Recommended frequency masturbation health: হস্তমৈথুন একটি স্বাভাবিক যৌন আচরণ যা অধিকাংশ মানুষই কোনো না কোনো সময়ে করে থাকে। তবে এর নিয়মিত ফ্রিকোয়েন্সি নিয়ে অনেকেরই মনে প্রশ্ন থাকে – কতদিন পরপর হস্তমৈথুন করা উচিত? এর কোনো নির্দিষ্ট উত্তর নেই। কারণ এটি ব্যক্তিগত পছন্দ এবং শারীরিক-মানসিক চাহিদার উপর নির্ভর করে। তবে গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত হস্তমৈথুন শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।গবেষণায় দেখা গেছে, বেশিরভাগ পুরুষ সপ্তাহে একবার থেকে দৈনিক কয়েকবার পর্যন্ত হস্তমৈথুন করে থাকেন। অন্যদিকে নারীদের ক্ষেত্রে এই হার তুলনামূলক কম – সপ্তাহে একবার বা তার কম।
তবে এটি সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত বিষয়। কেউ প্রতিদিন করতে পারেন, আবার কেউ সপ্তাহে বা মাসে কয়েকবার করতে পারেন। যতক্ষণ পর্যন্ত এটি আপনার দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় বাধা না সৃষ্টি করে, ততক্ষণ পর্যন্ত এটি স্বাভাবিক।
হস্তমৈথুনের ফ্রিকোয়েন্সি নিয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য:
- গবেষণায় দেখা গেছে, সপ্তাহে ২১ বার বা তার বেশি হস্তমৈথুন করলে প্রোস্টেট ক্যান্সারের ঝুঁকি ৩১% কম থাকে।
- নিয়মিত হস্তমৈথুন মানসিক চাপ কমায়, ঘুমের মান উন্নত করে এবং মেজাজ ভালো রাখতে সাহায্য করে।
- হস্তমৈথুন যৌন সন্তুষ্টি বাড়ায় এবং যৌন সম্পর্কিত সমস্যা কমাতে সাহায্য করে।
- অতিরিক্ত হস্তমৈথুন করলে যৌনাঙ্গে জ্বালাপোড়া বা ব্যথা হতে পারে। এক্ষেত্রে কিছুদিন বিরতি নেওয়া উচিত।
- হস্তমৈথুনের ফলে অন্ধত্ব, বন্ধ্যাত্ব বা মানসিক রোগ হয় – এগুলো সবই ভুল ধারণা।
হস্তমৈথুন একটি স্বাভাবিক ও স্বাস্থ্যকর যৌন আচরণ। এর মাধ্যমে নিজের শরীর ও যৌনতা সম্পর্কে জানা যায়। তবে এটি যেন দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় বাধা না হয়ে দাঁড়ায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। প্রতিদিন বা সপ্তাহে কতবার হস্তমৈথুন করবেন তা আপনার ব্যক্তিগত পছন্দ ও চাহিদার উপর নির্ভর করে। যতক্ষণ পর্যন্ত এটি আপনার কাজে বা সামাজিক জীবনে বাধা না সৃষ্টি করে, ততক্ষণ পর্যন্ত এটি স্বাভাবিক ও স্বাস্থ্যকর।
পিরিয়ডের সময় যৌন মিলন: কী জানা প্রয়োজন?
হস্তমৈথুনের স্বাস্থ্যগত উপকারিতা:
১. মানসিক চাপ কমায়: হস্তমৈথুনের ফলে শরীরে এন্ডরফিন ও অক্সিটোসিন হরমোন নিঃসরণ হয়, যা মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে। এর ফলে মন প্রশান্ত ও আরামদায়ক অনুভূতি হয়।
২. ঘুমের মান উন্নত করে: হস্তমৈথুনের পর শরীর শিথিল হয় এবং প্রলাক্টিন হরমোন নিঃসরণ হয়, যা ঘুম আসতে সাহায্য করে। ফলে ঘুমের মান উন্নত হয়।
৩. প্রোস্টেট ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়: নিয়মিত হস্তমৈথুন করলে প্রোস্টেট গ্রন্থি থেকে ক্যান্সার সৃষ্টিকারী পদার্থ বের হয়ে যায়, যা প্রোস্টেট ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়।
৪. যৌন সন্তুষ্টি বাড়ায়: হস্তমৈথুনের মাধ্যমে নিজের শরীর ও যৌন চাহিদা সম্পর্কে জানা যায়। এর ফলে যৌন সম্পর্কের সময় সন্তুষ্টি বাড়ে।
৫. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়: হস্তমৈথুনের ফলে শরীরে লিউকোসাইট বা শ্বেত রক্তকণিকার সংখ্যা বাড়ে, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
৬. হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়: নিয়মিত হস্তমৈথুন করলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমে।
৭. ব্যথা উপশম করে: হস্তমৈথুনের ফলে শরীরে এন্ডরফিন নিঃসরণ হয়, যা প্রাকৃতিক ব্যথানাশক হিসেবে কাজ করে। এর ফলে মাথাব্যথা, পেটব্যথা ইত্যাদি উপশম হয়।
৮. আত্মবিশ্বাস বাড়ায়: নিজের শরীর ও যৌনতা সম্পর্কে জানার ফলে আত্মবিশ্বাস বাড়ে।
হস্তমৈথুন সম্পর্কিত কিছু ভুল ধারণা:
১. হস্তমৈথুনে অন্ধত্ব হয় – এটি সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। হস্তমৈথুনের সাথে দৃষ্টিশক্তির কোনো সম্পর্ক নেই।
২. হস্তমৈথুনে বন্ধ্যাত্ব হয় – এটিও ভুল ধারণা। বরং নিয়মিত হস্তমৈথুন শুক্রাণুর গুণগত মান বাড়াতে সাহায্য করে।
৩. হস্তমৈথুনে মানসিক রোগ হয় – এটি সত্য নয়। বরং হস্তমৈথুন মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে।
৪. হস্তমৈথুনে হাতে লোম গজায় – এটি একটি অবাস্তব ধারণা মাত্র।
৫. হস্তমৈথুনে যৌনাঙ্গের আকার ছোট হয়ে যায় – এর কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই।
৬. হস্তমৈথুন করলে বীর্যপাত দ্রুত হয় – এটিও ভুল ধারণা। বরং হস্তমৈথুন যৌন সহনশীলতা বাড়াতে সাহায্য করে।
Zika Virus Symptoms & Signs: মশার কামড়ে মৃত্যুর ছোঁয়া, জিকা ভাইরাস নিয়ে উদ্বেগে ভারত
হস্তমৈথুন সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ:
১. পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখুন। হস্তমৈথুনের আগে ও পরে হাত ভালোভাবে ধুয়ে নিন।
২. লুব্রিকেন্ট ব্যবহার করুন। এতে ত্বকে ঘর্ষণ কম হবে এবং আরামদায়ক অনুভূতি হবে।
৩. নিজের গোপনীয়তা রক্ষা করুন। এমন জায়গায় হস্তমৈথুন করুন যেখানে আপনি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন।
৪. বিভিন্ন কৌশল প্রয়োগ করুন। একই ধরনের স্টাইলে না করে বিভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহার করুন।
৫. মানসিকভাবে প্রস্তুত হোন। চাপমুক্ত ও আরামদায়ক পরিবেশে হস্তমৈথুন করুন।
৬. অতিরিক্ত হস্তমৈথুন থেকে বিরত থাকুন। এতে যৌনাঙ্গে ব্যথা বা জ্বালাপোড়া হতে পারে।
৭. পর্নোগ্রাফির অতিরিক্ত ব্যবহার এড়িয়ে চলুন। এতে বাস্তব যৌন জীবনে প্রভাব পড়তে পারে।
৮. কোনো সমস্যা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। লজ্জা না পেয়ে সমস্যা নিয়ে আলোচনা করুন।
হস্তমৈথুন একটি স্বাভাবিক ও স্বাস্থ্যকর যৌন আচরণ। এর মাধ্যমে নিজের শরীর ও যৌনতা সম্পর্কে জানা যায়। তবে এটি যেন দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় বাধা না হয়ে দাঁড়ায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। প্রতিদিন বা সপ্তাহে কতবার হস্তমৈথুন করবেন তা আপনার ব্যক্তিগত পছন্দ ও চাহিদার উপর নির্ভর করে। যতক্ষণ পর্যন্ত এটি আপনার কাজে বা সামাজিক জীবনে বাধা না সৃষ্টি করে, ততক্ষণ পর্যন্ত এটি স্বাভাবিক ও স্বাস্থ্যকর। তবে কোনো সমস্যা হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।