“ভারতের টেলিকম সেক্টরে এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। দেশের সরকারি টেলিকম সংস্থা ভারত সঞ্চার নিগম লিমিটেড (BSNL)-কে পুনরুজ্জীবিত করতে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে বরাদ্দ করা হয়েছে বিপুল পরিমাণ অর্থ। অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ ঘোষণা করেছেন যে BSNL-এর জন্য ৮২,৯১৬ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে, যা টেলিকম খাতের জন্য মোট বরাদ্দ ১.২৮ লক্ষ কোটি টাকার সিংহভাগ।
BSNL-এর জন্য বরাদ্দকৃত এই বিপুল অর্থ মূলত দুটি প্রধান ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হবে:
এই পদক্ষেপের মাধ্যমে সরকার BSNL-কে বেসরকারি টেলিকম কোম্পানিগুলির সাথে প্রতিযোগিতায় সক্ষম করে তুলতে চায়। বর্তমানে জিও, এয়ারটেল এবং ভোডাফোন আইডিয়ার মতো বেসরকারি সংস্থাগুলি ৫জি পরিষেবা চালু করেছে, অন্যদিকে BSNL এখনও ৪জি পরিষেবা শুরু করতে পারেনি।
Modi 3.0 এর প্রথম বাজেট, ভারতের অর্থনীতির নতুন দিগন্ত!
গত কয়েক বছরে BSNL-এর অবস্থা ক্রমশ খারাপের দিকে গিয়েছে। ২০২৪ সালের মার্চ মাসে BSNL-এর গ্রাহক সংখ্যা ছিল মাত্র ৮৮.০৬ মিলিয়ন, যা আগের বছরের তুলনায় ২.৩ মিলিয়ন কম। ৪জি পরিষেবার অভাবে BSNL ২০২৪ অর্থবছরে ১৮ মিলিয়ন গ্রাহক হারিয়েছে।
বিবরণ | পরিমাণ |
---|---|
BSNL-এর জন্য বরাদ্দ | ৮২,৯১৬ কোটি টাকা |
টেলিকম খাতের মোট বরাদ্দ | ১.২৮ লক্ষ কোটি টাকা |
BSNL-এর বর্তমান গ্রাহক সংখ্যা | ৮৮.০৬ মিলিয়ন |
২০২৪ অর্থবছরে হারানো গ্রাহক | ১৮ মিলিয়ন |
BSNL-কে পুনরুজ্জীবিত করতে সরকার ইতিমধ্যে কয়েকটি প্যাকেজ ঘোষণা করেছে:
এই তৃতীয় প্যাকেজে BSNL-এর জন্য ৪জি-৫জি স্পেক্ট্রাম বরাদ্দ করা হয়েছে।
মোবাইল রিচার্জে বিরাট ধাক্কা! কেন বাড়ল দাম? ভবিষ্যতে আরও বাড়বে?
BSNL তার আর্থিক অবস্থা উন্নত করার লক্ষ্যে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে:
BSNL এই বছর তার ৪জি পরিষেবা চালু করার লক্ষ্য নিয়েছে। এর জন্য ভারতীয় প্রযুক্তিতে তৈরি ৪জি স্ট্যাক ব্যবহার করা হবে। নতুন টেলিকম মন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া জানিয়েছেন, “আমরা ১ লক্ষ RAN (রেডিও অ্যাক্সেস নেটওয়ার্ক) স্থাপনের লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছি। তেজস, BSNL, TCS, CDoT সহ সকল অংশীদার মিলে একটি PMU (পারফরম্যান্স মনিটরিং ইউনিট) গঠন করা হচ্ছে। এই PMU মাসিক বা সাপ্তাহিক নয়, দৈনিক লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করবে।”
BSNL-এর সামনে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে:
এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সরকার বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে:
BSNL-কে পুনরুজ্জীবিত করার জন্য সরকারের এই বিপুল অর্থ বরাদ্দ নিঃসন্দেহে একটি বড় পদক্ষেপ। তবে এর সফলতা নির্ভর করবে কীভাবে এই অর্থ ব্যবহার করা হয় তার উপর। BSNL-এর ৪জি পরিষেবা চালু করা এবং ভবিষ্যতে ৫জি-তে উত্তরণের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া জরুরি। পাশাপাশি সংস্থার আর্থিক স্থিতিশীলতা অর্জন করাও গুরুত্বপূর্ণ। সরকারের এই উদ্যোগ সফল হলে BSNL আবার দেশের টেলিকম সেক্টরে একটি শক্তিশালী প্রতিযোগী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে পারে, যা ভারতের ডিজিটাল অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।