Get a 10 year e-passport in Bangladesh: বাংলাদেশে ১০ বছর মেয়াদি ই-পাসপোর্ট করার প্রক্রিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই ধরনের পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে, কত খরচ পড়বে এবং কীভাবে আবেদন করতে হবে তা জানা প্রয়োজন। বর্তমানে বাংলাদেশ বিশ্বের ১১৯তম দেশ হিসেবে ই-পাসপোর্ট চালু করেছে। এর ফলে নাগরিকরা এখন ঘরে বসেই অনলাইনে ই-পাসপোর্টের জন্য আবেদন করতে পারছেন।
১০ বছর মেয়াদি ই-পাসপোর্ট করতে প্রথমেই প্রয়োজন হবে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র। এর মধ্যে রয়েছে জাতীয় পরিচয়পত্র বা স্মার্ট কার্ড, ছবি, জন্মনিবন্ধন সার্টিফিকেট (১৮ বছরের কম বয়সীদের ক্ষেত্রে), বাবা-মায়ের ছবি ও জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি (১৮ বছরের কম বয়সীদের ক্ষেত্রে)। এছাড়াও লাগবে বর্তমান ঠিকানার বিদ্যুৎ বিলের কপি এবং পুরনো পাসপোর্টের কপি (যদি থাকে)।আবেদন প্রক্রিয়া শুরু করতে হলে প্রথমে বাংলাদেশ ই-পাসপোর্ট অনলাইন পোর্টালে যেতে হবে। সেখানে ‘ডিরেক্টলি টু অনলাইন অ্যাপ্লিকেশন’ অপশনে ক্লিক করে আবেদন প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে।
অনলাইনে জন্ম শংসাপত্র: ঘরে বসেই পাওয়া যাবে গুরুত্বপূর্ণ নথি, জানুন কীভাবে আবেদন করবেন
এরপর ধাপে ধাপে ফরম পূরণ করতে হবে। প্রথমে বর্তমান ঠিকানার জেলা ও থানার নাম দিতে হবে। পরের ধাপে ব্যক্তিগত তথ্য দিয়ে মূল ফরমটি পূরণ করতে হবে।১০ বছর মেয়াদি ই-পাসপোর্টের ফি নির্ভর করে পৃষ্ঠা সংখ্যা ও সেবার ধরনের উপর। ৪৮ পৃষ্ঠার ১০ বছর মেয়াদি পাসপোর্টের ক্ষেত্রে সাধারণ সেবায় (২১ কর্মদিবস) ফি ৫ হাজার ৭৫০ টাকা, জরুরি সেবায় (১০ কর্মদিবস) ফি ৮ হাজার ৫০ টাকা এবং অতি জরুরি সেবায় (২ কর্মদিবস) ফি ১০ হাজার ৩৫০ টাকা। ৬৪ পৃষ্ঠার ১০ বছর মেয়াদি পাসপোর্টের ক্ষেত্রে সাধারণ সেবায় ফি ৮ হাজার ৫০ টাকা, জরুরি সেবায় ফি ১০ হাজার ৩৫০ টাকা এবং অতি জরুরি সেবায় ফি ১৩ হাজার ৮০০ টাকা।
এই সব ফির সাথে ১৫% ভ্যাট যোগ হবে।ফি পরিশোধের পর আপনাকে ছবি তোলা ও আঙুলের ছাপ দেওয়ার জন্য একটি তারিখ দেওয়া হবে। সেই নির্ধারিত তারিখে আপনাকে পাসপোর্ট অফিসে যেতে হবে। যাওয়ার সময় অনলাইন আবেদন ফরমের কপি, ফি পরিশোধের রসিদ, বিদ্যুৎ বিলের কপি, জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি ও পুরনো পাসপোর্টের কপি (যদি থাকে) সঙ্গে নিতে হবে।
অফিসে গিয়ে ছবি তোলা, সব আঙুলের ছাপ ও চোখের আইরিশের ছবি নেওয়া হবে।এই প্রক্রিয়া শেষে আপনাকে পাসপোর্ট সংগ্রহের জন্য একটি রসিদ দেওয়া হবে। পাসপোর্ট তৈরি হয়ে গেলে আপনাকে একটি মেসেজের মাধ্যমে জানানো হবে। তারপর আপনি পাসপোর্ট অফিস থেকে আপনার নতুন ১০ বছর মেয়াদি ই-পাসপোর্ট সংগ্রহ করতে পারবেন।ই-পাসপোর্টের একটি বড় সুবিধা হলো এর মাধ্যমে ই-গেট ব্যবহার করে খুব দ্রুত ও সহজে বিমানবন্দরে যাতায়াত করা যায়।
এতে করে ভিসা চেকিংয়ের জন্য লম্বা লাইনে দাঁড়াতে হয় না। ই-গেটের নির্দিষ্ট স্থানে পাসপোর্ট রাখলে ক্যামেরা ছবি তুলে নেয় এবং আঙুলের ছাপ যাচাই করে। সব ঠিক থাকলে দ্রুত ইমিগ্রেশন পার হওয়া যায়।১০ বছর মেয়াদি ই-পাসপোর্ট করার সময় কিছু বিষয় মনে রাখা জরুরি। যেমন, একবার আবেদন জমা দেওয়ার পর কোনো ভুল থাকলে তা সংশোধন করার সুযোগ থাকে না।
তাই আবেদন করার আগে সব তথ্য ভালোভাবে যাচাই করে নিতে হবে। এছাড়া একটি ভোটার আইডি কার্ড দিয়ে শুধুমাত্র একবারই ই-পাসপোর্টের জন্য আবেদন করা যায়।১৮ বছরের কম এবং ৬৫ বছরের বেশি বয়সী আবেদনকারীরা কেবলমাত্র ৫ বছর মেয়াদি পাসপোর্ট পাবেন। অর্থাৎ তারা ১০ বছর মেয়াদি ই-পাসপোর্টের জন্য আবেদন করতে পারবেন না। অতি জরুরি আবেদনের ক্ষেত্রে পুলিশ প্রতিবেদন সঙ্গে আনতে হবে।
ভারতীয়দের জন্য ই-ভিসা অফার করছে এই ৫টি দেশ – জেনে নিন সহজ ভ্রমণের সুযোগ!
ই-পাসপোর্ট করার সময় আরও কিছু বিষয় খেয়াল রাখতে হবে। যেমন, অনলাইনে আবেদন করার সময় সঠিক তথ্য দেওয়া, ফটো আপলোড করার সময় নির্দেশনা মেনে চলা, ফি পরিশোধের রসিদ সংরক্ষণ করা ইত্যাদি। এছাড়া পাসপোর্ট অফিসে যাওয়ার সময় সব মূল কাগজপত্র সঙ্গে নেওয়া উচিত।সারসংক্ষেপে বলা যায়, ১০ বছর মেয়াদি ই-পাসপোর্ট করতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, অনলাইন আবেদন প্রক্রিয়া, ফি পরিশোধ, পাসপোর্ট অফিসে যাওয়া এবং শেষ পর্যন্ত পাসপোর্ট সংগ্রহ – এই ধাপগুলো অনুসরণ করতে হয়। প্রক্রিয়াটি যদিও কিছুটা সময়সাপেক্ষ, তবে এর ফলে দীর্ঘমেয়াদি সুবিধা পাওয়া যায়।
১০ বছর মেয়াদি ই-পাসপোর্ট থাকলে ঘন ঘন নবায়ন করার ঝামেলা থেকে মুক্তি পাওয়া যায় এবং আন্তর্জাতিক ভ্রমণে অনেক সুবিধা পাওয়া যায়।তবে মনে রাখতে হবে, ই-পাসপোর্ট করার প্রক্রিয়া ও ফি সময়ে সময়ে পরিবর্তন হতে পারে। তাই আবেদন করার আগে সর্বশেষ তথ্য জেনে নেওয়া ভালো। এজন্য বাংলাদেশ ই-পাসপোর্ট অফিশিয়াল ওয়েবসাইট বা নিকটস্থ পাসপোর্ট অফিস থেকে হালনাগাদ তথ্য সংগ্রহ করা যেতে পারে।