বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা বিভিন্ন বিশেষ সুযোগ-সুবিধা পাবেন বলে জানা গেছে। গত ৮ আগস্ট ২০২৪ তারিখে নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ সদস্যের এই অন্তর্বর্তী সরকার শপথ গ্রহণ করেছে।
উপদেষ্টাদের প্রধান সুযোগ-সুবিধাসমূহ
অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা নিম্নলিখিত সুযোগ-সুবিধাগুলি পাবেন:
- মন্ত্রীর মর্যাদা ও প্রোটোকল
- সরকারি বাসভবন
- গাড়ি ও অন্যান্য পরিবহন সুবিধা
- নিরাপত্তা ব্যবস্থা
- আর্থিক সুবিধাদি
গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব
প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস নিজেই ২৭টি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নিয়েছেন, যার মধ্যে রয়েছে:
- পরিবহন
- ভূমি
- প্রতিরক্ষা
- বিমান
- জ্বালানি
অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়গুলির দায়িত্বে রয়েছেন:
- পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় – এম তৌহিদ হোসেন (সাবেক পররাষ্ট্র সচিব)
- স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় – ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) সাখাওয়াত হোসেন
- অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় – সালেহউদ্দিন আহমেদ (সাবেক গভর্নর, বাংলাদেশ ব্যাংক)
উপদেষ্টাদের পটভূমি
অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের মধ্যে রয়েছেন:
- ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী দুইজন (মো. নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদ সাজিব ভূঁইয়া)
- সাবেক বিচারপতি ও আইনজীবী
- অধ্যাপক ও গবেষক
- মানবাধিকার কর্মী
- পরিবেশবিদ
- নারী অধিকার কর্মী
প্রধান লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান লক্ষ্য হলো:
- আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নয়ন
- গণতান্ত্রিক সংস্কার
- নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা করা
পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা এম তৌহিদ হোসেন জানিয়েছেন, "আমরা সকল দেশের সাথে ভালো সম্পর্ক রাখতে চাই। বড় দেশগুলোর সাথে সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে।" আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থা স্বাগত জানিয়েছে:
- ভারত: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ড. ইউনূসকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন
- চীন: অন্তর্বর্তী সরকার গঠনকে স্বাগত জানিয়েছে
- যুক্তরাষ্ট্র: গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ নির্মাণে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে
- ইউরোপীয় ইউনিয়ন: নতুন প্রশাসনের সাথে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে
সম্ভাব্য প্রভাব
অন্তর্বর্তী সরকারের কার্যক্রম বাংলাদেশের ভবিষ্যতের উপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে:
- গণতান্ত্রিক পরিবেশ পুনরুদ্ধার
- নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠান
- মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নয়ন
- আর্থসামাজিক সংস্কার
- আন্তর্জাতিক সম্পর্কের পুনর্বিন্যাস
তবে চ্যালেঞ্জও রয়েছে। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ হবে। বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের তথ্য অনুযায়ী, গত ৫ আগস্ট থেকে ৫২টি জেলায় সংখ্যালঘুদের উপর ২০৫টি নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা যেসব সুযোগ-সুবিধা পাবেন তা তাদের দায়িত্ব পালনে সহায়ক হবে। তবে এই সুযোগ-সুবিধার পাশাপাশি তাদের উপর অর্পিত দায়িত্বও অনেক। বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ নির্মাণে তাদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দেশের জনগণ আশা করছে, অন্তর্বর্তী সরকার তাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে পালন করে একটি নিরপেক্ষ ও অবাধ নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করবে।