Cloud kitchen trends in West Bengal: পশ্চিমবঙ্গের খাদ্য শিল্পে এক নতুন যুগের সূচনা হয়েছে cloud kitchen-এর মাধ্যমে। এই নতুন ব্যবসা মডেল দ্রুত জনপ্রিয়তা অর্জন করছে এবং রাজ্যের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।cloud kitchen হল এমন একটি রান্নাঘর যেখানে শুধুমাত্র অনলাইন অর্ডার গ্রহণ করে খাবার তৈরি করা হয় এবং হোম ডেলিভারির মাধ্যমে গ্রাহকদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়। এখানে কোনো ডাইনিং স্পেস বা টেকঅ্যাওয়ে কাউন্টার থাকে না। এর ফলে ব্যবসায়ীরা কম খরচে এবং কম ঝুঁকিতে রেস্তোরাঁ ব্যবসা শুরু করতে পারছেন।পশ্চিমবঙ্গে cloud kitchen-এর বাজার দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০২৩ সালে এই খাতের বাজার মূল্য ছিল প্রায় ১,০০০ কোটি টাকা, যা ২০২৫ সালের মধ্যে ২,৫০০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। বর্তমানে রাজ্যে প্রায় ৫০০টি cloud kitchen কাজ করছে, যার মধ্যে কলকাতায় রয়েছে ৩০০টিরও বেশি।
৬টি ঐতিহ্যবাহী ভারতীয় খাদ্য ব্র্যান্ড: ৫০+ বছর ধরে কোটি কোটি টাকার ব্যবসায় সফল”
পশ্চিমবঙ্গের cloud kitchen শিল্পে বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান নেতৃত্ব দিচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে Wow! Momo, Eatclub Brands, Box8 ইত্যাদি। Wow! Momo-র ৫০টিরও বেশি cloud kitchen রয়েছে রাজ্যে। Eatclub Brands-এর ৩০টি cloud kitchen রয়েছে কলকাতায়। Box8-এর ২০টি cloud kitchen রয়েছে পশ্চিমবঙ্গে।এছাড়াও অনেক ছোট ও মাঝারি উদ্যোক্তা এই খাতে প্রবেশ করছেন।
উদাহরণস্বরূপ, কলকাতার বিখ্যাত বিরিয়ানি রেস্তোরাঁ আরসালান তাদের cloud kitchen শুরু করেছে। অনেক হোম শেফও এই সুযোগ নিয়ে নিজেদের ব্যবসা শুরু করেছেন।cloud kitchen-এর এই বিকাশ পশ্চিমবঙ্গের অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এটি নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করছে। বর্তমানে এই খাতে প্রায় ১০,০০০ মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কাজ করছেন। আগামী দুই বছরে এই সংখ্যা দ্বিগুণ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এছাড়াও রয়েছে পরিবেশগত চ্যালেঞ্জ, যেমন প্লাস্টিক প্যাকেজিং-এর ব্যবহার।এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় cloud kitchen প্রতিষ্ঠানগুলি নানা পদক্ষেপ নিচ্ছে। অনেকে নিজস্ব ডেলিভারি নেটওয়ার্ক গড়ে তুলছে। কেউ কেউ বায়োডিগ্রেডেবল প্যাকেজিং ব্যবহার শুরু করেছে। খাদ্যের মান নিয়ন্ত্রণে কঠোর নীতি অনুসরণ করা হচ্ছে।সরকারও এই খাতকে উৎসাহিত করছে। পশ্চিমবঙ্গ সরকার cloud kitchen-এর জন্য বিশেষ নীতিমালা তৈরি করেছে। এর আওতায় এই ব্যবসা শুরু করতে সহজ লাইসেন্সিং প্রক্রিয়া চালু করা হয়েছে।
Jio Free Cloud Storage: আর লাগবে না গুগুল স্টোরেজ!
এছাড়াও ছোট ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের জন্য আর্থিক সহায়তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।cloud kitchen-এর এই বিকাশ পশ্চিমবঙ্গের খাদ্য সংস্কৃতিতেও প্রভাব ফেলছে। এর মাধ্যমে বাঙালি রান্নার পাশাপাশি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক খাবারও সহজলভ্য হচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ, কলকাতায় এখন সহজেই জাপানি সুশি বা মেক্সিকান টাকো পাওয়া যাচ্ছে।বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, আগামী কয়েক বছরে পশ্চিমবঙ্গের cloud kitchen শিল্প আরও বিকশিত হবে। তবে এর জন্য প্রয়োজন হবে নতুন নতুন উদ্ভাবন। যেমন, AI ও রোবোটিক্স-এর ব্যবহার বাড়ানো, স্বাস্থ্যকর খাবারের মেনু বাড়ানো, পরিবেশবান্ধব প্যাকেজিং ব্যবহার করা ইত্যাদি।
সামগ্রিকভাবে, cloud kitchen পশ্চিমবঙ্গের খাদ্য শিল্পে এক নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে। এটি উদ্যোক্তাদের জন্য নতুন সুযোগ সৃষ্টি করেছে, গ্রাহকদের জন্য বিভিন্ন খাবারের অপশন বাড়িয়েছে এবং রাজ্যের অর্থনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। যদিও এর সামনে কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে, তবুও সঠিক পরিকল্পনা ও নীতি নির্ধারণের মাধ্যমে এই খাত আরও সমৃদ্ধ হবে বলে আশা করা যায়।
মন্তব্য করুন