Google Project Jarvis overview: গুগল একটি নতুন AI প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করছে যা আপনার ওয়েব ব্রাউজার নিয়ন্ত্রণ করে বিভিন্ন কাজ সম্পন্ন করতে পারবে। এই প্রযুক্তির নাম দেওয়া হয়েছে ‘Project Jarvis’। এটি ব্যবহারকারীদের দৈনন্দিন অনলাইন কাজগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে সম্পন্ন করতে সাহায্য করবে।’Project Jarvis’ মূলত একটি AI এজেন্ট যা ওয়েব ব্রাউজারের মাধ্যমে কাজ করবে। এটি ব্যবহারকারীর নির্দেশ অনুযায়ী বিভিন্ন ওয়েবসাইট ব্রাউজ করতে পারবে, ফর্ম পূরণ করতে পারবে, বাটনে ক্লিক করতে পারবে এবং অন্যান্য জটিল কাজ সম্পন্ন করতে পারবে।
উদাহরণস্বরূপ, আপনি এই AI-কে বলতে পারবেন আপনার জন্য একটি ফ্লাইট বুক করতে বা অনলাইন শপিং করতে। AI তখন স্বয়ংক্রিয়ভাবে সেই কাজটি সম্পন্ন করবে।গুগল এই প্রযুক্তিটি প্রথমে তাদের নিজস্ব ব্রাউজার Chrome-এর জন্য তৈরি করছে। তবে ভবিষ্যতে অন্যান্য ব্রাউজারেও এটি ব্যবহার করা যেতে পারে। প্রযুক্তিটি গুগলের Gemini ল্যাঙ্গুয়েজ মডেলের একটি উন্নত সংস্করণ ব্যবহার করে কাজ করবে বলে জানা গেছে।’Project Jarvis’ কীভাবে কাজ করবে তা নিয়ে বিস্তারিত তথ্য এখনও প্রকাশ করা হয়নি। তবে সূত্র অনুযায়ী, এই AI এজেন্ট ব্যবহারকারীর কম্পিউটার স্ক্রিনের স্ক্রিনশট নিয়ে সেগুলো বিশ্লেষণ করবে। তারপর সেই তথ্যের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় কাজগুলো সম্পন্ন করবে। উদাহরণস্বরূপ, কোনো বাটনে ক্লিক করা বা টেক্সট ফিল্ডে লেখা।এই ধরনের AI এজেন্ট তৈরির পিছনে মূল উদ্দেশ্য হলো ব্যবহারকারীদের সময় ও শ্রম বাঁচানো।
রেশন কার্ডের e-KYC সময়সীমা ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে – জানুন
বর্তমানে অনেক অনলাইন কাজই অনেক ধাপ সম্পন্ন করতে হয়। যেমন একটি ফ্লাইট বুক করতে গেলে বিভিন্ন ওয়েবসাইট ঘুরে দাম তুলনা করতে হয়, তারপর সেরা অপশনটি বেছে নিতে হয়, ফর্ম পূরণ করতে হয় ইত্যাদি। ‘Project Jarvis’ এর মতো একটি AI এজেন্ট এই সমস্ত কাজ নিজে থেকেই করে ফেলতে পারবে।তবে এই ধরনের প্রযুক্তি নিয়ে কিছু উদ্বেগও রয়েছে। প্রথমত, গোপনীয়তা ও নিরাপত্তার বিষয়টি। যেহেতু AI এজেন্ট আপনার কম্পিউটার নিয়ন্ত্রণ করবে, তাই এটি আপনার ব্যক্তিগত তথ্যে প্রবেশ করতে পারে। দ্বিতীয়ত, AI এর সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। AI কতটা নির্ভুলভাবে মানুষের ইচ্ছা বুঝতে পারবে তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।গুগল ছাড়াও অন্যান্য প্রযুক্তি কোম্পানিও এই ধরনের AI এজেন্ট নিয়ে কাজ করছে। মাইক্রোসফ্টের OpenAI এবং Anthropic নামক স্টার্টআপ কোম্পানি ইতিমধ্যেই এই ধরনের প্রযুক্তি প্রদর্শন করেছে।
তবে গুগলের ‘Project Jarvis’ হবে সবচেয়ে উন্নত ও ব্যাপক প্রযুক্তি বলে ধারণা করা হচ্ছে।সূত্র অনুযায়ী, গুগল এই বছরের ডিসেম্বর মাসে ‘Project Jarvis’ এর প্রথম ডেমো প্রদর্শন করতে পারে। তবে প্রথমে এটি শুধুমাত্র সীমিত সংখ্যক পরীক্ষামূলক ব্যবহারকারীর কাছে উপলব্ধ করা হবে। কারণ এখনও AI এজেন্টটি ধীরগতিতে কাজ করছে। প্রতিটি কাজের জন্য AI-কে কয়েক সেকেন্ড সময় নিতে হচ্ছে।’Project Jarvis’ এর মতো AI এজেন্ট আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ব্যাপক পরিবর্তন আনতে পারে। এটি আমাদের অনেক সময় বাঁচাতে পারে এবং জটিল কাজগুলো সহজ করে তুলতে পারে। তবে এর পাশাপাশি এটি নতুন ধরনের চ্যালেঞ্জও তৈরি করবে। আমরা কতটা AI-এর উপর নির্ভর করব? আমাদের ব্যক্তিগত তথ্য কতটা নিরাপদ থাকবে? এই সব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে হবে।বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, AI এজেন্টের ব্যবহার ধীরে ধীরে বাড়বে।
প্রথম দিকে এটি সাধারণ কাজগুলোতেই সীমাবদ্ধ থাকবে। যেমন ইমেইল পড়া, ক্যালেন্ডার ম্যানেজ করা ইত্যাদি। ধীরে ধীরে এর ক্ষমতা বাড়ানো হবে। এর ফলে ব্যবহারকারীরাও AI-এর সাথে অভ্যস্ত হতে পারবেন।’Project Jarvis’ এর মতো প্রযুক্তি শুধু ব্যক্তিগত ব্যবহারকারীদের জন্যই নয়, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্যও খুবই উপযোগী হতে পারে। এটি অফিসের রুটিন কাজগুলো স্বয়ংক্রিয় করতে পারে, যার ফলে কর্মীরা আরও গুরুত্বপূর্ণ কাজে মনোযোগ দিতে পারবেন। তবে এক্ষেত্রেও নিরাপত্তার বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।গুগল এখনও ‘Project Jarvis’ সম্পর্কে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু ঘোষণা করেনি। তবে কোম্পানির একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, তারা AI প্রযুক্তির উন্নয়নে নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, “আমরা সর্বদা নতুন প্রযুক্তি নিয়ে গবেষণা করছি যা মানুষের জীবনকে আরও সহজ করে তুলতে পারে। তবে আমরা কোনো প্রযুক্তি বাজারে ছাড়ার আগে তার নিরাপত্তা ও কার্যকারিতা সম্পর্কে নিশ্চিত হই।”
AI দিয়ে তৈরি ছবি চিনতে পারবেন এই ৫টি কৌশলে!
‘Project Jarvis’ এর মতো AI এজেন্ট নিঃসন্দেহে ভবিষ্যতের প্রযুক্তি। এটি আমাদের জীবনযাত্রাকে অনেক সহজ করে তুলতে পারে। তবে এর পাশাপাশি এটি নৈতিক ও আইনি জটিলতাও তৈরি করবে। আমাদের এই প্রযুক্তির সুবিধা নেওয়ার পাশাপাশি এর সম্ভাব্য ঝুঁকিগুলোও বিবেচনা করতে হবে।সামগ্রিকভাবে, ‘Project Jarvis’ প্রযুক্তি জগতে একটি উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি। এটি প্রমাণ করে যে AI ক্রমশই আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠছে। আগামী দিনগুলোতে এই প্রযুক্তির বিকাশ ও প্রভাব লক্ষ্য করার মতো।
মন্তব্য করুন