কলকাতায় সোনার দাম হঠাৎ লাফিয়ে উঠল – জেনে নিন আজকের Gold Rate in Kolkata

Gold Price in Kolkata October 28,2024: আজ ২৯ অক্টোবর ২০২৪ তারিখে কলকাতায় সোনার দাম হঠাৎ করে বেড়ে গেছে। ২৪ ক্যারাট সোনার দাম প্রতি ১০ গ্রামে ৮৩,৭৬২ টাকা হয়েছে, যা গতকালের…

Srijita Chattopadhay

 

Gold Price in Kolkata October 28,2024: আজ ২৯ অক্টোবর ২০২৪ তারিখে কলকাতায় সোনার দাম হঠাৎ করে বেড়ে গেছে। ২৪ ক্যারাট সোনার দাম প্রতি ১০ গ্রামে ৮৩,৭৬২ টাকা হয়েছে, যা গতকালের তুলনায় ১,৫০০ টাকা বেশি। ২২ ক্যারাট সোনার দামও বেড়ে ৭৭,১৬৭ টাকা হয়েছে প্রতি ১০ গ্রামে।

এই হঠাৎ মূল্যবৃদ্ধির পিছনে বেশ কিছু কারণ রয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে ডলারের তুলনায় সোনার দাম বেড়েছে। পাশাপাশি মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং বৈশ্বিক অর্থনীতির অনিশ্চয়তার কারণে সোনার চাহিদা বেড়েছে। ভারতীয় টাকার অবমূল্যায়নও সোনার দাম বাড়ার একটি কারণ।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, আগামী কয়েক সপ্তাহে সোনার দাম আরও বাড়তে পারে। কারণ দীপাবলি উপলক্ষে সোনার চাহিদা বাড়বে। তবে দীর্ঘমেয়াদে দাম স্থিতিশীল হতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।

গত এক বছরে কলকাতায় সোনার দাম প্রায় ২০% বেড়েছে। ২০২৩ সালের অক্টোবরে ২৪ ক্যারাট সোনার দাম ছিল প্রতি ১০ গ্রামে ৬৯,৫০০ টাকা। এক বছরে তা বেড়ে ৮৩,৭৬২ টাকা হয়েছে। এই ধারা চলতে থাকলে আগামী বছর সোনার দাম ৯০,০০০ টাকা ছাড়াতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।

কলকাতায় সোনার দাম হুড়মুড় করে কমল – 28 অক্টোবর 2024-এ জেনে নিন নতুন রেট

কলকাতার সোনার বাজারে এই মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। অনেক বিনিয়োগকারী মনে করছেন এটা সোনায় বিনিয়োগের সুযোগ। অন্যদিকে সাধারণ ক্রেতারা চিন্তিত, কারণ আসন্ন শারদীয় উৎসবে সোনার গহনা কেনা তাদের জন্য কঠিন হয়ে পড়বে।

স্থানীয় জুয়েলারিগুলো জানিয়েছে, গত কয়েকদিনে সোনার বিক্রি কমেছে। তবে তারা আশা করছে দীপাবলির আগে বিক্রি বাড়বে। অনেক দোকান ছাড় দেওয়ার কথা ভাবছে যাতে ক্রেতাদের আকর্ষণ করা যায়।

বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, যারা দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগের জন্য সোনা কিনতে চান, তাদের জন্য এটা ভালো সময়। কারণ আগামী বছরগুলোতে সোনার দাম আরও বাড়তে পারে। তবে স্বল্পমেয়াদি লাভের জন্য এখন সোনা কেনা ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।

কলকাতার বাসিন্দাদের জন্য পরামর্শ হল, সোনা কেনার আগে বিভিন্ন দোকানের দাম তুলনা করে দেখা। কারণ একই মানের সোনার দাম বিভিন্ন দোকানে আলাদা হতে পারে। পাশাপাশি সোনার বিশুদ্ধতা যাচাই করে নেওয়া জরুরি।

সরকারি হলমার্কিং সার্টিফিকেট ছাড়া সোনা কেনা থেকে বিরত থাকা উচিত। এছাড়া বিশ্বস্ত ও পরিচিত জুয়েলারি থেকে কেনাকাটা করা নিরাপদ। অনলাইনে সোনা কেনার ক্ষেত্রে অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করা প্রয়োজন।

বর্তমান পরিস্থিতিতে সোনার বিকল্প হিসেবে অনেকে সিলভার বা রূপায় বিনিয়োগ করছেন। কলকাতায় রূপার দামও বেড়েছে, তবে সোনার তুলনায় কম। প্রতি কেজি রূপার দাম এখন ৯৭,২২০ টাকা, যা গত বছরের তুলনায় প্রায় ১৫% বেশি।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সোনা ও রূপা উভয়ই দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগের জন্য ভালো বিকল্প। তবে ছোট বিনিয়োগকারীদের জন্য রূপা কিছুটা সুবিধাজনক, কারণ এর দাম তুলনামূলকভাবে কম।

কলকাতার সোনার বাজারে এই মূল্যবৃদ্ধি শুধু স্থানীয় নয়, বৈশ্বিক অর্থনীতির প্রভাব প্রতিফলিত করছে। আন্তর্জাতিক বাজারে সোনার দাম বেড়েছে মূলত তিনটি কারণে – মার্কিন ডলারের দুর্বলতা, মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং বৈশ্বিক মুদ্রাস্ফীতির আশঙ্কা।

পায়ে সোনার গয়না পরা নিষিদ্ধ কেন? জেনে নিন এর পিছনের অজানা রহস্য!

গত এক মাসে আন্তর্জাতিক বাজারে সোনার দাম প্রতি আউন্সে ১০০ ডলার বেড়েছে। বর্তমানে প্রতি আউন্স সোনার দাম ২,০০০ ডলারের কাছাকাছি। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, আগামী কয়েক মাসে এই দাম ২,১০০ ডলার ছাড়াতে পারে।

ভারতীয় অর্থনীতির দিক থেকে দেখলে, রুপির অবমূল্যায়ন সোনার দাম বাড়ার অন্যতম কারণ। গত এক বছরে ডলারের তুলনায় রুপির মান প্রায় ৫% কমেছে। এর ফলে আমদানি করা সোনার দাম বেড়েছে।

কলকাতার সোনার বাজারে এই মূল্যবৃদ্ধি শহরের অর্থনীতিতে নানাভাবে প্রভাব ফেলছে। একদিকে জুয়েলারি ব্যবসায়ীরা চিন্তিত, অন্যদিকে বিনিয়োগকারীরা উৎসাহিত। সাধারণ মানুষের জন্য এটা একটা চ্যালেঞ্জ, কারণ সোনার গহনা কেনা তাদের জন্য ব্যয়বহুল হয়ে উঠছে।

তবে দীর্ঘমেয়াদে এই মূল্যবৃদ্ধি কলকাতার অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক হতে পারে। কারণ সোনার মূল্য বৃদ্ধি সাধারণত মুদ্রাস্ফীতি থেকে রক্ষা করে এবং অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার সময় স্থিতিশীলতা আনে।

সামগ্রিকভাবে, কলকাতায় সোনার দাম বৃদ্ধি একটি জটিল অর্থনৈতিক ঘটনা। এর প্রভাব শুধু স্থানীয় নয়, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়েও পড়বে। আগামী দিনগুলোতে এই ধারা কীভাবে এগোয় তা লক্ষ্য করার বিষয়। তবে বিনিয়োগকারী ও ক্রেতাদের জন্য সতর্কতার সাথে সিদ্ধান্ত নেওয়া জরুরি।

 

About Author
Srijita Chattopadhay

সৃজিতা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় স্নাতক। তিনি একজন প্রতিশ্রুতিশীল লেখক এবং সাংবাদিক, যিনি তার লেখা দ্বারা বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির সমৃদ্ধি তুলে ধরতে সদা উদ্যমী। সৃজিতার লেখার ধারা মূলত সাহিত্য, সমাজ এবং সংস্কৃতির বিভিন্ন দিককে ঘিরে আবর্তিত হয়, যেখানে তিনি তার গভীর পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা ও বিশ্লেষণী দক্ষতার পরিচয় দেন। তাঁর নিবন্ধ ও প্রতিবেদনগুলি পাঠকদের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে, যা তার বস্তুনিষ্ঠতা ও সংবেদনশীলতার পরিচয় বহন করে। সৃজিতা তার কর্মজীবনে ক্রমাগত নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে বদ্ধপরিকর, যা তাকে বাংলা সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যতের দিকে নিয়ে যাচ্ছে।