Durga Puja Date 2024: পশ্চিমবঙ্গের বাঙালিদের সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপুজো আর মাত্র ৩০ দিন বাকি। আগামী ৯ অক্টোবর থেকে শুরু হতে চলেছে ৫ দিনব্যাপী এই মহাউৎসব। রাজ্যজুড়ে শুরু হয়েছে পুজোর প্রস্তুতি। কলকাতা সহ রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় পুজো কমিটিগুলি ব্যস্ত হয়ে উঠেছে থিম, প্যান্ডেল ডেকোরেশন, প্রতিমা নির্মাণ ইত্যাদি নিয়ে।
দুর্গাপুজো ২০২৪ তারিখ
২০২৪ সালের দুর্গাপুজোর তারিখগুলি নিম্নরূপ:
তিথি | দিন | তারিখ |
---|---|---|
মহাপঞ্চমী | মঙ্গলবার | ৮ অক্টোবর ২০২৪ |
মহাষষ্ঠী | বুধবার | ৯ অক্টোবর ২০২৪ |
মহাসপ্তমী | বৃহস্পতিবার | ১০ অক্টোবর ২০২৪ |
মহাঅষ্টমী | শুক্রবার | ১১ অক্টোবর ২০২৪ |
মহানবমী | শনিবার | ১২ অক্টোবর ২০২৪ |
বিজয়া দশমী | রবিবার | ১৩ অক্টোবর ২০২৪ |
কলকাতা সহ রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় পুজো কমিটিগুলি ইতিমধ্যেই প্রস্তুতি শুরু করেছে। বড় বড় পুজো কমিটিগুলি থিম ঘোষণা করেছে এবং প্যান্ডেল ডিজাইন নিয়ে কাজ শুরু করেছে। কুমোরটুলিতে প্রতিমা নির্মাণের কাজ জোরকদমে চলছে।
কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, “আমরা পুজোর প্রস্তুতি নিয়ে ব্যস্ত। রাস্তাঘাট মেরামত, আলোকসজ্জা, পানীয় জলের ব্যবস্থা ইত্যাদি নিয়ে কাজ চলছে। আমরা চাই যাতে মানুষ নিরাপদে ও আনন্দের সাথে পুজো উপভোগ করতে পারেন।”
অর্থনৈতিক প্রভাব
দুর্গাপুজো শুধু ধর্মীয় উৎসব নয়, এটি পশ্চিমবঙ্গের অর্থনীতিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রতি বছর দুর্গাপুজোর সময় রাজ্যের অর্থনীতিতে প্রায় ৩২,০০০ কোটি টাকার লেনদেন হয়।
অর্থনীতিবিদ ড. অভিজিৎ সেন বলেন, “দুর্গাপুজো পশ্চিমবঙ্গের অর্থনীতির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই সময় খুচরা বিক্রেতা থেকে শুরু করে বড় ব্যবসায়ীরা সবাই লাভবান হন। পর্যটন শিল্পেও বিপুল উন্নতি হয়।”
পর্যটন শিল্পের প্রস্তুতি
পর্যটন দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, এবছর প্রায় ১০ লক্ষ পর্যটক পুজোর সময় পশ্চিমবঙ্গে আসবেন বলে আশা করা হচ্ছে। হোটেল ও রেস্তোরাঁগুলি ইতিমধ্যেই বুকিং নিতে শুরু করেছে।
পর্যটন মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়ো বলেন, “আমরা পর্যটকদের জন্য বিশেষ প্যাকেজ তৈরি করেছি। কলকাতার পুজো দর্শন থেকে শুরু করে দার্জিলিং, সুন্দরবন ভ্রমণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আমরা আশা করছি এবার রেকর্ড সংখ্যক পর্যটক আসবেন।”
এলআইসি জীবন উৎসব: আজীবন গ্যারান্টিড আয়ের সুযোগ, কিন্তু কি আসলেই লাভজনক?
নিরাপত্তা ব্যবস্থা
পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল জানিয়েছেন, “আমরা পুজোর সময় কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করব। প্রতিটি পুজো প্যান্ডেলে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো হবে। অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হবে। ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
পরিবেশ সুরক্ষা
পরিবেশ দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, এবার পুজোয় পরিবেশ সুরক্ষার উপর বিশেষ জোর দেওয়া হবে। প্লাস্টিক ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হবে। প্রতিমা বিসর্জনের সময় নদী দূষণ রোধে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পরিবেশ মন্ত্রী সুজিত বসু বলেন, “আমরা চাই পুজো যেন পরিবেশবান্ধব হয়। পুজো কমিটিগুলিকে সবুজ উৎসব পালনের জন্য উৎসাহিত করা হচ্ছে। যারা পরিবেশ সুরক্ষায় ভালো কাজ করবেন তাদের পুরস্কৃত করা হবে।”
দুর্গাপুজো শুধু একটি ধর্মীয় উৎসব নয়, এটি বাঙালি সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের প্রতীক। প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ মানুষ এই উৎসবে অংশগ্রহণ করেন। এবছরও পশ্চিমবঙ্গের মানুষ আগ্রহ ও উৎসাহের সাথে দুর্গাপুজোর অপেক্ষায় রয়েছেন। সরকার ও প্রশাসন পুজো যাতে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয় সেজন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। আশা করা যায়, এবারের দুর্গাপুজো হবে আনন্দময়, নিরাপদ ও পরিবেশবান্ধব।
মন্তব্য করুন