Impact of drinking cold water on health: গরমের দিনে অনেকেই ঠান্ডা জল পান করে তৃপ্তি পান। কিন্তু সাবধান! অতিরিক্ত ঠান্ডা জল পান করলে শরীরে নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি দীর্ঘমেয়াদী স্বাস্থ্য সমস্যার কারণ হতে পারে।
অতিরিক্ত ঠান্ডা জল পান করলে শরীরে যে সমস্যাগুলি দেখা দিতে পারে:
অতিরিক্ত ঠান্ডা জল পান করলে পাকস্থলীতে সংকোচন হয়। এর ফলে খাবার হজম প্রক্রিয়া ধীর হয়ে যায়। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস-এ প্রকাশিত একটি খবর অনুসারে, অতিরিক্ত ঠান্ডা জল খাওয়া শরীরের পরিপাকতন্ত্রকে অনেকাংশে ধাক্কা দিতে পারে।
বরফ ঠান্ডা জল পান করলে গলার রক্তনালীগুলি সঙ্কুচিত হতে পারে। এর ফলে গলা এলাকায় রক্ত প্রবাহ ব্যাহত বা সামান্য হ্রাস পেতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে কোনও সংক্রমণ হলে নিরাময় প্রক্রিয়ায় সমস্যা হতে পারে।
গরমে পেট ঠান্ডা রাখার ৭টি কার্যকরী ঘরোয়া উপায়
অনেক সময় অতিরিক্ত ঠান্ডা জল পান করলে মাথা ব্যথা হয়। আসলে ঠান্ডা জল পান করলে মাথার স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং তারা ঠিকমতো কাজ করতে পারে না। একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ৭.৬% অংশগ্রহণকারী ১৫০ মিলিলিটার বরফ ঠান্ডা জল পান করার পর মাথাব্যথায় ভুগেছেন।
অতিরিক্ত ঠান্ডা জল খেলে শরীরে মেটাবলিজম ধীর হয়ে যায়। যার কারণে শরীর ঠিকমতো কাজ করতে পারে না। আসলে ঠান্ডা জল শরীরে মেদ ছাড়তে পারে না যার কারণে ক্লান্তি অনুভূত হয়।
ফ্রিজের ঠান্ডা জল পান করলেও কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। বলা হয়ে থাকে যে যিনি ইতিমধ্যেই কোষ্ঠকাঠিন্যে ভুগছেন তার ঠান্ডা জল পান করা উচিত নয়। আসলে ঠান্ডা জল পেটের মল শক্ত করে। এতে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা হয়।
আমরা জানি, ঠান্ডা জল পান করলে গলার সমস্যা হতে পারে। এতে গলায় ইনফেকশন হয় ৷ যার কারণে কফ তৈরি হতে শুরু করে। গ্রীষ্মের মরসুমে যখন প্রতিদিন ঠান্ডা জল পান করা হয়, তখন গলা জ্বালার পাশাপাশি প্রদাহের সমস্যাও তৈরি হতে পারে।
ঘন ঘন ঠান্ডা জল খেলে একেবারেই কমে না ওজন৷ আপনি যদি নিজের শরীরের বাড়তি মেদ ঝরাতে চান, তাহলে বরফ ঠান্ডা জল খাওয়া এড়িয়ে চলুন, কারণ এটি শরীরে জমে থাকা চর্বি গলাতে বাধা দেয়৷
নিয়মিত ঠান্ডা জল পান করলে সময়ের সাথে সাথে আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যেতে পারে। ঠান্ডা পানীয় রোগ প্রতিরোধ কোষগুলির গতি কমিয়ে দেয় এবং ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়াকে শরীরে আক্রমণ করা সহজ করে তোলে। এর ফলে সংক্রমণ ও অসুস্থতার ঝুঁকি বেড়ে যায়, বিশেষ করে গ্রীষ্মকালে যখন সাধারণ সর্দি-কাশির মতো ভাইরাসও সক্রিয় থাকে।
তবে ঠান্ডা জল পানের কিছু সুবিধাও রয়েছে:
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অতিরিক্ত ঠান্ডা জল পান করা থেকে বিরত থাকাই ভালো। তার বদলে স্বাভাবিক তাপমাত্রার জল পান করা উচিত। ডাঃ এস.এ. রহমান, নয়ডা ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ মেডিকাল সায়েন্সেস অ্যান্ড হসপিটাল (এনআইআইএমএস) এবং নয়ডা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (এনআইইউ)-এর জেনারেল মেডিসিনের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর বলেন:
“গরমের দিনে ঠান্ডা জল পান করলে তাৎক্ষণিক স্বস্তি পাওয়া যায় বটে, কিন্তু এর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। স্বাভাবিক তাপমাত্রার জল পান করাই সবচেয়ে ভালো।”
তিনি আরও বলেন:
“ঠান্ডা জল পান করলে রক্তনালী সংকুচিত হয়, যা হৃদরোগীদের জন্য বিশেষ ঝুঁকিপূর্ণ। এছাড়া হজমে সমস্যা, পেট ব্যথা এবং হাইড্রেশন প্রক্রিয়া ধীর হওয়ার মতো সমস্যাও দেখা দিতে পারে।”
নারকেল জলের এমন যাদু, শরীর থাকবে পুরো ফিট
অতিরিক্ত ঠান্ডা জল পান না করে সুস্থ থাকার জন্য বিশেষজ্ঞরা নিম্নলিখিত পরামর্শ দিয়েছেন:
অতিরিক্ত ঠান্ডা জল পান করা শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। এর ফলে পরিপাকতন্ত্রে সমস্যা, মাথাব্যথা, শক্তি হ্রাস, কোষ্ঠকাঠিন্য, গলা ব্যথাসহ নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই গরমের দিনেও স্বাভাবিক তাপমাত্রার জল পান করাই ভালো। পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পান করে এবং পানি সমৃদ্ধ খাবার খেয়ে শরীরকে হাইড্রেটেড রাখা জরুরি। তবে কোনো স্বাস্থ্য সমস্যা থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে জল পানের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।
মন্তব্য করুন