কলকাতায় সোনার দাম আকাশছোঁয়া! Gold Rate in Kolkata পৌঁছল নতুন রেকর্ডে

Current gold price Kolkata November 2 2024: ২ রা নভেম্বর কলকাতায় সোনার দাম নতুন রেকর্ড স্পর্শ করেছে। ২৪ ক্যারাট সোনার দাম প্রতি ১০ গ্রামে পৌঁছেছে ৮৩,৭৬২ টাকায়, যা গত কয়েক…

Avatar

 

Current gold price Kolkata November 2 2024: ২ রা নভেম্বর কলকাতায় সোনার দাম নতুন রেকর্ড স্পর্শ করেছে। ২৪ ক্যারাট সোনার দাম প্রতি ১০ গ্রামে পৌঁছেছে ৮৩,৭৬২ টাকায়, যা গত কয়েক মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। ২২ ক্যারাট সোনার দামও বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৭,১৬৭ টাকায়। এই মূল্যবৃদ্ধির পিছনে রয়েছে বৈশ্বিক বাজারে সোনার দাম বাড়া এবং রুপির অবমূল্যায়ন।গত কয়েক মাস ধরেই সোনার দাম ক্রমাগত বাড়ছিল, কিন্তু নভেম্বরের শুরুতেই তা নতুন উচ্চতায় পৌঁছে গেল।

অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে ২৪ ক্যারাট সোনার দাম ছিল প্রতি ১০ গ্রামে ৮৩,০৩৩ টাকা, যা মাত্র কয়েকদিনের মধ্যেই ৭২৯ টাকা বেড়ে গেল। একইভাবে ২২ ক্যারাট সোনার দামও ৬৭১ টাকা বেড়েছে।বাজার বিশ্লেষকদের মতে, আন্তর্জাতিক বাজারে সোনার দাম বাড়ার প্রভাব পড়েছে ভারতীয় বাজারেও। বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাজারে সোনার দাম প্রতি আউন্সে ২,৬৭৮ ডলার, যা গত কয়েক বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।

কলকাতায় সোনার দাম হঠাৎ লাফিয়ে উঠল – জেনে নিন আজকের Gold Rate in Kolkata

এছাড়া ডলারের তুলনায় রুপির অবমূল্যায়নও সোনার দাম বাড়ার অন্যতম কারণ।শুধু কলকাতায় নয়, সারা ভারতেই সোনার দাম বেড়েছে। মুম্বাইয়ে ২৪ ক্যারাট সোনার দাম পৌঁছেছে ৮৪,৮৩৩ টাকায়, দিল্লিতে ৮৫,০৮১ টাকায়, চেন্নাইয়ে ৮১,২০৬ টাকায় এবং বেঙ্গালুরুতে ৮১,০৪১ টাকায়। এই মূল্যবৃদ্ধি শুধু ২৪ ক্যারাট সোনার ক্ষেত্রেই নয়, ১৮ ক্যারাট এবং ১৪ ক্যারাট সোনার দামও যথাক্রমে ৬৪,১৩১ টাকা এবং ৪৯,৮৭৭ টাকায় পৌঁছেছে।বাজার বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, আগামী দিনগুলোতে সোনার দাম আরও বাড়তে পারে।
জেপি মরগান রিসার্চের অনুমান অনুযায়ী, ২০২৪ সালের শেষ নাগাদ সোনার দাম প্রতি আউন্সে ২,৫০০ ডলার পর্যন্ত যেতে পারে। এর পিছনে কয়েকটি কারণ রয়েছে:
১. ফেডারেল রিজার্ভের সুদের হার কমানোর সম্ভাবনা: আমেরিকার কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ ২০২৪ সালের নভেম্বর নাগাদ সুদের হার কমাতে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে। এটি সোনার দাম বাড়ার অনুকূল পরিস্থিতি তৈরি করবে।
২. ভূ-রাজনৈতিক অস্থিরতা: বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে চলমান রাজনৈতিক উত্তেজনা এবং যুদ্ধের পরিস্থিতি সোনার চাহিদা বাড়াতে পারে। সোনা সাধারণত নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে বিবেচিত হয়।
৩. কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর সোনা ক্রয়: ২০২৩ সালে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক মোট ১,০৩৭ টন সোনা কিনেছে। ২০২৪ সালেও এই ধারা অব্যাহত থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে।
৪. মুদ্রাস্ফীতির বিরুদ্ধে সুরক্ষা: উচ্চ মুদ্রাস্ফীতির পরিপ্রেক্ষিতে অনেক বিনিয়োগকারী সোনাকে নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে বেছে নিচ্ছেন।তবে এই মূল্যবৃদ্ধি সাধারণ মানুষের জন্য চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বিশেষ করে আসন্ন শারদীয় উৎসবের মরসুমে সোনার গহনা কেনার পরিকল্পনা করা মানুষের জন্য এটি একটি বড় চ্যালেঞ্জ। অনেকেই এখন কম ক্যারেটের সোনা বা বিকল্প ধাতুর দিকে ঝুঁকছেন।

স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, গত কয়েক মাসে সোনার বিক্রি কমেছে। তবে উৎসবের মরসুমে চাহিদা বাড়ার আশা করছেন তারা। অনেক দোকান এখন কিস্তিতে গহনা কেনার সুযোগ দিচ্ছে, যাতে গ্রাহকরা তাদের বাজেটের মধ্যে থেকে গহনা কিনতে পারেন।বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিচ্ছেন, এই মুহূর্তে সোনা কেনার আগে ভালোভাবে চিন্তা করা উচিত। যদি কেউ দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগের জন্য সোনা কিনতে চান, তাহলে ধীরে ধীরে কিনতে পারেন। কিন্তু স্বল্পমেয়াদী লাভের জন্য এই মুহূর্তে সোনা কেনা বুদ্ধিমানের কাজ নাও হতে পারে।সরকারি নীতিও সোনার দামের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। ভারত সরকার সম্প্রতি সোনার আমদানি শুল্ক ১৫% থেকে কমিয়ে ১২.৫% করেছে। এর ফলে আগামী দিনে সোনার দাম কিছুটা কমতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।তবে দীর্ঘমেয়াদে সোনার দাম আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

কলকাতায় সোনার দাম আকাশছোঁয়া! ১লা নভেম্বর Gold Rate-এ নতুন রেকর্ড

জেপি মরগান রিসার্চের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০২৫ সালে সোনার দাম প্রতি আউন্সে ২,৬০০ ডলার পর্যন্ত যেতে পারে। এর অর্থ হল, আগামী বছরগুলোতে ভারতীয় বাজারেও সোনার দাম আরও বাড়তে পারে।সামগ্রিকভাবে, কলকাতাসহ সারা ভারতে সোনার দাম এখন ঐতিহাসিক উচ্চতায় পৌঁছেছে। এই পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষ, বিনিয়োগকারী এবং স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের সতর্কতার সাথে পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। আগামী দিনগুলোতে বৈশ্বিক অর্থনীতির গতিপ্রকৃতি, মুদ্রাস্ফীতির হার এবং ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতি সোনার দামকে প্রভাবিত করতে পারে। তাই নিয়মিত বাজার পর্যবেক্ষণ করে সিদ্ধান্ত নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ হবে।
About Author
Avatar

আমাদের স্টাফ রিপোর্টারগণ সর্বদা নিষ্ঠার সাথে কাজ করে যাচ্ছেন যাতে আপনি বিশ্বের যেকোনো প্রান্তের সর্বশেষ ও গুরুত্বপূর্ণ খবর পেতে পারেন। তাঁদের অক্লান্ত পরিশ্রম ও প্রতিশ্রুতি আমাদের ওয়েবসাইটকে একটি বিশ্বস্ত তথ্যের উৎস হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।তারা নিরপেক্ষ ও বস্তুনিষ্ঠ রিপোর্টিংয়ে বিশ্বাসী, দ্রুত পরিবর্তনশীল পরিস্থিতিতে তাৎক্ষণিক প্রতিবেদন তৈরিতে সক্ষম