Thyroid effects on pregnancy: থাইরয়েড হরমোনের অস্বাভাবিকতা গর্ভধারণ ও গর্ভাবস্থায় বিভিন্ন সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে সঠিক চিকিৎসা নিলে থাইরয়েড রোগীদের সুস্থ সন্তান জন্ম দেওয়া সম্ভব। থাইরয়েড সমস্যা থাকা সত্ত্বেও অনেক মহিলা সফলভাবে গর্ভধারণ করেন এবং সুস্থ শিশুর জন্ম দেন।
থাইরয়েড সমস্যা ও গর্ভধারণের সম্পর্ক
থাইরয়েড হরমোন শরীরের বিপাক, হৃদস্পন্দন, রক্তচাপ, তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজ নিয়ন্ত্রণ করে। গর্ভাবস্থায় এই হরমোনের ভূমিকা আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। থাইরয়েড হরমোনের অস্বাভাবিকতা নিম্নলিখিত সমস্যাগুলি সৃষ্টি করতে পারে:
- গর্ভধারণে সমস্যা
- গর্ভপাত
- জন্মগত ত্রুটি
- প্রিম্যাচিওর ডেলিভারি
- কম ওজনের শিশু জন্ম
- শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশে সমস্যা
তবে এসব সমস্যা এড়াতে সময়মত রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা নেওয়া জরুরি।
থাইরয়েড রোগীদের গর্ভধারণের সম্ভাবনা
গবেষণায় দেখা গেছে, থাইরয়েড সমস্যা থাকলেও অনেক মহিলা সফলভাবে গর্ভধারণ করতে পারেন। একটি গবেষণায় দেখা গেছে:
“হাইপোথাইরয়েডিজম থাকা ৭০% মহিলা এবং হাইপারথাইরয়েডিজম থাকা ৬৫% মহিলা সফলভাবে গর্ভধারণ করেছেন।”
অন্য একটি গবেষণায় দেখা গেছে:
“থাইরয়েড সমস্যা থাকা ৮০% মহিলা সঠিক চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ সন্তানের জন্ম দিয়েছেন।”
সুতরাং থাইরয়েড সমস্যা থাকলেও গর্ভধারণের সম্ভাবনা কম নয়। তবে এক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলা খুবই জরুরি।
থাইরয়েড রোগীদের গর্ভধারণে করণীয়
থাইরয়েড সমস্যা থাকা মহিলাদের গর্ভধারণের আগে ও পরে নিম্নলিখিত বিষয়গুলি মেনে চলা উচিত:
- গর্ভধারণের আগে থাইরয়েড পরীক্ষা করানো
- নিয়মিত থাইরয়েড হরমোন পরীক্ষা করানো
- চিকিৎসকের পরামর্শ মতো ওষুধ সেবন করা
- পর্যাপ্ত আয়োডিনযুক্ত খাবার খাওয়া
- স্ট্রেস কমানো ও পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেওয়া
- নিয়মিত ব্যায়াম করা
- ধূমপান ও মদ্যপান পরিহার করা
থাইরয়েড রোগীদের গর্ভাবস্থায় বিশেষ যত্ন
গর্ভাবস্থায় থাইরয়েড রোগীদের বিশেষ যত্ন নেওয়া প্রয়োজন। এসময় নিম্নলিখিত বিষয়গুলি মেনে চলা উচিত:
- প্রতি ৪-৬ সপ্তাহে একবার থাইরয়েড হরমোন পরীক্ষা করানো
- চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধের মাত্রা পরিবর্তন না করা
- পর্যাপ্ত পুষ্টিকর খাবার খাওয়া
- নিয়মিত প্রসবপূর্ব পরীক্ষা করানো
- কোনো জটিলতা দেখা দিলে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া
থাইরয়েড সমস্যার প্রভাব
থাইরয়েড সমস্যার ইতিবাচক ও নেতিবাচক প্রভাব রয়েছে:
ইতিবাচক প্রভাব:
- সময়মত রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা নিলে সুস্থ সন্তান জন্ম দেওয়া সম্ভব
- নিয়মিত পরীক্ষা ও চিকিৎসায় জটিলতা এড়ানো যায়
- সচেতনতা বৃদ্ধি পায়
নেতিবাচক প্রভাব:
- গর্ভধারণে সমস্যা হতে পারে
- গর্ভপাতের ঝুঁকি বাড়ে
- শিশুর স্বাভাবিক বিকাশে সমস্যা হতে পারে
- প্রিম্যাচিওর ডেলিভারির সম্ভাবনা থাকে
থাইরয়েড সমস্যা থাকলেও সঠিক চিকিৎসা ও যত্ন নিলে সুস্থ সন্তান জন্ম দেওয়া সম্ভব। তবে এক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলা এবং নিয়মিত পরীক্ষা করানো খুবই জরুরি। গর্ভধারণের আগে থাইরয়েড পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া উচিত। গর্ভাবস্থায় নিয়মিত থাইরয়েড হরমোন পরীক্ষা ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নিলে জটিলতা এড়ানো সম্ভব। সুস্থ জীবনযাপন ও সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে থাইরয়েড রোগীরাও সুস্থ সন্তানের জন্ম দিতে পারেন।