Dont Forget to do 10 Things After a Fight with Your Wife: দাম্পত্য জীবনে ঝগড়া-বিবাদ একটি স্বাভাবিক ঘটনা। তবে ঝগড়ার পর কীভাবে আচরণ করা হয় তার উপর নির্ভর করে সম্পর্কের ভবিষ্যৎ। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ঝগড়ার পর কিছু নির্দিষ্ট আচরণ এড়িয়ে চলা উচিত যা সম্পর্ককে আরও জটিল করে তুলতে পারে। আসুন জেনে নেওয়া যাক সেই ১০টি কাজ যা ঝগড়ার পর ভুলেও করা উচিত নয়।
ঝগড়ার পর এড়িয়ে চলার ১০টি কাজ
১. নিজেকে বিচ্ছিন্ন করে রাখা
ঝগড়ার পর রাগের বশে অনেকেই নিজেকে বিচ্ছিন্ন করে রাখেন। কিন্তু এটি করা উচিত নয়। সঙ্গীর থেকে দূরে থাকলে ভুল বোঝাবুঝি আরও বাড়তে পারে। পরিবর্তে, শান্ত হওয়ার জন্য কিছুটা সময় নিয়ে আবার কথা বলার চেষ্টা করুন।
২. অন্যের কাছে অভিযোগ করা
ঝগড়ার পর স্ত্রীর বিরুদ্ধে অন্যদের কাছে অভিযোগ করা উচিত নয়। এটি সম্পর্কের বিশ্বাস ভঙ্গ করতে পারে। নিজেদের মধ্যে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করুন।
৩. সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা
ঝগড়ার বিষয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা একেবারেই অনুচিত। এটি আপনার ব্যক্তিগত জীবনকে প্রকাশ্যে নিয়ে আসে এবং সম্পর্কের ক্ষতি করতে পারে।
৪. অতীতের ভুল মনে করিয়ে দেওয়া
ঝগড়ার সময় অতীতের ভুল মনে করিয়ে দেওয়া উচিত নয়। এটি বর্তমান সমস্যা থেকে দৃষ্টি সরিয়ে নেয় এবং নতুন বিবাদের সৃষ্টি করতে পারে।
৫. হুমকি দেওয়া বা চাপ প্রয়োগ করা
কোনও অবস্থাতেই স্ত্রীকে হুমকি দেওয়া বা চাপ প্রয়োগ করা উচিত নয়। এটি সম্পর্কে অবিশ্বাস ও ভয় সৃষ্টি করতে পারে।
২০টি সাইলেন্ট কিলার: পুরুষ ও মহিলাদের মধ্যে প্রায়শই উপেক্ষিত ক্যান্সারের লক্ষণগুলি
৬. সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য তাড়া দেওয়া
ঝগড়ার পর তাড়াতাড়ি সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া উচিত নয়। উভয়কে শান্ত হওয়ার এবং পরিস্থিতি বিশ্লেষণের সময় দিন।
৭. একতরফা সিদ্ধান্ত নেওয়া
ঝগড়ার পর একতরফাভাবে কোনও গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত নয়। এটি সম্পর্কে অবিশ্বাস ও অসন্তোষ সৃষ্টি করতে পারে।
৮. অপমানজনক ভাষা ব্যবহার করা
রাগের মাথায় অপমানজনক বা কটু ভাষা ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন। এটি সম্পর্কে গভীর ক্ষত সৃষ্টি করতে পারে যা সহজে সারানো যায় না।
৯. শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টা করা
ঝগড়ার পর তাৎক্ষণিকভাবে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টা করা উচিত নয়। এটি সমস্যার সমাধান না করে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা হিসেবে দেখা হতে পারে।
১০. সন্তানদের সামনে বিবাদ করা
কখনোই সন্তানদের সামনে ঝগড়া করবেন না বা তাদের মধ্যস্থতাকারী হিসেবে ব্যবহার করবেন না। এটি তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
মোবাইল ধরা দেখেই বুঝে নিন মানুষটি কেমন
দাম্পত্য সম্পর্ক উন্নয়নের কৌশল
ঝগড়ার পর সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য কিছু কৌশল অবলম্বন করা যেতে পারে:
শান্তভাবে কথা বলুন:
ঝগড়ার পর উভয়ে শান্ত হওয়ার পর আবার কথা বলার চেষ্টা করুন। এটি ভুল বোঝাবুঝি দূর করতে সাহায্য করবে।
একে অপরের দৃষ্টিভঙ্গি বোঝার চেষ্টা করুন:
নিজের দৃষ্টিকোণ থেকে বেরিয়ে সঙ্গীর অনুভূতি ও দৃষ্টিভঙ্গি বোঝার চেষ্টা করুন। এটি সহানুভূতি বাড়াতে সাহায্য করবে।
ক্ষমা চাওয়া ও ক্ষমা করা শিখুন:
নিজের ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চাওয়া এবং সঙ্গীকে ক্ষমা করার মনোভাব গড়ে তুলুন। এটি সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করবে।
যৌথ সমাধান খুঁজুন:
সমস্যার সমাধানে উভয়ের মতামত নিয়ে একটি যৌথ সিদ্ধান্তে আসার চেষ্টা করুন। এটি উভয়কে সন্তুষ্ট করবে।
পেশাদার সাহায্য নিন:
যদি ঘন ঘন ঝগড়া হয় বা সমস্যা সমাধান করতে না পারেন, তাহলে একজন পেশাদার কাউন্সেলরের সাহায্য নিতে পারেন।
ঝগড়ার প্রভাব ও পরিণতি
দাম্পত্য জীবনে ঘন ঘন ঝগড়া-বিবাদ নানা নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে:
– মানসিক চাপ ও উদ্বেগ বৃদ্ধি
– শারীরিক স্বাস্থ্যের অবনতি
– কর্মক্ষেত্রে কর্মদক্ষতা হ্রাস
– সন্তানদের মানসিক বিকাশে বাধা
– পারিবারিক সম্পর্কের অবনতি
– বিবাহ বিচ্ছেদের ঝুঁকি বৃদ্ধি
গবেষণায় দেখা গেছে, যে দম্পতিরা নিয়মিত ঝগড়া করেন তাদের মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদের হার ৩০-৪০% বেশি।
দাম্পত্য জীবনে ঝগড়া-বিবাদ এড়ানো সম্ভব নয়। তবে ঝগড়ার পর কীভাবে আচরণ করা হয় তার উপর নির্ভর করে সম্পর্কের ভবিষ্যৎ। উপরে উল্লিখিত ১০টি কাজ এড়িয়ে চলা এবং ইতিবাচক কৌশল অবলম্বন করে দাম্পত্য সম্পর্ককে আরও দৃঢ় ও মধুর করে তোলা সম্ভব। মনে রাখবেন, একটি সুস্থ সম্পর্কের মূল ভিত্তি হল পারস্পরিক শ্রদ্ধা, বিশ্বাস ও যোগাযোগ। এই মূল্যবোধগুলি ধরে রেখে এগিয়ে গেলে যেকোনও সমস্যার সমাধান সম্ভব।