কিভাবে K-Pop আইডল হওয়া যায় ? যেভাবে একজন সফল K-Pop Idol হবেন তার সম্পূর্ণ নির্দেশিকা

দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গীত জগৎ, যা বিশ্বজুড়ে ‘কে-পপ’ (K-Pop) নামে পরিচিত, বর্তমানে এক অকল্পনীয় উচ্চতায় পৌঁছেছে। বিটিএস (BTS), ব্ল্যাকপিঙ্ক (BLACKPINK) বা স্ট্রে কিডস (Stray Kids)-এর মতো ব্যান্ডের আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তা দেখে বিশ্বের…

Sangita Chowdhury

 

দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গীত জগৎ, যা বিশ্বজুড়ে ‘কে-পপ’ (K-Pop) নামে পরিচিত, বর্তমানে এক অকল্পনীয় উচ্চতায় পৌঁছেছে। বিটিএস (BTS), ব্ল্যাকপিঙ্ক (BLACKPINK) বা স্ট্রে কিডস (Stray Kids)-এর মতো ব্যান্ডের আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তা দেখে বিশ্বের লক্ষ লক্ষ তরুণ-তরুণী আজ একজন সফল K-Pop idol হওয়ার স্বপ্ন দেখে। কিন্তু এই রঙিন জগতের পেছনের পথটা কতটা কঠিন? কঠোর পরিশ্রম, শৃঙ্খলা এবং প্রতিভা—এই তিনের সমন্বয়ে কীভাবে সেই স্বপ্নের পথে হাঁটা যায়?

কে-পপ ইন্ডাস্ট্রির বিস্তার এখন শুধু সঙ্গীতের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। Maximize Market Research-এর একটি সাম্প্রতিক রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২৪ সালে বিশ্বব্যাপী কে-পপ ইভেন্টস মার্কেটের আকার ছিল প্রায় ১৩.২৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং এটি ২০৩২ সালের মধ্যে প্রায় ২৩.৬৯ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছানোর সম্ভাবনা রয়েছে, যা ৭.৫% চক্রবৃদ্ধি হারে (CAGR) বাড়ছে। এই পরিসংখ্যানই প্রমাণ করে যে কে-পপ এখন একটি গ্লোবাল ফেনোমেনন এবং এর অংশ হওয়ার সুযোগও বাড়ছে। তবে প্রতিযোগিতা এখানে তীব্র; হাজার হাজার আবেদনকারীর মধ্যে থেকে মাত্র কয়েকজনই চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছাতে পারে। এই প্রবন্ধে আমরা একজন সফল K-Pop idol হওয়ার প্রতিটি ধাপ—অডিশন থেকে শুরু করে কঠোর প্রশিক্ষণ এবং অবশেষে বহু প্রতীক্ষিত ডেবিউ পর্যন্ত—বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব।

কে-পপ আইডল হওয়ার প্রেক্ষাপট: ঐতিহাসিক বিবর্তন

নব্বইয়ের দশকে Seo Taiji and Boys-এর মতো গোষ্ঠীর হাত ধরে আধুনিক কে-পপের জন্ম হলেও, গত এক দশকে এর বিশ্বায়ন ঘটেছে অবিশ্বাস্য দ্রুত গতিতে। প্রথমদিকে, কে-পপ ইন্ডাস্ট্রি মূলত কোরিয়ান বংশোদ্ভূত শিল্পীদের উপর নির্ভরশীল ছিল। কিন্তু বিশ্বজুড়ে এর জনপ্রিয়তা বাড়ার সাথে সাথে, বিভিন্ন দেশের প্রতিভাদের জন্যেও দরজা খুলতে শুরু করে। বর্তমানে ব্ল্যাকপিঙ্কের লিসা (থাইল্যান্ড), টুমরো বাই টুগেদারের (TXT) হুয়েনিং কাই (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র) বা জিবিওয়ান (ZB1) ব্যান্ডের ঝাং হাও (চীন)-এর মতো অ-কোরিয়ান আইডলদের সাফল্য প্রমাণ করে যে প্রতিভা এবং সংকল্প থাকলে জাতীয়তার সীমানা অতিক্রম করা সম্ভব।

এই পরিবর্তনের ফলে HYBE, SM, JYP, এবং YG-এর মতো বড় এজেন্সিগুলো এখন নিয়মিতভাবে বিশ্বব্যাপী অডিশনের আয়োজন করছে, যা আন্তর্জাতিক আবেদনকারীদের জন্য এক বিরাট সুযোগ তৈরি করেছে।

ধাপ ১: অডিশনের জন্য প্রস্তুতি (The Audition Phase)

কে-পপ আইডল হওয়ার প্রথম এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হলো কোনো এন্টারটেইনমেন্ট এজেন্সির অডিশনে নির্বাচিত হওয়া। এজেন্সিগুলো মূলত কয়েকটি প্রধান দক্ষতার উপর জোর দেয়:

 প্রয়োজনীয় দক্ষতাগুলো কী কী?

১. গান (Vocal): আপনার কণ্ঠের ধরণ, সুরের জ্ঞান এবং গায়কী অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আপনি পপ, আরএন্ডবি বা ব্যালাড—যেকোনো একটি ধারায় পারদর্শী হতে পারেন। নিয়মিত অনুশীলনের মাধ্যমে ভয়েস কন্ট্রোল এবং রেঞ্জ বাড়ানো আবশ্যক।

২. নাচ (Dance): কে-পপ পারফরম্যান্সের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হলো নাচ। হিপ-হপ, কনটেম্পোরারি বা আরবান ডান্সের মতো জনপ্রিয় ফর্মগুলোতে দক্ষতা থাকা জরুরি। এজেন্সিগুলো মূলত আপনার শেখার ক্ষমতা এবং কোরিওগ্রাফি মনে রাখার দক্ষতাকে পরীক্ষা করে।

৩. র‍্যাপ (Rap): যদি আপনার কণ্ঠ র‍্যাপের জন্য উপযুক্ত হয়, তবে এটি একটি বড় প্লাস পয়েন্ট। লিরিক্স লেখা এবং ফ্লো বজায় রাখার ক্ষমতা আপনাকে অন্যদের থেকে এগিয়ে রাখবে।

৪. ভিজ্যুয়াল এবং পার্সোনালিটি (Visuals and Personality): যদিও திறமை সবার আগে, তবে আপনার মঞ্চে উপস্থিতি (stage presence), ক্যামেরার সামনে আত্মবিশ্বাস এবং একটি স্বতন্ত্র ব্যক্তিত্ব থাকাও জরুরি। কোরিয়ান সৌন্দর্যের মানদণ্ড নিয়ে আলোচনা থাকলেও, এজেন্সিগুলো এখন বৈচিত্র্যময় চেহারা এবং ব্যক্তিত্বের সন্ধান করে।

৫. ভাষা (Language): কোরিয়ান ভাষা শেখা প্রায় বাধ্যতামূলক। আপনি যদি আন্তর্জাতিক আবেদনকারী হন, তবে কোরিয়ান ভাষার প্রাথমিক জ্ঞান আপনাকে প্রশিক্ষক এবং অন্য ট্রেইনিদের সাথে যোগাযোগ করতে সাহায্য করবে। এর পাশাপাশি ইংরেজি বা জাপানিজ ভাষার দক্ষতাও অতিরিক্ত যোগ্যতা হিসেবে বিবেচিত হয়।

কীভাবে এবং কোথায় অডিশন দেবেন? (Latest K-Pop Auditions 2025)

বড় এজেন্সিগুলো সারা বছর ধরেই অনলাইন এবং অফলাইন অডিশনের আয়োজন করে। আন্তর্জাতিক আবেদনকারীদের জন্য অনলাইন অডিশন সবচেয়ে সুবিধাজনক।

  • HYBE Corporation (বিটিএস, টিএক্সটি, এনহাইপেন): HYBE প্রায়শই তাদের বিভিন্ন লেবেলের (যেমন BigHit Music, Belift Lab, ADOR) জন্য গ্লোবাল অডিশন আয়োজন করে। HYBE x Geffen Records একটি নতুন গ্লোবাল গার্ল গ্রুপের জন্য অডিশন চালাচ্ছে, যা আন্তর্জাতিক প্রতিভাদের জন্য একটি বড় সুযোগ।
  • SM Entertainment (এক্সো, এনসিটি, এসপা): SM তাদের নিও-ট্যালেন্ট খোঁজার জন্য বিশ্বজুড়ে অডিশন করে। SM Entertainment-এর অডিশন ওয়েবসাইট থেকে ২০২৫ সালের গ্লোবাল অডিশনের তথ্য পাওয়া যাবে, যা উত্তর আমেরিকা, এশিয়া এবং ইউরোপের বিভিন্ন শহরে অনুষ্ঠিত হবে।
  • JYP Entertainment (টুয়াইস, স্ট্রে কিডস, আইটিজি): JYP নিয়মিত অনলাইন অডিশনের মাধ্যমে প্রতিভা সন্ধান করে। তাদের অডিশন পেজে আবেদনপত্র এবং নির্দেশাবলী পাওয়া যায়।
  • YG Entertainment (ব্ল্যাকপিঙ্ক, ট্রেজার, বেবিমন্সটার): YG তাদের স্বতন্ত্র স্টাইলের জন্য পরিচিত। The Korea Herald-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, YG ২০২৫ সালের শুরুতে কোরিয়ার বিভিন্ন শহরে “National Audition Tour”-এর আয়োজন করেছে, যেখানে আন্তর্জাতিক আবেদনকারীরাও অংশ নিতে পারবেন।

অডিশন টিপস:

  • আপনার সেরা পারফরম্যান্সের একটি ছোট (১-২ মিনিট) ভিডিও তৈরি করুন।
  • ভিডিওতে আপনার মুখ এবং সম্পূর্ণ শরীর যেন স্পষ্টভাবে দেখা যায়।
  • কোনো রকম এডিটিং বা ফিল্টার ব্যবহার করবেন না।
  • আবেদনের সময় সঠিক এবং সত্য তথ্য দিন।

 ট্রেইনি জীবন – স্বপ্নের পেছনের কঠোর বাস্তবতা

অডিশনে নির্বাচিত হওয়াই শেষ কথা নয়, বরং এটি এক দীর্ঘ এবং কঠিন যাত্রার শুরু। নির্বাচিত প্রার্থীদের ‘ট্রেইনি’ হিসেবে এজেন্সির সাথে চুক্তিবদ্ধ হতে হয়। এই ট্রেইনি জীবনের সময়কাল কয়েক মাস থেকে শুরু করে ৭-১০ বছর পর্যন্তও হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, TWICE ব্যান্ডের Jihyo ডেবিউ করার আগে ১০ বছর প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন।

 একজন ট্রেইনির দৈনন্দিন রুটিন

ট্রেইনিদের জীবন অত্যন্ত শৃঙ্খলাবদ্ধ। তাদের প্রতিদিন প্রায় ১০-১২ ঘন্টা কঠোর প্রশিক্ষণের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। একটি সাধারণ দিনের রুটিন অনেকটা এইরকম:

  • সকাল: স্কুল বা কলেজের ক্লাস (যদি তারা শিক্ষার্থী হয়)।
  • দুপুর: কোরিয়ান ভাষার ক্লাস, ফিটনেস ট্রেনিং এবং জিম।
  • বিকাল: গানের ক্লাস (Vocal lessons) এবং নাচের অনুশীলন (Dance practice)।
  • সন্ধ্যা: র‍্যাপ সেশন, বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র শেখা এবং গ্রুপ কোরিওগ্রাফি অনুশীলন।
  • রাত: পারফরম্যান্স স্কিল, মঞ্চে আচরণ এবং সাক্ষাৎকারের প্রশিক্ষণ।

এই সময়কালে তাদের খাদ্যাভ্যাস কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয় এবং নিয়মিত ওজন পরীক্ষা করা হয়। BBC-র একটি প্রতিবেদনে কে-পপ ট্রেইনিদের মানসিক এবং শারীরিক চাপের বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে, যেখানে উল্লেখ করা হয়েছে যে তাদের ব্যক্তিগত জীবন, যেমন ডেটিং বা পরিবারের সাথে সময় কাটানো, প্রায়শই সীমাবদ্ধ থাকে।

 মাসিক মূল্যায়ন (Monthly Evaluations)

প্রতি মাসে ট্রেইনিদের একটি মূল্যায়নের মুখোমুখি হতে হয়, যেখানে এজেন্সির প্রশিক্ষক এবং কর্মকর্তারা তাদের অগ্রগতি পর্যালোচনা করেন। এই পরীক্ষায় যারা ভালো ফল করতে পারে না, তাদের বাদ পড়ার ঝুঁকি থাকে। এই তীব্র প্রতিযোগিতা এবং বাদ পড়ার ভয় ট্রেইনিদের জন্য একটি বড় মানসিক চ্যালেঞ্জ।

 ডেবিউ – চূড়ান্ত স্বপ্নপূরণ

কয়েক বছরের কঠোর প্রশিক্ষণের পর, যখন এজেন্সি মনে করে যে একজন ট্রেইনি মঞ্চে পারফর্ম করার জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত, তখন তাদের একটি গ্রুপে বা একক শিল্পী হিসেবে ডেবিউ করানো হয়।

  • গ্রুপ গঠন: এজেন্সি একটি নির্দিষ্ট কনসেপ্টের উপর ভিত্তি করে একটি গ্রুপ তৈরি করে এবং সেই কনসেপ্টের সাথে মানানসই ট্রেইনিদের বেছে নেয়। গ্রুপের প্রতিটি সদস্যের নির্দিষ্ট ভূমিকা থাকে, যেমন—লিডার, প্রধান কণ্ঠশিল্পী (Main Vocalist), প্রধান নৃত্যশিল্পী (Main Dancer), র‍্যাপার, ভিজ্যুয়াল এবং মাকনে (Maknae – সর্বকনিষ্ঠ সদস্য)।
  • সারভাইভাল শো (Survival Shows): অনেক সময় এজেন্সিগুলো Mnet-এর ‘Produce 101’ বা HYBE-এর ‘I-LAND’-এর মতো সারভাইভাল শোর মাধ্যমে নতুন গ্রুপ তৈরি করে। এই শোগুলোতে ট্রেইনিরা দর্শকদের ভোটের মাধ্যমে চূড়ান্ত দলে জায়গা পাওয়ার জন্য প্রতিযোগিতা করে। এটি ডেবিউ করার একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় কিন্তু প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ উপায়। ZB1-এর ঝাং হাও ‘বয়েজ প্ল্যানেট’ নামক একটি সারভাইভাল শো-তে প্রথম স্থান অর্জন করে ইতিহাস তৈরি করেন, কারণ তিনিই প্রথম অ-কোরিয়ান প্রতিযোগী যিনি এই ধরনের শো-তে বিজয়ী হয়েছেন।

ডেবিউ করার পর একজন K-Pop idol-এর জীবন আরও ব্যস্ত হয়ে ওঠে। তাদের অ্যালবাম প্রকাশ, মিউজিক শোতে পারফর্ম, ফ্যান মিটিং, বিজ্ঞাপন এবং বিশ্ব ভ্রমণ নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হয়।

আন্তর্জাতিক আইডলদের চ্যালেঞ্জ এবং সুযোগ

অ-কোরিয়ানদের জন্য কে-পপ আইডল হওয়ার পথটি আরও চ্যালেঞ্জিং হতে পারে।

  • ভাষাগত এবং সাংস্কৃতিক বাধা: কোরিয়ান সংস্কৃতি এবং ভাষার সাথে মানিয়ে নেওয়া একটি বড় চ্যালেঞ্জ। সিনিয়রদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন এবং সামাজিক প্রথাগুলো শিখতে সময় লাগে।
  • হোমসিকনেস: পরিবার এবং বন্ধুদের থেকে দূরে থাকার কারণে একাকীত্ব এবং মানসিক চাপ তৈরি হতে পারে।
  • ভিসা সমস্যা: দীর্ঘ সময় ধরে কোরিয়ায় থাকা এবং কাজ করার জন্য সঠিক ভিসা এবং ওয়ার্ক পারমিট প্রয়োজন।

তবে এর পাশাপাশি সুযোগও রয়েছে। আন্তর্জাতিক সদস্যরা তাদের নিজ নিজ দেশে গ্রুপের জনপ্রিয়তা বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাদের বৈচিত্র্যময় পটভূমি গ্রুপে একটি নতুন মাত্রা যোগ করে, যা বিশ্বব্যাপী দর্শকদের আকর্ষণ করে।

ভবিষ্যতের পরামর্শ

কে-পপ ইন্ডাস্ট্রি প্রতিনিয়ত বিকশিত হচ্ছে এবং বিশ্বজুড়ে নতুন প্রতিভা খুঁজছে। আপনি যদি সত্যিই একজন K-Pop idol হতে চান, তবে কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখা জরুরি:

  • ধৈর্য এবং অধ্যবসায়: এই পথটি দীর্ঘ এবং কঠিন। রাতারাতি সাফল্যের আশা না করে ধৈর্য ধরে অনুশীলন চালিয়ে যেতে হবে।
  • মানসিক দৃঢ়তা: সমালোচনা এবং প্রত্যাখ্যানকে গ্রহণ করার মানসিকতা তৈরি করতে হবে।
  • নিজের প্রতি যত্ন: কঠোর প্রশিক্ষণের পাশাপাশি নিজের শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
  • শেখার আগ্রহ: ক্রমাগত নতুন কিছু শেখার এবং নিজেকে উন্নত করার মানসিকতা রাখতে হবে।

প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন (FAQ)

১. কে-পপ আইডল হওয়ার জন্য সর্বনিম্ন বয়স কত?

সাধারণত, এজেন্সিগুলো ১২ থেকে ১৮ বছর বয়সী আবেদনকারীদের বেশি গুরুত্ব দেয়, তবে এর কোনো নির্দিষ্ট নিয়ম নেই। অনেক সময় কম বা বেশি বয়সের প্রতিভারাও সুযোগ পায়।

২. অডিশনের জন্য কি কোরিয়া যেতে হবে?

না, এখন বেশিরভাগ বড় এজেন্সি অনলাইন অডিশনের ব্যবস্থা করে। আপনি আপনার দেশ থেকেই আবেদন করতে পারেন। নির্বাচিত হলে আপনাকে পরবর্তী রাউন্ডের জন্য কোরিয়ায় ডাকা হতে পারে।

৩. দেখতে সুন্দর হওয়া কি বাধ্যতামূলক?

যদিও ভিজ্যুয়াল একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক, তবে প্রতিভা এবং দক্ষতাকেই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়। আত্মবিশ্বাস এবং একটি স্বতন্ত্র স্টাইল আপনাকে ভিড়ের মধ্যে আলাদা করে তুলতে পারে।

৪. প্রশিক্ষণের খরচ কে বহন করে?

সাধারণত, এজেন্সি ট্রেইনিদের প্রশিক্ষণ, থাকা এবং খাওয়ার সমস্ত খরচ বহন করে। তবে ডেবিউ করার পর শিল্পীর আয় থেকে সেই খরচ সমন্বয় করা হয়, যা “trainee debt” নামে পরিচিত। কোনো এজেন্সি যদি প্রশিক্ষণের জন্য আগে থেকেই টাকা চায়, তবে সেটি প্রতারণা হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

৫. পড়াশোনার পাশাপাশি কি প্রশিক্ষণ নেওয়া সম্ভব?

হ্যাঁ, বেশিরভাগ ট্রেইনি তাদের স্কুলের পড়াশোনা চালিয়ে যায়। এজেন্সিগুলো তাদের পড়াশোনার জন্য সময় দেয়, তবে সময় ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়ে।

উপসংহার

একজন সফল K-Pop idol হওয়ার স্বপ্ন দেখা সহজ, কিন্তু সেই স্বপ্নকে বাস্তবে পরিণত করার জন্য প্রয়োজন অদম্য ইচ্ছাশক্তি, কঠোর পরিশ্রম এবং ত্যাগের মানসিকতা। এই জগৎ বাইরে থেকে যতটা রঙিন মনে হয়, এর পেছনের পথটি ততটাই চ্যালেঞ্জিং। প্রতিযোগিতা তীব্র এবং সাফল্যের কোনো নিশ্চয়তা নেই। তবে, যদি আপনার প্রতিভা থাকে এবং আপনি যেকোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত থাকেন, তবে এই দীর্ঘ এবং কঠিন যাত্রাই আপনাকে একদিন বিশ্বমঞ্চে পৌঁছে দিতে পারে। সঠিক প্রস্তুতি, ইতিবাচক মানসিকতা এবং निरंतर প্রচেষ্টার মাধ্যমে আপনিও হতে পারেন পরবর্তী গ্লোবাল কে-পপ সেনসেশন।

About Author