Ganobhaban Loot : বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় গত ৫ আগস্ট ২০২৪ তারিখে এক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন গণভবনে আন্দোলনকারীরা প্রবেশ করে ব্যাপক লুটপাট চালিয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চাপে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার পর এই ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সময় বিকেল আড়াইটা নাগাদ শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার পর গণভবনে প্রবেশ করে আন্দোলনকারীরা। তারা গণভবনের ভিতরে প্রবেশ করে যে যা পারে নিয়ে যেতে শুরু করে। লুটপাটের শিকার হয় প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত জিনিসপত্র থেকে শুরু করে গৃহপালিত পশুপাখি পর্যন্ত।
– শেখ হাসিনার শাড়ি
– ছাগল
– হাঁস
– মাছ
– আসবাবপত্র
– অন্যান্য ব্যক্তিগত জিনিসপত্র
এমনকি কেউ কেউ প্রধানমন্ত্রীর অন্তর্বাস নিয়েও উল্লাস করেছে বলে জানা গেছে। এই ঘটনা বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ইতিহাসে এক কলঙ্কিত অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।
শেখ হাসিনার পতন: বাংলাদেশের সামনে অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ
বাংলাদেশের একটি জাতীয় দৈনিক কালের কণ্ঠের প্রতিবেদন অনুযায়ী, “গণভবন থেকে যে যা পারছে নিয়ে যাচ্ছে”।
একটি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের ভিডিও রিপোর্টে দেখা গেছে, বিশাল জনতা গণভবনে প্রবেশ করে লুটপাট চালাচ্ছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, “A massive crowd of protesters on Monday (August 5) stormed the former Bangladesh prime minister Sheikh Hasina’s official residence ‘Ganabhaban'”।
– বাংলাদেশের জনসংখ্যা প্রায় ১৭ কোটি
– দেশের গড় মাথাপিছু জিডিপি ২,৫২৯ ডলার
– ২০১৮ সালেও কোটা বিরোধী আন্দোলন হয়েছিল
– বর্তমান আন্দোলনের জন্য ৬৫ সদস্যের একটি সমন্বয় কমিটি গঠন করা হয়েছে
এই ঘটনার ফলে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতি অস্থিতিশীল হয়ে পড়তে পারে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে দ্বিধাগ্রস্ত হতে পারেন। এছাড়া দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে উত্তেজনা বৃদ্ধি পেতে পারে।
Bangladesh Metro Rail: মেট্রো রেলের ক্ষতি দেখে কান্নায় ভেঙে পড়লেন শেখ হাসিনা
বাংলাদেশে দীর্ঘদিন ধরে কোটা পদ্ধতি নিয়ে অসন্তোষ ছিল। ১৯৮৫ সালে কোটা পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনা হলেও তা যথেষ্ট ছিল না। ২০১৮ সালে বড় আকারে কোটা বিরোধী আন্দোলন হয়েছিল।
বর্তমান আন্দোলনের মূল দাবি ছিল বৈষম্য দূর করা। আন্দোলনকারীরা স্লোগান দিয়েছিল:
– “তুমি কে আমি কে – রাজাকার, রাজাকার”
– “কে বলেছে কে বলেছে – সরকার সরকার”
– “চাইতে গেলাম অধিকার- হয়ে গেলাম রাজাকার”
– “কোটা নয় মেধা- মেধা মেধা”
‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর কোনও একক মুখপাত্র বা নেতৃত্ব নেই। ৬৫ সদস্যের একটি সমন্বয় কমিটি গঠন করা হয়েছে। ঢাকা ও ঢাকার বাইরের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে এই আন্দোলনের ২৩ জন সমন্বয়ক রয়েছেন।
– ২০১৮ সালের কোটা বিরোধী আন্দোলনের অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা
– বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের সদস্যরা
– গণতান্ত্রিক ছাত্র শক্তির সদস্যরা
– বাম ছাত্র সংগঠনের সদস্যরা
– ছাত্রলীগের কিছু সদস্য
শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে যাওয়ার আগে বলেছিলেন, “রক্তপাত এড়ানোর সুযোগ” দিতে চান। তিনি আরও বলেছিলেন, “দুর্নীতি দীর্ঘদিনের সমস্যা, এই অপরিচ্ছন্নতা অবশ্যই পরিষ্কার করতে হবে”।
যুক্তরাজ্য জানিয়েছে, “বাংলাদেশে গণতন্ত্র রক্ষায় দ্রুত পদক্ষেপ প্রয়োজন”। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরও এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
বাংলাদেশের ইতিহাসে এই ঘটনা একটি কলঙ্কিত অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত হবে। গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নামে সরকারি সম্পত্তি লুটপাট ও ধ্বংস করা কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়। এই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা যাতে না ঘটে সেদিকে সকলকে সচেতন থাকতে হবে। একইসঙ্গে জনগণের ন্যায্য দাবি-দাওয়া শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক উপায়ে সমাধানের পথ খুঁজতে হবে।