Chronic Ringworm (Puraton Daad) Treatment: পুরাতন বা ক্রনিক দাদ (Chronic Ringworm) একটি অত্যন্ত বিরক্তিকর এবং একগুঁয়ে ছত্রাকজনিত ত্বকের সংক্রমণ, যা সঠিক চিকিৎসার অভাবে বারবার ফিরে আসে। এটি কেবল শারীরিক অস্বস্তির কারণই নয়, মানসিক অশান্তিও তৈরি করে। অনেকেই প্রাথমিক পর্যায়ে বাজারচলতি স্টেরয়েডযুক্ত মলম ব্যবহার করে সাময়িক আরাম পেলেও, ছত্রাকটি ভেতর থেকে সম্পূর্ণ নির্মূল হয় না, ফলে সংক্রমণটি আরও গভীরে ছড়িয়ে পড়ে এবং চিকিৎসা করা কঠিন হয়ে যায়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)-এর তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বজুড়ে এক বিলিয়নেরও বেশি মানুষ ত্বকের ছত্রাক সংক্রমণে আক্রান্ত, যার মধ্যে ডার্মাটোফাইটোসিস বা দাদ অন্যতম। সঠিক জ্ঞান এবং চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চললে এই সমস্যা থেকে সম্পূর্ণ মুক্তি পাওয়া সম্ভব। এই আর্টিকেলে আমরা পুরাতন দাদের কারণ, লক্ষণ, অত্যাধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি এবং এটি প্রতিরোধের উপায় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।
দাদ আসলে কী? (What is Ringworm?)
দাদ, যা মেডিকেলের ভাষায় ‘টিনিয়া’ (Tinea) বা ‘ডার্মাটোফাইটোসিস’ (Dermatophytosis) নামে পরিচিত, একটি অত্যন্ত সংক্রামক ছত্রাকজনিত ত্বকের রোগ। নামের মধ্যে ‘worm’ বা ‘কৃমি’ শব্দটি থাকলেও এর সাথে কোনো কৃমির সম্পর্ক নেই। ডার্মাটফাইট (Dermatophyte) নামক এক বিশেষ ধরনের ছত্রাক এই সংক্রমণের জন্য দায়ী। এই ছত্রাকগুলো আমাদের ত্বক, চুল এবং নখের বাইরের স্তরে থাকা কেরাটিন (Keratin) নামক প্রোটিনকে খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে বেঁচে থাকে ও বংশবৃদ্ধি করে।
সাধারণত দাদ হলে ত্বকের উপর লাল, গোলাকার, আংটির মতো র্যাশ দেখা যায়, যার কিনারাগুলো সামান্য উঁচু হয় এবং চুলকানি থাকে। এটি শরীরের যেকোনো অংশে হতে পারে এবং অবস্থান অনুযায়ী এর নামকরণ ভিন্ন হয়। যেমন:
- টিনিয়া কর্পোরিস (Tinea Corporis): শরীর বা হাত-পায়ে হলে।
- টিনিয়া ক্রুরিস (Tinea Cruris): কুঁচকিতে হলে, যা ‘জক ইচ’ (Jock Itch) নামে পরিচিত।
- টিনিয়া পেডিস (Tinea Pedis): পায়ের পাতায় হলে, যা ‘অ্যাথলেটস ফুট’ (Athlete’s Foot) নামে পরিচিত।
- টিনিয়া ক্যাপিটিস (Tinea Capitis): মাথার ত্বকে হলে।
সাধারণ দাদ কেন পুরাতন বা ক্রনিক হয়ে যায়?
একটি সাধারণ দাদের সংক্রমণ সঠিক চিকিৎসার অভাবে বা ভুল চিকিৎসার কারণে ক্রনিক বা পুরাতন রূপ নিতে পারে। এর পেছনে বেশ কিছু কারণ দায়ী, যা নিচে আলোচনা করা হলো:
অসম্পূর্ণ চিকিৎসা (Incomplete Treatment)
এটি দাদ পুরাতন হয়ে যাওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ। অনেকেই চুলকানি এবং লাল ভাব কমে গেলেই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই অ্যান্টিফাঙ্গাল ক্রিম বা ওষুধ ব্যবহার করা বন্ধ করে দেন। এর ফলে ত্বকের উপরের স্তরের ছত্রাক মারা গেলেও, গভীরে থাকা ছত্রাকগুলো বেঁচে থাকে এবং অনুকূল পরিবেশে আবার বংশবৃদ্ধি শুরু করে। ফলে কিছুদিন পরেই দাদ আবার ফিরে আসে, এবং আগের চেয়েও বেশি শক্তিশালী হয়ে ফিরে আসে।
স্টেরয়েডযুক্ত মলমের ভুল ব্যবহার (Misuse of Steroid Creams)
বাজারে বহু জনপ্রিয় স্টেরয়েডযুক্ত মিশ্র মলম (যেমন Betamethasone, Clobetasol যুক্ত ক্রিম) পাওয়া যায়, যা চুলকানি এবং প্রদাহ খুব দ্রুত কমিয়ে দেয়। সাধারণ মানুষ দ্রুত আরাম পাওয়ার জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই এগুলো ব্যবহার করেন। স্টেরয়েড ত্বকের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা (Local Immunity) কমিয়ে দেয়, যা ছত্রাকের বংশবৃদ্ধির জন্য একটি আদর্শ পরিবেশ তৈরি করে। এর ফলে সাময়িকভাবে চুলকানি কমলেও ছত্রাকটি ত্বকের আরও গভীরে ছড়িয়ে পড়ে এবং এর চরিত্র বদলে যায়। এই অবস্থাকে ‘টিনিয়া ইনকগনিটো’ (Tinea Incognito) বলা হয়, যেখানে দাদের সাধারণ গোলাকার আকৃতি দেখা যায় না এবং রোগ নির্ণয় করা কঠিন হয়ে পড়ে।
অ্যান্টিফাঙ্গাল রেজিস্ট্যান্স (Antifungal Resistance)
ভুল ডোজে বা অল্প সময়ের জন্য অ্যান্টিফাঙ্গাল ওষুধ খাওয়া বা লাগানোর ফলে ছত্রাকগুলো সেই ওষুধের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা বা রেজিস্ট্যান্স গড়ে তোলে। এর ফলে পরবর্তীতে সেই ওষুধ আর কাজ করে না। ভারতের মতো দেশে অ্যান্টিফাঙ্গাল রেজিস্ট্যান্স একটি বড় জনস্বাস্থ্য সমস্যা হয়ে উঠছে। ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিকেল রিসার্চ (ICMR) দ্বারা পরিচালিত গবেষণায় দেখা গেছে যে, ভারতে ডার্মাটোফাইটের মধ্যে Terbinafine-এর মতো প্রচলিত ওষুধের বিরুদ্ধে রেজিস্ট্যান্স বাড়ছে, যা চিকিৎসাকে আরও জটিল করে তুলছে।
দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা (Weakened Immunity)
যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল, যেমন – ডায়াবেটিস, এইচআইভি/এইডস (HIV/AIDS) আক্রান্ত রোগী, কেমোথেরাপি নিচ্ছেন এমন ক্যান্সার রোগী বা যারা দীর্ঘদিন ধরে স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ সেবন করছেন, তাদের ক্ষেত্রে দাদের সংক্রমণ সহজে সারতে চায় না এবং বারবার ফিরে আসে।
অস্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা ও পার্সোনাল হাইজিন (Poor Hygiene and Lifestyle)
- ঘামে ভেজা বা স্যাঁতস্যাঁতে কাপড় দীর্ঘক্ষণ পরে থাকা।
- অতিরিক্ত টাইট বা সিন্থেটিক পোশাক পরা, যা ত্বকে বায়ু চলাচলে বাধা দেয়।
- সংক্রমিত ব্যক্তির তোয়ালে, চিরুনি, বা পোশাক ব্যবহার করা।
- পরিবার বা হোস্টেলের মতো জায়গায় একসাথে থাকার ফলে একে অপরের থেকে সংক্রমিত হওয়া।
পুরাতন দাদের আধুনিক চিকিৎসা (Modern Treatment for Chronic Ringworm)
পুরাতন দাদের চিকিৎসা সাধারণ দাদের চিকিৎসার চেয়ে কিছুটা ভিন্ন এবং সময়সাপেক্ষ। এক্ষেত্রে শুধুমাত্র টপিকাল বা লাগানোর ওষুধে কাজ নাও হতে পারে। একজন অভিজ্ঞ চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ (Dermatologist) সংক্রমণের তীব্রতা, স্থান এবং রোগীর শারীরিক অবস্থা বিচার করে একটি সমন্বিত চিকিৎসা পরিকল্পনা তৈরি করেন।
টপিকাল অ্যান্টিফাঙ্গাল (Topical Antifungals)
এগুলি হলো ক্রিম, জেল, লোশন বা পাউডার যা সরাসরি ত্বকের সংক্রমিত স্থানে লাগানো হয়। পুরাতন দাদের ক্ষেত্রে দীর্ঘ সময় ধরে (সাধারণত ৪-৮ সপ্তাহ বা তার বেশি) এই ক্রিমগুলো ব্যবহার করতে হয়। কিছু কার্যকরী টপিকাল অ্যান্টিফাঙ্গাল হলো:
- Luliconazole
- Sertaconazole
- Amorolfine
- Eberconazole
- Terbinafine
- Clotrimazole
গুরুত্বপূর্ণ: চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী র্যাশের সীমানার বাইরে অন্তত ২ সেন্টিমিটার পর্যন্ত ক্রিম লাগানো উচিত এবং চুলকানি কমে গেলেও কোর্স সম্পূর্ণ করতে হবে।
ওরাল অ্যান্টিফাঙ্গাল (Oral Antifungals)
যখন সংক্রমণ শরীরের অনেকটা অংশ জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে, নখ বা মাথায় হয়, অথবা টপিকাল চিকিৎসায় সাড়া দেয় না, তখন খাওয়ার জন্য অ্যান্টিফাঙ্গাল ওষুধ দেওয়া হয়। এই ওষুধগুলো রক্তে মিশে গিয়ে সারা শরীরে থাকা ছত্রাককে ধ্বংস করে।
ওষুধের নাম (Generic Name) | সাধারণ কোর্স | কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য |
Itraconazole | ৪-৬ সপ্তাহ | এটি বর্তমানে সবচেয়ে কার্যকর ওষুধগুলোর মধ্যে একটি। এটি খালি পেটে খাওয়া উচিত নয়। |
Terbinafine | ২-৪ সপ্তাহ | এটিও খুব কার্যকর, তবে রেজিস্ট্যান্সের কারণে এর কার্যকারিতা কমে আসছে। |
Fluconazole | ৪-৬ সপ্তাহ (সাপ্তাহিক ডোজ) | এটি সাধারণত সাপ্তাহিক একটি নির্দিষ্ট ডোজে দেওয়া হয়। |
Griseofulvin | ৮-১২ সপ্তাহ | এটি পুরোনো ওষুধ এবং বর্তমানে এর ব্যবহার কমে গেছে। এটি চর্বিযুক্ত খাবারের সাথে খেলে ভালো শোষিত হয়। |
সতর্কতা: ওরাল অ্যান্টিফাঙ্গাল ওষুধগুলো অবশ্যই চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী খেতে হবে। কারণ এগুলোর কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকতে পারে এবং লিভারের উপর প্রভাব ফেলতে পারে। চিকিৎসার আগে ও মাঝে মাঝে লিভার ফাংশন টেস্ট (LFT) করার প্রয়োজন হতে পারে।
সহায়ক চিকিৎসা (Supportive Therapy)
- অ্যান্টিহিস্টামিন ট্যাবলেট (Antihistamine Tablets): তীব্র চুলকানি কমানোর জন্য Levocetirizine বা Fexofenadine-এর মতো ওষুধ দেওয়া যেতে পারে, যা চুলকানির চক্র ভাঙতে সাহায্য করে।
- অ্যান্টিফাঙ্গাল সাবান ও পাউডার (Antifungal Soaps and Powders): Ketoconazole বা Clotrimazole যুক্ত সাবান ও ডাস্টিং পাউডার ব্যবহার করলে ত্বক শুষ্ক থাকে এবং পুনরায় সংক্রমণ প্রতিরোধে সাহায্য করে।
পরিসংখ্যান ও বিশ্বব্যাপী প্রেক্ষাপট (Statistics and Global Context)
ছত্রাক সংক্রমণ বিশ্বব্যাপী একটি ক্রমবর্ধমান সমস্যা।
- একটি সমীক্ষা অনুসারে, বিশ্ব জনসংখ্যার প্রায় ২৫% মানুষ কোনো না কোনো ধরনের ত্বকের ছত্রাক সংক্রমণে ভোগেন, যার মধ্যে দাদ অন্যতম। এই তথ্যটি Centers for Disease Control and Prevention (CDC) দ্বারা সমর্থিত।
- গরম এবং আর্দ্র জলবায়ুর দেশগুলিতে, যেমন ভারতে, এর প্রকোপ অনেক বেশি। একটি সাম্প্রতিক গবেষণাপত্র যা The Lancet জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে, তাতে ভারতে অ্যান্টিফাঙ্গাল রেজিস্ট্যান্সের ভয়াবহতার কথা তুলে ধরা হয়েছে, যা পুরাতন দাদের চিকিৎসাকে একটি বড় চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে।
- বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যথেচ্ছভাবে স্টেরয়েড ক্রিমের ব্যবহার এবং অ্যান্টিবায়োটিকের মতো অ্যান্টিফাঙ্গাল ওষুধের অপব্যবহার এই রেজিস্ট্যান্সের মূল কারণ।
প্রতিরোধের উপায়: দাদ যেন ফিরে না আসে (Prevention: How to Stop Recurrence)
চিকিৎসার পাশাপাশি কিছু নিয়ম মেনে চললে দাদ থেকে সম্পূর্ণ মুক্তি পাওয়া এবং এর পুনরাবৃত্তি রোধ করা সম্ভব।
ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা (Personal Hygiene)
- ত্বক শুষ্ক রাখুন: ব্যায়াম বা ঘাম হওয়ার পর যত দ্রুত সম্ভব গোসল করে নিন। তোয়ালে দিয়ে শরীর, বিশেষ করে কুঁচকি, বগল এবং আঙুলের ফাঁকের মতো ভাঁজের জায়গাগুলো ভালোভাবে শুকিয়ে নিন।
- পরিষ্কার পোশাক পরুন: প্রতিদিন পরিষ্কার এবং ধোয়া অন্তর্বাস ও মোজা পরুন। সুতির হালকা ও ঢিলেঢালা পোশাক পরার চেষ্টা করুন, যা বায়ু চলাচলে সাহায্য করে।
- ব্যক্তিগত জিনিস শেয়ার করবেন না: তোয়ালে, পোশাক, চিরুনি বা বিছানার চাদর অন্য কারো সাথে শেয়ার করবেন না।
পরিবেশগত সতর্কতা (Environmental Precautions)
- পোশাক গরম জলে ধোয়া: আপনার ব্যবহৃত পোশাক, তোয়ালে এবং বিছানার চাদর গরম জলে ডিটারজেন্ট দিয়ে ধুয়ে নিন এবং কড়া রোদে শুকান। রোদ প্রাকৃতিক জীবাণুনাশক হিসেবে কাজ করে।
- পরিবারের সদস্যদের পরীক্ষা: যদি আপনার পরিবারে অন্য কেউ সংক্রমিত হন, তাহলে তারও সঠিক চিকিৎসা করানো আবশ্যক। নাহলে আপনার সুস্থ হওয়ার পরেও তার থেকে পুনরায় সংক্রমণ হতে পারে।
- পোষ্য প্রাণীর যত্ন: বাড়ির পোষ্য প্রাণী (কুকুর, বিড়াল) থেকেও দাদ ছড়াতে পারে। তাদের শরীরে কোনো টাক বা র্যাশ দেখলে পশু চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
সাধারণ জিজ্ঞাস্য (Frequently Asked Questions – FAQ)
প্রশ্ন ১: পুরাতন দাদের চিকিৎসা করতে কতদিন সময় লাগে?
উত্তর: পুরাতন দাদের চিকিৎসা সময়সাপেক্ষ। টপিকাল ক্রিমের কোর্স ৪-৮ সপ্তাহ এবং খাওয়ার ওষুধের কোর্স ৪-১২ সপ্তাহ বা তার বেশিও হতে পারে। এটি সংক্রমণের তীব্রতা এবং রোগীর শারীরিক অবস্থার উপর নির্ভর করে।
প্রশ্ন ২: দাদ কি পুরোপুরি সেরে যেতে পারে?
উত্তর: হ্যাঁ, সঠিক চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে থেকে সম্পূর্ণ কোর্স শেষ করলে এবং জীবনযাত্রায় প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনলে পুরাতন দাদও পুরোপুরি সেরে যেতে পারে।
প্রশ্ন ৩: ঘরোয়া উপায়ে কি পুরাতন দাদ সারানো সম্ভব?
উত্তর: নিমের তেল, টি ট্রি অয়েল বা অ্যাপেল সিডার ভিনিগারের মতো কিছু ঘরোয়া উপাদানে অ্যান্টিফাঙ্গাল গুণ থাকতে পারে, তবে এগুলো শুধুমাত্র প্রাথমিক পর্যায়ের সংক্রমণে বা সহায়ক চিকিৎসা হিসেবে কাজ করতে পারে। পুরাতন দাদের জন্য এগুলোর উপর নির্ভর করা উচিত নয়, কারণ এটি সংক্রমণকে আরও জটিল করে তুলতে পারে। সর্বদা একজন চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
প্রশ্ন ৪: কোন মলমটি দাদের জন্য সবচেয়ে ভালো?
উত্তর: কোনো একটি নির্দিষ্ট মলমকে ‘সবচেয়ে ভালো’ বলা কঠিন। Luliconazole, Sertaconazole, Amorolfine-এর মতো আধুনিক অ্যান্টিফাঙ্গাল ক্রিমগুলো বেশ কার্যকর। তবে কোনটি আপনার জন্য উপযুক্ত, তা আপনার চিকিৎসকই নির্ধারণ করবেন। স্টেরয়েডযুক্ত মিশ্র মলম এড়িয়ে চলুন।
প্রশ্ন ৫: দাদের দাগ কিভাবে দূর করব?
উত্তর: দাদ সেরে যাওয়ার পর অনেক সময় ত্বকে কালো দাগ (Post-Inflammatory Hyperpigmentation) থেকে যায়। এটি সাধারণত সময়ের সাথে সাথে হালকা হয়ে যায়। দাগ দ্রুত দূর করার জন্য চিকিৎসকের পরামর্শে কিছু বিশেষ ক্রিম (যেমন Kojic Acid, Vitamin C, Azelaic Acid যুক্ত) ব্যবহার করা যেতে পারে।
পুরাতন দাদ একটি জটিল সমস্যা হলেও এটি দুরারোগ্য নয়। এই সমস্যার মূল চাবিকাঠি হলো ধৈর্য, সঠিক চিকিৎসা এবং প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ। স্ব-চিকিৎসা, বিশেষ করে স্টেরয়েডযুক্ত মলমের ব্যবহার, এই সমস্যাকে আরও গভীর এবং জটিল করে তোলে। তাই ত্বকে দাদের মতো কোনো সংক্রমণ দেখা দিলে দেরি না করে একজন রেজিস্টার্ড চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। তার নির্দেশ মতো চিকিৎসার সম্পূর্ণ কোর্স শেষ করুন এবং একটি স্বাস্থ্যকর ও পরিচ্ছন্ন জীবনযাত্রা অবলম্বন করুন। মনে রাখবেন, সঠিক তথ্যের মাধ্যমে সচেতনতা বৃদ্ধিই এই ধরনের একগুঁয়ে রোগ থেকে মুক্তির সেরা উপায়।