Scientists dream communication study 2024: সফল ক্যালিফোর্নিয়া ভিত্তিক স্টার্টআপ REMspace এর বিজ্ঞানীরা একটি ঐতিহাসিক সাফল্য অর্জন করেছেন। তারা দাবি করেছেন যে তারা দুজন মানুষের মধ্যে স্বপ্নের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপন করতে সক্ষম হয়েছেন। এই অভূতপূর্ব পরীক্ষাটি ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখে সম্পন্ন হয়েছিল। REMspace একটি নিউরোটেকনোলজি কোম্পানি যা ঘুম উন্নত করা এবং স্বপ্ন নিয়ন্ত্রণের প্রযুক্তিতে বিশেষজ্ঞ। তারা বিশেষভাবে ডিজাইন করা যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে দুজন ব্যক্তিকে সফলভাবে lucid dream বা সচেতন স্বপ্নের মধ্যে একটি সরল বার্তা আদান-প্রদান করতে সক্ষম করেছে।
পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীরা তাদের নিজ নিজ বাড়িতে ঘুমিয়েছিলেন। একটি বিশেষভাবে তৈরি করা যন্ত্র তাদের মস্তিষ্কের তরঙ্গ এবং অন্যান্য পলিসোমনোগ্রাফিক ডেটা দূর থেকে ট্র্যাক করছিল। যখন সার্ভার প্রথম অংশগ্রহণকারীর lucid dream শুরু হওয়ার সংকেত পেল, তখন এটি একটি র্যান্ডম Remmyo শব্দ তৈরি করে ইয়ারবাডের মাধ্যমে তার কাছে পাঠিয়েছিল। অংশগ্রহণকারী তার স্বপ্নে সেই শব্দটি পুনরাবৃত্তি করেছিলেন, যা সেন্সর দ্বারা ক্যাপচার করে সার্ভারে সংরক্ষণ করা হয়েছিল। আট মিনিট পর, দ্বিতীয় অংশগ্রহণকারী lucid dream এ প্রবেশ করেন। তিনি প্রথম অংশগ্রহণকারীর সংরক্ষিত বার্তাটি গ্রহণ করেন এবং জেগে ওঠার পর তা নিশ্চিত করেন।এই পরীক্ষায় ব্যবহৃত প্রযুক্তি:REMspace বিশেষভাবে ডিজাইন করা যন্ত্রপাতি ব্যবহার করেছে যার মধ্যে রয়েছে একটি সার্ভার, একটি যন্ত্র, ওয়াইফাই এবং সেন্সর। তবে তারা ব্যবহৃত সঠিক প্রযুক্তির বিস্তারিত প্রকাশ করেনি।
মোবাইল ধরা দেখেই বুঝে নিন মানুষটি কেমন
পূর্বে, REMspace প্রদর্শন করেছিল যে facial electromyography সেন্সর স্বপ্নে নির্দিষ্ট শব্দ ডিকোড করতে পারে। এর ফলে Remmyo নামে একটি স্বপ্ন ভাষা তৈরি হয়েছে যা সংবেদনশীল সেন্সর দ্বারা সনাক্ত করা যায়।পরীক্ষার তাৎপর্য:এই সাফল্য প্রায় পাঁচ বছরের কঠোর গবেষণা ও প্রযুক্তিগত উন্নয়নের ফলাফল। ২৪ সেপ্টেম্বরের প্রথম যোগাযোগের পর থেকে, গবেষকরা তাদের প্রযুক্তি নিরন্তর পরিশোধন করছেন এবং প্রতিটি নতুন প্রচেষ্টায় আরও ভাল ফলাফল অর্জন করছেন
।REMspace এর প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও Michael Raduga এই সাফল্য সম্পর্কে বলেছেন, “গতকাল, স্বপ্নে যোগাযোগ করা বিজ্ঞান কল্পকাহিনী মনে হয়েছিল। আগামীকাল, এটি এতটাই সাধারণ হয়ে যাবে যে আমরা এই প্রযুক্তি ছাড়া আমাদের জীবন কল্পনা করতে পারব না। এটি অসংখ্য বাণিজ্যিক প্রয়োগের দরজা খুলে দেয়, স্বপ্ন জগতে যোগাযোগ ও ইন্টারঅ্যাকশন সম্পর্কে আমাদের ধারণাকে পুনর্গঠন করে।”
REMspace এর পরবর্তী লক্ষ্য হল lucid dream এ রিয়েল-টাইম যোগাযোগ সক্ষম করা। যদিও এটি আরও জটিল লক্ষ্য, দলটি আশাবাদী যে কয়েক মাসের মধ্যে এটি অর্জন করা যাবে।সম্ভাব্য প্রভাব ও প্রয়োগ:এই প্রযুক্তি যদি বৈজ্ঞানিকভাবে যাচাই ও প্রতিকৃত হয়, তাহলে এটি ঘুমের গবেষণার জন্য একটি বড় মাইলফলক হবে এবং মানসিক স্বাস্থ্য চিকিৎসা, দক্ষতা প্রশিক্ষণ ইত্যাদির জন্য প্রয়োগ প্রদান করতে পারে।
এই গবেষণা স্বপ্নের প্রকৃতি, চেতনা এবং মানুষের মস্তিষ্কের কার্যকারিতা সম্পর্কে আমাদের বোঝাপড়াকে নতুন মাত্রায় নিয়ে যেতে পারে। এটি স্বপ্নকে একটি নতুন যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করার সম্ভাবনা খুলে দিতে পারে।বিশেষজ্ঞদের মতামত:যদিও এই পরীক্ষা উত্তেজনাপূর্ণ, বিজ্ঞানীরা সতর্কতা অবলম্বন করছেন। এই প্রযুক্তি এখনও পর্যন্ত বৈজ্ঞানিক পর্যালোচনা বা অন্য গবেষকদের দ্বারা পুনরাবৃত্তি করা হয়নি। এটি যাচাই করা প্রয়োজন যাতে নিশ্চিত হওয়া যায় যে ফলাফলগুলি বৈধ এবং পুনরাবৃত্তিযোগ্য। তবে, যদি এই পরীক্ষা বৈধ প্রমাণিত হয়, তাহলে এটি স্বপ্ন গবেষণা ও নিউরোসায়েন্সের ক্ষেত্রে একটি যুগান্তকারী অগ্রগতি হিসেবে বিবেচিত হবে।
ইংরেজি ভাষায় পারদর্শী হওয়ার মাস্টারকী: ১০টি অব্যর্থ কৌশল
REMspace এর এই পরীক্ষা স্বপ্ন গবেষণা ও মানব যোগাযোগের ক্ষেত্রে একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। যদিও এটি এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে এবং আরও গবেষণা ও যাচাইয়ের প্রয়োজন রয়েছে, এটি স্বপ্নের মাধ্যমে যোগাযোগের সম্ভাবনা নিয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে।ভবিষ্যতে এই প্রযুক্তি মানসিক স্বাস্থ্য চিকিৎসা, শিক্ষা, এমনকি বিনোদনের ক্ষেত্রেও ব্যাপক প্রভাব ফেলতে পারে।
তবে এর সাথে সাথে নৈতিক প্রশ্নও উঠছে যেমন গোপনীয়তা রক্ষা ও স্বপ্নের স্বাধীনতা নিয়ে উদ্বেগ।যাই হোক, এই গবেষণা প্রমাণ করে যে মানব মস্তিষ্ক ও চেতনার রহস্য উন্মোচনে আমরা ক্রমশ এগিয়ে যাচ্ছি। স্বপ্নের মাধ্যমে যোগাযোগের এই নতুন সম্ভাবনা আমাদের নিজেদের ও পরস্পরের সম্পর্কে আরও গভীরভাবে জানতে সাহায্য করতে পারে।