Dhakeshwari Temple holidays: ঢাকেশ্বরী মন্দির বাংলাদেশের জাতীয় মন্দির এবং ঢাকা শহরের প্রাচীনতম হিন্দু উপাসনালয়। এই ঐতিহাসিক মন্দিরটি ঢাকার পুরানো অংশে অবস্থিত এবং হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মন্দিরটি ১২শ শতাব্দীতে সেন রাজবংশের রাজা বল্লাল সেন কর্তৃক নির্মিত হয়েছিল বলে মনে করা হয়। “ঢাকেশ্বরী” নামের অর্থ “ঢাকার দেবী”, যা এই মন্দিরের সাথে ঢাকা শহরের নামকরণের একটি জনপ্রিয় তত্ত্বকেও ইঙ্গিত করে।
ঢাকেশ্বরী মন্দির শুধু বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় হিন্দু মন্দিরই নয়, এটি দেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যেরও একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এই মন্দির ৫১টি শক্তিপীঠের একটি বলে বিশ্বাস করা হয়, যেখানে দেবী সতীর মুকুটের রত্ন পড়েছিল। যদিও এই দাবির ঐতিহাসিক প্রমাণ নেই, তবুও এটি মন্দিরের ধর্মীয় গুরুত্বকে আরও বাড়িয়ে তোলে।১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় মন্দিরটি গুরুতর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। পাকিস্তানি সেনাবাহিনী মন্দিরের অর্ধেকেরও বেশি ভবন ধ্বংস করে এবং প্রধান উপাসনা কক্ষটি গোলাবারুদ সংরক্ষণের জন্য ব্যবহার করে। স্বাধীনতার পর মন্দিরটি পুনর্নির্মাণ করা হয়। ১৯৯৬ সালে বাংলাদেশি হিন্দু গোষ্ঠীগুলির প্রচেষ্টায় ঢাকেশ্বরী মন্দিরকে দেশের জাতীয় মন্দির হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।
বিশ্বের সবচেয়ে ছোট বসবাসযোগ্য নদীদ্বীপ উমানন্দ – একটি অদ্ভুত প্রাকৃতিক বিস্ময়!
ঢাকেশ্বরী মন্দিরের দর্শন সময় ও ছুটির দিন সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য নিম্নরূপ:
বিষয় | বিবরণ |
---|---|
দৈনিক দর্শন সময় | সকাল ৮:০০ টা থেকে দুপুর ২:০০ টা পর্যন্ত এবং বিকাল ৪:০০ টা থেকে রাত ৮:০০ টা পর্যন্ত |
বন্ধ থাকার সময় | প্রতিদিন দুপুর ২:০০ টা থেকে বিকাল ৪:০০ টা পর্যন্ত |
সাপ্তাহিক ছুটির দিন | কোনো সাপ্তাহিক ছুটি নেই, মন্দির প্রতিদিন খোলা থাকে |
বিশেষ উৎসবের সময় | দুর্গা পূজা, কালী পূজা, জন্মাষ্টমী ইত্যাদি উৎসবের সময় মন্দির সারাদিন খোলা থাকে |
১. পোশাক: মন্দিরে প্রবেশের সময় সম্মানজনক ও শালীন পোশাক পরা উচিত। অতিরিক্ত উন্মুক্ত পোশাক পরিহার করা ভালো।
২. জুতা: মন্দির প্রাঙ্গণে প্রবেশের আগে জুতা খুলে রাখতে হবে। জুতা রাখার জন্য নির্দিষ্ট স্থান রয়েছে।
৩. ছবি তোলা: মন্দিরের ভিতরে ছবি তোলার অনুমতি সীমিত। কোনো কোনো অংশে ছবি তোলা নিষিদ্ধ।
৪. প্রসাদ: মন্দিরে প্রসাদ নিবেদন করা যায়। স্থানীয় দোকান থেকে প্রসাদ কেনা যাবে।
৫. গাইড: মন্দিরের ইতিহাস ও তাৎপর্য জানতে স্থানীয় গাইড নেওয়া যেতে পারে।
ঢাকেশ্বরী মন্দির বছর জুড়ে বিভিন্ন হিন্দু উৎসব ও অনুষ্ঠানের কেন্দ্রবিন্দু। এখানে অনুষ্ঠিত প্রধান উৎসবগুলি হল:
১. দুর্গা পূজা: এটি মন্দিরের সবচেয়ে বড় ও জাঁকজমকপূর্ণ উৎসব। প্রতি বছর শারদীয় নবরাত্রির সময় এই পূজা অনুষ্ঠিত হয়।
২. কালী পূজা: কার্তিক মাসে অমাবস্যার রাতে এই পূজা অনুষ্ঠিত হয়।
৩. জন্মাষ্টমী: কৃষ্ণ জন্মাষ্টমী উপলক্ষে একটি বড় শোভাযাত্রা বের হয় মন্দির থেকে।
৪. সরস্বতী পূজা: বসন্ত পঞ্চমীতে এই পূজা অনুষ্ঠিত হয়।৫. পহেলা বৈশাখ: বাংলা নববর্ষের দিন মন্দিরে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
ঢাকেশ্বরী মন্দিরের স্থাপত্য বাংলার ঐতিহ্যবাহী মন্দির নির্মাণশৈলীর একটি উৎকৃষ্ট নিদর্শন। মন্দিরের প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলি হল:
মন্দির প্রাঙ্গণে রয়েছে একটি নাট মন্দির, যেখানে বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠান ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়াও রয়েছে একটি দুর্গা মন্দির, যেখানে দুর্গা পূজার সময় মূর্তি স্থাপন করা হয়।
ঢাকেশ্বরী মন্দির পরিদর্শনের জন্য সবচেয়ে ভালো সময় হল:
১. শীতকাল (নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি): এই সময়ে আবহাওয়া অপেক্ষাকৃত শীতল ও আরামদায়ক থাকে, যা পরিদর্শনের জন্য উপযুক্ত।
২. উৎসবের সময়: দুর্গা পূজা, কালী পূজা বা জন্মাষ্টমীর সময় মন্দির পরিদর্শন করলে এর সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় গুরুত্ব সম্পর্কে ভালো ধারণা পাওয়া যায়।
৩. সকাল বা বিকেল: দিনের শুরুতে বা শেষের দিকে পরিদর্শন করলে ভিড় কম থাকে এবং শান্ত পরিবেশে মন্দির ঘুরে দেখা যায়।
ঢাকেশ্বরী মন্দিরে যাওয়ার জন্য বিভিন্ন যানবাহন ব্যবহার করা যেতে পারে:
১. বাস: ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে বাকশী বাজার যাওয়ার বাস পাওয়া যায়।
২. রিকশা/অটোরিকশা: স্থানীয় এলাকা থেকে রিকশা বা অটোরিকশা নিয়ে সহজেই মন্দিরে যাওয়া যায়।
৩. ট্যাক্সি/রাইড-শেয়ারিং: উবার বা পাঠাও-এর মতো রাইড-শেয়ারিং সেবা ব্যবহার করে মন্দিরে যাওয়া যায়।
৪. নিজস্ব গাড়ি: মন্দিরের কাছে পার্কিং সুবিধা রয়েছে।
চাঁদ বনাম চাঁদমালা: মোদি-রাহুলের রাজনৈতিক যাত্রায় কে এগিয়ে?
ঢাকেশ্বরী মন্দির শুধু একটি ধর্মীয় কেন্দ্রই নয়, এটি বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও ধর্মীয় সহাবস্থানের একটি প্রতীক। এই মন্দির:
মন্তব্য করুন