Historic Library: বইপ্রেমীদের জন্য ভারতের ৮টি ঐতিহাসিক লাইব্রেরি: জীবনে একবার হলেও দেখতেই হবে!

Historic Libraries of India for Booklover: ভারতের সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অন্যতম প্রতীক হল এর ঐতিহাসিক গ্রন্থাগারগুলি। এই গ্রন্থাগারগুলি শুধু বই সংরক্ষণের স্থান নয়, বরং জ্ঞান ও সভ্যতার অমূল্য ধরোহর। আসুন…

Manoshi Das

 

Historic Libraries of India for Booklover: ভারতের সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অন্যতম প্রতীক হল এর ঐতিহাসিক গ্রন্থাগারগুলি। এই গ্রন্থাগারগুলি শুধু বই সংরক্ষণের স্থান নয়, বরং জ্ঞান ও সভ্যতার অমূল্য ধরোহর। আসুন জেনে নেই ভারতের এমন ৮টি ঐতিহাসিক গ্রন্থাগার সম্পর্কে, যা প্রতিটি বইপ্রেমীর জীবনে একবার হলেও দেখা উচিত।

১. ন্যাশনাল লাইব্রেরি অফ ইন্ডিয়া, কলকাতা:

ভারতের সবচেয়ে বড় গ্রন্থাগার হিসেবে পরিচিত ন্যাশনাল লাইব্রেরি অফ ইন্ডিয়া ১৮৩৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এটি ৩০ একর জায়গা জুড়ে অবস্থিত এবং ২৬,৪১,৬১৫টি বই সহ অসংখ্য পত্রিকা, মানচিত্র ও পাণ্ডুলিপি রয়েছে এখানে। ১৯৫৩ সালের ১লা ফেব্রুয়ারি এটি সাধারণ মানুষের জন্য খুলে দেওয়া হয়। এর বিশাল সংগ্রহ ও ঐতিহাসিক গুরুত্বের কারণে এটি ভারতের সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থাগারগুলির মধ্যে একটি।

২. সরস্বতী মহল লাইব্রেরি, তাঞ্জোর:

তামিলনাড়ুর তাঞ্জোর প্রাসাদের অভ্যন্তরে অবস্থিত সরস্বতী মহল লাইব্রেরি একসময় নায়ক রাজাদের রাজকীয় গ্রন্থাগার ছিল। এটি ভারতের অন্যতম প্রাচীন গ্রন্থাগার হিসেবে পরিচিত। এখানে বিভিন্ন ভারতীয় ভাষায় লেখা দুর্লভ তালপাতার পাণ্ডুলিপির একটি অনন্য সংগ্রহ রয়েছে। ১৯১৮ সালে এটি তামিলনাড়ু রাজ্যের অধীনে আসে। ১৯৯৮ সালে এখানে কম্পিউটার স্থাপন করা হয় এবং সমস্ত পাণ্ডুলিপি মাইক্রোফিল্মে সংরক্ষণ করা হয়।

৩. রাজা রামমোহন রায় লাইব্রেরি ফাউন্ডেশন, কলকাতা:

১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠিত রাজা রামমোহন রায় লাইব্রেরি ফাউন্ডেশন ভারতের জাতীয় পাবলিক লাইব্রেরি মিশনের কেন্দ্রীয় এজেন্সি হিসেবে কাজ করে। এটি দেশের সমস্ত পাবলিক লাইব্রেরি সিস্টেমের উন্নয়ন ও সমন্বয় সাধনের দায়িত্বে রয়েছে। এর লক্ষ্য হল সারা দেশে গ্রন্থাগার ব্যবস্থার প্রসার ঘটানো এবং জনসাধারণের মধ্যে পঠন সংস্কৃতি গড়ে তোলা।

৪. কনেমারা পাবলিক লাইব্রেরি, চেন্নাই:

১৮৯৬ সালে প্রতিষ্ঠিত কনেমারা পাবলিক লাইব্রেরি ভারতের চারটি জাতীয় ডিপোজিটরি লাইব্রেরির একটি। এখানে ভারতের ইতিহাস ও ঐতিহ্য সম্পর্কিত অসংখ্য গুরুত্বপূর্ণ বই রয়েছে। এছাড়াও শিশুদের গল্পের বই থেকে শুরু করে আত্মজীবনী পর্যন্ত বিভিন্ন ধরনের বইয়ের সমৃদ্ধ সংগ্রহ রয়েছে এখানে।

৫. খুদা বক্স ওরিয়েন্টাল পাবলিক লাইব্রেরি, পাটনা:

১৮৯১ সালে প্রতিষ্ঠিত খুদা বক্স ওরিয়েন্টাল পাবলিক লাইব্রেরি বিহারের পাটনায় অবস্থিত। এটি প্রাচ্য বিদ্যা ও ইসলামিক শিক্ষার জন্য বিখ্যাত। এখানে প্রায় ২১,০০০ পাণ্ডুলিপি রয়েছে, যার মধ্যে আরবি, ফার্সি, উর্দু, পাশতো, হিন্দি ও সংস্কৃত ভাষার পাণ্ডুলিপি উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও এখানে ২,৫০,০০০ প্রিন্টেড বই রয়েছে।

৬. রাজা রামপুর রাজা লাইব্রেরি, উত্তর প্রদেশ:

উত্তর প্রদেশের রামপুরে অবস্থিত রাজা রামপুর রাজা লাইব্রেরি একটি প্রাসাদের মধ্যে অবস্থিত। এটি এশিয়ার অন্যতম বৃহত্তম গ্রন্থাগার। এখানে ইসলামিক ক্যালিগ্রাফির দুর্লভ নমুনা, ঐতিহাসিক দলিল, হাতে লেখা তালপাতার পাণ্ডুলিপি এবং লঘুচিত্র সংরক্ষিত আছে। ৩০,০০০ এরও বেশি বই সহ এটি জ্ঞান ও ইতিহাসের এক অমূল্য ভাণ্ডার।

৭. দিল্লি পাবলিক লাইব্রেরি:

১৯৫১ সালে ইউনেস্কোর একটি প্রকল্প হিসেবে ভারত সরকার দিল্লি পাবলিক লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা করে। এটি দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে ব্যস্ত পাবলিক লাইব্রেরি। এখানে হিন্দি, ইংরেজি, উর্দু, পাঞ্জাবি সহ বিভিন্ন ভারতীয় ভাষায় প্রায় ১৮ লক্ষ বই রয়েছে। প্রায় সব বিষয়ের উপর এখানে বই পাওয়া যায়।

৮. আসিয়াটিক সোসাইটি, মুম্বাই:

১৮০৪ সালে প্রতিষ্ঠিত আসিয়াটিক সোসাইটির লাইব্রেরি মুম্বাইয়ের অন্যতম প্রাচীন গ্রন্থাগার। এর স্থাপত্যশৈলী গ্রীক ও রোমান প্রভাবিত। এখানে ১৫,০০০ এরও বেশি দুর্লভ বই রয়েছে। এছাড়াও এখানে প্রাচীন পাণ্ডুলিপি, মুদ্রা, শিলালিপি ইত্যাদির একটি সমৃদ্ধ সংগ্রহ রয়েছে।এই ঐতিহাসিক গ্রন্থাগারগুলি শুধু বই সংরক্ষণের স্থান নয়, এগুলি ভারতের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রতীক।

কলকাতার ৪টি অজানা পুরনো বই বাজার: কলেজস্ট্রীটের বাইরেও রয়েছে বইপ্রেমীদের স্বর্গ!

কিন্তু দুঃখজনকভাবে, অনেক ক্ষেত্রেই এই গ্রন্থাগারগুলির যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ হচ্ছে না। অর্থের অভাব, দক্ষ কর্মীর অভাব এবং সরকারি উদাসীনতার কারণে অনেক মূল্যবান বই ও পাণ্ডুলিপি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।উদাহরণস্বরূপ, ২০১০ সালে পাঞ্জাব সরকার তাদের আর্কাইভের সমস্ত নথিপত্র ট্র্যাক্টর ট্রেলারে করে পাঞ্জাবি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবনে স্থানান্তর করে। এর ফলে অসংখ্য মূল্যবান দলিল নষ্ট হয়ে যায় এবং দশকের পর দশক ধরে সাজানো সংগ্রহ এলোমেলো হয়ে যায়।তবে আশার কথা হল, কিছু গ্রন্থাগার নিজেদের উদ্যোগে সংরক্ষণের কাজ শুরু করেছে। যেমন মুম্বাইয়ের ফোর্বস গুজরাটি সভা তাদের সংগ্রহের ডিজিটাইজেশন শুরু করেছে।

আহমেদাবাদের সাবরমতি আশ্রম লাইব্রেরি তাদের সংগ্রহকে একটি সীলকরা, তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে রেখেছে।ভারতীয় গ্রন্থাগারগুলির সমস্যা নতুন নয়। ১৮৬০-এর দশকে ব্রিটিশ ভারত সরকার দেখতে পায় যে অনেক মূল্যবান নথি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে, স্বাধীনতার পরও এই অবস্থার তেমন উন্নতি হয়নি।বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ভারত সরকারকে গ্রন্থাগারগুলির জন্য পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ করতে হবে এবং দক্ষ কর্মী নিয়োগ করতে হবে। অন্যথায় আগামী কয়েক দশকের মধ্যে ভারতীয় ইতিহাসের বিশাল রেকর্ড ধুলোয় মিশে যাবে।তবে আশার কথা হল, অনেক ছোট গ্রন্থাগার ইতিমধ্যে পরিবর্তন শুরু করেছে। যেমন পশ্চিমবঙ্গের চন্দননগরের ইনস্টিটিউট দে চন্দরনগর তাদের ১৮ শতকের ফরাসি বই ও পাণ্ডুলিপির সংগ্রহকে সংরক্ষণের জন্য বিশেষ প্রযত্ন নিচ্ছে।

এছাড়াও, কেরালার থিরুভনন্তপুরমে অবস্থিত শ্রী চিত্রা তিরুনাল গ্রন্থশালা এবং গবেষণা কেন্দ্র তাদের দুর্লভ পাণ্ডুলিপি সংগ্রহের ডিজিটাইজেশন শুরু করেছে।এই ঐতিহাসিক গ্রন্থাগারগুলি শুধু বই সংরক্ষণের স্থান নয়, এগুলি ভারতের সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রতীক। এগুলি আমাদের অতীতের সাথে সংযোগ স্থাপন করে এবং ভবিষ্যতের জন্য জ্ঞানের ভাণ্ডার হিসেবে কাজ করে। তাই এই গ্রন্থাগারগুলির সংরক্ষণ ও উন্নয়ন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই গ্রন্থাগারগুলির সংরক্ষণের জন্য কয়েকটি পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন:

১. পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ:

সরকারকে এই গ্রন্থাগারগুলির জন্য পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ করতে হবে যাতে তারা আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে সংরক্ষণের কাজ করতে পারে।

২. দক্ষ কর্মী নিয়োগ:

গ্রন্থাগার বিজ্ঞানে প্রশিক্ষিত দক্ষ কর্মী নিয়োগ করতে হবে যারা এই মূল্যবান সম্পদের যথাযথ যত্ন নিতে পারবে।

৩. ডিজিটাইজেশন:

সমস্ত দুর্লভ বই ও পাণ্ডুলিপির ডিজিটাইজেশন করতে হবে যাতে মূল কপি সংরক্ষণ করা যায় এবং ডিজিটাল কপি গবেষকদের জন্য সহজলভ্য করা যায়।

৪. আধুনিক সংরক্ষণ পদ্ধতি:

তাপমাত্রা ও আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে বই ও পাণ্ডুলিপি সংরক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।

৫. গবেষণা সুবিধা:

গবেষকদের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ ও সুবিধা তৈরি করতে হবে যাতে তারা এই মূল্যবান সম্পদ ব্যবহার করে গবেষণা করতে পারেন।

৬. জনসচেতনতা বৃদ্ধি:

এই ঐতিহাসিক গ্রন্থাগারগুলির গুরুত্ব সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে যাতে আরও বেশি মানুষ এগুলি দেখতে আসেন এবং সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন।

৭. আন্তর্জাতিক সহযোগিতা:

বিশ্বের অন্যান্য দেশের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে এবং তাদের সহযোগিতায় সংরক্ষণের কাজ করতে হবে।এই ঐতিহাসিক গ্রন্থাগারগুলি শুধু বইয়ের সংগ্রহ নয়, এগুলি আমাদের সভ্যতার ইতিহাস। এগুলি আমাদের অতীতের সাথে সংযোগ স্থাপন করে এবং ভবিষ্যতের জন্য জ্ঞানের ভাণ্ডার হিসেবে কাজ করে।

তাই প্রতিটি বইপ্রেমীর উচিত জীবনে অন্তত একবার এই গ্রন্থাগারগুলি পরিদর্শন করা।এই গ্রন্থাগারগুলি পরিদর্শন করলে আপনি শুধু বই দেখবেন না, দেখতে পাবেন ভারতের সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য। আপনি অনুভব করতে পারবেন কীভাবে শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে জ্ঞান সংরক্ষিত হয়েছে এবং প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে হস্তান্তরিত হয়েছে।উদাহরণস্বরূপ, ন্যাশনাল লাইব্রেরি অফ ইন্ডিয়ায় গিয়ে আপনি দেখতে পাবেন কীভাবে একটি ছোট্ট গ্রন্থাগার থেকে এটি ভারতের সবচেয়ে বড় গ্রন্থাগারে পরিণত হয়েছে।

Negative Film: স্মৃতির অন্ধকারকক্ষে হারিয়ে যাওয়া নেগেটিভ ফিল্মের গল্প

সরস্বতী মহল লাইব্রেরিতে গিয়ে আপনি দেখতে পাবেন কীভাবে একটি রাজকীয় গ্রন্থাগার সাধারণ মানুষের জন্য উন্মুক্ত হয়েছে।খুদা বক্স ওরিয়েন্টাল পাবলিক লাইব্রেরিতে গিয়ে আপনি দেখতে পাবেন কীভাবে বিভিন্ন ভাষা ও সংস্কৃতির মিলনস্থল হিসেবে একটি গ্রন্থাগার কাজ করতে পারে। রাজা রামপুর রাজা লাইব্রেরিতে গিয়ে আপনি দেখতে পাবেন কীভাবে একটি প্রাসাদের মধ্যে জ্ঞানের ভাণ্ডার লুকিয়ে আছে।এই গ্রন্থাগারগুলি পরিদর্শন করা মানে শুধু বই দেখা নয়, এটি একটি ঐতিহাসিক যাত্রা। এই যাত্রায় আপনি অনুভব করতে পারবেন কীভাবে আমাদের পূর্বপুরুষরা জ্ঞান সংরক্ষণ ও বিস্তারের জন্য কঠোর পরিশ্রম করেছেন। আপনি বুঝতে পারবেন কেন এই ঐতিহ্য সংরক্ষণ করা এতটা গুরুত্বপূর্ণ।

তাই যদি আপনি একজন বইপ্রেমী হন, তাহলে এই ঐতিহাসিক গ্রন্থাগারগুলি পরিদর্শন করার পরিকল্পনা করুন। এটি শুধু একটি ভ্রমণ হবে না, এটি হবে একটি অভিজ্ঞতা যা আপনার জীবনকে সমৃদ্ধ করবে। আপনি ফিরে আসবেন নতুন জ্ঞান, নতুন দৃষ্টিভঙ্গি এবং আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রতি নতুন শ্রদ্ধাবোধ নিয়ে।শেষ পর্যন্ত, এই ঐতিহাসিক গ্রন্থাগারগুলি আমাদের অতীতের সাক্ষী। এগুলি আমাদের বর্তমানকে সমৃদ্ধ করে এবং ভবিষ্যতের জন্য পথ দেখায়। তাই এই ঐতিহ্য সংরক্ষণ করা শুধু সরকারের দায়িত্ব নয়, এটি আমাদের সকলের কর্তব্য। আসুন আমরা সবাই মিলে এই অমূল্য সম্পদ সংরক্ষণে সহায়তা করি, যাতে আগামী প্রজন্মও এই জ্ঞানভাণ্ডার থেকে উপকৃত হতে পারে।

About Author
Manoshi Das

মানসী দাস একজন মার্কেটিং এর ছাত্রী এবং আমাদের বাংলাদেশ প্রতিনিধি। তিনি তাঁর অধ্যয়ন ও কর্মজীবনের মাধ্যমে বাংলাদেশের বাজার ও ব্যবসায়িক পরিবেশ সম্পর্কে গভীর জ্ঞান অর্জন করেছেন। একজন উদীয়মান লেখিকা হিসেবে, মানসী বাংলাদেশের সামাজিক-অর্থনৈতিক অবস্থা, স্থানীয় বাজারের প্রবণতা এবং ব্র্যান্ডিং কৌশল নিয়ে লিখে থাকেন। তাঁর লেখনীতে বাংলাদেশের যুব সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি ও আকাঙ্ক্ষা প্রতিফলিত হয়।