী আপনি যে কোনটি বেছে নিতে পারেন। তবে মনে রাখবেন, সুষম খাদ্যাভ্যাস এবং নিয়মিত ব্যায়াম একটি সুস্থ জীবনযাপনের জন্য অপরিহার্য।বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডাঃ মোস্তফা জালাল মহসিন বলেন, “মুরগির মাংস একটি উত্কৃষ্ট প্রোটিন সোর্স। তবে এর পাশাপাশি সবজি, ফল এবং অন্যান্য পুষ্টিকর খাবার খাওয়া জরুরি। সুষম খাদ্যাভ্যাসই সুস্থ জীবনের চাবিকাঠি।”সুতরাং, আপনার পছন্দ যাই হোক না কেন, মুরগির মাংস একটি পুষ্টিকর খাবার হিসেবে আপনার খাদ্যতালিকায় থাকতে পারে। তবে পরিমিত পরিমাণে এবং স্বাস্থ্যকর উপায়ে রান্না করে খেলে তা আপনার স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী হবে।
মন্তব্য করুন