Habits to change to get Pregnant: আপনি কি দীর্ঘদিন ধরে সন্তানের মুখ দেখার স্বপ্ন দেখছেন? কিন্তু বারবার ব্যর্থ হচ্ছেন? চিন্তা করবেন না, আপনি একা নন। আসুন জেনে নেই কীভাবে গর্ভধারণের সম্ভাবনা বাড়াতে পারেন।
ভারতের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ক্রমশ কমে আসছে। ১৯৫০ সালে যেখানে প্রতি মহিলার গড়ে ৬.১৮টি সন্তান জন্ম দিতেন, ২০২১ সালে তা কমে দাঁড়িয়েছে ১.৯১-এ। বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, ২০৫০ সালে এই হার আরও কমে ১.২৯-এ নেমে আসতে পারে। এর ফলে দেশের অর্থনীতি ও সামাজিক কাঠামোতে বড় ধরনের প্রভাব পড়তে পারে। তবে ব্যক্তিগত পর্যায়ে কিছু পদক্ষেপ নিয়ে গর্ভধারণের সম্ভাবনা বাড়ানো যায়।
গর্ভধারণে সমস্যা: জটিলতা ও প্রতিকার
গর্ভধারণের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল সঠিক সময়ে সহবাস করা। এজন্য নিয়মিত ঋতুচক্র পর্যবেক্ষণ করুন। মাসিকের প্রথম দিন থেকে গণনা শুরু করে ১৪ দিনের দিকে ডিম্বাশয় থেকে ডিম্বাণু নির্গত হয়। এই সময়টাই গর্ভধারণের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত। অ্যাপ বা ক্যালেন্ডারের মাধ্যমে এই সময় ট্র্যাক করা যায়।
পুষ্টিকর খাবার খেলেভারতে বর্তমানে প্রজনন হার দ্রুত কমে যাচ্ছে। কিন্তু আশার কথা হল, কিছু সহজ অভ্যাস পরিবর্তন করে আপনিও সন্তানের মা-বাবা হতে পারেন। শরীর সুস্থ থাকে এবং গর্ভধারণের সম্ভাবনা বাড়ে। প্রচুর পরিমাণে ফল, সবজি, হোলগ্রেইন এবং প্রোটিনযুক্ত খাবার খান। ফলিক অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার যেমন পালংশাক, ব্রকলি ইত্যাদি খাওয়া উচিত। ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ মাছ যেমন সালমন, সার্ডিন ইত্যাদি খাওয়া ভালো।
অতিরিক্ত ওজন বা কম ওজন উভয়ই গর্ভধারণের ক্ষেত্রে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। সুষম খাদ্যাভ্যাস ও নিয়মিত ব্যায়ামের মাধ্যমে স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখুন। তবে অতিরিক্ত কঠোর ব্যায়াম এড়িয়ে চলুন, কারণ তা ঋতুচক্রে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে।
ধূমপান ও মদ্যপান শুক্রাণু ও ডিম্বাণুর গুণগত মান কমিয়ে দেয়। মহিলাদের ক্ষেত্রে এটি ডিম্বাশয়ের কার্যক্ষমতা কমিয়ে দেয়। পুরুষদের ক্ষেত্রে শুক্রাণুর সংখ্যা ও গতিশীলতা কমে যায়। তাই গর্ভধারণের চেষ্টা করার আগে থেকেই এগুলো সম্পূর্ণ ত্যাগ করা উচিত।
অতিরিক্ত ক্যাফেইন গ্রহণ গর্ভধারণের সম্ভাবনা কমিয়ে দেয়। দৈনিক ৩০০ মিলিগ্রামের বেশি ক্যাফেইন গ্রহণ না করাই ভালো। এটি প্রায় ৪ কাপ ইনস্ট্যান্ট কফি বা ৬ কাপ চায়ের সমান। কফি, চা ছাড়াও চকোলেট, কোলা জাতীয় পানীয়তেও ক্যাফেইন থাকে।
মানসিক চাপ হরমোন ভারসাম্য নষ্ট করে এবং ঋতুচক্রে ব্যাঘাত ঘটায়। নিয়মিত ব্যায়াম, ধ্যান, যোগব্যায়াম ইত্যাদির মাধ্যমে স্ট্রেস কমানোর চেষ্টা করুন। প্রয়োজনে কাউন্সেলিং নিতে পারেন।
গর্ভাবস্থায় তলপেটে ব্যথা হয় কেন? কারন এবং ১০০% উপশমের কৌশল
গর্ভধারণের আগে থেকেই প্রিনাটাল ভিটামিন গ্রহণ করা উচিত। এতে থাকা ফলিক অ্যাসিড ভ্রূণের স্নায়ুতন্ত্রের বিকাশে সাহায্য করে। দৈনিক ৪০০ মাইক্রোগ্রাম ফলিক অ্যাসিড গ্রহণের পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা।উপরোক্ত পদক্ষেপগুলো ছাড়াও নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। বিশেষ করে ৬ মাস চেষ্টার পরেও গর্ভধারণ না হলে অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত। কারণ কখনও কখনও হরমোনজনিত বা অন্যান্য শারীরিক সমস্যার কারণে গর্ভধারণ না হতে পারে।
গর্ভধারণ একটি জটিল প্রক্রিয়া। তবে উপরোক্ত পদক্ষেপগুলো মেনে চললে গর্ভধারণের সম্ভাবনা অনেকাংশে বেড়ে যায়। মনে রাখবেন, ধৈর্য ধরতে হবে। হতাশ না হয়ে নিয়মিত চেষ্টা চালিয়ে যান। আপনার স্বপ্নের সন্তান আপনার জন্য অপেক্ষা করছে।
মন্তব্য করুন