Cultural significance of wearing gold jewellery: হিন্দু ধর্মে সোনার গয়না পরার একটি বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে। তবে কোমরের নিচে সোনার গয়না পরা নিষিদ্ধ। বিশেষ করে পায়ে সোনার গয়না পরা হয় না। এর পিছনে কিছু ধর্মীয় ও বৈজ্ঞানিক কারণ রয়েছে যা অনেকেই জানেন না।
পায়ে সোনার গয়না পরা নিষিদ্ধ কেন?
হিন্দু ধর্মে বিশ্বাস করা হয় যে সোনা লক্ষ্মী দেবীর প্রতীক। তাই পায়ে সোনার গয়না পরা হলে তা লক্ষ্মী দেবীর অপমান হিসেবে বিবেচিত হয়। এছাড়াও এর পিছনে কিছু বৈজ্ঞানিক কারণও রয়েছে:
বৈজ্ঞানিক কারণ
- সোনার গয়না শরীরকে গরম রাখে, অন্যদিকে রূপার গয়না শরীরকে ঠান্ডা রাখে। তাই কোমরের উপরে সোনা এবং নিচে রূপা পরলে শরীরের তাপমাত্রা ভারসাম্য বজায় থাকে।
- রূপার অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল গুণ সংক্রমণ প্রতিরোধ করে এবং ক্ষত নিরাময়ে সাহায্য করে।
- পৃথিবীর শক্তির সাথে রূপা ভালভাবে প্রতিক্রিয়া করে, অন্যদিকে সোনা শরীরের শক্তি ও অরার সাথে ভাল প্রতিক্রিয়া করে।
ধর্মীয় কারণ
হিন্দু ধর্মে বিশ্বাস করা হয় যে:
- সোনা লক্ষ্মী দেবীর প্রতীক, তাই পায়ে পরা অসম্মানজনক।
- শরীরের উপরের অংশে ইতিবাচক ও দৈবী কম্পন পাওয়ার জন্য সোনার গয়না পরা হয়।
- পায়ে সোনা পরলে শরীর নেতিবাচকভাবে চার্জ হয় এবং মানসিক ভারসাম্য নষ্ট হতে পারে
কাপড়ের গয়নার জনপ্রিয়তা বাড়ছে: ফ্যাশন শিল্পে নতুন যুগের সূচনা।
রূপার পায়ের গয়নার গুরুত্ব
হিন্দু ধর্মে পায়ে রূপার গয়না পরার বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে:
- রূপার নূপুর (পায়ের গয়না) পরলে শরীরের ইতিবাচক শক্তি প্রবাহ বজায় থাকে।
- এটি শরীরকে শক্তিশালী ও দৈবী অনুভূতি দেয়।
- রূপার অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল গুণ সংক্রমণ প্রতিরোধ করে এবং শরীরের শক্তি বাড়ায়।
- এটি মানসিক ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।
সোনার গয়নার ঐতিহাসিক গুরুত্ব
ভারতীয় সংস্কৃতিতে সোনার গয়নার একটি বিশেষ স্থান রয়েছে:
- প্রাচীন কাল থেকেই ভারতে সোনার গয়না ধন ও মর্যাদার প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হয়েছে।
- বিয়ে ও অন্যান্য বিশেষ অনুষ্ঠানে সোনার গয়না উপহার দেওয়ার প্রথা রয়েছে।
- ভারতীয় উৎসবগুলিতে সোনার গয়না পরার একটি বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে।
- সোনার গয়না শুধু সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে না, একই সাথে জীবনযাত্রার মানেরও প্রতিনিধিত্ব করে।
পোখরাজ পরুন এই আঙুলে, বাড়বে সৌভাগ্য-সম্পদ!
সোনার গয়নার চাহিদা
ভারত ও চীন বিশ্বে সোনার গয়নার সর্বোচ্চ চাহিদা সম্পন্ন দুটি দেশ:
- ২০২১ সালে ভারতে ৬১১ টন সোনার গয়নার চাহিদা ছিল, যা চীনের (৬৭৩ টন) পরেই দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।
- ভারতে বিয়ের গয়নাই সোনার গয়নার বাজারের ৫০-৫৫% দখল করে রেখেছে।
- ভারতে প্রতি বছর আনুমানিক ১১-১৩ মিলিয়ন বিয়ে হয়, যা সোনার গয়নার চাহিদা বাড়িয়ে তোলে।
- সাধারণ সোনার গয়না ভারতীয় বাজারের ৮০-৮৫% দখল করে রেখেছে।
পায়ে সোনার গয়না না পরার পিছনে ধর্মীয় ও বৈজ্ঞানিক উভয় কারণই রয়েছে। এটি শুধু একটি প্রথা নয়, বরং শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। তবে সোনার গয়না ভারতীয় সংস্কৃতির একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে রয়ে গেছে। বিয়ে ও উৎসবগুলিতে সোনার গয়নার চাহিদা এখনও অপরিবর্তিত রয়েছে। তবে আধুনিক যুগে এর ডিজাইন ও ব্যবহারে কিছুটা পরিবর্তন এসেছে। যাই হোক, পায়ে সোনার গয়না না পরার রীতি এখনও বজায় রয়েছে, যা প্রাচীন ঐতিহ্য ও বিজ্ঞানের সমন্বয়ের একটি উদাহরণ।